নকলা উপজেলা
নকলা উপজেলা বাংলাদেশের শেরপুর জেলার একটি প্রশাসনিক এলাকা। এই উপজেলার উপর দিয়ে বয়ে চলছে পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদ।
নকলা | |
---|---|
উপজেলা | |
মানচিত্রে নকলা উপজেলা | |
স্থানাঙ্ক: ২৪°৫৯′ উত্তর ৯০°১১′ পূর্ব / ২৪.৯৮৩° উত্তর ৯০.১৮৩° পূর্ব | |
দেশ | বাংলাদেশ |
বিভাগ | ময়মনসিংহ বিভাগ |
জেলা | শেরপুর জেলা |
আয়তন | |
• মোট | ১৭৪.৮০ বর্গকিমি (৬৭.৪৯ বর্গমাইল) |
জনসংখ্যা (২০১১)[১] | |
• মোট | ১,৯৮,০৮১ |
• জনঘনত্ব | ১,১০০/বর্গকিমি (২,৯০০/বর্গমাইল) |
সাক্ষরতার হার | |
• মোট | ৭৫.৫৩ % |
সময় অঞ্চল | বিএসটি (ইউটিসি+৬) |
প্রশাসনিক বিভাগের কোড | ৩০ ৮৯ ৬৭ |
ওয়েবসাইট | দাপ্তরিক ওয়েবসাইট |
অবস্থান ও আয়তন
সম্পাদনাএই উপজেলার ভৌগোলিক অবস্থান ২৪°৫৯′০০″ উত্তর ৯০°১১′০০″ পূর্ব / ২৪.৯৮৩৩° উত্তর ৯০.১৮৩৩° পূর্ব। এর উত্তরে নালিতাবাড়ী উপজেলা, দক্ষিণে জামালপুর জেলার জামালপুর সদর উপজেলা ও ময়মনসিংহ জেলার ময়মনসিংহ সদর উপজেলা, পূর্বে ময়মনসিংহ জেলার ফুলপুর উপজেলা, পশ্চিমে শেরপুর সদর উপজেলা।
প্রশাসনিক এলাকা
সম্পাদনানকলা উপজেলায় বর্তমানে ১টি পৌরসভা ও ৯টি ইউনিয়ন রয়েছে। সম্পূর্ণ উপজেলার প্রশাসনিক কার্যক্রম নকলা থানার আওতাধীন।[২]
ইতিহাস
সম্পাদনা“নকলা” নামটি এসেছে আরবী ‘নাখলা’ শব্দ থেকে। নাখলা শব্দের অর্থ খেজুরের বাগান। এই আরবী শব্দটি থেকে অনুমিত হয়, এটি একটি প্রাচীন জনপদ। তবে এ অঞ্চলটিতে হিন্দুদের আধিক্য ছিল। পরবর্তীতে তারা স্থানান্তরিত হয়েছে অথবা প্রতিবেশী দেশ ভারতে চলে গেছে। বলাবাহুল্য, নকলা থানা স্থাপনের পূর্বে প্রসিদ্ধ ব্যবসায় কেন্দ্র ও নৌ বন্দর চন্দ্রকোনাকে থানা করার পরিকল্পনা ছিল ব্রিটিশ সরকারের। কারণ, চন্দ্রকোনায় ছিল মহারাজ শশীকান্ত চৌধুরী ও জমিদার গোপাল দাস চৌধুরীর দুটি কাঁচারী। যেখানে প্রজাদের নিকট থেকে খাজনা আদায় করা হতো। ১৯১৯ সালে প্রতিষ্ঠিত প্রাচীন বিদ্যাপিঠ চন্দ্রকোনা রাজলক্ষী উচ্চ বিদ্যালয়, সূর্যবালা দেবী হাসপাতাল, পোস্ট অফিস এবং বড় বড় পাঠ ক্রয় কেন্দ্রসহ শিক্ষা ও সংস্কৃতি চর্চার প্রাণ কেন্দ্র ছিল চন্দ্রকোনা। ব্রহ্মপুত্র, দশানি আর মৃগী অববাহিকায় চন্দ্রকোনা নৌ বন্দর থেকে কলকাতা ও বিলেতে ডান্ডির সাথে সরাসরি নৌ যোগাযোগ ছিল। ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে আন্দামান ফেরত বিপ্লবী নগেন্দ্র চন্দ্র মোদক, বিপ্লবী যোগেশ চন্দ্রকর্মকার এবং বিপ্লবী মন্মথ দে চন্দ্রকোনায় জন্মেছিলেন।
মোঘল আমলে নকলা উপজেলার নারায়নখোলা গ্রামে সেনা ছাউনী ছিল। ব্রিটিশ আমলে পাঠাকাটা ইউনিয়নে ছিল নীল কুঠি। তবে এর সামান্যতম অস্তিত্বও এখন আর অবশিষ্ট নেই। অস্তিত্ব নেই অন্য কোনা প্রাচীন নিদর্শনেরও।
মুক্তিযুদ্ধ
সম্পাদনা১৯৭১ সালের ৯ ডিসেম্বর নকলা মুক্ত হয় পাকিস্তানি হায়েনাদের হাত থেকে।
প্রশাসনিক এলাকা
সম্পাদনা১টি পৌরসভা আর ৯ টি ইউনিয়ন পরিষদ নিয়ে নকলার প্রশাসনিক অঞ্চল গঠিত।
- পৌরসভা - নকলা;
- ইউনিয়ন - গনপদ্দী, নকলা, উরফা, গৌড়দ্বার, বানেশ্বর্দী, পাঠাকাটা, টালকী, চর অষ্টধর এবং চন্দ্রকোনা।
শিক্ষা
সম্পাদনাএখানে শিক্ষার গড় হার ৭৫.৫৩%; পুরুষদের মধ্যে সাক্ষরতার হার ৮১.৩০% এবং মহিলাদের মধ্যে ৭১.৬২%। এখানে রয়েছেঃ
- কলেজ - ৪টি,
- টেকনিক্যাল কলেজ - ১টি,
- মাধ্যমিক বিদ্যালয় - ৩৩টি,
- প্রাথমিক বিদ্যালয় - ৯৭টি,
- মাদ্রাসা - ১৮টি।
থানার সবচেয়ে নামকরা স্কুল নকলা সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়
স্বাস্থ্য
সম্পাদনাএখানে রয়েছে একটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স।
অর্থনীতি
সম্পাদনানকলার অর্থনীতি কৃষিনির্ভর। এখানে প্রচুর পরিমাণে ধান, পাট, আলু, শসা এবং অন্যান্য মৌসুমি সবজি ফলে। নকলায় অধিকাংশ জমি বেলে এবং বেলে দোঁয়াশ হওয়ায় এখানে আলু, বাদামও হয় প্রচুর।
যোগাযোগ ব্যবস্থা
সম্পাদনানকলার যোগাযোগ ব্যবস্থা অনেক ভালো, ঢাকা মহাখালী হতে বাস দিয়ে ময়মনসিংহ হয়ে খুব সহজে নকলা আসা যায়
উল্লেখযোগ্য ব্যক্তি
সম্পাদনা- নাদেরুজ্জামান খান, রাজনীতিবিদ, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক।
- জাহেদ আলী চৌধুরী, রাজনীতিবিদ,শিল্পপতি ও সাবেক হুইপ(জাতীয় সংসদ)
- মতিয়া চৌধুরী, সংসদ সদস্য (বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ)
দর্শনীয় স্থান
সম্পাদনা- শিমুলতলা - দরবারচর,নারায়ণখোলা
- পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদ - নারায়ণখোলা, কাজাইকাটা, চন্দ্রকোনা
- সুইচ গেট - চন্দ্রকোনা
- ব্রহ্মপুত্র নদ ব্রীজ- চন্দ্রকোনা বাজার
- কলাপাড়া প্রাচীন খেলার মাঠ
- গাজির দরগাহ - রুনিগাও
- মুন্সি দাদার মাজার - নয়াবাড়ি, বিবিরচর
- রাবার ড্যাম - তারাকান্দা, উরফা
- টাইগার ব্রীজ- উরফা
- বাইপাস ব্রীজ- নকলা
আরও দেখুন
সম্পাদনাতথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন (জুন ২০১৪)। "এক নজরে নকলা উপজেলা"। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। ২৩ অক্টোবর ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১০ জুলাই ২০১৫।
- ↑ "ইউনিয়নসমূহ - নকলা উপজেলা"। nokla.sherpur.gov.bd। জাতীয় তথ্য বাতায়ন। ২৭ অক্টোবর ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ জানুয়ারি ২০২১।