আত্রাই উপজেলা

নওগাঁ জেলার একটি উপজেলা

আত্রাই বাংলাদেশের নওগাঁ জেলার অন্তর্গত একটি উপজেলা। ১৯২৬ সালে আত্রাই থানা গঠিত হয়। উপজেলায় রূপান্তরিত হয় ১৯৮৩ সালের ১ আগস্ট।

আত্রাই
উপজেলা
মানচিত্রে আত্রাই উপজেলা
মানচিত্রে আত্রাই উপজেলা
স্থানাঙ্ক: ২৪°৩৬′৪৮″ উত্তর ৮৮°৫৮′১২″ পূর্ব / ২৪.৬১৩৩৩° উত্তর ৮৮.৯৭০০০° পূর্ব / 24.61333; 88.97000 উইকিউপাত্তে এটি সম্পাদনা করুন
দেশবাংলাদেশ
বিভাগরাজশাহী বিভাগ
জেলানওগাঁ জেলা
আয়তন
 • মোট২৮৪.১৮ বর্গকিমি (১০৯.৭২ বর্গমাইল)
জনসংখ্যা (২০১১)[]
 • মোট২,০০,৬৩৪
 • জনঘনত্ব৭১০/বর্গকিমি (১,৮০০/বর্গমাইল)
সাক্ষরতার হার
 • মোট৪৫%
সময় অঞ্চলবিএসটি (ইউটিসি+৬)
প্রশাসনিক
বিভাগের কোড
৫০ ৬৪ ০৩
ওয়েবসাইটদাপ্তরিক ওয়েবসাইট উইকিউপাত্তে এটি সম্পাদনা করুন

অবস্থান ও আয়তন

সম্পাদনা

উত্তর গোলার্ধে প্রায় ২৪ ডিগ্রি ৩২ মিনিট হতে ২৪ ডিগ্রি ৪২ মিনিট উত্তর এবং ৮৮ ডিগ্রি ৪৯ মিনিট হতে ৮৯ ডিগ্রি ০৬ মিনিট পূর্ব দ্রাঘিমাংশের মধ্যে অবস্থিত। এ উপজেলার উত্তরে রাণীনগর উপজেলামান্দা উপজেলা, দক্ষিণে নাটোর জেলার নাটোর সদর উপজেলা, পূর্বে নাটোর জেলার সিংড়া উপজেলা, পশ্চিমে রাজশাহী জেলার বাগমারা উপজেলা। চারটি অঞ্চল নিয়ে গঠিত। মিশ্র বরেন্দ্র, নিম্ন অঞ্চল, তিস্তা পলল ভূমি আত্রাই পলল ভূমি হিসেবে ভৌগলিকভাবে পরিচিত।[]

প্রশাসনিক এলাকা

সম্পাদনা

আত্রাই উপজেলার ইউনিয়নসমূহ হল -

জনসংখ্যার উপাত্ত

সম্পাদনা

মোট জনসংখ্যার ২,০০,৬৩৪ জন। পুরুষ ৯৯,৭৯৯ জন ও মহিলা ১,০০,৮৩৫ জন। জনসংখ্যার ঘনত্ব : ৬৭৯ জন (প্রতি বর্গ কিলোমিটার) (২০১১ সালের আদমশুমারী অনুযায়ী)। মোট ভোটার সংখ্যা : ১,২৭,০০০ (পুরুষ - ৬২,০০০ এবং মহিলা - ৬৫,০০০)।

শিক্ষা প্রতিষ্ঠান

সম্পাদনা

শিক্ষার হার ৪৭.৪% (পুরুষ ৪৯.৯%, মহিলা ৪১.৯%)। সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় আছে ১৩০ টি, মাদ্রাসা ১৫ টি, মাধ্যমিক স্কুল ৩৭ টি, কলেজের ১২ টি।

উপজেলার ঐতিহ্য ও দর্শনীয় স্থান

সম্পাদনা
  • বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন (জুন ২০১৪)। "এক নজরে আত্রাই"। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। ৮ এপ্রিল ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৯ জুলাই ২০১৪ 
  • বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন (জুন ২০১৪)। "ভৌগোলিক পরিচিত"। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। ১০ এপ্রিল ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৯ জুলাই ২০১৪ 
  • বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন (জুন ২০১৪)। "ইউনিয়নসমূহ"। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। ৮ এপ্রিল ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৯ জুলাই ২০১৪ 
  • রবি ঠাকুরের কাঁচারী বাড়ী

    আত্রাই উপজেলায় মনিয়ারী ইউনিয়নে রবীন্দ্র স্মৃতি বিজড়িত পতিসর নামক স্থানে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের রবীন্দ্র কাঁচারী বাড়ি একটি অন্যতম প্রাচীন ঐতিহ্য। ভোঁপাড়া ইউনিয়নের আহসানগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশনের পূর্ব পার্শ্বে মহাত্না গান্ধী পরিচালিত খাদি প্রতিষ্ঠান চালু করে নায্য মূল্যের দোকান চালু করেছিলেন। বর্তমানে সেখানে তৎকালীন তৈরি টিনের ঘরটি কালের স্মৃতি বহন করছে।

    • বিশা ইউনিয়নের ইসলামগাঁথী গ্রামে আত্রাই নদীর তীরে অবস্থিত পাঁচশ বছরের অধিক সময়ের প্রাচীন মসজিদটির সঠিক ইতিহাস অদ্যাবধি জানা সম্ভব হয়নি। মসজিদটির স্থাপত্য শৈলিতে অনন্য। প্রাচীন এই মসজিদ সংলগ্ন একটি মাঠও বিদ্যমান।

    অর্থনীতি

    সম্পাদনা
    • প্রাকৃতিক সম্পদ -

    আত্রাই উপজেলায় বিশেষ কোন প্রাকৃতিক সম্পদ পাওয়া যায় নি। তবে খাদ্য শস্য হিসেবে ধান, গম, ভুট্টার ব্যাপক প্রসার রয়েছে। খাদ্য শস্যের দিক দিয়ে অত্র উপজেলা স্বয়ং সম্পূর্ণ। খাল বিলে প্রচুর পরিমাণ (দেশীয়) মাছ পাওয়া যায়।

    • ব্যবসা-বাণিজ্য -

    এই উপজেলায় প্রায় শতাধিক চাউল কল ও ইট ভাটা রয়েছে, ফলে ব্যবসা বাণিজ্যের জন্য এটি একটি প্রসিদ্ধ স্থান। এছাড়াও আত্রাই নদীর তীরে গড়ে উঠেছে বিশাল মাছ বাজার। দেশের বিভিন্ন শহরে এখান থেকে মাছ সরবরাহ করা হয়।

    এখানকার নদ-নদী, খাল-বিল আত্রাইবাসীর ভাগ্যের সাথে ওতোপ্রতোভাবে জড়িত। আত্রাই এর নদ- নদী ঐতিহ্যের স্বাক্ষর বহন করে। আত্রাই নদী, ছোট যমুনা ও রবীন্দ্রনাথের নাগর নদী উল্লেখযোগ্য। বিশেষ করে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর চলনবিল হয়ে আত্রাই নদীর মধ্য দিয়ে নাগর নদীতে এসে বজরার নঙ্গর ফেলত। এই নদী পথে তিনি অনেকবার আত্রাই এসেছেন।

    এছাড়া অষ্টাদশ শতাব্দীর মাঝামাঝি এই এলাকায় খাজনা আদায়ের লক্ষ্যে নবাব আলীবর্দি খাঁ বাঈশ দাড়েঁর নৌকা নিয়ে আত্রাই নদী হয়ে এখানে এসেছিলেন। বর্তমানে এর ধ্বংসাবশেষ বিলুপ্ত। তবে ওই তাবুকে কেন্দ্র করে আত্রাই এর সেই গ্রামটির নামকরণ করা হয়েছে নবাবের তাম্বু।[]

    একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ

    সম্পাদনা

    ১৯৭১ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর বান্দাইখাড়া গ্রামে পাকবাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের লড়াই হয়। এ গ্রামের অনেক ঘরবাড়িতে পাকবাহিনী অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট করে। এছাড়া নিরীহ গ্রামবাসিদের নির্বিচারে হত্যা করে। মুক্তিযোদ্ধারা তারানগর, ঘাউল্যা নামক স্থানে পাকবাহিনীর ওপর অতর্কিত আক্রমণ চালিয়ে তাদের ৯টি নৌকা ডুবিয়ে দেয়। মুক্তিযুদ্ধে এলাকার অনেক মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন।

    তথ্যসূত্র

    সম্পাদনা

    বহিঃসংযোগ

    সম্পাদনা