অনুরূপচন্দ্র সেন
অনুরূপচন্দ্র সেন (১৮৯৮ - ৪ এপ্রিল ১৯২৮) ছিলেন ভারতীয় উপমহাদেশের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের একজন ব্যক্তিত্ব ও অগ্নিযুগের শহীদ বিপ্লবী।
অনুরূপচন্দ্র সেন | |
---|---|
জন্ম | ১৮৯৮ |
মৃত্যু | ৪ এপ্রিল ১৯২৮ |
জাতীয়তা | ভারতীয় ব্রিটিশ ভারত (১৯৪৭ সাল পর্যন্ত) পাকিস্তান (১৯৬৪ সাল পর্যন্ত) ভারত |
নাগরিকত্ব | ব্রিটিশ ভারত |
শিক্ষা | বি.এ |
মাতৃশিক্ষায়তন | চট্টগ্রাম মাদ্রাসা |
পরিচিতির কারণ | চট্টগ্রামের অস্ত্রগার আক্রমণের ব্যক্তি |
রাজনৈতিক দল | অনুশীলন সমিতি, |
আন্দোলন | ভারতের বিপ্লবী স্বাধীনতা আন্দোলন |
পিতা-মাতা |
|
জন্ম ও শিক্ষা
সম্পাদনাঅনুরূপচন্দ্র সেনের জন্ম অবিভক্ত বাংলার (বর্তমানে বাংলাদেশ) চট্টগ্রামের নোয়াপাড়ার এক দরিদ্র পরিবারে। পিতার নাম কমলকুমার সেন। চট্টগ্রাম মাদ্রাসা থেকে ১৯১৮ খ্রিস্টাব্দে ৭৫ শতাংশ নম্বর পেয়ে আই.এ এবং ১৯২০ খ্রিস্টাব্দে বি.এ পাশ করেন । [১] অনুরূপচন্দ্র সেন এম.এ. ক্লাসের ছাত্র থাকাকালে বিপ্লবী দলের সভ্য হন।[২]
প্রারম্ভিক জীবন
সম্পাদনামাস্টারদা সূর্য সেন ও তিনি দুজনেই চট্টগামের নোয়াপাড়ার বাসিন্দা ছিলেন। তারা ছিলেন পরস্পরের সমবয়েসী বন্ধু। দক্ষিণ চব্বিশ পরগণা জেলার বুড়ুল হাইস্কুলে শিক্ষকতাকালীন নানা সামাজিক কাজে নিজেকে ও ছাত্রদের জড়িয়ে রাখতেন। ছাত্র ছাত্রীরা তার উৎসাহে হাতে লেখা জাতীয়তাবাদী 'সাধনা' পত্রিকা বের করে। অস্ত্র প্রশিক্ষন, লাঠি খেলা, দেহচর্চা ইত্যাদির গোপন আখড়া গড়ে তুলে স্থানীয় ছাত্র-যুবদের কাছে তিনি হয়ে উঠেছিলেন এক অনুকরণীয় ব্যক্তিত্ব।[৩]
বিপ্লবী কর্মকাণ্ড
সম্পাদনা১৯১৮ সনে যে পাঁচজনকে নিয়ে চট্টগ্রাম বিপ্লবী দলের কেন্দ্র গঠিত হয় তিনি তার অন্যতম ছিলেন। যদিও তিনি অন্তরালেই থেকে গেছেন ভারতের বৈপ্লবিক আন্দোলনের ইতিহাসে। অপর চারজন হচ্ছেন সূর্য সেন, নগেন সেন (জুলু), অম্বিকা চক্রবর্তী ও চারু বিকাশ দত্ত। চট্টগ্রাম বিপ্লবীদের গোপন সংবিধান তারই রচিত। প্রথমে অসহযোগ আন্দোলনে অংশগ্রহণ করে কারাবরণ করেন। ১৯২২ সালে দলের নির্দেশে চব্বিশ পরগনা জেলার বুড়ুল হাই স্কুলে শিক্ষকতার কাজ নিয়ে এসে সেখানে সমাজসংস্কারমূলক কাজের সঙ্গে সঙ্গে বিপ্লবীদের এক ঘাঁটি তৈরি করেন। সঙ্গে পান প্রিয় ছাত্র প্রভাস রায় ও মুরারীশরণ চক্রবর্তী প্রমুখকে।[১] দক্ষিণেশ্বর বোমা মামলায় ১৯ ডিসেম্বর ১৯২৬ তারিখে গ্রেপ্তার হন বুড়ুল থেকেই। ময়নাগুড়িতে অন্তরীণ থাকাকালে অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে কাশীতে পাঠানো হয়। সেখানে অন্তরীণ থাকা অবস্থায় শ্রীরামকৃষ্ণ অনাথ আশ্রমে মারা যান।[২][৪] দক্ষিণ চব্বিশ পরগণার বুড়ুল হাইস্কুলসহ সমগ্র জনপদ আজও এই মহান বিপ্লবীর স্মৃতিকে শ্রদ্ধার সঙ্গে বাঁচিয়ে রেখেছে। সেখানে গেলে তাঁর মূর্তি, তাঁর নামাঙ্কিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আজও দেখতে পাবেন।[৫]
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ ক খ "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ৮ এপ্রিল ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৭ মার্চ ২০২০।
- ↑ ক খ সুবোধ সেনগুপ্ত ও অঞ্জলি বসু সম্পাদিত, সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান, প্রথম খণ্ড, সাহিত্য সংসদ, কলকাতা, নভেম্বর ২০১৩, পৃষ্ঠা ২৪-২৫, আইএসবিএন ৯৭৮-৮১-৭৯৫৫-১৩৫-৬
- ↑ বহ্ণিহোত্রী হাজরা (২০১৭)। গল্প নয়, সত্যি। হাওড়া: সরেজমিনে, ২বর্ষ। পৃষ্ঠা ২৭।
- ↑ ত্রৈলোক্যনাথ চক্রবর্তী, জেলে ত্রিশ বছর, পাক-ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রাম, ধ্রুপদ সাহিত্যাঙ্গণ, ঢাকা, ঢাকা বইমেলা ২০০৪, পৃষ্ঠা ১৯৭।
[৫] অগ্নিরূপ অনুরূপ। কৃষ্ণেন্দু দেব। জয়ঢাক প্রকাশন