ব্যাপন

রাসায়নিক প্রক্রিয়া

ব্যাপন হচ্ছে বায়বীয় পদার্থের স্বতঃস্ফূর্তভাবে অধিক ঘনত্বের অঞ্চল থেকে কম ঘনত্বের অঞ্চলে যাওয়ার প্রক্রিয়া। এছাড়াও 'স্বাভাবিক বায়ুমন্ডলীয় তাপ ও চাপে কোনো বস্তুর কঠিন,তরল কিংবা বায়বীয় মাধ্যমে স্বতঃস্ফূর্ত ও সমানভাবে ছড়িয়ে পড়ার ঘটনাকে ব্যাপন (Diffusion) বলে। যেমন - ঘরের এক কোণে সেন্টের বোতল খোলা মুখে রাখলে তার থেকে সেন্টের সুগন্ধ পুরো ঘরে ছড়িয়ে পড়ে, এটি হলো গ্যাসীয় পদার্থের ব্যাপন। আবার তরল পানিতে কয়েক ফোটা তরল নীল বা তুঁতের দ্রবণ মেশানো হলে তা কিছুক্ষনের মধ্যেই পুরো পানিকে নীল বর্ণে পরিণত করে, এটিও ব্যাপনের উদাহরণ তবে তরল পদার্থের ৷ আর চিনির দ্রবণ হলো কঠিন পদার্থের ব্যাপন। (যেহেতু চিনি কঠিন পদার্থ)

ব্যাপন
তরলের ব্যাপন

সকল পদার্থই ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অণুর সম্মিলনে গঠিত। এইসব অণুসমূহ সর্বদা গতিশীল অবস্থায় বিরাজমান। তরল ও গ্যাসীয় পদার্থের অণুসমূহের চলন অত্যন্ত দ্রুত এবং ক্রমান্বয়ে অণুসমূহ বেশি ঘনত্বের স্থান হতে কম ঘনত্বের স্থানের দিকে ছড়িয়ে পড়তে থাকে। অণুগুলোর চলন ততক্ষণ পর্যন্ত শেষ হয় না যতক্ষণ না উভয় পদার্থের অণুগুলোর ঘনত্ব সমান হয়। অণুগুলোর ঘনত্ব সমান হওয়া মাত্রই ব্যাপন প্রক্রিয়া বন্ধ হয়ে যায়। কোন দুইটি স্থানে তাপমাত্রা, বায়ুমণ্ডলীয় চাপ ও অণুর ঘনত্ব সমান থাকলে সেখানে ব্যাপন ঘটবে না কারণ সেখানে গতিশক্তির ভিন্নতা থাকবে না। পক্ষান্তরে, যদি তাপ ও চাপগত পার্থক্য নাও থাকে তবুও শুধুমাত্র ঘনত্বের ভিন্নতার ভিত্তিতে ব্যাপন হবে কারণ গতিশক্তির ভিন্নতা থাকবে। আর কোনো বস্তুর অধিক ঘনত্বের স্থান থেকে কম ঘনত্বের স্থানের দিকে ছড়িয়ে পড়ার প্রচ্ছন্ন ক্ষমতার হারকে ব্যাপনের হার বা ব্যাপন হার (The rate of Diffusion) বলে ৷

"ব্যাপন প্রক্রিয়া অ্যানিমেশন"

১. বস্তুর ভর ও তাপমাত্রা : ব্যাপ‌নের হার বস্তুর ভ‌রের উপর নির্ভরশীল । ভর যত বে‌শি হ‌বে বস্তুুর ব্যাপ‌নের হার তত কম হ‌বে। অর্থাৎ, ব্যাপন হার বস্তুর ভরের (মোলার ভর) ব্যস্তানুপাতিক। অন্যদিকে তাপমাত্রা বেশি থাকলে ব্যাপনের হার বেড়ে যায়, কারণ ব্যাপনে অংশগ্রহণকারী অণুগুলোর প্রবাহ ক্ষমতা বা গতিশক্তি বেড়ে যায়।


২. পদার্থের অণুর ঘনত্ব: যে পদার্থের ব্যাপন ঘটবে সে পদার্থের অণুর ঘনত্ব বেশি থাকলে ব্যাপন হার বেশি হবে, অণুর ঘনত্ব কম হলে ব্যাপন হার কম হবে।
৩. মাধ্যমের ঘনত্ব: যে মাধ্যমে ব্যাপন ঘটবে সে মাধ্যমের ঘনত্ব বেশি হলে ব্যাপন হার কম হবে; মাধ্যমের ঘনত্ব কম হলে ব্যাপন হার বেশি হবে।
৪. বায়ুমণ্ডলের চাপ: বায়ুমণ্ডলের চাপ বাড়লে ব্যাপন হার কমবে, বায়ুমণ্ডলের চাপ কম হলে ব্যাপন হার বাড়বে।
৫. ঘনত্বের তারতম্য: ঘনত্বের তারতম্য যত বেশি হয় তত তাড়াতাড়ি পদার্থের কণাগুলো ছড়িয়ে পড়ে। সাধারণত একই সময়ে এবং একই স্থানে পরিবেশের তাপমাত্রা ও বায়ুমণ্ডলের চাপ সমান থাকে, সেক্ষেত্রে ব্যাপন পদার্থের ঘনত্ব এবং মাধ্যমের ঘনত্বই ব্যাপন নিয়ন্ত্রণকারী প্রভাবক হয়ে দাঁড়ায়। মাধ্যম ও ব্যাপন পদার্থ (যেমন-বেলুন ভর্তি বাতাস এবং চারপাশের বাতাস) যদি একই হয় তাহলে ততক্ষণ পর্যন্ত ব্যাপন ঘটবে যতক্ষণ পর্যন্ত দুটোর ঘনত্ব সমান না হয়।

[] []

(diffusion)-ব্যাপন শব্দটি লাতিন শব্দ (diffundere) থেকে এসেছে, যার অর্থ "ছড়িয়ে পড়া"
এটি কণার এলোমেলো চলনের উপর নির্ভর করে এবং বাল্ক মোশন এর সরাসরি প্রভাব ছাড়াই মিশ্রণ বা ওজন পরিবাহিত হয় । বাল্ক মোশন বা বাল্ক ফ্লো এর বৈশিষ্ট্য হলো উভয় দিকে পরিবহন ঘটা । এই সংমিশ্রণ বর্ণনা করার জন্য "পরিবাহ" শব্দটি ব্যবহৃত হয়।

যদি কোনো প্রসারণ প্রক্রিয়াকে ফিকের মতবাদ দ্বারা বর্ণনা করা যায় তবে এটিকে একটি সাধারণ ব্যাপন (বা ফিকিয়ান ডিফিউশন) বলা হয়; অন্যথায়, এটিকে একটি ব্যতিক্রমী ব্যাপন (বা নন-ফিকিয়ান ডিফিউশন) বলা হয়।

ব্যাপনের মাত্রা সম্পর্কে কথা বলার সময় ২টি ভিন্ন স্কেল, দুটি পৃথক পরিস্থিতিতে ব্যবহার করা হয়:
১. ইমালসিভ পয়েন্টে ব্রাউনিয়ান গতি (উদাহরণস্বরূপ, সুগন্ধির একক স্প্রে) - যা মুলবিন্দু থেকে দূরত্বের বর্গমূল। ফিকিয়ান ব্যাপন = । ফিকিয়ান ব্যাপনে হলো ব্রাউনিয়ান গতির মাত্রা;

২. এক মাত্রার নির্দিষ্ট ঘনত্বের জন্য ব্যাপনের দৈর্ঘ্য। ফিকিয়ান বিস্তারে, এটি হলো:

ব্যাপন বনাম বাল্ক ফ্লো

সম্পাদনা

বাল্ক ফ্লো হলো চাপের পার্থক্যের কারণে পুরো শরীরের পদার্থের চলাচল / প্রবাহ (উদাহরণস্বরূপ, একটি ট্যাপ থেকে জল বেরিয়ে আসে)। অন্যদিকে ব্যাপন একটি দেহের অভ্যন্তরে ভিন্ন ঘনত্বের পদার্থের ক্রমচলন / পরিবহন । যেখানে বাল্ক ফ্লো এবং ব্যাপন উভয়ই ঘটে, এমন একটি প্রক্রিয়ায় ঘনত্বের পার্থক্যের কারণে পদার্থের চলন হয় না বললেই চলে, যেমন : মানুষের শ্বাস-প্রশ্বাস ।

[]

প্রথমে বাল্ক ফ্লো হয়। ফুসফুসের ভিতরে অনেকগুলো গহব্বর রয়েছে। এই গহবর গুলোতে বাহ্যিক শ্বসন হয়ে থাকে। এই প্রসারণটি ফুসফুসের অ্যালভিওলাস এর আয়তন বাড়ায় , যা অ্যালভিওলাই গুলোতে বাতাসের চাপ হ্রাস করে। এর ফলে ফুসফুসের বাইরের বাতাস ও ভিতরে বাতাসের মধ্যকার চাপের পার্থক্য সৃষ্টি হয়। বাতাস যেহেতু সবস্থানে চাপের ভারসাম্য বজায় রাখতে চায় তাই বাইরে থেকে বাতাস অ্যালভিওলাই এর ভিতর ঢুকে পড়ে যাতে, উভয়ই স্থানে বাতাসের চাপ সমান হয়। যতক্ষণ পর্যন্ত উভয়েই স্থানে বাতাসের চাপ সমান না হয় ততক্ষণ পর্যন্ত বাল্ক ফ্লো চলতে থাকে।

এরপর শুরু হয় ব্যাপন। বাইরের বাতাসে অক্সিজেনের ঘনত্ব ফুসফুসের ভিতরকার বাতাসে অক্সিজেনের ঘনত্ব থেকে অনেক বেশি হওয়ায়, বাইরের বাতাসের অক্সিজেন ও ফুসফুসের ভিতরকার বাতাসের ও রক্তের (অ্যালভিওলাই এর চারপাশে বেষ্টন করে থাকা অতি ক্ষুদ্র রক্তজালিকা) অক্সিজেন এর মধ্যকার ঘনত্বের পার্থক্য সৃষ্টি হয়। এর ফলে ব্যাপন শুরু হয় ও অক্সিজেন রক্তে মিশে যায়। আবার বাইরের বাতাসে তুলনায় ফুসফুসের ভিতরকার বাতাস ও রক্তের মধ্যকার বাতাসে কার্বন ডাই অক্সাইড এর ঘনত্ব বেশি হওয়ার ফলে একইভাবে কার্বন-ডাই-অক্সাইড রক্ত থেকে বাইরের বাতাসে মিশে যায়। আর এভাবেই অক্সিজেন ও কার্বন ডাই অক্সাইড, শরীরের মধ্যে ও বাইরের বাতাসের মধ্যে চক্রাকারে আদান-প্রদান চলতে থাকে।

এখানে ব্যাপন শেষ হয়ার সাথে সাথে বাল্ক ফ্লো শুরু হয়। যখন অলিন্দে প্রসারণ ঘটে তখন ফুসফুস সংলগ্ন কৌশিক জালিকা থেকে রক্তে এসে অলিন্দে প্রবেশ করে এবং যখন নিলয়ের প্রসারণ ঘটে তখন, অলিন্দ এবং নিলয়ের মধ্যকার চাপের তারতম্য সৃষ্টি হয় ফলে অলিন্দ থেকে রক্ত প্রবেশ নিলয়ে প্রবেশ করে। নিলয় আবার যখন সংকুচিত হয় তখন রক্ত ভিন্ন শিরা-উপশিরার ম্যাধমে সারা দেহে ছড়িয়ে পড়ে। এখানে চাপের তারতম্য ঘটে, যা বাল্ক ফ্লো-এর একটি উদাহরণ

বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যাপনের ব্যবহার

সম্পাদনা
 
Diffusion furnaces used for thermal oxidation

ব্যাপনের ধারণাটি পদার্থবিজ্ঞান, জীববিজ্ঞান ,রসায়ন, অর্থনীতি ,সমাজনীতি(মানুষ, সৃষ্টিশীল চিন্তাভাবনা, পণ্যের দাম ইত্যাদি) ও মনোবিজ্ঞানে খুবই ব্যাপকভাবে আলোচিত এবং ব্যবহৃত হয়। যাইহোক প্রতিটি স্থানেই,পদার্থ বা সংগৃহীত জ্ঞান বেশি ঘনত্বের স্থান থেকে কম ঘনত্বের স্থানের দিকে বা জ্ঞানের সীমাবদ্ধতার স্থান গুলোতে "ছড়িয়ে পড়ে" ।

ব্যাপনের ধারণা ২টি উপায়ে ব্যাখ্যা করা যায়। প্রথমত, ফিক-এর মতবাদের গাণিতিক পদ্ধতি ও সুত্রের মাধ্যমে। দ্বিতীয়ত, কণার গতিপথকে বিশ্লেষণ করে। []

ঘটনাচক্রের অধিক সমন্বিত স্থান থেকে কম সমন্বিত স্থানের দিকে বাল্ক ফ্লো-ছাড়াই ব্যাপন সংগঠিত হয়। ফিকের সুত্র অনুসারে ব্যাপন হলো ঘনত্বের ব্যাস্তানুপাতিক (ঘনত্বের হার বাড়লে, ব্যাপনের হার কমে)। কিছুক্ষণ পরে, ফিকের সুত্রের বিভিন্ন সমীকরণ অনুসারে স্বাভাবিক তাপগতিবিদ্যার এবং ভারসাম্যহীন তাপগতিবিদ্যার সিস্টেমের এন্ট্রপিগুলোর মধ্যে ব্যাপন সংগঠিত হয়।[]

পারমাণবিক পর্যায়ে দেখতে গেলে দেখা যায় যে, পরমাণুগুলোর এলোমেলো চলন এর ফলেই মূলত ব্যাপন সংঘটিত হয়ে থাকে। আণবিক পর্যায়ের ব্যাপনে, পরমাণুগুলো তাপ শক্তির মাধ্যমে নিজে নিজেই সঞ্চালিত হয়। ১৮২৭ সালের রবার্ট ব্রাউন তরলের সাসপেনশন এর ভিতরে পরমাণুগুলোর এলোমেলো চলন আবিষ্কার করেন। তিনিই প্রথম তরলের মধ্যে কণার ব্যাপন আবিষ্কার করেন, যা এতটাই বেশি ছিলো যে যেটা একটি অপটিক্যাল মাইক্রোস্কোপের মাধ্যমেই সেগুলো দেখা যাচ্ছিল। তাঁর এই আবিষ্কারকে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য কনার এই ধরনের গতিকে ব্রাউনীয় গতি বলা হয়। আলবার্ট আইনস্টাইন, ব্রাউনীয় গতি কে আরও বেশি সমৃদ্ধ করেন।[] ব্যাপনের ধারণাটি মূলত এলোমেলোভাবে চলা বা বাড়া কোনো বিষয়ের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়।

রসায়ন এবং পদার্থবিজ্ঞানে ব্যাপনের সংজ্ঞা হলো : তরল বা গ্যাসীয় পদার্থের মধ্যে কঠিন পদার্থের চলন।[] যখন ব্যাপন ঘটে তখন কথাগুলো পাত্রের দেয়ালের সাথে সংঘর্ষের চেয়ে, পরস্পরের মধ্যে সংঘর্ষ বেশি হয়। এমন অবস্থায় অসীমে ব্যাপতা পরম মুক্ত-পথের ব্যাপতার সমানুপাতিক। এক্ষেত্রে ব্যাপন ঘটে শুন্য স্থানের অবস্থান এবং তার আয়তন অনুযায়ী। এবং এটি ঘটে যখন মুক্ত পথ ও শুন্য জায়গার পরিমাণ পরস্পরের সমানুপাতিক হয়। নূডসন ব্যাপনের সময় শূন্য স্থানের পরিমান, তুলনামূলকভাবে আণবিক ব্যাপনের মুক্ত পথের সমান। এ সময়ে কনাগুলোর দেয়ালের সাথে সংঘর্ষ বেড়ে যেতে থাকে এবং ব্যাপনের হারও হ্রাস পেতে থাকে। অবশেষে কনফিগারেশনাল ব্যাপন হয়, যখন কনাগুলোর আয়তন দেয়ালের শুন্য স্থানের আয়তনের এর চেয়ে যথেষ্ট বড় হয়ে যায় এবং ব্যাপতা উল্লেখযোগ্য হারে হ্রাস পেতে থাকে। এবং এক পর্যায়ে ব্যাপতা এত শিথিল হয়ে যায়, যে তা প্রায় থেমে যাওয়ার মতই (কিন্তু ব্যাপতার মান কখনো ০ হয় না,যতক্ষণ পর্যন্ত না উভয় পাশের ঘনত্ব সমান হয়)।

জীববিজ্ঞানীগণ আয়ন বা পরমানুর ব্যাপনের ক্ষেত্রে "জালিকা চলন" বা "জালিকা ব্যাপন কথাটি ব্যবহার করে থাকেন। উধারণস্বরূপ, অক্সিজেন (O2) কোষ ঝিল্লির মধ্য দিয়ে ব্যাপিত হতে থাকে,যতক্ষণ পর্যন্ত বাইরের O2 ঘনত্ব ও কোষের ভিতরের O2 ঘনত্ব সমান হচ্ছে। আর এটা নিয়ে চিন্তিত হওয়ার কিছু নেই কারণ আমাদের কোষের ভিতরকার অক্সিজেন এর ঘনত্ব সবসময় বাইরের অক্সিজেন ঘনত্ব থেকে কম হবে। কারণ কোষ সবসময়ই O2 ব্যবহার করে দেহকে সচল রাখে। কিন্তু কখনো কখনো কোষ কিছু অক্সিজেন ত্যাগ করে, ফলে বাইরে থেকে অধিক পরিমাণ অক্সিজেন এসে কোষের মধ্যে প্রবেশ করে। এখানে কোষের ভিতরে O2 এর নেট ব্যাপন বা জালিকা ব্যাপন হয়ে থাকে। এটি মূল ব্যাপনের নিয়ম না মানলেও, প্রকৃতিতে প্রতিনিয়তই তা ঘটে থাকে।

ব্যাপনের প্রচলিত কিছু সমীকরণ

সম্পাদনা

ব্যাপন প্রবাহ

সম্পাদনা

ব্যাপনের প্রত্যেক মডেল দ্বারাই ব্যাপন প্রবাহকে বর্ণনা করা যায়। প্রবাহ একটি ভেক্টর রাশি, যেখানে   দ্বারা ব্যপনের হার ও পরিমাণকে বোঝায়। ভৌত পদার্থের ব্যাপন   একটি নির্দিষ্ট ক্ষেত্রফল   এর মধ্যে   সময়ে   হলে:   যেখানে,  হলো উৎপন্ন পদার্থ এবং   হলো লিটিল-ও নোট্যাশন। যদি নোট্যাশন(স্বরলিপি) ভেক্টর অঞ্চলে ব্যবহৃত হলে   এবং    

ব্যাপন ফ্লাক্সের মাত্রা হলো :-   এখানে,মিশ্রণে   দ্বারা পরমাণু,অণু,শক্তি ইত্যাদির সংখ্যা এবং   দ্বারা ঘনত্ব বুঝালে সমীকরণটি হবে :  

যেখানে,  হলো কোনো স্থানীয় উৎসের তীব্রতা (উদাহরণস্বরূপ, রাসায়নিক বিক্রিয়ার হার)। ব্যাপনের ক্ষেত্রে, নো-ফ্লাক্স বাউন্ডারি (no-flux boundary) শর্তে, সমীকরণটি হবে :   যেখানে,   হলো স্বভাবিক অবস্থায়   পয়েন্টে সীমারেখার অবস্থান।

ফিকের সূত্র এবং সমীকরণ সমূহ

সম্পাদনা

ফিকের প্রথম সূত্র : ব্যাপন প্রবাহ ঘনীকরণ পার্থক্যের ঋনাত্মক সমানুপাতিক।  

ফিকের দ্বিতীয় সূত্র :  

যেখানে,   হলো ল্যাপ্লেস অপারেটর:  

ব্যাপন এবং তাপীয় ব্যাপনের ক্ষেত্রে ওন্সেজারের সমীকরণ

সম্পাদনা

ফিকের সূত্র দ্বারা কোনো মাধ্যমে মিশ্রনের ব্যাপন ব্যাখ্যা করা যায়। মিশ্রনে উপাদানগুলোর ঘনীভবন হবে অত্যন্ত কম এবং ঘনীভবন পার্থক্য হবে আরও কম। ফিকের সূত্র অনুযায়ী মিশ্রনে ব্যাপনের চালিকা শক্তি হবে পার্থক্যের বিপরীত, 

১৯৩১ সালে লার্স ওন্সেজার[] একাধিক উপাদানের ব্যাপনের একটি সূত্র প্রকাশ করেন :

 

যেখানে,   হলো iতম উপাদানের প্রবাহ।   হলো j উপাদানের থার্মোডাইনামিক বল(শক্তি)

থার্মোডাইনামিক বলের ক্ষেত্রে, পরিবহনের উপায়টি ওন্সেজারই প্রথম প্রকাশ করেন। তিনি শূন্যস্থানে এন্ট্রপি-এর ঘনত্বের পার্থক্য  (এক্ষেত্রে তিনি " বল" বা "চালিকা শক্তি" শব্দটি ব্যবহার করেন) লক্ষ্য করেন :  

যেখানে,   হলো থার্মোডাইনামিক স্থানাংক। তাপ এবং ভরের(পদার্থ) পরিবহনের ক্ষেত্রে  (একক আয়তনে অভ্যন্তরীণ শক্তির পরিমান) এবং   হবে iতম উপাদানটির ঘনত্ব। সংশ্লিষ্ট চালিকাশক্তি হলো শূন্য ভেক্টর :   কারণ,

 

যেখানে T হলো তাপমাত্রা এবং   হলো iতম উপাদানের রাসায়নিক পটেনশিয়াল। এখানে লক্ষ্য করার বিষয় হলো, ব্যাপনের ছাড়িয়ে পড়ার সমীকরণগুলো বাল্ক ফ্লো ছাড়াই মিশ্রণ এবং ভর পরিবহন ব্যাখ্যা করতে পারে। সুতরাং, এক্ষেত্রে, মোট চাপের প্রকরণের ক্ষেত্রগুলি উপেক্ষিত। অর্থাৎ, সামান্য চাপের পার্থক্যের কারণেও ব্যাপন সংঘটিত হতে পারে।

ওন্সেজারের রৈখিক সমীকরণে,থার্মোডাইনামিক বলের ক্ষেত্রে ভারসাম্যের কাছাকাছি কোনো মান নিতে হবে :  

যেখানে পরক্ষভাবে   দ্বারা   এর ভারসাম্য গণনা করা হয়েছে। গতিশক্তির সহগের ম্যাট্রিক্স  , ওন্সাগারের পারস্পরিক সম্পর্ক-এর প্রতিসম এবং এনট্রপি বৃদ্ধির ক্ষেত্রে ধনাত্মক নির্দিষ্ট ম্যাট্রিক্স ব্যবহৃত হয়।

পরিবহনের সমীকরণগুলো হলো :   এখানে সূচক ij,k = ০,১,২,৩... যা অভ্যন্তরীণ শক্তি ও উপাদানের সাথে সম্পর্কযুক্ত। ৩য় বন্ধনী-এর( [ ] ) অন্তর্গত রাশিটি হলো ব্যাপনের ম্যাট্রিক্স  (i,k > 0), থার্মোডিফিউশন সহগ (i > 0, k = 0 or k > 0, i = 0) এবং তাপ পরিবাহিতা সহগ (i = k = 0)

সমতাপক প্রক্রিয়ায় T হলো ধ্রুবক। থার্মডাইনামিক পটেনশিয়ালের সাথে মুক্ত শক্তি (মুক্ত এন্ট্রপি) সম্পর্কযুক্ত। সমতাপীয় ব্যাপনের ক্ষেত্রে থার্মডাইনামিক চালিকাশক্তি, রাসায়নিক পটেনশিয়ালের সাথে এন্টিগ্রাডিয়েন্ট :-  এবং ব্যাপনের সহগের ক্ষেত্রে মাট্রিক্স :   (i,k > 0).

থার্মোডাইনামিক বল এবং গতিশক্তির সহগের সঙ্গায় কিছুটা ব্যতিক্রম রয়েছে। এগুলোকে একা একা পরিমাপ করা যায় না, কিন্তু একত্রে(মিশ্রণে)  পরিমাপ করা যায়। উদাহরণস্বরূপ, ওন্সাগরের মূল কাজের ক্ষেত্রে[] একটি অতিরিক্ত গুনাংক T অন্তর্ভুক্ত থাকে। [] তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানের ক্ষেত্রে এই গুণকটি বাদ দেওয়া হলেও থার্মোডাইনামিক বলের ক্ষেত্রে বিপরীত চিহ্ন ব্যবহৃত হয়। প্রত্যেকটি মতবাদই, সংশ্লিষ্ট মতবাদের সাথে পরস্পরের পরিপূরক এবং এগুলো কোনোটিই পরিমাপকৃত মানের সাথে সাংঘর্ষিক নয়।

সরল ব্যাপন অবশ্যই নন-লিনিয়ার হতে হবে

সম্পাদনা

ওন্সাগরের লিনিয়ার থার্মোডিনামিক্স ধ্রুবক লিনিয়ার ব্যাপনের নিম্নোক্ত সমীকরণ গঠন করে :

 

যদি ব্যাপন সহগের ম্যাট্রিক্সটি সরল না হয়, তবে, সিস্টেমের বিভিন্ন উপাদানের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত সমীকরণগুলো ফিকের বিচ্ছিন্ন সমীকরণের কেবল এক-একটি প্রকার মাত্র। ধরা যাক ব্যপনটি একটি সরল ব্যাপন, উধারণস্বরূপ   এবং এখানে স্টেট হলো  । এই স্টেট-এ  । যদি একই অবস্থানে   থাকে তখন খুব সামান্য সময়ের মধ্যেই ঐ সব স্থানে   মান ঋনাত্মক হয়ে যায়। অতএব, রৈখিক সরল ব্যাপন ঘনত্বের ইতিবাচকতা সংরক্ষণ করে না। বহু উপাদানের ব্যাপনের সরল সমীকরণগুলি অবশ্যই লিনিয়ার হতে হবে।[১০]

আইনস্টাইনের গতিশীলতা এবং টিওরেলের সূত্র

সম্পাদনা

আইনস্টাইনের গতিশীলতার সূত্র, প্রসারণ সহগকে গতিশীলতার সাথে সংযুক্ত করে।[১১]:  

যেখানে,

  •   হলো ব্যাপন ধ্রুবক।
  •   হলো গতিশীলতা(ক্ষিপ্রতা)
  •   বোল্টজমান ধ্রুবক
  •   হলো পরম তাপমাত্রা
  •   হলো প্রাথমিক চার্য যা একটি ইলেকট্রনের চার্য।

নীচে, একই সূত্রে রাসায়নিক সম্ভাবনা   এবং গতিশীলতাকে একত্রিত করতে, গতিশীলতা ন্যাশন(প্রতীক)   ব্যবহার করা হয়েছে।

টি.টিওরেল গতিশীলতা-ভিত্তিক পদ্ধতিটিকে আরও গবেষণা করেন।[১২] 1935 সালে, তিনি একটি ঝিল্লির মধ্যদিয়ে আয়নের ব্যাপন সম্পর্কে গবেষণা করেছিলেন। তিনি তাঁর সূত্রতে তাঁর পদ্ধতির সারমর্মটি ব্যাখ্যা করেন:

গতিশীলতার সমান প্রবাহ × ঘনত্ব × প্রতি গ্রাম-আয়নে বল

এটিই হলো তথাকথিত টিওরেল সমীকরণ। এখানে গ্রাম-আয়ন দ্বারা অ্যাভোগ্রাডো সংখ্যক কনার পরিমাণ বোঝানো হয়েছে। যেটার প্রচলিত নাম হলো মোল একক।

আইসোথার্মাল অবস্থায় বল দুটি অংশের সমন্বয়ে গঠিত:

  1. ঘনত্বের পার্থক্যের কারণে সংঘটিত ব্যাপন :  .
  2. ইলেকট্রিক পটেনশিয়ালের পার্থক্যের কারণে সংঘটিত ব্যাপন :  

এখানে,

  •   হলো গ্যাস ধ্রুবক,
  •   হলো পরম তাপমাত্রা,
  •   হলো ঘনত্ব,
  • ঘনত্বের ভারসাম্য হলো eq,
  •   হলো চার্জ এবং
  •   হলো ইলেকট্রিক পটেনশিয়াল

টিওরেলের সূত্র ও ওন্সাগরের সূত্রের মধ্যে একটি বড় পার্থক্য হলো ব্যাপন প্রবাহ নিয়ে। আইন্সটাইন-টিওরেল সূত্র অনুযায়ী,নির্দিষ্ট বলের জন্য যদি ঘনত্ব শূন্য হয় তবে প্রবাহও শূন্যের দিকে ঝুঁকে পড়ে। যদিও ওন্সাগরের সমীকরণগুলি এই সহজ এবং বাস্তবে প্রমানিত সুস্পষ্ট নিয়ম লঙ্ঘন করে।

টিওরেল মতবাদ অনুসারে অ-নিঁখুত সিস্টেমের ক্ষেত্রে ও আইসোথার্মাল শর্তের জন্য সমীকরণটি হলো[১০]:  

যেখানে,  হলো রাসায়নিক পটেনশিয়াল এবং   হলো রাসায়নিক পটেনশিয়ালের প্রমান মান। এখানে   সমীকরণটি হলো তথাকথিত ক্রিয়াকলাপ। এটি অ-আদর্শ মিশ্রণে একটি স্পেসিস "কার্যকর ঘনত্ব" পরিমাপ করা যায়। টিওরেলের সূত্রে এই প্রবাহটিতে খুবই সাধারণ ফর্ম[১০] রয়েছে:  

ক্রিয়াকলাপের প্রমান বিচ্যুতি হলো একটি সাধারণকরণের কারণ এবং সামান্য ঘনত্বের জন্য:  , যেখানে   হলো প্রমাণ ঘনত্ব। অতএব, প্রবাহের জন্য এই সূত্রটি স্বাভাবিকীকরণযুক্ত মাত্রাবিহীন পরিমাণের প্রবাহকে বর্ণনা করে।  

অস্থিরতা-অপচয়(ফ্ল্যাচুয়েশন-ডিসপ্লেপশন) উপপাদ্য

সম্পাদনা

ফ্ল্যাচুয়েশন-ডিসপ্লেপশন উপপাদ্য,ল্যাঞ্জভিন সমীকরণ এর ভিত্তিতে আইনস্টাইন মডেলটিকে ব্যালেস্টিক টাইম স্কেলে ব্যবহার করার জন্য তৈরি করা হয়েছে।[১৩] ল্যাঙ্গভিনের মতে এই সমীকরণ নিউটনের গতির দ্বিতীয় সমীকরণের উপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে। যা:

 

যেখানে,

  •   হলো অবস্থান।
  •   হলো গ্যাসীয় বা তরল পদার্থে কণার গতিশক্তি।
  •   হলো কণার ভর।
  •   হলো কণার উপর প্রয়োগকৃত বল।
  •   হলো সময়।

এই সমীকরণ সমাধান করার মাধ্যমে দীর্ঘ সময় অতিক্রান্ত হওয়ার পর এবং কনার ঘনত্ব যখন পার্শ্ববর্তী তরলের তুলনায় উল্লেখযোগ্য হারে কমে যায়, তখন সময়-নির্ভর ব্যাপন ধ্রুবক নির্ণয় করা যায়।

 

  •   হলো বোল্টজমান ধ্রুবক,
  •   হলো কণার গতিশক্তি,
  •   হলো পরম সময়,
  •   হলো ভর,
  •   হলো সময়।

একাধিক উপাদানের ক্ষেত্রে টিওরেল সমীকরণ

সম্পাদনা

টিওরেলের সূত্রে ব্যাপন বলের সাথে ওন্সাগরের সমীকরণের সম্পর্ক বর্ণিত হয়েছে।

 

যেখানে,

  •   হলো i তম উপাদানের গতিশক্তি,
  •   হলো ক্রিয়াকলাপ,
  •   হলো সহগের ম্যাট্রিক্স,
  •   হলো থার্মোডাইনামিক ব্যাপন বল,  

আইসোথার্মাল নিঁখুত সিস্টেমগুলির জন্য,  । সুতরাং, আইনস্টাইন-টিওরেল পদ্ধতির মাধ্যমে একাধিক পদার্থের ব্যাপনের ক্ষেত্রে ফিকের সূত্রে নিম্নলিখিত সমীকরণকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে :  

যেখানে,   হলো সহগের ম্যাট্রিক্স। চ্যাম্পমান-এন্সকোগ সমীকরণেও একই সম্পর্ক বর্ণিত হয়েছে। এর আগে, ম্যাক্সওয়েল–স্টেফান ব্যাপন সমীকরণেও এই জাতীয় সম্পর্ক বর্ণনা করা হয়েছিল।

পৃষ্ঠতল এবং কঠিন পদার্থের মধ্যে কণার অস্থিরতা

সম্পাদনা
 

পৃষ্ঠতলের উপর বিকারকের ব্যাপনের ক্ষেত্রে প্রভাবক অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আদর্শ একস্তর বিশিষ্ট ব্যাপন মতবাদ পাশের মুক্ত স্থানে কণার চলনের উপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে। নিম্ন চাপে CO(কার্বন-মনোঅক্সাইড) ও Pt(প্লাটিনাম) অক্সাইডেশনে ব্যাপনের এই সমীকরণ ব্যবহৃত হয়।

সিস্টেমটির পৃষ্ঠতলে বেশ কয়েকটি বিকারক   অন্তর্ভুক্ত রয়েছে । এখানে পৃষ্ঠতলের ঘনত্ব  । পৃষ্ঠতলটি জালের মতো এবং শোষণ করতে পারে। প্রতিটি বিকারক অণু পৃষ্ঠের একটি জায়গা দখল করে এবং কিছু জায়গা ফাঁকা থাকে। ফাঁকা স্থানের ঘনত্ব  । এবং সম্পূর্ণ স্থানের   (ফাঁকা জায়গাসহ) যোগফল ধ্রুবক। এবং শোষণ সক্ষম স্থানের ঘনত্ব b

জাম্প মডেলটি, ব্যাপন প্রবাহের ক্ষেত্রে হবে,   (i = 1, ..., n):

 

এই সম্পর্কিত ব্যাপন সমীকরণটি হলো[১০] :  । নিত্যতা সূত্রের ক্ষেত্রে,   এবং m হলো ব্যাপন ব্যবস্থা। একটি উপাদানের ক্ষেত্রে ব্যাপন লিনিয়ার সমীকরণ ও ফিকের সূত্র দ্বারা ব্যাখ্যা করা যায়, কারণ  । কিন্তু একাধিক উপাদানের ক্ষেত্রে তা সত্য নয়।

সমস্ত কণা যদি তাদের নিকটতম কণাদের সাথে তাদের অবস্থানগুলি বিনিময় করতে পারে তবে একটি সমীকরণ পাওয়া যায় :

 
 

যেখানে,  হলো সহগগুলির একটি প্রতিসাম্য ম্যাট্রিক্স যা চলনের তীব্রতার প্রতিনিধিত্ব করে। ফাঁকা স্থানগুলি (শূন্যপদগুলি)  ঘনত্বে বিশেষ "কণা" হিসাবে বিবেচনা করা হয়।

এই জাম্প মডেলগুলির বিভিন্ন সংস্করণ কঠিন পদার্থে সাধারণ ব্যাপন ব্যবস্থার জন্যও উপযুক্ত।

ছিদ্রযুক্ত মাধ্যমে ব্যাপন

সম্পাদনা

ছিদ্রযুক্ত মাধ্যমে ব্যাপনের জন্য প্রাথমিক সমীকরণগুলি হলো[১৪] :

 
 

এখানে,

  •   হলো ব্যাপন সহগ,
  •   হলো ছিদ্রত্ব,
  •   হলো ঘনত্ব এবং
  •   > 0

প্রবাহ এবং জমা উভয় ক্ষেত্রেই ছিদ্রযুক্ত মাধ্যমের পোরোসিটি(ছিদ্রত্ব) গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করতে হবে[১৫]। উদাহরণস্বরূপ, পোরোসিটি শূন্য হওয়ার সাথে সাথে ছিদ্রযুক্ত মাধ্যমের মোলার প্রবাহ প্রদত্ত ঘনত্বের পার্থক্যের জন্য শূন্য হয়ে যায়। প্রবাহের বিকিরণ সংঘটিত হওয়ার সাথে সাথে, ছিদ্রত্ব রাশিটি বাতিল হয়ে যায় এবং উপরের দ্বিতীয় সমীকরণটি গঠিত হয়।

গ্যাসের ব্যাপনে ছিদ্রযুক্ত মাধ্যমের ক্ষেত্রে, ডার্সির সমীকরণ ব্যবহৃত হয়। ছিদ্রযুক্ত মাধ্যমে গ্যাসের ভলিউম্যাট্রিক প্রবাহের সমীকরণটি হলো : 

যেখানে,

  •   হলো ঐ মাধ্যমের ভেদ্যতা,
  •   হলো সান্দ্রতা
  •   হলো চাপ

মোলার প্রবাহের ক্ষেত্রে উক্ত সমীকরণে J = nq হবে।

এবং   এর ক্ষেত্রে ডার্সির সূত্রানুসারে m = γ + 1 হবে।

ছিদ্রযুক্ত মাধ্যমে, গড় রৈখিক গতিবেগ ( ), ভলিউম্যাট্রিক প্রবাহের সাথে সম্পর্কিত সমীকরণ : 

ব্যাপিত মোলার প্রবাহের ক্ষেত্রে অ্যাডভেকশন বিকিরণ সমীকরণ :

 

ভূগর্ভস্থ জলের অনুপ্রবেশের জন্য বোসিনেস্ক মতবাদও]] একই সমীকরণ দেয়, যেখানে  m = 2

উচ্চ রেডিয়েশনের প্লাজমা-এর ক্ষেত্রে জেল্ডোভিচ-রাইজার সমীকরণ ব্যবহৃত হয় : m > 4 যেখানে তাপীয়-পরিবহন বর্ণিত হয়েছে।

পদার্থবিদ্যায় ব্যাপন

সম্পাদনা

গ্যাসের ব্যাপন তত্ত্বের গতি-সহগ

সম্পাদনা
 
গ্যাসের কণার এলোমেলো সংঘর্ষ।

ব্যাপনের ক্ষেত্রে, ফিকের প্রথম সূত্র :


 


এখানে:

  •   হলো ডিফিউশন ফাল্ক বা ব্যাপন ফাল্ক। এ দ্বারা বোঝায়, প্রতি একক ক্ষেত্রফলে একক সময়ে মোট পদার্থের বা কনার পরিমান।[১৬]
  •   হলো ব্যাপন গুনাংক বা ব্যাপতা। এর একক হলো :  
  •   (নির্দিষ্ট মিশ্রণের জন্য) হলো ঘনত্ব, যা প্রতি একক আয়তনে পদার্থ বা কনার সংখ্যা নির্দেশ করে।[১৭]
  •   দ্বারা অবস্থান নির্দেশ করা হয়, যার মাত্রা  (দৈর্ঘ্য)।

একই ব্যাস   এবং একই ভর   বিশিষ্ট ২ টি গ্যাসের অনুর ক্ষেত্রে ব্যাপনে সূত্র হবে :   এখানে,

  •   হলো বোল্টজমান ধ্রুবক।
  •   হলো তাপমাত্রা, যার মাত্রা   এবং একক কেলভিন(k)।
  •   হলো চাপ, একক :- 
    কেজি×মি.−১সে.−২
  •   হলো পরম মুক্ত পথ।
  •   বলতে বোঝায় পরম তাপীয় গতি।

এখানে দেখা যাচ্ছে যে,   এর মান একটি নির্দিষ্ট হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। আর সেই মানটি হলো  । অন্যদিকে, এর মান   আকারে হ্রাস পাচ্ছে। আরও কিছু সমীকরণ হলো :  
এই সমীকরণগুলোর প্রতিপাদনের মাধ্যমেই   সমীকরণটি পাওয়া যায়। এর চলকগুলোও ইতিমধ্যেই বর্নিত হয়েছে। আদর্শ গ্যাসের সূত্র:  অনুসারে, মোট ঘনত্ব =  হয় এবং  হারে বৃদ্ধি পেতে থাকে। অন্যদিকে  আকারে হ্রাস পেতে থাকে। এখানে মনে হতে পারে যে,  এর মান কমে যাচ্ছে। কিন্তু তা সঠিক নয়! কারণ   বলতে বোঝায় যে,   এর বৃদ্ধির হার প্রতি একক সময়ে হ্রাস পেতে থাকে। উধাহরণ হিসাবে ধরা যাক:
১ম সেকেন্ডে বৃদ্ধির পরিমাণ ২৭ ও তাপমাত্রা = ২৭°C
২য় সেকেন্ডে বৃদ্ধির পরিমাণ ৯ ও তাপমাত্রা = ৩৬°C
৩য় সেকেন্ডে বৃদ্ধির পরিমাণ ৩ ও তাপমাত্রা = ৩৯°C
.................
এভাবে একটা সময়ে বৃদ্ধি প্রায় ০ এর কোঠায় চলে আসে। কিন্তু একেবারে ০ হয়ে যায় না।

এখন, ২টি ভিন্ন গ্যাস X ও Y ক্ষেত্রে, আণবিক ভর যথাক্রমে   এবং আণবিক ব্যাস যথাক্রমে   হলে, পরম মুক্ত পথের ক্ষেত্রে ব্যাপন গুনাংক হবে: 

বোল্টজমানের নীতি অনুসারে গ্যাসের ব্যাপন

সম্পাদনা

বোল্টজমানের নীতি অনুসারে, প্রতিটি গ্যাসের নিজস্ব কার্যবিন্যাস রয়েছে। বিন্যাসটি এরূপ : ,যেখানে

  •   হলো অবস্থান, মাত্রা [L]
  •   হলো দ্রবনের উপাদান   এর বেগ।
  •   হলো তাপমাত্রা।

প্রত্যেকটি উপাদানের পরমাণু সমূহের একটি নির্দিষ্ট বেগ থাকে, যাকে  
দ্বারা প্রকাশ করা যায়। যখন পরমাণু সমূহ আন্তঃআণবিক বেগ,  এর কারণে একসাথে থাকতে পারে না, তখনি ব্যাপন সংগঠিত হয়।

চ্যাপম্যান–এনস্কোগ এর তত্ত্ব থেকে দেখা যায় যে, ব্যাপনের সমীকরণগুলোকে নির্দিষ্ট পরিমাণ ও ঘনত্বের সূত্রসমূহ দ্বারা ব্যাখ্যা করা যায়।[১৮] যথা:

  • ভিন্ন ঘনত্বের কনার ক্ষেত্রে   (একক ঘনত্বে উপস্থিত মোট কনার পরিমান)
  • গতিবেগের ক্ষেত্রে, । যেখানে,  হলো   দ্রবনের পরমাণুর ভর।
  • আন্তঃআণবিক গতিশক্তির ক্ষেত্রে,   যেখানে,   হলো তাপমাত্রা এবং ত্রিমাত্রিক শূন্য স্থানে চাপ,   :

  যেখানে   হলো মোট ঘনত্ব।

দুইটি ভিন্ন গ্যাসের মধ্যকার দ্রুতির পার্থক্য ( ) নিচের সমীকরণ দ্বারা ব্যাখ্যা করা যায়।[১৮] সমীকরণটি হলো :   যেখানে,  হলো  তম অনুর উপর প্রয়োগকৃত বল এবং   হলো তাপ-ব্যাপনের অনুপাত।

সহগ   এর মান ধনাত্মক। এটি একটি ব্যাপন সহগ।   এর ৪টি সমীকরণ দ্বারা, ব্যাপনে গ্যাসের ৪টি প্রধান প্রভাব ব্যাখ্যা করা যায়:

  1.   প্রথম গ্যাসের উচ্চ ঘনত্ব   থেকে নিম্ন ঘনত্ব  এর দিকে ব্যাপন সংগঠিত হয়। অনুরূপভাবে,দ্বিতীয় গ্যাসের উচ্চ ঘনত্ব   থেকে নিম্ন ঘনত্ব  এর দিকে ব্যাপন সংগঠিত হয়। কারণ,  
  2.   দ্বারা ভিন্ন ভিন্ন অনুতে প্রয়োগকৃত বলের কারণে সংঘটিত ব্যাপন ব্যাখ্যা করা যায়। যেমন, পৃথিবীর ম্যাধাকর্ষণ বলের কারণে ভারী মৌলগুলো নিচের দিকে যেতে থাকে। এটাকে চাপের পার্থক্যের কারণে হওয়া বারোডিফিউশন এর সাথে গুলিয়ে ফেলা যাবে না।
  3.   দ্বারা তাপের পার্থক্যের কারণে হওয়া তাপীয় ব্যাপন ব্যাখ্যা করা যায়।

আর এ সবগুলোই হলো ব্যাপন। কারণ, এ গুলোর প্রত্যেকটির দ্বারাই মিশ্রনের মধ্যকার অনু-পরমাণুর বেগ ব্যাখ্যা করা যায়। তাই, এটাকে বাল্ক ফ্লো, অ্যাডভ্যাক্শন বা পরিচলন দ্বারা ব্যাখ্যা করা সম্ভব নয়।

প্রাথমিক তত্ত্ব অনুসারে,[১৮]

  • অনমনীয় গোলকের ক্ষেত্রে, 
  • পরস্পর বিকর্ষণ বল   এর ক্ষেত্রে,  

  সংখ্যাটিকে ক্লাসিক্যাল চ্যাপম্যান এবং কোলিং বইয়ের ১০ অধ্যায়ে উল্লেখিত চৌম্বকক্ষেত্রের সূত্র ৩.৭ ও ৩.৯ দ্বারা ব্যাখ্যা করা যায়।[১৮]

আমরা দেখতে পাচ্ছি যে অনাবৃত ক্ষেত্রগুলির জন্য   এর সাপেক্ষে সাধারণ গড় মুক্ত পথের তত্ত্বের অনুরূপ। তবে শক্তির বিকর্ষণ সূত্রে প্রদত্ত তাপমাত্রার জন্য মোট ঘনত্ব   সর্বদা   থাকে।

গ্যাস চালনার মাধমে গতিশীল করার ক্ষেত্রে, ব্যাপন ফ্লাক্স এবং বাল্ক ফ্লো একইসাথে চলে একটি পরিবহন সিস্টেম গঠন করে। বাল্ক ফ্লো এর মাধ্যমে ভরের পরিবহন সংঘটিত হয়। এখানে   হলো ভরের গড় বেগ। এটি দ্বারা ভরবেগ এবং বস্তুর ব্যাপন ব্যাখ্যা করা যায়।
 
যেখানে,  হলো i তম পদের(অনু,পরমাণু,আয়ন ইত্যাদি) পদার্থের ঘনীভবন এবং   হলো পদার্থের ঘনত্ব।

তত্ত্বনুসারে,     ,  
হলো i তম পদার্থের ব্যাপন হার। i তম পদার্থের ভরের পরিবহন কন্টিনিউইটি সমীকরণ দ্বারা ব্যাখ্যা করা সম্ভব হয়েছে : 
যেখানে,   হলো রাসায়নিক বিক্রিয়ায় উৎপন্ন নিট উৎপাদ উৎপাদনের হার, 

এই সমীকরণগুলোতে,   দ্বারা i তম পদার্থের অ্যাভেক্শন বর্ণনা করা যায় এবং   হলো উক্ত পদার্থের ব্যাপন।

১৯৪৮ সালে, ওয়েন্ডেল এইচ. ফিউরি কঠিন পদার্থের ক্ষেত্রেও গ্যাসীয় পদার্থের ব্যাপন ব্যাখ্যার ক্ষেত্রে ব্যবহৃত কিনেথিক ফ্রেমওয়ার্ক তত্ত্বের উপযোগিতা বর্ণনা করেন। এফ.এ. উইলিয়ামস এবং এস.এইচ ল্যাম এই তত্ত্বের উপরে আরও কাজ করেন।[১৯] একের অধিক (N) গ্যাসের ব্যাপনের ক্ষেত্রে তারা নিম্নোক্ত সমীকরণসমূহ ব্যবহার করেন :  

  

এখানে,

  •   হলো ব্যাপন গুনাংক ম্যাট্রিক্স
  •   হলো তাপীয় ব্যাপন গুনাংক।
  •   হলো i তম পদার্থের একক ভরের উপর প্রয়োগকৃত মোট বল।
  •   হলো i তম উপাদানের চাপের আংশিক ভগ্নাংশ।
  •   এবং  

i তম পদার্থের ভরের ভগ্নাংশ নির্দেশ করে।

 
এখানে সবুজ হলো e এবং বেগুনি হলো হোল(গর্ত)

পদার্থে ইলেকট্রনের ব্যাপন

সম্পাদনা

যখন পদার্থের মধ্যে সকল স্থানে ইলেকট্রনের ঘনত্ব সমান হয় না, তখনই ইলেকট্রনের ব্যাপন সংগঠিত হয়। উদাহরণসরূপ, যখন কোনো অর্ধপরিবাহী পদার্থের খন্ডের শেষ ২টি প্রান্তে ঢাল প্রয়োগ করা হয় বা কোনো বিন্দু থেকে আলো নির্গত হয়, সেই সময় উচ্চ ঘনত্ব (মধ্যবিন্দু) থেকে নিম্ন ঘনত্বের (শেষ প্রান্ত) দিকে ইলেকট্রনের ব্যাপন ঘটে। আর এর ফলেই তড়িৎ প্রবাহ হয়, যাকে ব্যাপনের ভাষায় বলা হয় তড়িৎ এর ব্যাপন

তড়িৎ প্রবাহের ব্যাপনকে ফিকের প্রথম সূত্র দ্বারাও ব্যাখ্যা করা যায় :   যেখানে,   হলো সলিডের (পদার্থ) মধ্যে প্রতি একক সময়ে একক ক্ষেত্রফলের ক্ষেত্রে তড়িৎ(উপাদানের পরিমাণ) এর ঘনত্ব।   হলো ইলেকট্রনের ঘনত্ব এবং   হলো অবস্থান[দৈর্ঘ্য]।

ভূপ্রকৃতিবিদ্যায় ব্যাপন

সম্পাদনা

বিভিন্ন বিশ্লেষণাত্মক এবং সংখ্যাসূচক মডেল, যা বিভিন্ন প্রাথমিক এবং শেষ অবস্থার ক্ষেত্রে ব্যাপনের সমীকরণকে ব্যবহার করে পৃথিবীর পৃষ্ঠের বিভিন্ন পরিবর্তন অধ্যয়নের জন্য বেশ জনপ্রিয়। পাহাড়ি ঢালের ক্ষয়, হটাৎ ধস, ভূ-চ্যুতি, পাহাড়ি সোপানের ক্ষয়, পাললিক চ্যানেলের ফাটল, উপকূলীয় বালুচরের ক্ষয়, বদ্বীপের চলন ইত্যাদি ক্ষেত্রে ব্যাপন ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে।[২০] যদিও ভূ-ত্বক আপাতত দৃষ্টিতে বিভাজিত হয় না, কিন্তু ভূ-ত্বকের ব্যাপনের ফলে বহুবছর ধরে ভূ-খণ্ড পরস্পর থেকে আলাদা হয়ে যাচ্ছে। বিপরীত বাউন্ডারি-এর মান নির্ধারনেও ব্যাপনের মডেল ব্যবহার করা হয়। যেখানে, পরিবেশের অবক্ষেপ যা প্যালিওইনভাইরেনমেনটাল পুনঃগঠন নামেই অধিক পরিচিত, ব্যাপনের সমীকরণ ব্যবহার করে পাললিক অন্তঃপ্রবাহ এবং সময়ে সিরিজে ভূমির পরিবর্তন নির্ণয় করা যায়।[২১]

মুক্ত চলন(random motion)

সম্পাদনা
এখানে পরমাণু, আয়ন বা অণুগুলির আপাত মুক্ত গতি(র‍্যানডম মোশন) ব্যাখ্যা করা হয়েছে। অন্যান্য কণাদের সাথে সংঘর্ষের কারণেই কনাগুলো এলোমেলোভাবে স্থানান্তরিত হয়। Cell Membrane Transport, free license granted by IS3D, LLC, 2014. iBook থেকে সংগ্রহীত

আমাদের মধ্যে অনেকের ধারণা থাকে যে, মুক্ত পরমাণু, অনু, আয়ন ইত্যাদির লক্ষহীন ভাবে ঘোরাফেরার ফলেই ব্যাপন সংগঠিত হয়। কিন্তু তা সত্যি নয়! উক্ত অ্যানিমেশনের বাম পাশের আয়নটিকে মুক্তভাবে ঘোরাঘুরি করতে দেখা গেলেও আসলে তা সত্যি নয়। ডান পাশের ছবিটি থেকে বোঝা যায় যে, এটি মুলত তার আশেপাশের আয়ন গুলোর সাথে সংঘর্ষের ফলে সৃষ্ট মুক্তভাবে ঘোরাঘুরি। "Random walk" বা মুক্তচলন দ্বারা একটি মিশ্রণের মধ্যে একটি পদার্থের ক্ষুদ্রতর কথাগুলোর চলাচল বুঝায়। এটি সিস্টেমের মধ্যেকার গতিশক্তি দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়, যা ঘনত্ব, চাপ বা তাপমাত্রার প্রভাবে পরিবর্তিত হতে পারে।(এটি এই পর্যন্ত পাওয়া সবচেয়ে ভালো সংগায়ন। যত ক্ষুদ্র পর্যায়ে যাওয়া যায়, এর উপরকার কোয়ান্টাম প্রভাব ততই কমতে থাকে। ফলে শেষ পর্যন্ত অনেক ক্ষুদ্র স্কেলে কণাগুলো অনেক অনেক সূক্ষ্ম ভাবে পরিমাপ করা যায়।)

গ্যাসের পরিচলন ও ব্যাপনের মধ্যকার পার্থক্য

সম্পাদনা

যখন বহু আণবিক কণা (পরমানু, আয়ন, অনু, কোয়ান্টাম কণা ইত্যাদি) ব্রাউনিও গতি অনুসারে ব্যাপিত হতে থাকে তখন নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে অত্যন্ত সর্তকতার সাথে তাদের চলন পরীক্ষা করা যায়। গ্রাহামের পরীক্ষার পর থেকে, সবই জানে যে এক্ষেত্রে পরিচলন এড়ানো অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, হতে পারে তা অত্যন্ত তুচ্ছ বা সহজ কাজ।

সাধারণ পরিবেশে আণবিক ব্যাপন মূলত ন্যানোমিটার থেকে সর্বোচ্চ মিলিমিটার পর্যন্ত বিস্তৃত হয়ে থাকে। বাইরে থেকে পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যায় যে, তরল এবং গ্যাসীয় পদার্থের পরিবহন হয় মূলত অন্যান্য পরিবহন প্রক্রিয়া, পরিচলন ইত্যাদির মাধ্যমে। এখানে পরিচলনের সাথে ব্যাপনের পার্থক্য নির্ণয় করা যথেষ্ট কঠিন হয়ে পড়ে।

ফলে ব্যাপনের উদাহরণ দেওয়ার সময় প্রাশই লোকজন ভুল করে থাকেন। যেমন: একটি ঘরের কোনো কোনায় সেন্ট স্প্রে করলে তা শুধু ব্যাপনের কারণেই সারা ঘরে ছড়িয়ে পড়ে না। তাপের পরিচলনের কারণে ঘরে কানেক্টিভ মোশন বা সংযোজিত গতি অকার্যকর হয়ে পড়ে। আবার কিছু কালি পানির মধ্যে ছেড়ে দিলে যে কেউ সেখানে কালির ব্যাপন দেখতে পাবে। কিন্তু স্পষ্টতই তা কালির পরিচলন।(কারণ, এখানে ব্যাপনের কোনো সুযোগই নেই)।

বিপরীতে, কঠিন মাধ্যমে তাপের পরিচালন হ'ল একটি নিত্যদিনের ঘটনা। উদাহরণস্বরূপ, ধাতব চামচ আংশিকভাবে একটি গরম তরলে নিমজ্জিত, যা তাপ পরিবহন করে হাতে পৌঁছে দিচ্ছে। এটি থেকে বুঝা যায় যে, কেন তাপের ব্যাপনকে ভর-এর ব্যাপনের আগে ব্যাখ্যা করা সম্ভব হয়েছিল।

অন্যান্য ধরনের ব্যাপন

সম্পাদনা
  • অ্যানিসোট্রপিক ব্যাপন
  • অ্যানমলিউস ব্যাপন[২২]
  • আণবিক ব্যাপন
  • বহম ব্যাপন - চৌম্বকীয় ক্ষেত্র জুড়ে প্লাজমা ব্যাপন।
  • এডি ব্যাপন - উত্তেজিত তরল পদার্থের মধ্যকার দানাদার ব্যাপন।
  • নিঃসরণ
  • ইলেক্ট্রনিক ব্যাপন- বিদ্যুৎ প্রবাহের মাধ্যমে e এর ব্যাপন।
  • সহজ ব্যাপন - কিছু বিশেষ জীবের মধ্যে উপস্থিত।
  • গ্যাসের ব্যাপন
  • তাপীয় ব্যাপন
  • আইটো ব্যাপন - ব্রাউনিও গতির সূত্র অনুসারে সংঘটিত ক্রমাগত স্টোকাস্টিক প্রক্রিয়া।
  • কিনসিস(জীববিজ্ঞান) ব্যাপন- প্রানীর উদ্দীপনা পরিবহনের একটি প্রক্রিয়া।
  • নুডসন ব্যাপন
  • ভাসমান লেভি
  • পারমাণবিক ব্যাপন
  • ভরবেগের ব্যাপন -উদাহরণ: হাইড্রোডাইনামিক বেগ ক্ষেত্রের ব্যাপন।
  • আলোক ব্যাপন - শুধুমাত্র আলোর উপস্থিতিতেই সংঘটিত ব্যাপন।
  • প্লাজমা ব্যাপন
  • মুক্ত চলন[২৩]
  • বিপরীত ব্যাপন- অধিক ঘনত্বের দিকে ব্যাপন।
  • সমতলীয় ব্যাপন
  • সংস্কৃতির ব্যাপন
  • ঘুর্নায়মান ব্যাপন
  • উত্তাল ব্যাপন - একই সময়ে পদার্থ,তাপ ও ভরবেগের ব্যাপন।

ব্যাপনের ইতিহাস

সম্পাদনা

দ্রবণের মধ্যে ব্যাপন এর তত্ত্বটি আবিষ্কার হওয়ার অনেক আগে থেকেই এটির প্রচলন হয়েছিল। উদাহরণস্বরূপ, প্লিনি দ্য এল্ডার আগে সিমেন্টেশন প্রক্রিয়া বর্ণনা করেছিলেন, যা কার্বনের (C) ব্যাপনের মাধ্যমে লোহা (Fe) থেকে ইস্পাত তৈরি করে। আর একটি উদাহরণ বহু শতাব্দী ধরে সুপরিচিত, দাগযুক্ত কাচ বা মাটির পাত্র এবং চিনা সিরামিকের রঙগুলির ব্যাপন।

থমাস গ্রাহাম
 

আধুনিক বিজ্ঞানে, বিস্তারের প্রথম পদ্ধতিগত পরীক্ষামূলক গবেষণাটি থমাস গ্রাহাম করেছিলেন। তিনি গ্যাসগুলির ছড়িয়ে পড়া পর্যবেক্ষণ করেছিলেন, এবং প্রধান ঘটনাটি তিনি (১৮৩১-১৮৩৩)-এ বর্ণনা করেছিলেন:

"...gases of different nature, when brought into contact, do not arrange themselves according to their density, the heaviest undermost, and the lighter uppermost, but they spontaneously diffuse, mutually and equally, through each other, and so remain in the intimate state of mixture for any length of time."

মুল ইংরেজী বক্তব্য থেকে অনুবাদ করা হয়েছে।

"... বিভিন্ন প্রকৃতির গ্যাসগুলি যখন সংস্পর্শে আনা হয়, তখন তাদের ঘনত্ব অনুযায়ী সবচেয়ে ভারী গ্যাসটি নীচের দিকে কিংবা হালকা গ্যাসগুলো উপরের দিকে, এ অনুযায়ী নিজেদেরকে সাজিয়ে রাখবে না,তবে তারা স্বতঃস্ফূর্তভাবে একে অপরের মধ্যে পারস্পরিক এবং সমানভাবে ব্যাপিত হয় এবং তা যত সময়ই লাগুক না কেন।"

[২৪]

গ্রাহামের ১৮৬৭ সালের পর্যবেক্ষণকে পুঁজি করে জেমস ক্লার্ক ম্যাক্সওয়েল বায়ুতে CO2(কার্বন-ডাই-অক্সাইড)-এর ব্যাপনের সহগ আবিষ্কারের ক্ষেত্রে অবদান রেখেছিলেন, যেটাতে ত্রুটির হার ছিল ৫% এরও কম।

১৮৫৫ সালে, জুরিখের ২৬ বছর বয়সী অ্যাডলফ ফিক তার ব্যাপনের সূত্রটি প্রকাশ করেন। তিনি গ্রাহামের গবেষণাকে ব্যবহার করেছিলেন এবং তাঁর একটি মৌলিক সূত্র :শূন্য মাধ্যমে ব্যাপন ; প্রকাশ করেছিলেন। তিনি ব্যাপন এবং তাপ বা বিদ্যুতের সঞ্চালনের মধ্যে একটি গভীর সাদৃশ্য দেখিয়েছিলেন । তাপ সঞ্চালনের জন্য ফুরিয়ারের সুত্রের (১৮২২) এবং বৈদ্যুতিক প্রবাহের (১৮২৭) ওহমের সুত্রের অনুরূপ একটি সুত্র তৈরি করেছিলেন ।

রবার্ট বয়েল সপ্তদশ[২৪] শতাব্দীতে একটি তামার মুদ্রায় জিংকের প্রবেশ করানোর ফলে সেগুলো অনুগুলির মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছিল। তা সত্ত্বেও, অনুগুলির ভিতরে বিচ্ছিন্নতা বিদ্যমান ছিল। ঊনবিংশ শতকের দ্বিতীয় ভাগ পর্যন্ত এ বিষয়ে নিয়মতান্ত্রিকভাবে গবেষণা করা হয়নি। উইলিয়াম চ্যান্ডলার রবার্টস-অস্টেন, প্রখ্যাত ব্রিটিশ ধাতুবিদ এবং টমাস গ্রাহামের প্রাক্তন সহকারী ১৮৯৬ সালে সোনার মডেলের ভিত্তিতে পদ্ধতিগতভাবে কঠিন পদার্থের ব্যাপন সম্পর্কে গবেষণা করেছিলেন।[২৫]

"... My long connection with Graham's researches made it almost a duty to attempt to extend his work on liquid diffusion to metals."

মুল ইংরেজী বক্তব্য থেকে অনুবাদ করা হয়েছে।

"...গ্রাহামের গবেষণার সাথে আমার পুরনো সম্পর্ক থাকার কারণে তরলে ধাতব পদার্থের ব্যাপন বর্ণনা করা আমার জন্য আবশ্যক হয়ে দাঁড়িয়েছে।"

১৮৫৮ সালে, রুডলফ ক্লাসিয়াস মুক্ত পথের ধারণাটি চালু করেছিলেন। একই বছর, জেমস ক্লার্ক ম্যাক্সওয়েল গ্যাসে পরিবহন প্রক্রিয়ার প্রথম পারমাণবিক তত্ত্বটি বর্ণনা করেছিলেন। ব্যাপন এবং ব্রাউনিয়ান গতির আধুনিক পরমাণুবাদী তত্ত্বটি আলবার্ট আইনস্টাইন, মেরিয়ান স্মোলুচোস্কি এবং জিন-ব্যাপটিস্ট পেরিনের দ্বারা প্রনয়ণ করা হয়েছিল। লুডভিগ বোল্টজম্যান ম্যাক্রোস্কোপিক ট্রান্সপোর্ট প্রক্রিয়ার অন্তঃস্তরের পারমাণবিক ব্যাপন ব্যাখ্যা করতে বল্টজম্যান সমীকরণ ব্যবহার করেছিলেন, যা গণিত এবং পদার্থবিজ্ঞানের সাথে ১৪০ বছরেরও বেশি সময় ধরে পরিবহন প্রক্রিয়ার ধারণা এবং ব্যাখ্যা হিসাবে কাজ করেছে । [১৮]

১৯২০-১৯২১ সালে, জর্জ ডি হেভিসি রেডিও আইসোটোপগুলি ব্যবহার করে পদার্থের স্ব-প্রসারণ(ব্যাপন) পরিমাপ করেছিলেন। তিনি তরল এবং কঠিন সীসাতে, সীসাটির তেজস্ক্রিয় আইসোটোপগুলির নিজে নিজে ছড়িয়ে পড়া পর্যবেক্ষণ করেছিলেন।

ইয়াকভ ফ্রেনকেল (কখনও কখনও, জাকভ / জ্যাকব ফ্রেঙ্কেল) ব্যাপনের সুত্রসমুহের কিছু সীমাবদ্ধতা ঘটে(শূন্যস্থান এবং আন্তঃপরমানবিক ফাঁকা স্থানে)স্ফটিক বিচ্ছুরণের কারণে, এই ধারণাটি ১৯২৬ সালে ব্যাখ্যা করেছিলেন। তিনি উপসংহারে বলেছিলেন, ঘনীভূত পদার্থের ব্যাপন প্রক্রিয়াটি প্রাথমিক কণার উত্তেজিত অবস্থা এবং কোয়াশিক্যাল মিথস্ক্রিয়ার ফলে কিছু ত্রুটি পরিলক্ষিত হয়। তিনি প্রসারণের বিভিন্ন প্রক্রিয়া ব্যাখ্যা করেছিলেন এবং পরীক্ষামূলক তথ্য থেকে স্থির মান খুঁজে পান।

কিছু পরে, কার্ল ওয়াগনার এবং ওয়াল্টার এইচ. স্কটকি ব্যাপন সম্পর্কে ফ্রেঙ্কেলের ধারণাগুলি আরও বিস্তারিত বর্ণনা করেন। বর্তমানে, সর্বজনীনভাবে স্বীকৃত যে স্ফটিকগুলিতে প্রসারণের মধ্যস্থতার জন্য পারমাণবিক ব্যাতিক্রমগুলো আতি প্রয়োজনীয় একটি পর্যায়।[২৫]

সহ-কর্মীদের সাথে হেনরি আইরিং তার পরম বিক্রিয়ার তত্ত্বটি ফ্রেঙ্কেলের কোয়াশিক্যাল মডেলটিতে প্রয়োগ করেছিলেন। [১০] পরমাণুর গতিবিদ্যা এবং ব্যাপনের মধ্যকার সাদৃশ্য ফিকের মতবাদটিকে বাতিল করে দেয়। [১০]

ব্যাপন ও নিঃসরণ

সম্পাদনা

ব্যাপন ও নিঃসরণের মধ্যে যথেষ্ট পার্থক্য আছে। ব্যাপনের ক্ষেত্রে পদার্থের অনুসমুহ চারিদিকে ধীরে ধীরে ছড়িয়ে পড়ে। কিন্তু সুরু ছিদ্রপথে উচ্চচাপের স্থান থেকে নিম্নচাপের স্থানের দিকে সজোরে বেরিয়ে আসে প্রক্রিয়াকে নিঃসরণ বলে। যেমনঃ আমরা যদি একটি বেলুন ফুলাই, এরপরে বেলুনটাকে বেধেঁ দেই।তারপরে বেলুনের গায়ে একটি স্কচটেপ লাগাই। স্কচটেপ এর উপর আলপিন দিয়ে ছোট একটি ফুটো করলে বেলুনের সমস্ত বাতাস খুব সজোরে সেই স্থান দিয়ে বেরিয়ে আসবে এটাই হলো নিঃসরণ

আরো একটি উদাহরণের মাধ্যমে পরিষ্কার হওয়া যাক। আমরা বাসা বাড়িতে প্রায়ই গ্যাসের সিলিন্ডার ব্যবহার করে থাকি। এই সিলিন্ডারে এলপিজি গ্যাস থাকে যেটার পুর্ণরূপ হলো (লিকুইফাইড পেট্রোলিয়াম গ্যাস) বা তরলিকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাস । এই গ্যাস তরল আকারে গ্যাসের বোতলের ভিতর ভরা থাকে। আমরা যখন গ্যাসের চুলার সাথে গ্যাসের বোতলের সংযোগ দেই, তখন খুব সজোরে ওই তরল গ্যাস বোতলের ভেতর থেকে বাইরে বেরিয়ে আসতে থাকে এবং বাইরে এসে যখন চাপ কমে যায় তখন তার গ্যাসে পরিণত হয়। এটা হচ্ছে নিঃসরণের সবচেয়ে সহজ উদাহরণ এবং আমাদের আশপাশের আমরা প্রায়ই দেখতে পাই। এখানে এই নিঃসরনকে ব্যবহার করে অল্প জায়গাতেই অধিক পরিমাণ গ্যাস সরবরাহ করা যায়।

ব্যাপন ও নিঃসরনের মধ্যে সাদৃশ্য ও বৈসাদৃশ্য নিম্নরূপ:

সাদৃশ্য

সম্পাদনা
  1. ব্যাপন ও নিঃসরণ উভয় প্রক্রিয়াতেই তরল ও গ্যাসের অনুগুলোর সরণ ঘটে।
  2. ব্যাপন ও নিঃসরণ উভয় প্রক্রিয়ার হার পদার্থের আণবিক ভর ও ঘনত্বের উপর নির্ভরশীল।

বৈসাদৃশ্য

সম্পাদনা
ব্যাপন নিঃসরণ
ব্যাপন সরু বা বিস্তৃত উভয় পথে ঘটতে পারে কিন্তু নিঃসরণ শুধুমাত্র সরু ছিদ্রপথে ঘটে
ব্যাপন প্রক্রিয়ায় চাপ একই থাকে কিন্তু নিঃসরণ প্রক্রিয়ায় পাত্রের ভেতরে ও বাইরে চাপ ভিন্ন থাকে

আরও দেখুন

সম্পাদনা
  1. ক্ষরন - বলতে বুঝায় চুইয়ে পড়া, স্রবণ, তরল দ্রব্যের পতন, নাশ বা নিঃসরণ ।
  2. অভিস্রবণ - বলতে দুটো ভিন্ন ঘনত্বের দ্রবণ একটি অর্ধভেদ্য পর্দা দিয়ে পাশাপাশি আলাদা করে রাখলে পর্দা ভেদ করে কম ঘন দ্রবণ থেকে অধিক ঘন দ্রবণের দিকে দ্রাবক অণু প্রবেশ করার প্রক্রিয়াকে বোঝায়।
  3. ইমবাইবিশন - বলতে কলয়েড জাতীয় শুষ্ক বা আংশিক শুষ্ক পদার্থ কর্তৃক তরল পদার্থ শোষনের বিশেষ প্রক্রিয়াকে বোঝায়৷ এক খন্ড শুকনা কাঠের এক প্রান্ত পানিতে ডুবালে ঐ কাঠের খন্ডটি কিছু পানি টেনে নেবে ৷
  4. ব্যাপন সমীকরণ
  5. তাপগতিবিজ্ঞান

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. Book:Chemistry of 9-10
  2. "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ১৩ অক্টোবর ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২১ 
  3. Muir, D. C. F. (১৯৬৬-১০-০১)। "Bulk flow and diffusion in the airways of the lung"British Journal of Diseases of the Chest (ইংরেজি ভাষায়)। 60 (4): 169–176। আইএসএসএন 0007-0971ডিওআই:10.1016/S0007-0971(66)80044-Xপিএমআইডি 5969933 
  4. J. Philibert (2005). One and a half century of diffusion: Fick, Einstein, before and beyond. ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২০১৩-১২-১৩ তারিখে Diffusion Fundamentals, 2, 1.1–1.10.
  5. S.R. De Groot, P. Mazur (1962). Non-equilibrium Thermodynamics. North-Holland, Amsterdam.
  6. A. Einstein (১৯০৫)। "Über die von der molekularkinetischen Theorie der Wärme geforderte Bewegung von in ruhenden Flüssigkeiten suspendierten Teilchen" (পিডিএফ)Ann. Phys.17 (8): 549–60। ডিওআই:10.1002/andp.19053220806বিবকোড:1905AnP...322..549E। ১৮ জুলাই ২০০৭ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১১ মার্চ ২০২১ 
  7. Pescarmona, P.P. (২০২০)। Gitis, V.; Rothenberg, G., সম্পাদকগণ। Handbook of Porous Materials (ইংরেজি ভাষায়)। 4। Singapore: WORLD SCIENTIFIC। পৃষ্ঠা 150–151। আইএসবিএন 978-981-12-2328-0ডিওআই:10.1142/11909 
  8. Onsager, L. (১৯৩১)। "Reciprocal Relations in Irreversible Processes. I"। Physical Review37 (4): 405–26। ডিওআই:10.1103/PhysRev.37.405 বিবকোড:1931PhRv...37..405O 
  9. L.D. Landau, E.M. Lifshitz (১৯৮০)। Statistical Physics। Vol. 5 (3rd সংস্করণ)। Butterworth-Heinemannআইএসবিএন 978-0-7506-3372-7 
  10. A.N. Gorban, H.P. Sargsyan and H.A. Wahab (২০১১)। "Quasichemical Models of Multicomponent Nonlinear Diffusion"। Mathematical Modelling of Natural Phenomena6 (5): 184–262। arXiv:1012.2908 এসটুসিআইডি 18961678ডিওআই:10.1051/mmnp/20116509 
  11. S. Bromberg, K.A. Dill (2002), Molecular Driving Forces: Statistical Thermodynamics in Chemistry and Biology, Garland Science, আইএসবিএন ০৮১৫৩২০৫১৫.
  12. T. Teorell (১৯৩৫)। "Studies on the "Diffusion Effect" upon Ionic Distribution. Some Theoretical Considerations"Proceedings of the National Academy of Sciences of the United States of America21 (3): 152–61। ডিওআই:10.1073/pnas.21.3.152পিএমআইডি 16587950পিএমসি 1076553 বিবকোড:1935PNAS...21..152T 
  13. Bian, Xin; Kim, Changho; Karniadakis, George Em (২০১৬-০৮-১৪)। "111 years of Brownian motion"Soft Matter12 (30): 6331–6346। ডিওআই:10.1039/c6sm01153eপিএমআইডি 27396746পিএমসি 5476231 বিবকোড:2016SMat...12.6331B 
  14. J. L. Vázquez (2006), The Porous Medium Equation. Mathematical Theory, Oxford Univ. Press, আইএসবিএন ০১৯৮৫৬৯০৩৩.
  15. Stauffer, Philip H.; Vrugt, Jasper A.; Turin, H. Jake; Gable, Carl W.; Soll, Wendy E. (২০০৯)। "Untangling Diffusion from Advection in Unsaturated Porous Media: Experimental Data, Modeling, and Parameter Uncertainty"। Vadose Zone Journal (ইংরেজি ভাষায়)। 8 (2): 510। আইএসএসএন 1539-1663ডিওআই:10.2136/vzj2008.0055 
  16. Atkins, Peter; de Paula, Julio (২০০৬)। Physical Chemistry for the Life Science 
  17. Conlisk, A. Terrence (২০১৩)। Essentials of Micro- and Nanofluidics: With Applications to the Biological and Chemical Sciences। Cambridge University Press। পৃষ্ঠা 43। আইএসবিএন 9780521881685 
  18. S. Chapman, T. G. Cowling (1970) The Mathematical Theory of Non-uniform Gases: An Account of the Kinetic Theory of Viscosity, Thermal Conduction and Diffusion in Gases, Cambridge University Press (3rd edition), আইএসবিএন ০৫২১৪০৮৪৪X.
  19. S. H. Lam (২০০৬)। "Multicomponent diffusion revisited" (পিডিএফ)Physics of Fluids18 (7): 073101–073101–8। ডিওআই:10.1063/1.2221312বিবকোড:2006PhFl...18g3101L। ৪ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২১ মার্চ ২০২১ 
  20. Pasternack, Gregory B.; Brush, Grace S.; Hilgartner, William B. (২০০১-০৪-০১)। "Impact of historic land-use change on sediment delivery to a Chesapeake Bay subestuarine delta"Earth Surface Processes and Landforms (ইংরেজি ভাষায়)। 26 (4): 409–27। আইএসএসএন 1096-9837ডিওআই:10.1002/esp.189বিবকোড:2001ESPL...26..409P 
  21. Gregory B. Pasternack। "Watershed Hydrology, Geomorphology, and Ecohydraulics :: TFD Modeling"pasternack.ucdavis.edu (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-০৬-১২ 
  22. D. Ben-Avraham and S. Havlin (২০০০)। Diffusion and Reactions in Fractals and Disordered Systems (পিডিএফ)। Cambridge University Press। আইএসবিএন 978-0521622783 
  23. Weiss, G. (১৯৯৪)। Aspects and Applications of the Random Walk। North-Holland। আইএসবিএন 978-0444816061 
  24. L.W. Barr (1997), In: Diffusion in Materials, DIMAT 96, ed. H.Mehrer, Chr. Herzig, N.A. Stolwijk, H. Bracht, Scitec Publications, Vol.1, pp. 1–9.
  25. H. Mehrer; N.A. Stolwijk (২০০৯)। "Heroes and Highlights in the History of Diffusion" (পিডিএফ)Diffusion Fundamentals11 (1): 1–32।