চৌর্যতন্ত্র

এটি এই পাতার একটি পুরনো সংস্করণ, যা Faizul Latif Chowdhury (আলোচনা | অবদান) কর্তৃক ০৫:৪২, ২৮ মে ২০২৪ তারিখে সম্পাদিত হয়েছিল (কিছু সম্প্রসারণ (কাজ চলবে))। উপস্থিত ঠিকানাটি (ইউআরএল) এই সংস্করণের একটি স্থায়ী লিঙ্ক, যা বর্তমান সংস্করণ থেকে ব্যাপকভাবে ভিন্ন হতে পারে।

চৌর্যতন্ত্র এমন একটি সরকার ব্যবস্থা যার লক্ষ্য রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা ব্যবহার করে দেশ ও দেশের নাগরিকদের সম্পদ হাতিয়ে নেয়া এবং ব্যক্তিগত সম্পদে পরিণত করা। রাচনীতিবিদরা এই ব্যবস্থা কায়েম করে এবং এর মধ্য দিয়ে দেশ ও দেশের নাগরিকদের সম্পদ লুটপাট করে। মোবুতু সেসে সেকো তার দীর্ঘ ৩২ বৎসর বছরের শাসনামলে কঙ্গো তথা জায়ার এ চৌর্যতন্ত্র কায়েম করতে সক্ষম হয়েছিলেন। বলা হয় ভ্লাদিমির পুতিন রাশিয়ায় চৌর্যতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করে নিজের ক্ষমতার ডালপালা ব্যাপ্ত করেছেন। চৌর্য্যতন্ত্র সফলভাবে ব্যবহার করে মন্টিনিগ্রো এর রাষ্ট্রপতি মিলো দুকানোভিচ ২০১০ সালে পৃথিবীর ১০ জন শীর্ষ সম্পদশালী ব্যক্তির তালিকায় নিজের নাম লেখাতে সক্ষম হয়েছিলেন। চৌর্যতন্ত্র সফলভাবে পরিচালনার করার শর্ত হলো আইন পরিষদ, বিচার ব্যবস্থা, আমলাতন্ত্র ও সেনাবাহিনিকে দক্ষতার সঙ্গে কব্জা করা। চৌর্যতন্ত্রকে সহজ ভাষায় চোরের রাজত্ব তথা লুটপাটতন্ত্র বলা হয়ে থাকে। রাষ্ট্রের প্রধান নিজেই চোরের সর্দ্দার হিসাবে কাজ করেন।[][]

চৌর্যতন্ত্র ও ধনিকতন্ত্রের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। ধনিকতন্ত্রে সমাজের কিছু ধনী বা সম্পদশালী ব্যক্তি রাষ্ট্রক্ষমতা কার্যকরভাবে দখল করে থাকে। অ্যারিস্টোটল বলেছেন অভিজাততন্ত্রধনিকতন্ত্র অভিন্ন নয়। চৌর্যতন্ত্রে রাজনীতিকরাই ধনিকতন্ত্রের হোতা। কাজাখস্তানের রাষ্ট্রপতির কন্যা দারিগা নাযারবায়েভা দেশটির সিনেটের প্রধান পদ দখল করে ছিলেন এবং রাষ্ট্রক্ষমতা ব্যবহার করে বিভিন্ন ধরণের ব্যবসা-বাণিজ্যের মধ্য দিয়ে সম্পদের পাহাড় গড়ে তোলেন। ফোর্বস ম্যাগাজিনের প্রাক্কলন অনুযায়ী ২০১৩ সালে তার কুক্ষিগত সম্পদের পরিমাণ ৫৫৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।[]

দেশ ও নাগরিকদের সম্পদের উৎস

সম্পদ হাতিয়ে নেয়ার কলাকৌশল

অবাধ দুর্নীতি জনগণের অর্থ ও সম্পদ লুটপাটের প্রধান কৌশল।[]

উচ্চমূল্যে উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন

ঋণখেলাপের মধ্য দিয়ে ব্যাংকে রক্ষিত জনগণের টাকা লুট করা

বাংলাদেশে কয়েকজন ধনী ব্যক্তি ধীরে ধীরে ব্যাংকখাতের ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নাকের ডগায় ঋণের নামে ব্যাংক থেকে জনগণের টাকা হাতিয়ে নেয়ার হয়।[]

হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে ডিজিটাল লুটপাট

শেয়ারবাজার থেকে অর্থ অপহরণ

লুটপাটকৃত অর্থের ব্যবহার

কালোটাকা সাদা করার সুযোগ

বিদেশে বিনিয়োগ

চৌর্যতন্ত্র কায়েমের আবশ্যিক শর্তাবলী

সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা

বিদেশে অর্থপাচারের সুযোগ

সরকার ও ব্যবসায় সম্প্রদায়ের আঁতাত

চৌর্যতন্ত্র কায়েমের অন্যতম শর্ত হচ্ছে সরকার ও ব্যবসায় সম্প্রদায়ের মধ্যে আঁতাত। []

দুর্নীতির জন্য জবাবদিহিতা করতে হয় না

প্রশাসনযন্ত্রের সমর্থন

বিচার বিভাগের নিষ্ক্রীয়তা

আইনসভার নিষ্ক্রীয়তা

দুনীর্তিদমন বিভাগের দুর্বলতা

চৌর্যতন্ত্রের সুবিধাভোগী কয়েকজন শাসক

২০০৪ সালের জার্মানভিত্তিক দুর্নীতিবিরোধী এনজিও ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল আগের দুই দশকে চৌর্যতন্ত্রের মধ্যদিয়ে সম্পদশালী হওয়া দশজন রাষ্ট্রশাসকের একটি তালিকা প্রকাশ করে। তাদেরকে "নিশ্চিতভাবে বিশ্বের ১০ জন সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত নেতা" হিসাবে বর্ণনা করা হয়। ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল তাদের প্রতিবেদনের অবশ্য স্বীকার করে যে এই দুঃশাসকরা "প্রকৃতপক্ষে ঠিত কত টাকা আত্মসাৎ করেছে সে সম্পর্কে খুব কমই জানা গেছে।" এদের চুরিকরা অর্থসম্পদের প্রাক্কলিত পরিমাণ নিম্নরূপ (মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ডলারে রূপান্তরিত):[]

  • Former Indonesian President Suharto ($15 billion to $35 billion)
  • Former Philippine President Ferdinand Marcos ($5 billion to $10 billion)
  • Former Zairian President Mobutu Sese Seko ($5 billion)
  • Former Nigerian Head of State Sani Abacha ($2 billion to $5 billion)
  • Former Yugoslav President Slobodan Milošević ($1 billion)
  • Former Haitian President Jean-Claude Duvalier ($300 million to $800 million)
  • Former Peruvian President Alberto Fujimori ($600 million)
  • Former Ukrainian Prime Minister Pavlo Lazarenko ($114 million to $200 million)
  • Former Nicaraguan President Arnoldo Alemán ($100 million)
  • Former Philippine President Joseph Estrada ($78 million to $80 million)

নাগরিক সমাজের ওপর চৌর্যতন্ত্রের অশুভ প্রতিক্রিয়া

চৌর্যতন্ত্রীয় রাষ্ট্রে অর্থনীতির চেহারা

চৌর্যতন্ত্র উৎখাতের সম্ভাবনা

রাষ্ট্রীয় কাঠামোতে চৌর্যতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হলে তা উৎখাতের দায়িত্ব নাগরিকদের।[] অনেক দেশে গণঅভ্যূত্থানের মাধ্যমে চৌর্যতন্ত্রের অবসান ঘটানো হয়েছে।

নাগরিকদের সচেতনতা ও দায়িত্ব

সুশীল সমাজের দায়িত্ব

গণমাধ্যমের দায়িত্ব

চৌর্যতন্ত্র উৎখাতের অন্যতম কৌশল হলো রাষ্ট্রীয় সম্পদ লুটপাটের কাহিনীর ঘটনা একের পর এক উদঘাটন করা ও তা প্রকাশ করা।[]

বিশ্বের চৌর্যতন্ত্রবিরোধী রাষ্ট্রসমূহের দায়িত্ব

তথ্যসূত্র

  1. Kleptocracy through Open Government and Democratic Oversight
  2. of a kleptocracy
  3. [১]
  4. Definition of a kleptocracy
  5. ঢাকা কুরিয়ার, ২৪মে ২০২৪ সংখ্যার সম্পাদকীয়
  6. Rise of Kleptocracy
  7. [Hodess, Robin; Inowlocki, Tania; Rodriguez, Diana; Wolfe, Toby, eds. (2004). Global Corruption Report 2004 (PDF). Sterling, VA: Pluto Press in association with Transparency International. p. 13. ISBN 074532231X.]
  8. Guide
  9. Kleptocracy