আমতলী উপজেলা
আমতলী বাংলাদেশের বরগুনা জেলার অন্তর্গত একটি উপজেলা। এটি জেলার বৃহত্তম উপজেলা।
আমতলী | |
---|---|
উপজেলা | |
মানচিত্রে আমতলী উপজেলা | |
স্থানাঙ্ক: ২২°৭′৪৫.৮৪″ উত্তর ৯০°১৩′৪৪.০৪″ পূর্ব / ২২.১২৯৪০০০° উত্তর ৯০.২২৮৯০০০° পূর্ব | |
দেশ | বাংলাদেশ |
বিভাগ | বরিশাল বিভাগ |
জেলা | বরগুনা জেলা |
আয়তন | |
• মোট | ৩৮৬.৯৩ বর্গকিমি (১৪৯.৩৯ বর্গমাইল) |
জনসংখ্যা (২০১১) | |
• মোট | ২,৭০,৮০২ |
• জনঘনত্ব | ৭০০/বর্গকিমি (১,৮০০/বর্গমাইল) |
সাক্ষরতার হার | |
• মোট | ৮২% |
সময় অঞ্চল | বিএসটি (ইউটিসি+৬) |
প্রশাসনিক বিভাগের কোড | ১০ ০৪ ০৯ |
ওয়েবসাইট | দাপ্তরিক ওয়েবসাইট |
অবস্থান ও আয়তন
সম্পাদনাআমতলী উপজেলা বরগুনা জেলার অর্ন্তগত। এ উপজেলার উত্তরে পটুয়াখালী সদর উপজেলা, দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর, পূর্বে পটুয়াখালী জেলার গলাচিপা উপজেলা ও কলাপাড়া উপজেলা, পশ্চিমে বরগুনা সদর উপজেলা ও পটুয়াখালী জেলার মির্জাগঞ্জ উপজেলা। [১]
ইতিহাস
সম্পাদনালোকশ্রুতি অনুযায়ী সুদূর অতীতকালে পায়রা নদীর তীরে বহু আম গাছ ছিল। মাঝিরা সেই আম গাছের সাথে তাদের নৌকা বাঁধতো। নৌকা বাঁধার স্থানটি কালে কালে হয়ে যায় আমতলা, সেখান থেকে আমতলী।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]
অন্যদিকে, পায়রা নদীর একটি প্রবাহ আমতলী বন্দরের পূর্ব দিক দিয়ে উত্তর থেকে দক্ষিণ দিকে আমতলী নদী নামে প্রবাহিত হয়েছিল। নৌযান চলাচল মুখরিত আমতলী নদীর তীরে পাঠান আমলে গড়ে ওঠেছিল জনবসতি ও বাণিজ্যকেন্দ্র। মোগল যুগে পায়রা নদীতে মগ, পর্তুগিজদের লুণ্ঠন ও অত্যাচার বেড়ে গেলে অপেক্ষাকৃত নিরাপদ আমতলী নদীই ছিল একমাত্র ভরসা। এ নদীর নাম অনুসারে এলাকার নাম হতে পারে আমতলী।
আবার, অতীতে আমতলী যখন অরণ্য আচ্ছাদিত হয়ে দুর্গম এলাকা হিসেবে ছিল তখন আরাকান থেকে আগত জনৈক আমপারিট নামক রাখাইন দলপতি ইংরেজ সরকার থেকে ইজারা নিয়ে আমতলী প্রথম আবাদ শুরু করে ছিলেন। সম্ভবতঃ আমপারিট নামক রাখাইন অধিবাসীর নাম অনুসারেও এলাকাটির নাম আমতলী হতে পারে।
দক্ষিণ-পূর্ব বাংলায় মুসলিম আধিপত্য বিস্তারকালে রাজা দনুজমর্দন শাহদেব কর্তৃক ‘‘চন্দ্রদ্বীপ’’ নামে একটি স্বাধীন রাজ্য প্রতিষ্ঠিত হয়। চতুর্দশ শতাব্দী পর্যন্ত এ অঞ্চল চন্দ্রদ্বীপ নামে প্রসিদ্ধি লাভ করে। অতি প্রাচীন বৈদেশিক মানচিত্রে চন্দ্রদ্বীপ নাম বড় অক্ষরে অঙ্কিত দেখা যায়। ১৭৯৬ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত এ জেলা বাকলা-চন্দ্রদ্বীপ নামে পরিচিত ছিল। পরবর্তীতে ১৭৯৭ ঢাকা জেলার দক্ষিণাঞ্চল নিয়ে বাকেরগঞ্জ, ১৮০১ বাকেরগঞ্জ জেলাকে বরিশালে (গিরদে বন্দর) স্থানান্তরিত করা হয়।
১৮১২ সালে এ জেলায় ১৫টি থানা ছিল। পাকিস্তান আমলে বরিশাল জেলায় মোট ৬টি মহকুমা ছিল। ১৯৬৯ সালে পটুয়াখালী ও বরগুনা মহাকুমার সমন্বয়ে পটুয়াখালীতে একটি জেলা গঠন করা হয়। পরবর্তীতে প্রশাসনিক পূনর্বিন্যাসের ফলে ১৯৮৪ সালে বরগুনা একটি নতুন জেলা হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করে।
১৮৫৯ সালে বর্তমানে আমতলী, বরগুনা ও কলাপাড়াকে নিয়ে গুলিশাখালী থানা প্রতিষ্ঠা করা হয়। সদর দপ্তর স্থাপন করা হয় পায়রা নদীর পাড়ে গুলিশাখালী গ্রামে। ১৮৭১ সালে পটুয়াখালীকে মহকুমায় রূপান্তর করা হলে গুলিশাখালীকে তার অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ১৯০১ সালে নদীভাঙনের কারণে থানা সদর বর্তমান আমতলী এ, কে, স্কুল সংলগ্ন দক্ষিণ পাশে স্থানান্তর করা হয়। ১৯৪৪ সালে গুলিশাখালী আমতলী থানায় রূপান্তরিত হয়। ১৯৮২ সালে আমতলী থানা উপজেলার রূপ লাভ করে।
উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্ব
সম্পাদনা- মফিজ উদ্দিন তালুকদার, সাবেক সংসদ সদস্য
- নিজাম উদ্দীন আহমেদ, সাবেক সংসদ সদস্য
- মজিবর রহমান তালুকদার, সাবেক সংসদ
- অধ্যক্ষ সামসুল আলম তালুকদার, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও রাজনীতিবিদ
- মতিয়ার রহমান তালুকদার, সাবেক সংসদ সদস্য
- আবদুল মজিদ মল্লিক, সাবেক সংসদ সদস্য
প্রশাসন
সম্পাদনাআমতলী উপজেলা ১টি পৌরসভা, ৭টি ইউনিয়ন, ৬৬টি মৌজা ও প্রায় ২০০টি গ্রাম নিয়ে গঠিত। এর আয়তন প্রায় ৬৯৫ বর্গ কিলোমিটার তন্মধ্যে জলাশয় ও প্রশস্ত নদী প্রায় ২১২ বর্গ কিলোমিটার।
আমতলী উপজেলায় বর্তমানে ১টি পৌরসভা ও ৭টি ইউনিয়ন রয়েছে। সম্পূর্ণ উপজেলার প্রশাসনিক কার্যক্রম আমতলী থানার আওতাধীন।
উপজেলা চেয়ারম্যান
সম্পাদনা- সামসুল আলম তালুকদার (১৯৮৫ – ১৯৯০)
- সালাউদ্দিন আহমেদ তালুকদার (২০০৯ – ২০১২)
- বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট আবুল কালাম শামস-উদ্দিন (সানু কমান্ডার) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান (২০১২ - ২০১৪)
- আলহাজ্ব জি. এম দেলোয়ার হোসেন (২০১৪ – ২০১৯)
- আলহাজ্ব গোলাম সরোয়ার ফোরকান (২০১৯ – ২০২১)
- এডভোকেট এম. এ. কাদের মিয়া (২০২৩পূঃনিঃ-বর্তমান)
জনসংখ্যার উপাত্ত
সম্পাদনা২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী আমতলী উপজেলার মোট জনসংখ্যা ২,৭০,৮০২ জন। এর মধ্যে পুরুষ ১,৩২,১৬৮ জন এবং মহিলা ১,৩৮,৬৩৪ জন। মোট পরিবার ৬৩,২১২টি।[২]
শিক্ষা
সম্পাদনা২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী আমতলী উপজেলার সাক্ষরতার হার ছিল ৫২.৮%।[২]
এ উপজেলায় রয়েছে:
- সরকারি কলেজ ১টি
- ডিগ্রি কলেজ ৩টি
- উচ্চ মাধ্যমিক কলেজ ৪টি
- কারিগরি কলেজ ১টি
- কৃষি কলেজ ১টি
- সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ১টি
- মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৩৪টি
- জুনিয়র বিদ্যালয় ৩২টি
- সিনিয়র মাদ্রাসা ৪টি
- আলিম মাদ্রাসা ৬টি
- দাখিল মাদ্রাসা ৩০টি
- সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ১০১টি
- বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ১২৫টি
- কমিউনিটি প্রাথমিক বিদ্যালয় ১৬টি
- এবদেতায়ী মাদ্রাসা ৪৩টি
দর্শনীয় স্থান
সম্পাদনা- গাজী কালুর দরগাহ
- খেকুয়ানী তালুকদার বাড়ি জামে মসজিদ
- চাওড়া মাটির দুর্গ
- পায়রা নদীর পাড়
- বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য
- হলদিয়া ছত্তার ও ওদুদ মঞ্জিল
- পৌরসভার লেক
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ "এক নজরে আমতলী উপজেলা"। উপজেলা তথ্য বাতায়ন। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। জুন ২০১৪। ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৫।
- ↑ ক খ "ইউনিয়ন পরিসংখ্যান সংক্রান্ত জাতীয় তথ্য" (পিডিএফ)। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। Archived from the original on ৮ ডিসেম্বর ২০১৫। সংগ্রহের তারিখ ২৬ অক্টোবর ২০১৯।
বহিঃসংযোগ
সম্পাদনাবরিশাল বিভাগের স্থান বিষয়ক এই নিবন্ধটি অসম্পূর্ণ। আপনি চাইলে এটিকে সম্প্রসারিত করে উইকিপিডিয়াকে সাহায্য করতে পারেন। |