খ্রিস্টধর্ম: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য
[পরীক্ষিত সংশোধন] | [পরীক্ষিত সংশোধন] |
অ ইম্মানূয়েল-এর সম্পাদিত সংস্করণ হতে Maruf Hossain-এর সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণে ফেরত ট্যাগ: পুনর্বহাল |
ট্যাগ: পূর্বাবস্থায় ফেরত মোবাইল সম্পাদনা মোবাইল অ্যাপ সম্পাদনা অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ সম্পাদনা App undo |
||
(১০ জন ব্যবহারকারী দ্বারা সম্পাদিত ১৯টি মধ্যবর্তী সংশোধন দেখানো হচ্ছে না) | |||
১ নং লাইন: | ১ নং লাইন: | ||
{{সুরক্ষা}} |
|||
{{Infobox religion |
{{Infobox religion |
||
| name = খ্রিস্টধর্ম |
| name = খ্রিস্টধর্ম |
||
| native_name = |
| native_name = {{lang|el|Χριστιανισμός}} |
||
| native_name_lang = el |
| native_name_lang = el |
||
| abbreviation = |
| abbreviation = |
||
২৭ নং লাইন: | ২৮ নং লাইন: | ||
| fellowships = খ্রিস্টান উপদলসমূহের তালিকা |
| fellowships = খ্রিস্টান উপদলসমূহের তালিকা |
||
| associations = |
| associations = |
||
| area = [[আমেরিকা]],<ref name="Global Christianity" /> [[ইউরোপ]],<ref name="Global Christianity" /> [[সাহারা-নিম্ন আফ্রিকা]],<ref name="Global Christianity" /> [[ওশেনিয়া]],<ref name="Global Christianity" /> ও [[বিশ্ব]]ব্যাপী<ref name="Global Christianity" /> |
| area = [[আমেরিকা অঞ্চল|আমেরিকা]],<ref name="Global Christianity" /> [[ইউরোপ]],<ref name="Global Christianity" /> [[সাহারা-নিম্ন আফ্রিকা]],<ref name="Global Christianity" /> [[ওশেনিয়া]],<ref name="Global Christianity" /> ও [[বিশ্ব]]ব্যাপী<ref name="Global Christianity" /> |
||
| headquarters = [[রোম]],<ref name="Encyclopædia Britannica1">{{ |
| headquarters = [[রোম]],<ref name="Encyclopædia Britannica1">{{বিশ্বকোষ উদ্ধৃতি | ইউআরএল=http://www.britannica.com/eb/article-9059117/pentarchy | শিরোনাম=Pentarchy | বিশ্বকোষ=[[Encyclopædia Britannica]] | সংগ্রহের-তারিখ=14 February 2010 | উক্তি=The proposed government of universal [[Christendom]] by five [[Patriarch|patriarchal sees]] under the auspices of a single universal empire. Formulated in the legislation of the emperor [[Justinian I]] (527–65), especially in his Novella 131, the theory received formal ecclesiastical sanction at the [[Quinisext Council|Council in Trullo]] (692), which ranked the five sees as Rome, Constantinople, Alexandria, Antioch, and Jerusalem.}}</ref> [[কনস্টান্টিনোপল]],<ref name="Encyclopædia Britannica1" /> [[আলেক্সান্দ্রিয়া]],<ref name="Encyclopædia Britannica1" /> [[আন্তিয়খিয়া]],<ref name="Encyclopædia Britannica1" /> [[জেরুসালেম|যিরূশালেম]]<ref name="Encyclopædia Britannica1" /> ও অন্যান্য |
||
|language = যাজকীয় [[লাতিন]],<ref |
|language = যাজকীয় [[লাতিন]],<ref>{{বই উদ্ধৃতি|ইউআরএল=https://books.google.com/books?id=fUqcAQAAQBAJ|শিরোনাম=The Oxford Dictionary of the Christian Church|শেষাংশ=Cross|প্রথমাংশ=Frank Leslie|শেষাংশ২=Livingstone|প্রথমাংশ২=Elizabeth A.|তারিখ=২০০৫|প্রকাশক=Oxford University Press|পাতা=[https://books.google.com/books?id=fUqcAQAAQBAJ&pg=PA961 ৯৬১]|ভাষা=en|আইএসবিএন=978-0-19-280290-3|oclc=58998735}}</ref> কইনি [[গ্রিক ভাষা|গ্রীক]],<ref>{{বই উদ্ধৃতি|ইউআরএল=https://books.google.co.in/books?id=WJbd0m6YaFkC|শিরোনাম=A History of Ancient Greek: From the Beginnings to Late Antiquity|শেষাংশ=Christidis|প্রথমাংশ=A.-F.|শেষাংশ২=Christidēs|প্রথমাংশ২=A.-Ph|শেষাংশ৩=Arapopoulou|প্রথমাংশ৩=Maria|শেষাংশ৪=Χρίτη|প্রথমাংশ৪=Μαρία|শেষাংশ৫=Chrite|প্রথমাংশ৫=Maria|তারিখ=২০০৭-০১-১১|প্রকাশক=Cambridge University Press|পাতা=[https://books.google.co.in/books?id=WJbd0m6YaFkC&pg=PA436 ৪৩৬]|ভাষা=en|আইএসবিএন=978-0-521-83307-3}}</ref> [[সিরীয় ভাষা|সিরীয়]],<ref>{{বই উদ্ধৃতি|শেষাংশ=Brock|প্রথমাংশ=Sebastian P.|লেখক-সংযোগ=Sebastian P. Brock|শিরোনাম=Studies in Syriac Christianity: History, Literature, and Theology|বছর=1992b|অবস্থান=Aldershot|প্রকাশক=Variorum|আইএসবিএন=978-0-86078-305-3|ইউআরএল=https://books.google.com/books?id=Hp_YAAAAMAAJ}}</ref> যাজকীয় [[স্লাভোনিক]],<ref>{{বই উদ্ধৃতি|ইউআরএল=https://books.google.com/books?id=YIAYMNOOe0YC&q=Cyrillic+preslav&pg=PR1 |শিরোনাম=Southeastern Europe in the Middle Ages, 500–1250|ধারাবাহিক=Cambridge Medieval Textbooks|লেখক= Florin Curta|প্রকাশক=Cambridge University Press|বছর=2006|আইএসবিএন=978-0-521-81539-0|পাতাসমূহ= 221–222}}</ref> ও স্থানীয় ভাষাসমূহ |
||
| founder = [[যিশু]]<br/>(পবিত্র ঐতিহ্যমতে)<ref name="Ehrman Jesus became God">{{ |
| founder = [[যিশু]]<br/>{{small|(পবিত্র ঐতিহ্যমতে)}}<ref name="Ehrman Jesus became God">{{বই উদ্ধৃতি |শেষাংশ=Ehrman |প্রথমাংশ=Bart D. |শিরোনাম=How Jesus Became God: The Exaltation of a Jewish Preacher from Galilee |ইউআরএল=https://archive.org/details/howjesusbecamego0000ehrm |প্রকাশক= HarperOne |আইএসবিএন= 978-0-06-177818-6|বছর=2014}}</ref> |
||
| founded_date = [[১ম শতাব্দী]] |
| founded_date = [[১ম শতাব্দী]] |
||
| founded_place = [[রোমীয় যিহূদিয়া প্রদেশ|যিহূদিয়া]], [[রোমান সাম্রাজ্য]]<ref name="RCC">{{ |
| founded_place = [[রোমীয় যিহূদিয়া প্রদেশ|যিহূদিয়া]], [[রোমান সাম্রাজ্য]]<ref name="RCC">{{ওয়েব উদ্ধৃতি |শেষাংশ১=Stanford |প্রথমাংশ১=Peter |শিরোনাম=Roman Catholic Church |ইউআরএল=http://www.bbc.co.uk/religion/religions/christianity/catholic/catholic_1.shtml#top |ওয়েবসাইট=BBC Religions |প্রকাশক=BBC |সংগ্রহের-তারিখ=1 February 2017}}</ref><ref>Bokenkotter, 2004, [https://www.amazon.com/Concise-History-Catholic-Church-Revised/dp/0385516134/ p. 18]</ref> |
||
| separated_from = দ্বিতীয় মন্দির ইহুদিধর্ম |
| separated_from = দ্বিতীয় মন্দির ইহুদিধর্ম |
||
| members = ২.৪ বিলিয়ন+<ref name="gordonconwell.edu" /> |
| members = ২.৪ বিলিয়ন+<ref name="gordonconwell.edu" /> |
||
| other_names = শিষ্য,<ref name=EDT234>{{ |
| other_names = শিষ্য,<ref name=EDT234>{{বই উদ্ধৃতি|শেষাংশ=Rayburn|প্রথমাংশ=Robert S.|লেখক-সংযোগ=Robert S. Rayburn|শিরোনাম=[[Evangelical Dictionary of Theology]]|অধ্যায়=Christians, Names Of|বছর=2001|পাতা=234|অধ্যায়ের-ইউআরএল=https://books.google.com/books?id=yu846j61u0wC&pg=PA234}}</ref> খ্রিস্টের অনুসারী,<ref>{{বই উদ্ধৃতি|শিরোনাম=A Short History of Global Evangelicalism|অধ্যায়=Localism and Transnationality: 1970s to 2010|প্রথমাংশ১=Mark|শেষাংশ১=Hutchinson|প্রথমাংশ২=John|শেষাংশ২=Wolffe|বছর=2012|প্রকাশক=[[Cambridge University Press]]|পাতা=269|ইউআরএল=https://books.google.com/books?id=rz8K0h_d8RQC&pg=PA269}}</ref> নাসরানি,<ref>Stephen Goranson, "Nazarenes," Anchor Bible Dictionary, 4: 1049-1050; James F. Strange, "Nazareth," Anchor Bible Dictionary, 4: 1050-1,051</ref> পথ<ref name=EDT234 /> |
||
| ministers = [[পরিচারক]], [[প্রাচীন (খ্রীষ্টধর্ম)|প্রাচীন]], [[পাদ্রি]], [[বিশপ]], [[প্রচারক]], [[পাস্তর]], [[প্রেসবিতার]], [[মন্ত্রী]], [[পোপ]] |
|||
| ministers = |
|||
| website = |
| website = |
||
}} |
}} |
||
{{খ্রিস্টধর্ম}} |
{{খ্রিস্টধর্ম}} |
||
'''খ্রিস্টধর্ম'''<ref group=টীকা>এই নিবন্ধে "খ্রিস্ট", "খ্রিস্টান", "খ্রিস্টধর্ম", "খ্রিস্টাব্দ", "যিশু" |
'''খ্রিস্টধর্ম'''<ref group=টীকা>এই নিবন্ধে "খ্রিস্ট", "খ্রিস্টান", "খ্রিস্টধর্ম", "খ্রিস্টাব্দ", "যিশু" ইত্যাদি বানানগুলি প্রমিত বানান হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে। বাংলায় বিভিন্ন গ্রন্থে ও রচনায় খ্রীষ্ট, খ্রিষ্ট, খৃষ্ট, খ্রীষ্টান, খ্রিষ্টান, খ্রিষ্টাব্দ, যীশু ইত্যাদি বানানগুলিও বহুল প্রচলিত।</ref> ({{lang-el|Χριστιανισμός}}; {{lang-he|נצרות}}; {{lang-ar|المسيحية}}; {{lang-arc|ܡܫܝܚܝܘܬܐ}}) একটি [[ইব্রাহিমীয় ধর্ম|অব্রাহামীয়]] [[একেশ্বরবাদ]]ী ধর্ম যা [[নাসরৎ|নাসরতীয়]] [[যীশু]]র [[নতুন নিয়মে যীশুর জীবন|জীবন]] ও [[যীশুর পরিচর্যা|শিক্ষার]] ওপর ভিত্তি করে প্রবর্তিত হয়। অনুসারীর সংখ্যা অনুযায়ী এটি [[প্রধান ধর্মাবলম্বী গোষ্ঠীসমূহ|পৃথিবীর বৃহত্তম ধর্ম]]; এর অনুসারী সংখ্যা প্রায় ২৫০ কোটি।<ref>{{Cite web|title=World's largest religion by population is still Christianity|url=https://countrymeters.info/en/World#religion|access-date=1 January 2020|website=Countrymeters|language=en-US}}</ref> এর অনুসারীগণ—যারা [[খ্রিস্টান]] হিসেবে পরিচিত—[[দেশ অনুযায়ী খ্রিস্টধর্ম|১৫৭টি দেশ ও অঞ্চলের]] সংখ্যাগুরু জনগোষ্ঠী,<ref>[[Pew Forum|The Pew Forum on Religion and Public Life]]. December 2012. "[https://assets.pewresearch.org/wp-content/uploads/sites/11/2014/01/global-religion-full.pdf The Global Religious Landscape: A Report on the Size and Distribution of the World's Major Religious Groups as of 2010]." DC: Pew Research Center. [https://www.pewforum.org/2012/12/18/global-religious-landscape-exec/ Article].</ref> এবং তারা বিশ্বাস করে যে যীশু হলেন [[ঈশ্বরের পুত্র]], যাঁর [[মশীহ]] বা [[খ্রীষ্ট (উপাধি)|খ্রীষ্ট]] হিসেবে আগমনের ব্যাপারে [[হিব্রু বাইবেল]] বা [[পুরাতন নিয়ম]]ে ভবিষ্যদ্বাণী করা হয়েছে এবং [[নতুন নিয়ম]]ে তা বিবৃত হয়েছে।<ref>{{harvnb|Woodhead|2004|p=n.p}}</ref> |
||
খ্রিস্টধর্ম সাংস্কৃতিকভাবে এর |
খ্রিস্টধর্ম সাংস্কৃতিকভাবে এর [[পশ্চিমা খ্রিস্টধর্ম|পশ্চিমা]] ও [[পূর্বদেশীয় খ্রিস্টধর্ম|পূর্বদেশীয় শাখাগুলোর]] মধ্যে এবং পরিত্রাণের প্রকৃতি ও প্রতিপাদন, যাজকাভিষেক, মণ্ডলীতত্ত্ব ও [[খ্রিস্টতত্ত্ব]] বিষয়ক মতাদর্শে বৈচিত্র্যময়। খ্রিস্টানদের সাধারণ ধর্মমত অনুসারে যীশু হলেন [[ঈশ্বরের পুত্র]] ও [[পুত্র ঈশ্বর|পুত্র ঈশ্বরের]] অবতার—[[অবতারবাদ|মাংসে মূর্তিমান বাক্য]]—যিনি [[যীশুর পরিচর্যা|পরিচর্যা]], [[যীশুর দুঃখভোগ|দুঃখভোগ]] ও [[যীশুর ক্রুশারোপণ|ক্রুশারোপিত]] হয়ে মৃত্যুবরণ করেছিলেন, কিন্তু পরবর্তীতে মানবজাতির পরিত্রাণের জন্য [[যীশুর পুনরুত্থান|মৃতদের মধ্য থেকে পুনরুত্থিত]] হয়েছিলেন, যা বাইবেলে [[সুসমাচার]] তথা “সুখবর” বলে অবিহিত হয়েছে। [[সাধু মথি লিখিত সুসমাচার|সাধু মথি]], [[সাধু মার্ক লিখিত সুসমাচার|মার্ক]], [[সাধু লূক লিখিত সুসমাচার|লূক]] ও [[সাধু যোহন লিখিত সুসমাচার|যোহন]] লিখিত চারটি [[যাজকীয় অনুশাসন|ধর্মসম্মত]] [[সুসমাচার|সুসমাচারের]] পাশাপাশি এর পটভূমি হিসেবে [[ইহুদি]] পুরাতন নিয়ম হল যীশুর জীবন ও শিক্ষার বিবরণী। |
||
খ্রিস্টীয় ১ম শতাব্দীতে [[রোমান সাম্রাজ্য]]ের যিহূদিয়া প্রদেশে একটি দ্বিতীয় মন্দিরভিত্তিক ইহুদি উপদল হিসেবে খ্রিস্টধর্ম যাত্রা শুরু করে। প্রারম্ভিক নিপীড়ন সত্ত্বেও |
খ্রিস্টীয় ১ম শতাব্দীতে [[রোমান সাম্রাজ্য]]ের [[রোমীয় যিহূদিয়া প্রদেশ|যিহূদিয়া প্রদেশে]] একটি দ্বিতীয় মন্দিরভিত্তিক ইহুদি উপদল হিসেবে খ্রিস্টধর্ম যাত্রা শুরু করে। প্রারম্ভিক নিপীড়ন সত্ত্বেও যীশুর [[প্রেরিতগণ]] ও তাঁদের অনুসারীরা [[লেভান্ত]], [[ইউরোপ]], [[আনাতোলিয়া]], [[মেসোপটেমিয়া]], [[জর্ডান|আন্তঃযর্দন]], [[মিসর]] ও [[ইথিওপিয়া]]য় ছড়িয়ে পড়ে। এটি দ্রুত পরজাতীয় ঈশ্বরভীরুদের আকৃষ্ট করে, যা একে ইহুদি রীতিনীতি থেকে ভিন্নপথে চালিত করে। ৭০ খ্রিস্টাব্দে [[যিরূশালেম|যিরূশালেমের]] পতনের পর দ্বিতীয় মন্দিরভিত্তিক [[ইহুদিধর্ম]]ের অবসান ঘটে এবং খ্রিস্টধর্ম ক্রমশ ইহুদিধর্ম থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। সম্রাট [[মহান কন্সট্যান্টাইন|মহান কনস্টান্টিন]] মিলান ফরমান (৩১৩ খ্রি.) জারি করার মাধ্যমে রোমান সাম্রাজ্যে খ্রিস্টধর্মকে বৈধতা প্রদান করেন। পরবর্তীতে তিনি নিকেয়ার প্রথম পরিষদ (৩২৫ খ্রি.) আহ্বান করেন, যেখানে প্রারম্ভিক খ্রিস্টধর্মকে সংহত করা হয় যা রোমান সাম্রাজ্যের রাষ্ট্রীয় মণ্ডলীতে (৩৮০ খ্রি.) পরিণত হয়। প্রধান বিচ্ছেদগুলোর পূর্বে খ্রিস্টধর্মের সংযুক্ত মণ্ডলীর ইতিহাসকে প্রায়শই “মহামণ্ডলী” বলে অবিহিত করা হয় (যদিও তৎকালে প্রচলিত মতের বিরোধী রহস্যবাদী খ্রিস্টান ও ইহুদি খ্রিস্টানদের অস্তিত্ব ছিল)। খ্রিস্টতত্ত্বকে কেন্দ্র করে এফেসুসের পরিষদের (৪৩১ খ্রি.) পর পূর্ব মণ্ডলী এবং চ্যালসিডনের পরিষদের (৪৫১ খ্রি.) প্রাচ্যদেশীয় সনাতনপন্থী মণ্ডলী বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে।<ref>{{বই উদ্ধৃতি|ইউআরএল=https://books.google.com/books?id=q-vhwjamOioC&pg=PA23&dq=anagignoskomena#v=onepage&q=anagignoskomena |শিরোনাম=Orthodox and Wesleyan Scriptural understanding and practice | সম্পাদক=S. T. Kimbrough|প্রকাশক=St Vladimir's Seminary Press|বছর=2005|আইএসবিএন=978-0-88141-301-4}}</ref> অন্যদিকে [[পোপ|রোমের বিশপের]] কর্তৃত্বকে কেন্দ্র করে [[পূর্বদেশীয় সনাতনপন্থী মণ্ডলী]] ও [[ক্যাথলিক মণ্ডলী]]র মধ্যে মহাবিচ্ছেদ (১০৫৪ খ্রি.) ঘটে। ধর্মতাত্ত্বিক ও মণ্ডলীতাত্ত্বিক বিতর্ককে (প্রধানত আত্মপক্ষসমর্থন ও পোপীয় আধিপত্য) কেন্দ্র করে সংস্কার যুগে (১৬শ শতাব্দী) [[প্রতিবাদী মতবাদ (খ্রিস্টধর্ম)|প্রতিবাদী মণ্ডলী]] পূর্ব ক্যাথলিক মণ্ডলীসমূহ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে অসংখ্য উপদলে বিভক্ত হয়ে পড়ে। পশ্চিমা সভ্যতার বিকাশে, বিশেষত ইউরোপে প্রাচীনযুগের শেষভাগ থেকে মধ্যযুগে, খ্রিস্টধর্ম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।<ref>''Religions in Global Society''. p. 146, Peter Beyer, 2006</ref><ref name="Cambridge University Historical Series">Cambridge University Historical Series, ''An Essay on Western Civilization in Its Economic Aspects'', p. 40: Hebraism, like Hellenism, has been an all-important factor in the development of Western Civilization; Judaism, as the precursor of Christianity, has indirectly had had much to do with shaping the ideals and morality of western nations since the christian era.</ref><ref name="Caltron J.H Hayas">Caltron J.H Hayas, ''Christianity and Western Civilization'' (1953), Stanford University Press, p. 2: "That certain distinctive features of our Western civilization—the civilization of western Europe and of America—have been shaped chiefly by Judaeo – Graeco – Christianity, Catholic and Protestant."</ref><ref name="Horst Hutter">Horst Hutter, University of New York, ''Shaping the Future: Nietzsche's New Regime of the Soul And Its Ascetic Practices'' (2004), p. 111: three mighty founders of Western culture, namely Socrates, Jesus, and Plato.</ref><ref name="Fred Reinhard Dallmayr">Fred Reinhard Dallmayr, ''Dialogue Among Civilizations: Some Exemplary Voices'' (2004), p. 22: Western civilization is also sometimes described as "Christian" or "Judaeo- Christian" civilization.</ref> [[আবিষ্কারের যুগ]]ের (১৫শ–১৭শ শতাব্দী) পর [[খ্রিস্টধর্ম প্রচারাভিযান]]ের মাধ্যমে খ্রিস্টধর্ম দুই [[আমেরিকা অঞ্চল|আমেরিকা]] মহাদেশ, [[ওশেনিয়া]], [[সাহারা-নিম্ন আফ্রিকা]] এবং বিশ্বের অন্যত্র ছড়িয়ে পড়ে।<ref name="Spread">{{বই উদ্ধৃতি|ইউআরএল = https://books.google.com/books?id=g2AtOlJMPTUC&pg=PA52|শিরোনাম =Muslim-Christian Relations|প্রকাশক = Amsterdam University Press|উক্তি=The enthusiasm for evangelization among the Christians was also accompanied by the awareness that the most immediate problem to solve was how to serve the huge number of new [[Conversion to Christianity|converts]]. Simatupang said, if the number of the Christians were double or triple, then the number of the ministers should also be doubled or tripled and the tole of the laity should be maximized and Christian service to society through schools, universities, hospitals and orphanages, should be increased. In addition, for him the Christian mission should be involved in the struggle for justice amid the process of modernization.|সংগ্রহের-তারিখ = 18 October 2007|আইএসবিএন = 978-90-5356-938-2|বছর = 2006}}</ref><ref name="Charity">{{বই উদ্ধৃতি|ইউআরএল = https://books.google.com/?id=WmuV6g0yR3sC&pg=PA77|পাতা=77|লেখক=Fred Kammer|শিরোনাম =Doing Faith Justice|প্রকাশক = [[Paulist Press]]|উক্তি=Theologians, bishops, and preachers urged the Christian community to be as compassionate as their God was, reiterating that creation was for all of humanity. They also accepted and developed the identification of Christ with the poor and the requisite Christian duty to the poor. Religious congregations and individual charismatic leaders promoted the development of a number of helping institutions-hospitals, hospices for [[Christian pilgrimage|pilgrims]], orphanages, shelters for unwed mothers-that laid the foundation for the modern "large network of hospitals, orphanages and schools, to serve the poor and society at large."|সংগ্রহের-তারিখ = 18 October 2007|আইএসবিএন = 978-0-8091-4227-9|তারিখ = 1 May 2004}}</ref><ref name="Service">{{বই উদ্ধৃতি|ইউআরএল = https://books.google.com/books?id=dz_EM2ofIb4C&pg=PA132|শিরোনাম =Christian Church Women: Shapers of a Movement|প্রকাশক = Chalice Press|উক্তি=In the central provinces of India they established schools, orphanages, hospitals, and churches, and spread the gospel message in zenanas.|সংগ্রহের-তারিখ = 18 October 2007|আইএসবিএন = 978-0-8272-0463-8|তারিখ = March 1994}}</ref> |
||
খ্রিস্টধর্মের চারটি বৃহত্তম শাখা হল [[ক্যাথলিক মণ্ডলী]] (১৩০ কোটি/৫০.১%), [[প্রতিবাদী মতবাদ (খ্রিস্টধর্ম)|প্রতিবাদী মণ্ডলী]] (৯২ কোটি/৩৬.৭%), [[পূর্বদেশীয় সনাতনপন্থী মণ্ডলী]] (২৩ কোটি) ও [[প্রাচ্যদেশীয় সনাতনপন্থী মণ্ডলী]] (৬ কোটি ২০ লক্ষ/১১.৯%),<ref>{{ |
খ্রিস্টধর্মের চারটি বৃহত্তম শাখা হল [[ক্যাথলিক মণ্ডলী]] (১৩০ কোটি/৫০.১%), [[প্রতিবাদী মতবাদ (খ্রিস্টধর্ম)|প্রতিবাদী মণ্ডলী]] (৯২ কোটি/৩৬.৭%), [[পূর্বদেশীয় সনাতনপন্থী মণ্ডলী]] (২৩ কোটি) ও [[প্রাচ্যদেশীয় সনাতনপন্থী মণ্ডলী]] (৬ কোটি ২০ লক্ষ/১১.৯%),<ref>{{সাময়িকী উদ্ধৃতি |শিরোনাম=Christian Traditions |সাময়িকী=Pew Research Center's Religion & Public Life Project |তারিখ=19 December 2011 |ইউআরএল=https://www.pewforum.org/2011/12/19/global-christianity-traditions/ |উক্তি=About half of all Christians worldwide are Catholic (50%), while more than a third are Protestant (37%). Orthodox communions comprise 12% of the world’s Christians.}}</ref><ref name="CSGC2019">{{ওয়েব উদ্ধৃতি |শিরোনাম=Status of Global Christianity, 2019, in the Context of 1900–2050 |ইউআরএল=https://www.gordonconwell.edu/wp-content/uploads/sites/13/2019/04/StatusofGlobalChristianity20191.pdf?__cf_chl_jschl_tk__=dbc877fea75b25fc6737b0fd6bd1d6bd5d4e0119-1589502882-0-AWKZpJ8Cde9iLLQo_A-22M_6Yx_NzYkoJXkWheGxqt79XJKGAsGe9toy2d0WPGwhF-35Z5iB65LQsTW3m1PdGbFd6Pz1FN8-LTUPA-7p3VA9qU1sUJgKAyskRYjdAd0nnbE1K-Hekmpb1HvqRyiyTVMvdoiAQgbQ-x1tFESeE7IEPbEr0ePTUaTOq_G4kXbl8tty1gBEzw8IXz3nc987229mqJBKaNGFMSVFhwIzaLKjTkv5qbwuKBmYwZgAVO2HRopF4H-YG7QxTS3V8NgWvWxvKHSwzN3xPcJXwStewDjYL9XE7FUB8bncjdGvSFX_yA3OZlfXOAqatMcH3w0Jebe-r7HC14HXVGSUPzjxATzH3krdCRrsVQ5T_N3AEDXA-TDldZcNJpl_EpuDcfobDniMsNiSbFzIH6EuBv7Vy4aP |প্রকাশক=Center for the Study of Global Christianity}}</ref> যাদের মধ্যে ঐক্যের (বিশ্বব্যাপ্তিবাদ) বিভিন্ন প্রচেষ্টা জারি রয়েছে।<ref name="BBC-Orthodox Church split">{{সংবাদ উদ্ধৃতি|ইউআরএল=https://www.bbc.com/news/world-europe-45877584|শিরোনাম=Orthodox Church split: Five reasons why it matters|শেষাংশ=Peter|প্রথমাংশ=Laurence|তারিখ=2018-10-16|কর্ম=BBC News|সংগ্রহের-তারিখ=2022-01-24|ভাষা=en-GB}}</ref> পাশ্চাত্যে খ্রিস্টধর্মের অনুসারীর সংখ্যা সাম্প্রতিককালে হ্রাস পেলেও এটি এখনও অঞ্চলটির সবচেয়ে প্রভাবশালী ধর্ম, যেখানে প্রায় ৭০% জনগণ নিজেদের খ্রিস্টান হিসেবে চিহ্নিত করে।<ref name="Global Christianity">{{ওয়েব উদ্ধৃতি|ইউআরএল=https://www.pewforum.org/2011/12/19/global-christianity-exec/|শিরোনাম=The Size and Distribution of the World’s Christian Population|শেষাংশ=NW|প্রথমাংশ=1615 L. St|শেষাংশ২=Washington|প্রথমাংশ২=Suite 800|তারিখ=2011-12-19|ওয়েবসাইট=Pew Research Center's Religion & Public Life Project|ভাষা=en-US|সংগ্রহের-তারিখ=2022-01-24|শেষাংশ৩=Inquiries|প্রথমাংশ৩=DC 20036 USA202-419-4300 {{!}} Main202-419-4349 {{!}} Fax202-419-4372 {{!}} Media}}</ref> বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল মহাদেশ [[আফ্রিকা]] ও [[এশিয়া]]য় খ্রিস্টানদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে।<ref name="Global Christianity" /> কিছু প্রতিবেদন অনুযায়ী পৃথিবীর কিছু অঞ্চলে, বিশেষত [[মধ্যপ্রাচ্য]], [[উত্তর আফ্রিকা]], [[পূর্ব এশিয়া]] ও [[দক্ষিণ এশিয়া]]য় খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের এক গুরুত্বপূর্ণ অংশ নিপীড়নের শিকার।<ref>{{সংবাদ উদ্ধৃতি|ইউআরএল=https://www.bbc.com/news/uk-48146305|শিরোনাম=Christian persecution 'at near genocide levels'|তারিখ=2019-05-03|কর্ম=BBC News|সংগ্রহের-তারিখ=2022-01-24|ভাষা=en-GB}}</ref><ref>{{সংবাদ উদ্ধৃতি|ইউআরএল=http://www.theguardian.com/world/2019/may/02/persecution-driving-christians-out-of-middle-east-report|শিরোনাম=Persecution of Christians 'coming close to genocide' in Middle East – report|তারিখ=2019-05-02|ওয়েবসাইট=the Guardian|ভাষা=en|সংগ্রহের-তারিখ=2022-01-24}}</ref><ref>{{সংবাদ উদ্ধৃতি|ইউআরএল=http://www.theguardian.com/world/2019/jan/16/one-in-three-christians-face-persecution-in-asia-report-finds|শিরোনাম=One in three Christians face persecution in Asia, report finds|তারিখ=2019-01-16|ওয়েবসাইট=the Guardian|ভাষা=en|সংগ্রহের-তারিখ=2022-01-24}}</ref> |
||
==অনুসারীর সংখ্যা ও মণ্ডলীসমূহ== |
== অনুসারীর সংখ্যা ও মণ্ডলীসমূহ == |
||
[[File:BranchesofChristianityBN.svg|thumb|left|600px|খ্রিস্টধর্মের শাখাসমূহের কালরেখা]] |
[[File:BranchesofChristianityBN.svg|thumb|left|600px|খ্রিস্টধর্মের শাখাসমূহের কালরেখা]] |
||
অনুসারীর সংখ্যা অনুযায়ী খ্রিস্টধর্ম বিশ্বের বৃহত্তম ধর্ম।<ref>{{সংবাদ উদ্ধৃতি |শিরোনাম=Study: Christian population shifts from Europe |লেখক=Zoll, Rachel |ইউআরএল=https://www.theguardian.com/world/feedarticle/10003271 |সংবাদপত্র=Associated Press |তারিখ=19 December 2011 |সংগ্রহের-তারিখ=25 February 2012 |আর্কাইভের-ইউআরএল=https://web.archive.org/web/20130930145246/http://www.theguardian.com/world/feedarticle/10003271 |আর্কাইভের-তারিখ=৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৩ |অকার্যকর-ইউআরএল=না }}</ref><ref name="PewDec2012">{{ওয়েব উদ্ধৃতি|ইউআরএল=http://www.pewforum.org/2012/12/18/global-religious-landscape-exec/|শিরোনাম=The Global Religious Landscape|প্রকাশক=Pew Research Center|তারিখ=December 2012|সংগ্রহের-তারিখ=5 November 2018|আর্কাইভের-ইউআরএল=https://web.archive.org/web/20180117084054/http://www.pewforum.org/2012/12/18/global-religious-landscape-exec/|আর্কাইভের-তারিখ=১৭ জানুয়ারি ২০১৮|অকার্যকর-ইউআরএল=না}}</ref> সারা বিশ্বে প্রায় ২৪০ কোটি খ্রিস্টধর্মের অনুসারী আছে,<ref name=" |
অনুসারীর সংখ্যা অনুযায়ী খ্রিস্টধর্ম বিশ্বের বৃহত্তম ধর্ম।<ref>{{সংবাদ উদ্ধৃতি |শিরোনাম=Study: Christian population shifts from Europe |লেখক=Zoll, Rachel |ইউআরএল=https://www.theguardian.com/world/feedarticle/10003271 |সংবাদপত্র=Associated Press |তারিখ=19 December 2011 |সংগ্রহের-তারিখ=25 February 2012 |আর্কাইভের-ইউআরএল=https://web.archive.org/web/20130930145246/http://www.theguardian.com/world/feedarticle/10003271 |আর্কাইভের-তারিখ=৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৩ |অকার্যকর-ইউআরএল=না }}</ref><ref name="PewDec2012">{{ওয়েব উদ্ধৃতি|ইউআরএল=http://www.pewforum.org/2012/12/18/global-religious-landscape-exec/|শিরোনাম=The Global Religious Landscape|প্রকাশক=Pew Research Center|তারিখ=December 2012|সংগ্রহের-তারিখ=5 November 2018|আর্কাইভের-ইউআরএল=https://web.archive.org/web/20180117084054/http://www.pewforum.org/2012/12/18/global-religious-landscape-exec/|আর্কাইভের-তারিখ=১৭ জানুয়ারি ২০১৮|অকার্যকর-ইউআরএল=না}}</ref> সারা বিশ্বে প্রায় ২৪০ কোটি খ্রিস্টধর্মের অনুসারী আছে,<ref name="Global Christianity" /><ref name="gordonconwell.edu">{{ওয়েব উদ্ধৃতি|ইউআরএল=http://www.gordonconwell.edu/resources/documents/1IBMR2015.pdf|শিরোনাম=Christianity 2015: Religious Diversity and Personal Contact|প্রকাশক=gordonconwell.edu|তারিখ=January 2015|সংগ্রহের-তারিখ=29 May 2015|আর্কাইভের-ইউআরএল=https://web.archive.org/web/20170525141543/http://www.gordonconwell.edu/resources/documents/1IBMR2015.pdf|আর্কাইভের-তারিখ=২৫ মে ২০১৭|অকার্যকর-ইউআরএল=হ্যাঁ}}</ref><ref name="World">33.39% of ~7.2 billion world population (under the section 'People') {{ওয়েব উদ্ধৃতি|ইউআরএল=https://www.cia.gov/library/publications/the-world-factbook/geos/xx.html|শিরোনাম=World|ওয়েবসাইট=The World Factbook|প্রকাশক=CIA|সংগ্রহের-তারিখ=১৭ জুলাই ২০১৪|আর্কাইভের-ইউআরএল=https://web.archive.org/web/20100105171656/https://www.cia.gov/library/publications/the-world-factbook/geos/xx.html|আর্কাইভের-তারিখ=৫ জানুয়ারি ২০১০|অকার্যকর-ইউআরএল=না}}</ref> যা বিশ্ব জনসংখ্যার এক-তৃতীয়াংশ। বিশ্বের দুই-তৃতীয়াংশ রাষ্ট্রে খ্রিস্টধর্ম সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণের ধর্ম।<ref name="Global Christianity"/> বর্তমান যুগে খ্রিস্টধর্ম বেশ কিছু শাখা বা মণ্ডলীতে বিভক্ত। এদের মধ্যে ৫টি প্রধান শাখা হল [[রোমান ক্যাথলিক মণ্ডলী]] (১৩০ কোটি অনুসারী), [[প্রতিবাদী মতবাদ (খ্রিস্টধর্ম)|প্রতিবাদী মণ্ডলী]] (৯২ কোটি অনুসারী), [[পূর্বদেশীয় সনাতনপন্থী মণ্ডলী]] (২৭ কোটি অনুসারী<ref name="BBC-Orthodox Church split" />), [[প্রাচ্যদেশীয় সনাতনপন্থী মণ্ডলী]] (৮ কোটি অনুসারী) এবং ইঙ্গ (অ্যাংলিকান) মণ্ডলী (৮৫ লক্ষ)। এদের বাইরেও বিশ্বের সর্বত্র ভিন্ন ভিন্ন মতের অনেক মণ্ডলী রয়েছে। |
||
===রোমান ক্যাথলিক (বিশ্বজনীন) মণ্ডলী=== |
===রোমান ক্যাথলিক (বিশ্বজনীন) মণ্ডলী=== |
||
রোমান ক্যাথলিক মণ্ডলী খ্রিস্টধর্মের বৃহত্তম শাখা। প্রায় ১২০ কোটি খ্রিস্টান রোমান ক্যাথলিক মণ্ডলীর সদস্য। ক্যাথলিক খ্রিস্টানরা পুণ্যপিতা বা পোপের কর্তৃত্ব স্বীকার করে, যিনি ক্যাথলিক মণ্ডলীকে শাসন ও পরিচালনা করেন। পুণ্যপিতাকে সন্তু পিতরের উত্তরাধিকারী হিসেবে এবং এর ফলে রোমান ক্যাথলিক মণ্ডলীর প্রধান হিসেবে গণ্য করা হয়। ক্যাথলিক খ্রিস্টানরা সাতটি ধর্মানুষ্ঠানে বিশ্বাস করে, যেগুলি মানুষকে পাপ থেকে পরিত্রাণ অর্জন করে স্বর্গলাভ নিশ্চিত করতে সাহায্য করে। |
রোমান ক্যাথলিক মণ্ডলী খ্রিস্টধর্মের বৃহত্তম শাখা। প্রায় ১২০ কোটি খ্রিস্টান রোমান ক্যাথলিক মণ্ডলীর সদস্য। ক্যাথলিক খ্রিস্টানরা [[পুণ্যপিতা]] বা পোপের কর্তৃত্ব স্বীকার করে, যিনি ক্যাথলিক মণ্ডলীকে শাসন ও পরিচালনা করেন। পুণ্যপিতাকে সন্তু পিতরের উত্তরাধিকারী হিসেবে এবং এর ফলে রোমান ক্যাথলিক মণ্ডলীর প্রধান হিসেবে গণ্য করা হয়। ক্যাথলিক খ্রিস্টানরা সাতটি ধর্মানুষ্ঠানে বিশ্বাস করে, যেগুলি মানুষকে পাপ থেকে পরিত্রাণ অর্জন করে স্বর্গলাভ নিশ্চিত করতে সাহায্য করে। |
||
===প্রতিবাদী মতবাদ=== |
===প্রতিবাদী মতবাদ=== |
||
প্রতিবাদী মতবাদের অনুসারীরা পুণ্যপিতার কর্তৃত্ব অস্বীকার করে। তারা মনে করে শুধুমাত্র বাইবেল সমস্ত কর্তৃত্বের উৎস। প্রতিবাদীদের কাছে সাতটি ধর্মানুষ্ঠানের গুরুত্ব তুলনামূলকভাবে কম। তারা ঈশ্বরে বিশ্বাসের মাধ্যমে পরিত্রাণ অর্জনে বিশ্বাস করে। প্রতিবাদী ঐতিহ্যের ভেতরে অনেক উপদল বিদ্যামান, যেমন দীক্ষাবাদী (ব্যাপ্টিস্ট) এবং পদ্ধতিবাদী (মেথডিস্ট)। এছাড়া কিছু প্রান্তিক সম্প্রদায়ও বিদ্যমান, যারা মূলধারার প্রতিবাদী বিশ্বাসের সাথে দ্বিমত পোষণ করে, যেমন একব্যক্তি একেশ্বরবাদী (ইউনিটারিয়ান) এবং জিহোভার সাক্ষীগণ। প্রতিবাদী সম্প্রদায়গুলির মধ্যে মূল্যবোধে ব্যাপক বৈচিত্র্য বিদ্যমান। |
প্রতিবাদী মতবাদের অনুসারীরা পুণ্যপিতার কর্তৃত্ব অস্বীকার করে। তারা মনে করে শুধুমাত্র বাইবেল সমস্ত কর্তৃত্বের উৎস। প্রতিবাদীদের কাছে সাতটি ধর্মানুষ্ঠানের গুরুত্ব তুলনামূলকভাবে কম। তারা ঈশ্বরে বিশ্বাসের মাধ্যমে পরিত্রাণ অর্জনে বিশ্বাস করে। প্রতিবাদী ঐতিহ্যের ভেতরে অনেক উপদল বিদ্যামান, যেমন দীক্ষাবাদী (ব্যাপ্টিস্ট) এবং পদ্ধতিবাদী (মেথডিস্ট)। এছাড়া কিছু প্রান্তিক সম্প্রদায়ও বিদ্যমান, যারা মূলধারার প্রতিবাদী বিশ্বাসের সাথে দ্বিমত পোষণ করে, যেমন একব্যক্তি একেশ্বরবাদী (ইউনিটারিয়ান) এবং জিহোভার সাক্ষীগণ। প্রতিবাদী সম্প্রদায়গুলির মধ্যে মূল্যবোধে ব্যাপক বৈচিত্র্য বিদ্যমান। |
||
===সনাতনপন্থী ঐতিহ্য=== |
===সনাতনপন্থী ঐতিহ্য=== |
||
সনাতনপন্থী (মূলত পূর্বদেশীয় খ্রিস্টধর্ম) খ্রিস্টানরাও পুণ্যপিতার কর্তৃত্বকে অস্বীকার করে। তবে কাথলিকদের মতো তারাও পাপ থেকে পরিত্রাণের জন্য ধর্মানুষ্ঠানগুলির আবশ্যকীয়তায় বিশ্বাস করে। সনাতনপন্থী মণ্ডলীগুলির উৎস জেরুসালেমে যিশুর শিষ্যদের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত সর্বপ্রথম মণ্ডলীটি পর্যন্ত প্রসারিত, তাই বহু সনাতনপন্থী খ্রিস্টান মনে করে যে তারা যিশুর সঠিক শিক্ষার অনুসারী এবং অন্যান্য সম্প্রদায়ের তুলনায় তাদের কর্তৃত্ব |
সনাতনপন্থী (মূলত পূর্বদেশীয় খ্রিস্টধর্ম) খ্রিস্টানরাও পুণ্যপিতার কর্তৃত্বকে অস্বীকার করে। তবে কাথলিকদের মতো তারাও পাপ থেকে পরিত্রাণের জন্য ধর্মানুষ্ঠানগুলির আবশ্যকীয়তায় বিশ্বাস করে। সনাতনপন্থী মণ্ডলীগুলির উৎস জেরুসালেমে যিশুর শিষ্যদের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত সর্বপ্রথম মণ্ডলীটি পর্যন্ত প্রসারিত, তাই বহু সনাতনপন্থী খ্রিস্টান মনে করে যে তারা যিশুর সঠিক শিক্ষার অনুসারী এবং অন্যান্য সম্প্রদায়ের তুলনায় তাদের কর্তৃত্ব বেশি। সনাতনপন্থী মণ্ডলীগুলির অধিকাংশই আন্তর্জাতিক স্তরে নয়, বরং জাতীয় স্তরে সংগঠিত, যেমন সার্বীয় সনাতনপন্থী মণ্ডলী এবং গ্রিক সনাতনপন্থী মণ্ডলী। |
||
==উদ্ভব (যিশুখ্রিস্টের জীবন)== |
==উদ্ভব (যিশুখ্রিস্টের জীবন)== |
||
৭১ নং লাইন: | ৭২ নং লাইন: | ||
==খ্রিস্টানদের বিশ্বাস== |
==খ্রিস্টানদের বিশ্বাস== |
||
খ্রিস্টানেরা বিশ্বাস করে একজন মাত্র ঈশ্বর [[স্বর্গ]] ও [[মর্ত্য|মর্ত্যের]] দৃশ্যমান ও অদৃশ্য সমস্ত কিছুর সৃষ্টিকর্তা। অর্থাৎ ঈশ্বর জগতের পিতা। [[পিতারূপী ঈশ্বর]] প্রতিটি মানুষকে সন্তানের মতো ভালোবাসেন এবং তার সাথে সম্পর্ক রাখতে চান। কিন্তু প্রতিটি মানুষ পাপ করার প্রবণতা নিয়ে জন্মগ্রহণ করে (যার উৎস প্রথম মানব আদমের আদিপাপ)। এই সব ছোট-বড় পাপের কারণে মানুষ ও জগতের পিতা ঈশ্বরের মাঝে দূরত্বের সৃষ্টি হয়। খ্রিস্টানেরা বিশ্বাস করে যে যিশুখ্রিস্ট ঈশ্বরেরই দ্বিতীয় একটি রূপ; তিনি ঈশ্বরের একমাত্র প্রকৃত পুত্র। ঈশ্বরের তৃতীয় আরেকটি রূপ হল পবিত্র আত্মা। পবিত্র আত্মা বিভিন্ন নবী বা ধর্মপ্রচারকদের মাধ্যমে মানবজাতির সাথে যোগাযোগ করেছে। পবিত্র আত্মারূপী ঈশ্বর মানব কুমারী মেরির গর্ভে পুত্ররূপী ঈশ্বর তথা যিশুখ্রিস্টের জন্ম দেন, যার সুবাদে যিশুখ্রিস্ট রক্তমাংসের মানুষের রূপ ধারণ করে স্বর্গ থেকে পৃথিবীতে নেমে আসেন। পবিত্র আত্মারূপী ঈশ্বরের সুবাদে পুত্ররূপী ঈশ্বর যিশুখ্রিস্ট পৃথিবীতে বহু অলৌকিক কাজ সম্পাদন করেন। শেষ পর্যন্ত যিশু ক্রুশবিদ্ধ হয়ে যন্ত্রণাভোগ করে মৃত্যুবরণ করে সমগ্র মানবজাতির পাপের প্রায়শ্চিত্ত করেন।<ref name="McGrath4">McGrath, ''Christianity: An Introduction'', p. 4-6.</ref> কিন্তু তিন দিন পরে তিনি মৃত্যুকে পরাজিত করে পুনরুজ্জীবিত হন এবং স্বর্গে আরোহণ করেন যেখানে তিনি পিতারূপী ঈশ্বরের ডান পাশের আসনে অধিষ্ঠিত হন। ঈশ্বর উপহার হিসেবে সবাইকে ক্ষমা করে দিতে পারেন। সময়ের যখন সমাপ্তি হবে, তখন যিশু আবার পৃথিবীতে ফেরত আসবেন এবং শেষ বিচারে সমস্ত মানবজাতির (মৃত বা জীবিত) বিচার করবেন। যারা যিশুখ্রিস্টে বিশ্বাস আনবে এবং ঈশ্বরের ক্ষমা গ্রহণ করবে, তারাই ভবিষ্যতে শেষ বিচারের দিনে পরিত্রাণ পাবে ও স্বর্গে চিরজীবন লাভ করবে। পুরাতন নিয়মের পুস্তকগুলিতে যে [[মসিহ]] বা ত্রাণকর্তার কথা উল্লেখ করা হয়েছে, খ্রিস্টানরা বিশ্বাস করে যে যিশুই সেই ত্রাণকর্তা। তারা যিশুকে একজন নৈতিক শিক্ষক, অনুকরণীয় আদর্শ এবং প্রকৃত ঈশ্বরকে উদ্ঘাটনকারী ব্যক্তি হিসেবে গণ্য করে। |
খ্রিস্টানেরা বিশ্বাস করে একজন মাত্র ঈশ্বর [[স্বর্গ]] ও [[মর্ত্য|মর্ত্যের]] দৃশ্যমান ও অদৃশ্য সমস্ত কিছুর সৃষ্টিকর্তা। অর্থাৎ ঈশ্বর জগতের পিতা। [[পিতারূপী ঈশ্বর]] প্রতিটি মানুষকে সন্তানের মতো ভালোবাসেন এবং তার সাথে সম্পর্ক রাখতে চান। কিন্তু প্রতিটি মানুষ পাপ করার প্রবণতা নিয়ে জন্মগ্রহণ করে (যার উৎস প্রথম মানব আদমের আদিপাপ)। এই সব ছোট-বড় পাপের কারণে মানুষ ও জগতের পিতা ঈশ্বরের মাঝে দূরত্বের সৃষ্টি হয়। খ্রিস্টানেরা বিশ্বাস করে যে যিশুখ্রিস্ট ঈশ্বরেরই দ্বিতীয় একটি রূপ; তিনি ঈশ্বরের একমাত্র প্রকৃত পুত্র। ঈশ্বরের তৃতীয় আরেকটি রূপ হল পবিত্র আত্মা। পবিত্র আত্মা বিভিন্ন নবী বা ধর্মপ্রচারকদের মাধ্যমে মানবজাতির সাথে যোগাযোগ করেছে। পবিত্র আত্মারূপী ঈশ্বর মানব কুমারী মেরির গর্ভে পুত্ররূপী ঈশ্বর তথা যিশুখ্রিস্টের জন্ম দেন, যার সুবাদে যিশুখ্রিস্ট রক্তমাংসের মানুষের রূপ ধারণ করে স্বর্গ থেকে পৃথিবীতে নেমে আসেন। পবিত্র আত্মারূপী ঈশ্বরের সুবাদে পুত্ররূপী ঈশ্বর যিশুখ্রিস্ট পৃথিবীতে বহু অলৌকিক কাজ সম্পাদন করেন। শেষ পর্যন্ত যিশু ক্রুশবিদ্ধ হয়ে যন্ত্রণাভোগ করে মৃত্যুবরণ করে সমগ্র মানবজাতির পাপের প্রায়শ্চিত্ত করেন।<ref name="McGrath4">McGrath, ''Christianity: An Introduction'', p. 4-6.</ref> কিন্তু তিন দিন পরে তিনি মৃত্যুকে পরাজিত করে পুনরুজ্জীবিত হন এবং স্বর্গে আরোহণ করেন যেখানে তিনি পিতারূপী ঈশ্বরের ডান পাশের আসনে অধিষ্ঠিত হন। ঈশ্বর উপহার হিসেবে সবাইকে ক্ষমা করে দিতে পারেন। সময়ের যখন সমাপ্তি হবে, তখন যিশু আবার পৃথিবীতে ফেরত আসবেন এবং শেষ বিচারে সমস্ত মানবজাতির (মৃত বা জীবিত) বিচার করবেন। যারা যিশুখ্রিস্টে বিশ্বাস আনবে এবং ঈশ্বরের ক্ষমা গ্রহণ করবে, তারাই ভবিষ্যতে শেষ বিচারের দিনে পরিত্রাণ পাবে ও স্বর্গে চিরজীবন লাভ করবে। পুরাতন নিয়মের পুস্তকগুলিতে যে [[মসিহ]] বা ত্রাণকর্তার কথা উল্লেখ করা হয়েছে, খ্রিস্টানরা বিশ্বাস করে যে যিশুই সেই ত্রাণকর্তা। তারা যিশুকে একজন নৈতিক শিক্ষক, অনুকরণীয় আদর্শ এবং প্রকৃত ঈশ্বরকে উদ্ঘাটনকারী ব্যক্তি হিসেবে গণ্য করে। |
||
⚫ | |||
⚫ | |||
খ্রিস্টানরা বহুসংখ্যক পবিত্র দিবস ও উৎসব উদ্যাপন করে। বেশিরভাগ দিবসে যিশুর জীবনের বিভিন্ন ঘটনাকে স্মরণ করা হয়। কোনও কোনও মণ্ডলীতে বিশেষ বিশেষ দিনে বিশেষ বিশেষ |
খ্রিস্টানরা বহুসংখ্যক পবিত্র দিবস ও উৎসব উদ্যাপন করে। বেশিরভাগ দিবসে যিশুর জীবনের বিভিন্ন ঘটনাকে স্মরণ করা হয়। কোনও কোনও মণ্ডলীতে বিশেষ বিশেষ দিনে বিশেষ বিশেষ [[সন্ত]]কে স্মরণ করা হয়। খ্রিস্টীয় পবিত্র দিবস ও উৎসবের সময় গির্জায় বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় এবং কখনও কখনও খ্রিস্টানরা নিজেদের মধ্যে উপহার বিনিময় করে। |
||
খ্রিস্টীয় বর্ষের ২৫শে ডিসেম্বর তারিখে সারা বিশ্বের খ্রিস্টানরা যিশুখ্রিস্টের জন্মদিবস উদ্যাপন করে, যার নাম |
খ্রিস্টীয় বর্ষের ২৫শে ডিসেম্বর তারিখে সারা বিশ্বের খ্রিস্টানরা যিশুখ্রিস্টের জন্মদিবস উদ্যাপন করে, যার নাম [[বড়দিন]]। ঐ দিন খ্রিস্টানদের বাসগৃহে ও গির্জাগুলিতে প্রায়ই [[বেথলেহেম|বেথলেহেমের]] এক গরিব কাঠুরের গোয়ালঘরে যিশুর জন্মের দৃশ্যটির একটি প্রতীকী ক্ষুদ্রকায় স্থাপনা প্রদর্শন করা হয়। |
||
মার্চ ও এপ্রিল মাসে ৪০ দিনব্যাপী একটি উপবাস পর্ব পালন করা হয়। উপবাস পর্বটির শেষ বৃহস্পতিবারে যিশুর শেষ নৈশভোজটিকে স্মরণ করা হয়। উপবাস পর্বটির শেষ শুক্রবারে যিশুর ক্রুশারোহণকে স্মরণ করা হয়। উপবাস পর্বটি শেষ পর্যন্ত একটি রবিবারে গিয়ে শেষ হয়, যাকে পুণ্য রবিবার বা পুনরুত্থান পার্বণ বলে, যেদিন মৃতাবস্থা থেকে যিশুর পুনরায় জীবিত হয়ে পুনরুত্থানের অলৌকিক ঘটনাটিকে স্মরণ করা হয়। কিছু কিছু দেশে পুনরুত্থান পার্বণের দিনে খ্রিস্টানরা একে অপরকে ডিম উপহার দেয়, যা কিনা নতুন জীবনের প্রতীক। ডিমগুলি সত্যিকারের ডিম হতে পারে, কিংবা কাঠের বা চকোলেটের তৈরি হতে পারে। |
মার্চ ও এপ্রিল মাসে ৪০ দিনব্যাপী একটি উপবাস পর্ব পালন করা হয়। উপবাস পর্বটির শেষ বৃহস্পতিবারে যিশুর শেষ নৈশভোজটিকে স্মরণ করা হয়। উপবাস পর্বটির শেষ শুক্রবারে যিশুর ক্রুশারোহণকে স্মরণ করা হয়। উপবাস পর্বটি শেষ পর্যন্ত একটি রবিবারে গিয়ে শেষ হয়, যাকে পুণ্য রবিবার বা [[পুনরুত্থান পার্বণ]] বলে, যেদিন মৃতাবস্থা থেকে যিশুর পুনরায় জীবিত হয়ে পুনরুত্থানের অলৌকিক ঘটনাটিকে স্মরণ করা হয়। কিছু কিছু দেশে পুনরুত্থান পার্বণের দিনে খ্রিস্টানরা একে অপরকে ডিম উপহার দেয়, যা কিনা নতুন জীবনের প্রতীক। ডিমগুলি সত্যিকারের ডিম হতে পারে, কিংবা কাঠের বা চকোলেটের তৈরি হতে পারে। |
||
মৃত্যুর কয়েকদিন আগে যিশু জেরুসালেমে গাধার পিঠে চড়ে আগমন করেছিলেন। তাঁকে স্থানীয় জনগণ তাঁর চলার পথে পামগাছের পাতা বিছিয়ে স্বাগত জানিয়েছিল। খ্রিস্টানরা এই ঘটনাটিকে পাম রবিবার নামের একটি দিবসে স্মরণ করে থাকে এবং কিছু কিছু গির্জায় পামগাছের পাতা দিয়ে তৈরি ছোট ছোট ক্রুশ উপাসনাকারীদের মধ্যে বিতরণ করা হয়। |
মৃত্যুর কয়েকদিন আগে যিশু জেরুসালেমে গাধার পিঠে চড়ে আগমন করেছিলেন। তাঁকে স্থানীয় জনগণ তাঁর চলার পথে পামগাছের পাতা বিছিয়ে স্বাগত জানিয়েছিল। খ্রিস্টানরা এই ঘটনাটিকে [[পাম রবিবার]] নামের একটি দিবসে স্মরণ করে থাকে এবং কিছু কিছু গির্জায় পামগাছের পাতা দিয়ে তৈরি ছোট ছোট ক্রুশ উপাসনাকারীদের মধ্যে বিতরণ করা হয়। |
||
যিশুর স্বর্গারোহণের কয়েক দিন পরে তাঁর শিষ্যরা শাভুওত নামের একটি ইহুদি উৎসবের সময় একত্রিত হয়েছিলেন। বাইবেলে বর্ণিত আছে যে এসময় তাঁরা হঠাৎ শনশন বায়ুপ্রবাহের শব্দ শুনতে পান এবং তাদের প্রত্যেকের উপরে আগুনের শিখা জ্বলতে দেখতে পান। তারা সবাই পবিত্র আত্মার শক্তিতে বলীয়ান হন এবং ভিনদেশী ভাষায় কথা বলতে শুরু করেন। খ্রিস্টানরা শিষ্যদের উপরে পবিত্র আত্মার অবতরণের এই অলৌকিক ঘটনাটি মে বা জুন মাসে পুনরুত্থান পার্বণের পরে পঞ্চাশ দিন পরে সপ্তম রবিবারে উদ্যাপন করেন, যাকে পঞ্চাশত্তমী |
যিশুর স্বর্গারোহণের কয়েক দিন পরে তাঁর শিষ্যরা [[শাভুওত]] নামের একটি ইহুদি উৎসবের সময় একত্রিত হয়েছিলেন। বাইবেলে বর্ণিত আছে যে এসময় তাঁরা হঠাৎ শনশন বায়ুপ্রবাহের শব্দ শুনতে পান এবং তাদের প্রত্যেকের উপরে আগুনের শিখা জ্বলতে দেখতে পান। তারা সবাই পবিত্র আত্মার শক্তিতে বলীয়ান হন এবং ভিনদেশী ভাষায় কথা বলতে শুরু করেন। খ্রিস্টানরা শিষ্যদের উপরে পবিত্র আত্মার অবতরণের এই অলৌকিক ঘটনাটি মে বা জুন মাসে পুনরুত্থান পার্বণের পরে পঞ্চাশ দিন পরে সপ্তম রবিবারে উদ্যাপন করেন, যাকে [[পঞ্চাশত্তমী রবিবার]] বলে। |
||
==বিকাশ ও বিস্তার== |
==বিকাশ ও বিস্তার== |
||
খ্রিস্টধর্ম প্রথমে পূর্ব ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলগুলিতে [[ইহুদিধর্ম|ইহুদিধর্মের]] একটি উপ-সম্প্রদায় হিসেবে যাত্রা শুরু করে।<ref name="Robinson">Robinson, ''Essential Judaism: A Complete Guide to Beliefs, Customs and Rituals'', p. 229.</ref><ref name="Esler">Esler. ''The Early Christian World''. p. 157f.</ref> খ্রিস্টের মৃত্যুর পরে তার আদি বারো শিষ্য জেরুসালেম থেকে বাইরে ছড়িয়ে পড়েন। কয়েক দশকের মধ্যে খ্রিস্টে বিশ্বাসী অনুসারীদের সংখ্যা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পায়। |
খ্রিস্টধর্ম প্রথমে পূর্ব ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলগুলিতে [[ইহুদিধর্ম|ইহুদিধর্মের]] একটি উপ-সম্প্রদায় হিসেবে যাত্রা শুরু করে।<ref name="Robinson">Robinson, ''Essential Judaism: A Complete Guide to Beliefs, Customs and Rituals'', p. 229.</ref><ref name="Esler">Esler. ''The Early Christian World''. p. 157f.</ref> খ্রিস্টের মৃত্যুর পরে তার আদি বারো শিষ্য জেরুসালেম থেকে বাইরে ছড়িয়ে পড়েন। কয়েক দশকের মধ্যে খ্রিস্টে বিশ্বাসী অনুসারীদের সংখ্যা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পায়। |
||
বারো শিষ্যের বাইরে খ্রিস্টধর্মের বাণীর আদি প্রচারকদের মধ্যে [[সন্ত পৌল]] (৫ খ্রিস্টপূর্বাব্দ- আনু. ৬৭ খ্রিস্টাব্দ) বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য; বাইবেলের নতুন নিয়মের ২৭টি পুস্তকের মধ্যে ১৩টিই তিনি রচনা করেন। খ্রিস্টীয় ১ম শতকেই বারো শিষ্যদের সবার মৃত্যু হয়। এরপর ২য় ও ৩য় শতকে খ্রিস্টের বারো শিষ্যের উত্তরসূরী ধর্মবিদেরা খ্রিস্ট ধর্মের তত্ত্ব নির্মাণ ও প্রচার অব্যাহত রাখেন; তাদের রচনার অংশবিশেষ নতুন নিয়মের অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। এসময় খ্রিস্টধর্ম একটি গুরুত্বপূর্ণ অ-ইহুদি ধর্ম হিসেবে রোমান সাম্রাজ্যে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হয়। একই সাথে ধর্মটি মধ্যপ্রাচ্য, ইথিওপিয়া (আকসুম সাম্রাজ্য) ও আন্তঃককেশিয়ার বিশাল অংশে এবং এশিয়ার কিয়দংশে ছড়িয়ে পড়ে। আকসুম সাম্রাজ্য প্রথম সাম্রাজ্য হিসেবে খ্রিস্টধর্মকে রাষ্ট্রধর্ম হিসেবে গ্রহণ করে। ৪র্থ শতকে রোমান সম্রাট কোনস্তানতিন খ্রিস্টধর্মে ধর্মান্তরিত হন এবং তিনি ৩১৩ খ্রিস্টাব্দে মিলানের রাজকীয় অধ্যাদেশবলে খ্রিস্টধর্মকে আইনবিরুদ্ধ হিসেবে গণ্য করা বন্ধ করেন। এর প্রেক্ষিতে এটি সমগ্র রোমান সাম্রাজ্যের প্রধান ধর্মে পরিণত হয়। ৩২৫ খ্রিস্টাব্দে সম্রাট কোনস্তানতিনের আহুত নিকায়েয়া-র (বর্তমান তুরস্কের [[ইজনিক]] শহর) ধর্মীয় সম্মেলনে খ্রিস্টধর্মের ধর্মীয় বিশ্বাসের সারসংক্ষেপ প্রথমবারের মত রচিত হয়। এতে বাইবেলে বর্ণিত [[পিতারূপী ঈশ্বর]], [[পুত্ররূপী ঈশ্বর]] (যিশু) ও [[পবিত্র আত্মারূপী ঈশ্বর]] - এই তিন সত্তাই যে একই ঈশ্বরের তিন রূপ, এই [[ত্রিত্ববাদ]] ধারণাটি গৃহীত হয়। বর্তমানে খ্রিস্টান মণ্ডলীগুলির সিংহভাগ ঈশ্বরের ত্রিত্ববাদে বিশ্বাসী; তবে মূলধারার বাইরে অনেক ছোট ছোট মণ্ডলী এতে বিশ্বাস করে না। ৫ম শতকে খ্রিস্টধর্মের নেতৃস্থানীয় ধর্মযাজকেরা ধর্মগ্রন্থসমগ্র বাইবেলের সংকলন প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করেন। মধ্যযুগে এসে ইউরোপের বাকি অংশগুলিরও খ্রিস্টধর্মায়ন ঘটে। সে সময় খ্রিস্টানরা মধ্যপ্রাচ্য, উত্তর আফ্রিকা এবং ভারতের অংশবিশেষেও সংখ্যালঘু সম্প্রদায় হিসেবে বাস করত।<ref>McManners, ''Oxford Illustrated History of Christianity'', p. 301-303.</ref> আবিষ্কারের যুগের পরে উপনিবেশ স্থাপন ও জোরালো ধর্মপ্রচারণার সুবাদে খ্রিস্টধর্ম সাহারা-নিম্ন আফ্রিকা, উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া এবং বিশ্বের অন্যত্র (যেমন পূর্ব এশিয়া বিশেষত ফিলিপাইন) ছড়িয়ে পড়ে। বর্তমানে খ্রিস্টধর্ম বিশ্বের সবচেয়ে বেশি বিস্তৃত অঞ্চলব্যাপী বিরাজমান প্রধান ধর্ম। |
বারো শিষ্যের বাইরে খ্রিস্টধর্মের বাণীর আদি প্রচারকদের মধ্যে [[সন্ত পৌল]] (৫ খ্রিস্টপূর্বাব্দ- আনু. ৬৭ খ্রিস্টাব্দ) বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য; বাইবেলের নতুন নিয়মের ২৭টি পুস্তকের মধ্যে ১৩টিই তিনি রচনা করেন। খ্রিস্টীয় ১ম শতকেই বারো শিষ্যদের সবার মৃত্যু হয়। এরপর ২য় ও ৩য় শতকে খ্রিস্টের বারো শিষ্যের উত্তরসূরী ধর্মবিদেরা খ্রিস্ট ধর্মের তত্ত্ব নির্মাণ ও প্রচার অব্যাহত রাখেন; তাদের রচনার অংশবিশেষ নতুন নিয়মের অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। এসময় খ্রিস্টধর্ম একটি গুরুত্বপূর্ণ অ-ইহুদি ধর্ম হিসেবে রোমান সাম্রাজ্যে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হয়। একই সাথে ধর্মটি মধ্যপ্রাচ্য, ইথিওপিয়া (আকসুম সাম্রাজ্য) ও আন্তঃককেশিয়ার বিশাল অংশে এবং এশিয়ার কিয়দংশে ছড়িয়ে পড়ে। আকসুম সাম্রাজ্য প্রথম সাম্রাজ্য হিসেবে খ্রিস্টধর্মকে রাষ্ট্রধর্ম হিসেবে গ্রহণ করে। ৪র্থ শতকে রোমান সম্রাট কোনস্তানতিন খ্রিস্টধর্মে ধর্মান্তরিত হন এবং তিনি ৩১৩ খ্রিস্টাব্দে মিলানের রাজকীয় অধ্যাদেশবলে খ্রিস্টধর্মকে আইনবিরুদ্ধ হিসেবে গণ্য করা বন্ধ করেন। এর প্রেক্ষিতে এটি সমগ্র রোমান সাম্রাজ্যের প্রধান ধর্মে পরিণত হয়। ৩২৫ খ্রিস্টাব্দে সম্রাট কোনস্তানতিনের আহুত নিকায়েয়া-র (বর্তমান তুরস্কের [[ইজনিক]] শহর) ধর্মীয় সম্মেলনে খ্রিস্টধর্মের ধর্মীয় বিশ্বাসের সারসংক্ষেপ প্রথমবারের মত রচিত হয়। এতে বাইবেলে বর্ণিত [[পিতারূপী ঈশ্বর]], [[পুত্ররূপী ঈশ্বর]] (যিশু) ও [[পবিত্র আত্মারূপী ঈশ্বর]] - এই তিন সত্তাই যে একই ঈশ্বরের তিন রূপ, এই [[ত্রিত্ববাদ]] ধারণাটি গৃহীত হয়। বর্তমানে খ্রিস্টান মণ্ডলীগুলির সিংহভাগ ঈশ্বরের ত্রিত্ববাদে বিশ্বাসী; তবে মূলধারার বাইরে অনেক ছোট ছোট মণ্ডলী এতে বিশ্বাস করে না। ৫ম শতকে খ্রিস্টধর্মের নেতৃস্থানীয় ধর্মযাজকেরা ধর্মগ্রন্থসমগ্র বাইবেলের সংকলন প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করেন। মধ্যযুগে এসে ইউরোপের বাকি অংশগুলিরও খ্রিস্টধর্মায়ন ঘটে। সে সময় খ্রিস্টানরা [[মধ্যপ্রাচ্য]], [[উত্তর আফ্রিকা]] এবং [[ভারত|ভারতের]] অংশবিশেষেও সংখ্যালঘু সম্প্রদায় হিসেবে বাস করত।<ref>McManners, ''Oxford Illustrated History of Christianity'', p. 301-303.</ref> আবিষ্কারের যুগের পরে উপনিবেশ স্থাপন ও জোরালো ধর্মপ্রচারণার সুবাদে খ্রিস্টধর্ম সাহারা-নিম্ন আফ্রিকা, উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া এবং বিশ্বের অন্যত্র (যেমন পূর্ব এশিয়া বিশেষত ফিলিপাইন) ছড়িয়ে পড়ে। বর্তমানে খ্রিস্টধর্ম বিশ্বের সবচেয়ে বেশি বিস্তৃত অঞ্চলব্যাপী বিরাজমান প্রধান ধর্ম। |
||
২০১১ সালে প্রকাশিত মার্কিন |
২০১১ সালে প্রকাশিত [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র]]-ভিত্তিক [[পিউ গবেষণা কেন্দ্র|পিউ গবেষণা কেন্দ্রের]] একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী খ্রিস্টানরা বিশ্বের সর্বব্যাপী এত বেশি ছড়িয়ে আছে যে কোনও একক একটি মহাদেশ বা অঞ্চল বিশ্ব খ্রিস্টান মণ্ডলীর কেন্দ্র হিসেবে নিজেকে দাবী করতে পারে না। এটি একটি সাম্প্রতিক ঘটনা। ২০শ শতকের শুরুতে এসেও ১৯১০ খ্রিস্টাব্দে বিশ্বের দুই-তৃতীয়াংশ খ্রিস্টান ইউরোপ মহাদেশে বাস করত এবং এ অবস্থাটি তার আগের এক সহস্রাব্দ থেকেই বিরাজ করছিল। ২১শ শতকের শুরুতে এসে বিশ্বের খ্রিস্টানদের মাত্র এক-চতুর্থাংশ ইউরোপে বাস করে, এবং এর বিপরীতে এক-তৃতীয়াংশেরও বেশি দুই আমেরিকা মহাদেশে বাস করে। এছাড়া প্রায় এক-চতুর্থাংশ খ্রিস্টান [[সাহারা-নিম্ন আফ্রিকা]]তে এবং প্রায় এক-অষ্টমাংশ [[এশিয়া]] মহাদেশ ও [[প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল|প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে]] বাস করে।<ref name=pew /> |
||
==টীকা== |
==টীকা== |
||
৯৯ নং লাইন: | ১০০ নং লাইন: | ||
[[বিষয়শ্রেণী:ধর্ম]] |
[[বিষয়শ্রেণী:ধর্ম]] |
||
[[বিষয়শ্রেণী:খ্রিস্টধর্ম]] |
[[বিষয়শ্রেণী:খ্রিস্টধর্ম]] |
||
[[বিষয়শ্রেণী: |
[[বিষয়শ্রেণী:ইব্রাহিমীয় ধর্ম]] |
||
[[বিষয়শ্রেণী:একেশ্বরবাদী ধর্ম]] |
[[বিষয়শ্রেণী:একেশ্বরবাদী ধর্ম]] |
||
[[বিষয়শ্রেণী:পশ্চিমা সংস্কৃতি]] |
[[বিষয়শ্রেণী:পশ্চিমা সংস্কৃতি]] |
||
[[বিষয়শ্রেণী:১ম শতাব্দীতে প্রতিষ্ঠিত]] |
১৭:২২, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ
খ্রিস্টধর্ম | |
---|---|
Χριστιανισμός | |
প্রকারভেদ | অব্রাহামীয় |
ধর্মগ্রন্থ | বাইবেল |
ধর্মতত্ত্ব | একেশ্বরবাদ |
নেতৃবৃন্দ | খ্রিস্টধর্মের নেতৃবৃন্দ; বিশ্ব মণ্ডলী পরিষদ বিভিন্ন উপদলের প্রতিনিধিত্ব করে |
মণ্ডলী ও আখ্যাসমূহ | খ্রিস্টান উপদলসমূহের তালিকা |
অঞ্চল | আমেরিকা,[১] ইউরোপ,[১] সাহারা-নিম্ন আফ্রিকা,[১] ওশেনিয়া,[১] ও বিশ্বব্যাপী[১] |
ভাষা | যাজকীয় লাতিন,[২] কইনি গ্রীক,[৩] সিরীয়,[৪] যাজকীয় স্লাভোনিক,[৫] ও স্থানীয় ভাষাসমূহ |
সদর দপ্তর | রোম,[৬] কনস্টান্টিনোপল,[৬] আলেক্সান্দ্রিয়া,[৬] আন্তিয়খিয়া,[৬] যিরূশালেম[৬] ও অন্যান্য |
প্রবর্তক | যিশু (পবিত্র ঐতিহ্যমতে)[৭] |
উৎপত্তি | ১ম শতাব্দী যিহূদিয়া, রোমান সাম্রাজ্য[৮][৯] |
Separated from | দ্বিতীয় মন্দির ইহুদিধর্ম |
সদস্য | ২.৪ বিলিয়ন+[১০] |
Ministers | পরিচারক, প্রাচীন, পাদ্রি, বিশপ, প্রচারক, পাস্তর, প্রেসবিতার, মন্ত্রী, পোপ |
অন্যান্য নাম | শিষ্য,[১১] খ্রিস্টের অনুসারী,[১২] নাসরানি,[১৩] পথ[১১] |
খ্রিস্টধর্ম |
---|
ধারাবাহিক নিবন্ধের অংশ |
খ্রীষ্টীয় প্রবেশদ্বার |
খ্রিস্টধর্ম[টীকা ১] (গ্রিক: Χριστιανισμός; হিব্রু ভাষায়: נצרות; আরবি: المسيحية; আরামীয়: ܡܫܝܚܝܘܬܐ) একটি অব্রাহামীয় একেশ্বরবাদী ধর্ম যা নাসরতীয় যীশুর জীবন ও শিক্ষার ওপর ভিত্তি করে প্রবর্তিত হয়। অনুসারীর সংখ্যা অনুযায়ী এটি পৃথিবীর বৃহত্তম ধর্ম; এর অনুসারী সংখ্যা প্রায় ২৫০ কোটি।[১৪] এর অনুসারীগণ—যারা খ্রিস্টান হিসেবে পরিচিত—১৫৭টি দেশ ও অঞ্চলের সংখ্যাগুরু জনগোষ্ঠী,[১৫] এবং তারা বিশ্বাস করে যে যীশু হলেন ঈশ্বরের পুত্র, যাঁর মশীহ বা খ্রীষ্ট হিসেবে আগমনের ব্যাপারে হিব্রু বাইবেল বা পুরাতন নিয়মে ভবিষ্যদ্বাণী করা হয়েছে এবং নতুন নিয়মে তা বিবৃত হয়েছে।[১৬]
খ্রিস্টধর্ম সাংস্কৃতিকভাবে এর পশ্চিমা ও পূর্বদেশীয় শাখাগুলোর মধ্যে এবং পরিত্রাণের প্রকৃতি ও প্রতিপাদন, যাজকাভিষেক, মণ্ডলীতত্ত্ব ও খ্রিস্টতত্ত্ব বিষয়ক মতাদর্শে বৈচিত্র্যময়। খ্রিস্টানদের সাধারণ ধর্মমত অনুসারে যীশু হলেন ঈশ্বরের পুত্র ও পুত্র ঈশ্বরের অবতার—মাংসে মূর্তিমান বাক্য—যিনি পরিচর্যা, দুঃখভোগ ও ক্রুশারোপিত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছিলেন, কিন্তু পরবর্তীতে মানবজাতির পরিত্রাণের জন্য মৃতদের মধ্য থেকে পুনরুত্থিত হয়েছিলেন, যা বাইবেলে সুসমাচার তথা “সুখবর” বলে অবিহিত হয়েছে। সাধু মথি, মার্ক, লূক ও যোহন লিখিত চারটি ধর্মসম্মত সুসমাচারের পাশাপাশি এর পটভূমি হিসেবে ইহুদি পুরাতন নিয়ম হল যীশুর জীবন ও শিক্ষার বিবরণী।
খ্রিস্টীয় ১ম শতাব্দীতে রোমান সাম্রাজ্যের যিহূদিয়া প্রদেশে একটি দ্বিতীয় মন্দিরভিত্তিক ইহুদি উপদল হিসেবে খ্রিস্টধর্ম যাত্রা শুরু করে। প্রারম্ভিক নিপীড়ন সত্ত্বেও যীশুর প্রেরিতগণ ও তাঁদের অনুসারীরা লেভান্ত, ইউরোপ, আনাতোলিয়া, মেসোপটেমিয়া, আন্তঃযর্দন, মিসর ও ইথিওপিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে। এটি দ্রুত পরজাতীয় ঈশ্বরভীরুদের আকৃষ্ট করে, যা একে ইহুদি রীতিনীতি থেকে ভিন্নপথে চালিত করে। ৭০ খ্রিস্টাব্দে যিরূশালেমের পতনের পর দ্বিতীয় মন্দিরভিত্তিক ইহুদিধর্মের অবসান ঘটে এবং খ্রিস্টধর্ম ক্রমশ ইহুদিধর্ম থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। সম্রাট মহান কনস্টান্টিন মিলান ফরমান (৩১৩ খ্রি.) জারি করার মাধ্যমে রোমান সাম্রাজ্যে খ্রিস্টধর্মকে বৈধতা প্রদান করেন। পরবর্তীতে তিনি নিকেয়ার প্রথম পরিষদ (৩২৫ খ্রি.) আহ্বান করেন, যেখানে প্রারম্ভিক খ্রিস্টধর্মকে সংহত করা হয় যা রোমান সাম্রাজ্যের রাষ্ট্রীয় মণ্ডলীতে (৩৮০ খ্রি.) পরিণত হয়। প্রধান বিচ্ছেদগুলোর পূর্বে খ্রিস্টধর্মের সংযুক্ত মণ্ডলীর ইতিহাসকে প্রায়শই “মহামণ্ডলী” বলে অবিহিত করা হয় (যদিও তৎকালে প্রচলিত মতের বিরোধী রহস্যবাদী খ্রিস্টান ও ইহুদি খ্রিস্টানদের অস্তিত্ব ছিল)। খ্রিস্টতত্ত্বকে কেন্দ্র করে এফেসুসের পরিষদের (৪৩১ খ্রি.) পর পূর্ব মণ্ডলী এবং চ্যালসিডনের পরিষদের (৪৫১ খ্রি.) প্রাচ্যদেশীয় সনাতনপন্থী মণ্ডলী বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে।[১৭] অন্যদিকে রোমের বিশপের কর্তৃত্বকে কেন্দ্র করে পূর্বদেশীয় সনাতনপন্থী মণ্ডলী ও ক্যাথলিক মণ্ডলীর মধ্যে মহাবিচ্ছেদ (১০৫৪ খ্রি.) ঘটে। ধর্মতাত্ত্বিক ও মণ্ডলীতাত্ত্বিক বিতর্ককে (প্রধানত আত্মপক্ষসমর্থন ও পোপীয় আধিপত্য) কেন্দ্র করে সংস্কার যুগে (১৬শ শতাব্দী) প্রতিবাদী মণ্ডলী পূর্ব ক্যাথলিক মণ্ডলীসমূহ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে অসংখ্য উপদলে বিভক্ত হয়ে পড়ে। পশ্চিমা সভ্যতার বিকাশে, বিশেষত ইউরোপে প্রাচীনযুগের শেষভাগ থেকে মধ্যযুগে, খ্রিস্টধর্ম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।[১৮][১৯][২০][২১][২২] আবিষ্কারের যুগের (১৫শ–১৭শ শতাব্দী) পর খ্রিস্টধর্ম প্রচারাভিযানের মাধ্যমে খ্রিস্টধর্ম দুই আমেরিকা মহাদেশ, ওশেনিয়া, সাহারা-নিম্ন আফ্রিকা এবং বিশ্বের অন্যত্র ছড়িয়ে পড়ে।[২৩][২৪][২৫]
খ্রিস্টধর্মের চারটি বৃহত্তম শাখা হল ক্যাথলিক মণ্ডলী (১৩০ কোটি/৫০.১%), প্রতিবাদী মণ্ডলী (৯২ কোটি/৩৬.৭%), পূর্বদেশীয় সনাতনপন্থী মণ্ডলী (২৩ কোটি) ও প্রাচ্যদেশীয় সনাতনপন্থী মণ্ডলী (৬ কোটি ২০ লক্ষ/১১.৯%),[২৬][২৭] যাদের মধ্যে ঐক্যের (বিশ্বব্যাপ্তিবাদ) বিভিন্ন প্রচেষ্টা জারি রয়েছে।[২৮] পাশ্চাত্যে খ্রিস্টধর্মের অনুসারীর সংখ্যা সাম্প্রতিককালে হ্রাস পেলেও এটি এখনও অঞ্চলটির সবচেয়ে প্রভাবশালী ধর্ম, যেখানে প্রায় ৭০% জনগণ নিজেদের খ্রিস্টান হিসেবে চিহ্নিত করে।[১] বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল মহাদেশ আফ্রিকা ও এশিয়ায় খ্রিস্টানদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে।[১] কিছু প্রতিবেদন অনুযায়ী পৃথিবীর কিছু অঞ্চলে, বিশেষত মধ্যপ্রাচ্য, উত্তর আফ্রিকা, পূর্ব এশিয়া ও দক্ষিণ এশিয়ায় খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের এক গুরুত্বপূর্ণ অংশ নিপীড়নের শিকার।[২৯][৩০][৩১]
অনুসারীর সংখ্যা ও মণ্ডলীসমূহ
অনুসারীর সংখ্যা অনুযায়ী খ্রিস্টধর্ম বিশ্বের বৃহত্তম ধর্ম।[৩২][৩৩] সারা বিশ্বে প্রায় ২৪০ কোটি খ্রিস্টধর্মের অনুসারী আছে,[১][১০][৩৪] যা বিশ্ব জনসংখ্যার এক-তৃতীয়াংশ। বিশ্বের দুই-তৃতীয়াংশ রাষ্ট্রে খ্রিস্টধর্ম সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণের ধর্ম।[১] বর্তমান যুগে খ্রিস্টধর্ম বেশ কিছু শাখা বা মণ্ডলীতে বিভক্ত। এদের মধ্যে ৫টি প্রধান শাখা হল রোমান ক্যাথলিক মণ্ডলী (১৩০ কোটি অনুসারী), প্রতিবাদী মণ্ডলী (৯২ কোটি অনুসারী), পূর্বদেশীয় সনাতনপন্থী মণ্ডলী (২৭ কোটি অনুসারী[২৮]), প্রাচ্যদেশীয় সনাতনপন্থী মণ্ডলী (৮ কোটি অনুসারী) এবং ইঙ্গ (অ্যাংলিকান) মণ্ডলী (৮৫ লক্ষ)। এদের বাইরেও বিশ্বের সর্বত্র ভিন্ন ভিন্ন মতের অনেক মণ্ডলী রয়েছে।
রোমান ক্যাথলিক (বিশ্বজনীন) মণ্ডলী
রোমান ক্যাথলিক মণ্ডলী খ্রিস্টধর্মের বৃহত্তম শাখা। প্রায় ১২০ কোটি খ্রিস্টান রোমান ক্যাথলিক মণ্ডলীর সদস্য। ক্যাথলিক খ্রিস্টানরা পুণ্যপিতা বা পোপের কর্তৃত্ব স্বীকার করে, যিনি ক্যাথলিক মণ্ডলীকে শাসন ও পরিচালনা করেন। পুণ্যপিতাকে সন্তু পিতরের উত্তরাধিকারী হিসেবে এবং এর ফলে রোমান ক্যাথলিক মণ্ডলীর প্রধান হিসেবে গণ্য করা হয়। ক্যাথলিক খ্রিস্টানরা সাতটি ধর্মানুষ্ঠানে বিশ্বাস করে, যেগুলি মানুষকে পাপ থেকে পরিত্রাণ অর্জন করে স্বর্গলাভ নিশ্চিত করতে সাহায্য করে।
প্রতিবাদী মতবাদ
প্রতিবাদী মতবাদের অনুসারীরা পুণ্যপিতার কর্তৃত্ব অস্বীকার করে। তারা মনে করে শুধুমাত্র বাইবেল সমস্ত কর্তৃত্বের উৎস। প্রতিবাদীদের কাছে সাতটি ধর্মানুষ্ঠানের গুরুত্ব তুলনামূলকভাবে কম। তারা ঈশ্বরে বিশ্বাসের মাধ্যমে পরিত্রাণ অর্জনে বিশ্বাস করে। প্রতিবাদী ঐতিহ্যের ভেতরে অনেক উপদল বিদ্যামান, যেমন দীক্ষাবাদী (ব্যাপ্টিস্ট) এবং পদ্ধতিবাদী (মেথডিস্ট)। এছাড়া কিছু প্রান্তিক সম্প্রদায়ও বিদ্যমান, যারা মূলধারার প্রতিবাদী বিশ্বাসের সাথে দ্বিমত পোষণ করে, যেমন একব্যক্তি একেশ্বরবাদী (ইউনিটারিয়ান) এবং জিহোভার সাক্ষীগণ। প্রতিবাদী সম্প্রদায়গুলির মধ্যে মূল্যবোধে ব্যাপক বৈচিত্র্য বিদ্যমান।
সনাতনপন্থী ঐতিহ্য
সনাতনপন্থী (মূলত পূর্বদেশীয় খ্রিস্টধর্ম) খ্রিস্টানরাও পুণ্যপিতার কর্তৃত্বকে অস্বীকার করে। তবে কাথলিকদের মতো তারাও পাপ থেকে পরিত্রাণের জন্য ধর্মানুষ্ঠানগুলির আবশ্যকীয়তায় বিশ্বাস করে। সনাতনপন্থী মণ্ডলীগুলির উৎস জেরুসালেমে যিশুর শিষ্যদের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত সর্বপ্রথম মণ্ডলীটি পর্যন্ত প্রসারিত, তাই বহু সনাতনপন্থী খ্রিস্টান মনে করে যে তারা যিশুর সঠিক শিক্ষার অনুসারী এবং অন্যান্য সম্প্রদায়ের তুলনায় তাদের কর্তৃত্ব বেশি। সনাতনপন্থী মণ্ডলীগুলির অধিকাংশই আন্তর্জাতিক স্তরে নয়, বরং জাতীয় স্তরে সংগঠিত, যেমন সার্বীয় সনাতনপন্থী মণ্ডলী এবং গ্রিক সনাতনপন্থী মণ্ডলী।
উদ্ভব (যিশুখ্রিস্টের জীবন)
মধ্যপ্রাচ্যের (বর্তমান ইসরায়েল রাষ্ট্রের উত্তরভাগে অবস্থিত) ঐতিহাসিক গালীল অঞ্চলের নাসরত শহর থেকে আগত ইহুদি বংশোদ্ভূত ধর্মীয় নেতা যিশুখ্রিস্টের জীবন ও শিক্ষার ওপর ভিত্তি করে খ্রিস্টীয় ১ম শতকে ধর্মটির উৎপত্তি হয়। ঐতিহাসিকভাবে নাসরতের যিশু খ্রিস্টীয় ১ম শতকের প্রাচীন রোমান সাম্রাজ্যের প্রদেশ যিহূদিয়াতে (ঐতিহাসিক ফিলিস্তিন অঞ্চলের পার্বত্য দক্ষিণাংশ) বসবাসকারী একজন ধর্মপ্রচারক ও নৈতিক শিক্ষক ছিলেন। যিশুর পালক বাবা যোসেফ ছিলেন একজন কাঠমিস্ত্রী। কিন্তু যিশুর অনুসারীরা অর্থাৎ খ্রিস্টানেরা বিশ্বাস করেন যে যিশু স্বয়ং ঈশ্বরের একমাত্র সন্তান। খ্রিস্টান ধর্মগ্রন্থগুলিতে বর্ণিত কাহিনী অনুযায়ী তিনি দুরারোগ্য ব্যাধি সারাতে পারতেন, এমনকি মৃত মানুষকে পুনরুজ্জীবিত করতে পারতেন। এসব অলৌকিক ঘটনা সম্পাদনের প্রেক্ষিতে যিশুকে ইহুদিদের রাজা হিসেবে দাবী করা হয়। এই উপাধি ব্যবহার ও নিজেকে ঈশ্বরের পুত্র হিসেবে দাবী করার দোষে জেরুসালেমের ইহুদি নেতাদের নির্দেশে যিশুকে জেরুসালেমে গ্রেপ্তার করা হয়। ইহুদিদের সর্বোচ্চ আদালতে তার বিচার হয় ও ইহুদিরা যিহূদিয়ার স্থানীয় রোমান প্রশাসক পোন্তিউস পীলাতকে অনুরোধ করে যেন যিশুকে মৃত্যদণ্ড দান করা হয়। পীলাত প্রথমে যিশুকে নিরপরাধ গণ্য করলেও পরবর্তীতে যাজকদের প্ররোচণায় উন্মত্ত ইহুদি জনতার ইচ্ছাপূরণ করতে যিশুকে ক্রুশবিদ্ধ করে তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করান।[৩৫]
ধর্মগ্রন্থ
খ্রিস্টধর্মের অনুসারীরা একটি ধর্মীয় পুস্তকসমগ্র অনুসরণ করে, যার সামগ্রিক নাম বাইবেল। বাইবেলের পুস্তকগুলিকে দুইটি বড় অংশে ভাগ করা হয়েছে: পুরাতন নিয়ম ও নতুন নিয়ম। খ্রিস্টানেরা বাইবেলের পুরাতন ও নতুন নিয়মের সমস্ত পুস্তককে ঈশ্বরের পবিত্র বাণী হিসেবে গণ্য করেন। পুরাতন নিয়ম অংশটি হিব্রু বাইবেল (বা তানাখ) এবং অব্রাহামের পৌত্র যাকব তথা ইসরায়েলের বংশধরদের লেখা অনেকগুলি ধর্মীয় পুস্তক নিয়ে গঠিত। খ্রিস্টধর্মের সবচেয়ে জনপ্রিয় শাখা ক্যাথলিক মণ্ডলীতে অনুমোদিত পুস্তকতালিকা অনুযায়ী বাইবেলের পুরাতন নিয়ম অংশে ৪৬টি পুস্তক আছে। এই পুস্তকগুলি বহু শতাব্দী ধরে বিভিন্ন সময়ে খ্রিস্টপূর্ব ৮ম শতক থেকে খ্রিস্টপূর্ব ২য় শতক পর্যন্ত মূলত হিব্রু ভাষাতে রচিত হয়।
বাইবেলের দ্বিতীয় অংশটির নাম নতুন নিয়ম, যা ২৭টি পুস্তক নিয়ে গঠিত। এই পুস্তকমালাতে যিশুর জীবন, শিক্ষা ও খ্রিস্টীয় ১ম শতকে তার অনুসারীদের কাহিনী লিপিবদ্ধ আছে।[৩৬] নতুন নিয়মের বিভিন্ন পুস্তক খ্রিস্টীয় ১ম শতকেই পূর্ব ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলে সেসময়ে অতি প্রচলিত গ্রিক ভাষাতে রচিত হয়, পরে খ্রিস্টীয় ৪র্থ শতকে এসে ৩৯৭ খ্রিস্টাব্দে ক্যাথলিক মণ্ডলীর ধর্মীয় নেতারা উত্তর আফ্রিকার কার্থেজ শহরে আয়োজিত একটি সম্মেলনে নতুন নিয়মের পুস্তকগুলির একটি সঠিক তালিকা অনুমোদন ও প্রণয়ন করেন। নতুন নিয়মের প্রথম চারটি পুস্তককে একত্রে সুসমাচার নামে ডাকা হয়; এগুলিতে যিশুর জীবন, তার মৃত্যু এবং মৃত অবস্থা থেকে তার পুনরুত্থানের কাহিনী বর্ণিত হয়েছে।
খ্রিস্টানদের বিশ্বাস
খ্রিস্টানেরা বিশ্বাস করে একজন মাত্র ঈশ্বর স্বর্গ ও মর্ত্যের দৃশ্যমান ও অদৃশ্য সমস্ত কিছুর সৃষ্টিকর্তা। অর্থাৎ ঈশ্বর জগতের পিতা। পিতারূপী ঈশ্বর প্রতিটি মানুষকে সন্তানের মতো ভালোবাসেন এবং তার সাথে সম্পর্ক রাখতে চান। কিন্তু প্রতিটি মানুষ পাপ করার প্রবণতা নিয়ে জন্মগ্রহণ করে (যার উৎস প্রথম মানব আদমের আদিপাপ)। এই সব ছোট-বড় পাপের কারণে মানুষ ও জগতের পিতা ঈশ্বরের মাঝে দূরত্বের সৃষ্টি হয়। খ্রিস্টানেরা বিশ্বাস করে যে যিশুখ্রিস্ট ঈশ্বরেরই দ্বিতীয় একটি রূপ; তিনি ঈশ্বরের একমাত্র প্রকৃত পুত্র। ঈশ্বরের তৃতীয় আরেকটি রূপ হল পবিত্র আত্মা। পবিত্র আত্মা বিভিন্ন নবী বা ধর্মপ্রচারকদের মাধ্যমে মানবজাতির সাথে যোগাযোগ করেছে। পবিত্র আত্মারূপী ঈশ্বর মানব কুমারী মেরির গর্ভে পুত্ররূপী ঈশ্বর তথা যিশুখ্রিস্টের জন্ম দেন, যার সুবাদে যিশুখ্রিস্ট রক্তমাংসের মানুষের রূপ ধারণ করে স্বর্গ থেকে পৃথিবীতে নেমে আসেন। পবিত্র আত্মারূপী ঈশ্বরের সুবাদে পুত্ররূপী ঈশ্বর যিশুখ্রিস্ট পৃথিবীতে বহু অলৌকিক কাজ সম্পাদন করেন। শেষ পর্যন্ত যিশু ক্রুশবিদ্ধ হয়ে যন্ত্রণাভোগ করে মৃত্যুবরণ করে সমগ্র মানবজাতির পাপের প্রায়শ্চিত্ত করেন।[৩৭] কিন্তু তিন দিন পরে তিনি মৃত্যুকে পরাজিত করে পুনরুজ্জীবিত হন এবং স্বর্গে আরোহণ করেন যেখানে তিনি পিতারূপী ঈশ্বরের ডান পাশের আসনে অধিষ্ঠিত হন। ঈশ্বর উপহার হিসেবে সবাইকে ক্ষমা করে দিতে পারেন। সময়ের যখন সমাপ্তি হবে, তখন যিশু আবার পৃথিবীতে ফেরত আসবেন এবং শেষ বিচারে সমস্ত মানবজাতির (মৃত বা জীবিত) বিচার করবেন। যারা যিশুখ্রিস্টে বিশ্বাস আনবে এবং ঈশ্বরের ক্ষমা গ্রহণ করবে, তারাই ভবিষ্যতে শেষ বিচারের দিনে পরিত্রাণ পাবে ও স্বর্গে চিরজীবন লাভ করবে। পুরাতন নিয়মের পুস্তকগুলিতে যে মসিহ বা ত্রাণকর্তার কথা উল্লেখ করা হয়েছে, খ্রিস্টানরা বিশ্বাস করে যে যিশুই সেই ত্রাণকর্তা। তারা যিশুকে একজন নৈতিক শিক্ষক, অনুকরণীয় আদর্শ এবং প্রকৃত ঈশ্বরকে উদ্ঘাটনকারী ব্যক্তি হিসেবে গণ্য করে।
খ্রিস্টীয় বর্ষের পবিত্র দিবস ও উৎসবসমূহ
খ্রিস্টানরা বহুসংখ্যক পবিত্র দিবস ও উৎসব উদ্যাপন করে। বেশিরভাগ দিবসে যিশুর জীবনের বিভিন্ন ঘটনাকে স্মরণ করা হয়। কোনও কোনও মণ্ডলীতে বিশেষ বিশেষ দিনে বিশেষ বিশেষ সন্তকে স্মরণ করা হয়। খ্রিস্টীয় পবিত্র দিবস ও উৎসবের সময় গির্জায় বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় এবং কখনও কখনও খ্রিস্টানরা নিজেদের মধ্যে উপহার বিনিময় করে।
খ্রিস্টীয় বর্ষের ২৫শে ডিসেম্বর তারিখে সারা বিশ্বের খ্রিস্টানরা যিশুখ্রিস্টের জন্মদিবস উদ্যাপন করে, যার নাম বড়দিন। ঐ দিন খ্রিস্টানদের বাসগৃহে ও গির্জাগুলিতে প্রায়ই বেথলেহেমের এক গরিব কাঠুরের গোয়ালঘরে যিশুর জন্মের দৃশ্যটির একটি প্রতীকী ক্ষুদ্রকায় স্থাপনা প্রদর্শন করা হয়।
মার্চ ও এপ্রিল মাসে ৪০ দিনব্যাপী একটি উপবাস পর্ব পালন করা হয়। উপবাস পর্বটির শেষ বৃহস্পতিবারে যিশুর শেষ নৈশভোজটিকে স্মরণ করা হয়। উপবাস পর্বটির শেষ শুক্রবারে যিশুর ক্রুশারোহণকে স্মরণ করা হয়। উপবাস পর্বটি শেষ পর্যন্ত একটি রবিবারে গিয়ে শেষ হয়, যাকে পুণ্য রবিবার বা পুনরুত্থান পার্বণ বলে, যেদিন মৃতাবস্থা থেকে যিশুর পুনরায় জীবিত হয়ে পুনরুত্থানের অলৌকিক ঘটনাটিকে স্মরণ করা হয়। কিছু কিছু দেশে পুনরুত্থান পার্বণের দিনে খ্রিস্টানরা একে অপরকে ডিম উপহার দেয়, যা কিনা নতুন জীবনের প্রতীক। ডিমগুলি সত্যিকারের ডিম হতে পারে, কিংবা কাঠের বা চকোলেটের তৈরি হতে পারে।
মৃত্যুর কয়েকদিন আগে যিশু জেরুসালেমে গাধার পিঠে চড়ে আগমন করেছিলেন। তাঁকে স্থানীয় জনগণ তাঁর চলার পথে পামগাছের পাতা বিছিয়ে স্বাগত জানিয়েছিল। খ্রিস্টানরা এই ঘটনাটিকে পাম রবিবার নামের একটি দিবসে স্মরণ করে থাকে এবং কিছু কিছু গির্জায় পামগাছের পাতা দিয়ে তৈরি ছোট ছোট ক্রুশ উপাসনাকারীদের মধ্যে বিতরণ করা হয়।
যিশুর স্বর্গারোহণের কয়েক দিন পরে তাঁর শিষ্যরা শাভুওত নামের একটি ইহুদি উৎসবের সময় একত্রিত হয়েছিলেন। বাইবেলে বর্ণিত আছে যে এসময় তাঁরা হঠাৎ শনশন বায়ুপ্রবাহের শব্দ শুনতে পান এবং তাদের প্রত্যেকের উপরে আগুনের শিখা জ্বলতে দেখতে পান। তারা সবাই পবিত্র আত্মার শক্তিতে বলীয়ান হন এবং ভিনদেশী ভাষায় কথা বলতে শুরু করেন। খ্রিস্টানরা শিষ্যদের উপরে পবিত্র আত্মার অবতরণের এই অলৌকিক ঘটনাটি মে বা জুন মাসে পুনরুত্থান পার্বণের পরে পঞ্চাশ দিন পরে সপ্তম রবিবারে উদ্যাপন করেন, যাকে পঞ্চাশত্তমী রবিবার বলে।
বিকাশ ও বিস্তার
খ্রিস্টধর্ম প্রথমে পূর্ব ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলগুলিতে ইহুদিধর্মের একটি উপ-সম্প্রদায় হিসেবে যাত্রা শুরু করে।[৩৮][৩৯] খ্রিস্টের মৃত্যুর পরে তার আদি বারো শিষ্য জেরুসালেম থেকে বাইরে ছড়িয়ে পড়েন। কয়েক দশকের মধ্যে খ্রিস্টে বিশ্বাসী অনুসারীদের সংখ্যা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পায়। বারো শিষ্যের বাইরে খ্রিস্টধর্মের বাণীর আদি প্রচারকদের মধ্যে সন্ত পৌল (৫ খ্রিস্টপূর্বাব্দ- আনু. ৬৭ খ্রিস্টাব্দ) বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য; বাইবেলের নতুন নিয়মের ২৭টি পুস্তকের মধ্যে ১৩টিই তিনি রচনা করেন। খ্রিস্টীয় ১ম শতকেই বারো শিষ্যদের সবার মৃত্যু হয়। এরপর ২য় ও ৩য় শতকে খ্রিস্টের বারো শিষ্যের উত্তরসূরী ধর্মবিদেরা খ্রিস্ট ধর্মের তত্ত্ব নির্মাণ ও প্রচার অব্যাহত রাখেন; তাদের রচনার অংশবিশেষ নতুন নিয়মের অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। এসময় খ্রিস্টধর্ম একটি গুরুত্বপূর্ণ অ-ইহুদি ধর্ম হিসেবে রোমান সাম্রাজ্যে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হয়। একই সাথে ধর্মটি মধ্যপ্রাচ্য, ইথিওপিয়া (আকসুম সাম্রাজ্য) ও আন্তঃককেশিয়ার বিশাল অংশে এবং এশিয়ার কিয়দংশে ছড়িয়ে পড়ে। আকসুম সাম্রাজ্য প্রথম সাম্রাজ্য হিসেবে খ্রিস্টধর্মকে রাষ্ট্রধর্ম হিসেবে গ্রহণ করে। ৪র্থ শতকে রোমান সম্রাট কোনস্তানতিন খ্রিস্টধর্মে ধর্মান্তরিত হন এবং তিনি ৩১৩ খ্রিস্টাব্দে মিলানের রাজকীয় অধ্যাদেশবলে খ্রিস্টধর্মকে আইনবিরুদ্ধ হিসেবে গণ্য করা বন্ধ করেন। এর প্রেক্ষিতে এটি সমগ্র রোমান সাম্রাজ্যের প্রধান ধর্মে পরিণত হয়। ৩২৫ খ্রিস্টাব্দে সম্রাট কোনস্তানতিনের আহুত নিকায়েয়া-র (বর্তমান তুরস্কের ইজনিক শহর) ধর্মীয় সম্মেলনে খ্রিস্টধর্মের ধর্মীয় বিশ্বাসের সারসংক্ষেপ প্রথমবারের মত রচিত হয়। এতে বাইবেলে বর্ণিত পিতারূপী ঈশ্বর, পুত্ররূপী ঈশ্বর (যিশু) ও পবিত্র আত্মারূপী ঈশ্বর - এই তিন সত্তাই যে একই ঈশ্বরের তিন রূপ, এই ত্রিত্ববাদ ধারণাটি গৃহীত হয়। বর্তমানে খ্রিস্টান মণ্ডলীগুলির সিংহভাগ ঈশ্বরের ত্রিত্ববাদে বিশ্বাসী; তবে মূলধারার বাইরে অনেক ছোট ছোট মণ্ডলী এতে বিশ্বাস করে না। ৫ম শতকে খ্রিস্টধর্মের নেতৃস্থানীয় ধর্মযাজকেরা ধর্মগ্রন্থসমগ্র বাইবেলের সংকলন প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করেন। মধ্যযুগে এসে ইউরোপের বাকি অংশগুলিরও খ্রিস্টধর্মায়ন ঘটে। সে সময় খ্রিস্টানরা মধ্যপ্রাচ্য, উত্তর আফ্রিকা এবং ভারতের অংশবিশেষেও সংখ্যালঘু সম্প্রদায় হিসেবে বাস করত।[৪০] আবিষ্কারের যুগের পরে উপনিবেশ স্থাপন ও জোরালো ধর্মপ্রচারণার সুবাদে খ্রিস্টধর্ম সাহারা-নিম্ন আফ্রিকা, উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া এবং বিশ্বের অন্যত্র (যেমন পূর্ব এশিয়া বিশেষত ফিলিপাইন) ছড়িয়ে পড়ে। বর্তমানে খ্রিস্টধর্ম বিশ্বের সবচেয়ে বেশি বিস্তৃত অঞ্চলব্যাপী বিরাজমান প্রধান ধর্ম।
২০১১ সালে প্রকাশিত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র-ভিত্তিক পিউ গবেষণা কেন্দ্রের একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী খ্রিস্টানরা বিশ্বের সর্বব্যাপী এত বেশি ছড়িয়ে আছে যে কোনও একক একটি মহাদেশ বা অঞ্চল বিশ্ব খ্রিস্টান মণ্ডলীর কেন্দ্র হিসেবে নিজেকে দাবী করতে পারে না। এটি একটি সাম্প্রতিক ঘটনা। ২০শ শতকের শুরুতে এসেও ১৯১০ খ্রিস্টাব্দে বিশ্বের দুই-তৃতীয়াংশ খ্রিস্টান ইউরোপ মহাদেশে বাস করত এবং এ অবস্থাটি তার আগের এক সহস্রাব্দ থেকেই বিরাজ করছিল। ২১শ শতকের শুরুতে এসে বিশ্বের খ্রিস্টানদের মাত্র এক-চতুর্থাংশ ইউরোপে বাস করে, এবং এর বিপরীতে এক-তৃতীয়াংশেরও বেশি দুই আমেরিকা মহাদেশে বাস করে। এছাড়া প্রায় এক-চতুর্থাংশ খ্রিস্টান সাহারা-নিম্ন আফ্রিকাতে এবং প্রায় এক-অষ্টমাংশ এশিয়া মহাদেশ ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে বাস করে।[৪১]
টীকা
- ↑ এই নিবন্ধে "খ্রিস্ট", "খ্রিস্টান", "খ্রিস্টধর্ম", "খ্রিস্টাব্দ", "যিশু" ইত্যাদি বানানগুলি প্রমিত বানান হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে। বাংলায় বিভিন্ন গ্রন্থে ও রচনায় খ্রীষ্ট, খ্রিষ্ট, খৃষ্ট, খ্রীষ্টান, খ্রিষ্টান, খ্রিষ্টাব্দ, যীশু ইত্যাদি বানানগুলিও বহুল প্রচলিত।
তথ্যসূত্র
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ চ ছ জ ঝ NW, 1615 L. St; Washington, Suite 800; Inquiries, DC 20036 USA202-419-4300 | Main202-419-4349 | Fax202-419-4372 | Media (২০১১-১২-১৯)। "The Size and Distribution of the World's Christian Population"। Pew Research Center's Religion & Public Life Project (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০১-২৪।
- ↑ Cross, Frank Leslie; Livingstone, Elizabeth A. (২০০৫)। The Oxford Dictionary of the Christian Church (ইংরেজি ভাষায়)। Oxford University Press। পৃষ্ঠা ৯৬১। আইএসবিএন 978-0-19-280290-3। ওসিএলসি 58998735।
- ↑ Christidis, A.-F.; Christidēs, A.-Ph; Arapopoulou, Maria; Χρίτη, Μαρία; Chrite, Maria (২০০৭-০১-১১)। A History of Ancient Greek: From the Beginnings to Late Antiquity (ইংরেজি ভাষায়)। Cambridge University Press। পৃষ্ঠা ৪৩৬। আইএসবিএন 978-0-521-83307-3।
- ↑ Brock, Sebastian P. (১৯৯২b)। Studies in Syriac Christianity: History, Literature, and Theology। Aldershot: Variorum। আইএসবিএন 978-0-86078-305-3।
- ↑ Florin Curta (২০০৬)। Southeastern Europe in the Middle Ages, 500–1250। Cambridge Medieval Textbooks। Cambridge University Press। পৃষ্ঠা 221–222। আইএসবিএন 978-0-521-81539-0।
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ "Pentarchy"। Encyclopædia Britannica। সংগ্রহের তারিখ ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১০।
The proposed government of universal Christendom by five patriarchal sees under the auspices of a single universal empire. Formulated in the legislation of the emperor Justinian I (527–65), especially in his Novella 131, the theory received formal ecclesiastical sanction at the Council in Trullo (692), which ranked the five sees as Rome, Constantinople, Alexandria, Antioch, and Jerusalem.
- ↑ Ehrman, Bart D. (২০১৪)। How Jesus Became God: The Exaltation of a Jewish Preacher from Galilee। HarperOne। আইএসবিএন 978-0-06-177818-6।
- ↑ Stanford, Peter। "Roman Catholic Church"। BBC Religions। BBC। সংগ্রহের তারিখ ১ ফেব্রুয়ারি ২০১৭।
- ↑ Bokenkotter, 2004, p. 18
- ↑ ক খ "Christianity 2015: Religious Diversity and Personal Contact" (পিডিএফ)। gordonconwell.edu। জানুয়ারি ২০১৫। ২৫ মে ২০১৭ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৯ মে ২০১৫।
- ↑ ক খ Rayburn, Robert S. (২০০১)। "Christians, Names Of"। Evangelical Dictionary of Theology। পৃষ্ঠা 234।
- ↑ Hutchinson, Mark; Wolffe, John (২০১২)। "Localism and Transnationality: 1970s to 2010"। A Short History of Global Evangelicalism। Cambridge University Press। পৃষ্ঠা 269।
- ↑ Stephen Goranson, "Nazarenes," Anchor Bible Dictionary, 4: 1049-1050; James F. Strange, "Nazareth," Anchor Bible Dictionary, 4: 1050-1,051
- ↑ "World's largest religion by population is still Christianity"। Countrymeters (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ১ জানুয়ারি ২০২০।
- ↑ The Pew Forum on Religion and Public Life. December 2012. "The Global Religious Landscape: A Report on the Size and Distribution of the World's Major Religious Groups as of 2010." DC: Pew Research Center. Article.
- ↑ Woodhead 2004, পৃ. n.p
- ↑ S. T. Kimbrough, সম্পাদক (২০০৫)। Orthodox and Wesleyan Scriptural understanding and practice। St Vladimir's Seminary Press। আইএসবিএন 978-0-88141-301-4।
- ↑ Religions in Global Society. p. 146, Peter Beyer, 2006
- ↑ Cambridge University Historical Series, An Essay on Western Civilization in Its Economic Aspects, p. 40: Hebraism, like Hellenism, has been an all-important factor in the development of Western Civilization; Judaism, as the precursor of Christianity, has indirectly had had much to do with shaping the ideals and morality of western nations since the christian era.
- ↑ Caltron J.H Hayas, Christianity and Western Civilization (1953), Stanford University Press, p. 2: "That certain distinctive features of our Western civilization—the civilization of western Europe and of America—have been shaped chiefly by Judaeo – Graeco – Christianity, Catholic and Protestant."
- ↑ Horst Hutter, University of New York, Shaping the Future: Nietzsche's New Regime of the Soul And Its Ascetic Practices (2004), p. 111: three mighty founders of Western culture, namely Socrates, Jesus, and Plato.
- ↑ Fred Reinhard Dallmayr, Dialogue Among Civilizations: Some Exemplary Voices (2004), p. 22: Western civilization is also sometimes described as "Christian" or "Judaeo- Christian" civilization.
- ↑ Muslim-Christian Relations। Amsterdam University Press। ২০০৬। আইএসবিএন 978-90-5356-938-2। সংগ্রহের তারিখ ১৮ অক্টোবর ২০০৭।
The enthusiasm for evangelization among the Christians was also accompanied by the awareness that the most immediate problem to solve was how to serve the huge number of new converts. Simatupang said, if the number of the Christians were double or triple, then the number of the ministers should also be doubled or tripled and the tole of the laity should be maximized and Christian service to society through schools, universities, hospitals and orphanages, should be increased. In addition, for him the Christian mission should be involved in the struggle for justice amid the process of modernization.
- ↑ Fred Kammer (১ মে ২০০৪)। Doing Faith Justice। Paulist Press। পৃষ্ঠা 77। আইএসবিএন 978-0-8091-4227-9। সংগ্রহের তারিখ ১৮ অক্টোবর ২০০৭।
Theologians, bishops, and preachers urged the Christian community to be as compassionate as their God was, reiterating that creation was for all of humanity. They also accepted and developed the identification of Christ with the poor and the requisite Christian duty to the poor. Religious congregations and individual charismatic leaders promoted the development of a number of helping institutions-hospitals, hospices for pilgrims, orphanages, shelters for unwed mothers-that laid the foundation for the modern "large network of hospitals, orphanages and schools, to serve the poor and society at large."
- ↑ Christian Church Women: Shapers of a Movement। Chalice Press। মার্চ ১৯৯৪। আইএসবিএন 978-0-8272-0463-8। সংগ্রহের তারিখ ১৮ অক্টোবর ২০০৭।
In the central provinces of India they established schools, orphanages, hospitals, and churches, and spread the gospel message in zenanas.
- ↑ "Christian Traditions"। Pew Research Center's Religion & Public Life Project। ১৯ ডিসেম্বর ২০১১।
About half of all Christians worldwide are Catholic (50%), while more than a third are Protestant (37%). Orthodox communions comprise 12% of the world’s Christians.
- ↑ "Status of Global Christianity, 2019, in the Context of 1900–2050" (পিডিএফ)। Center for the Study of Global Christianity।
- ↑ ক খ Peter, Laurence (২০১৮-১০-১৬)। "Orthodox Church split: Five reasons why it matters"। BBC News (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০১-২৪।
- ↑ "Christian persecution 'at near genocide levels'"। BBC News (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৯-০৫-০৩। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০১-২৪।
- ↑ "Persecution of Christians 'coming close to genocide' in Middle East – report"। the Guardian (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৯-০৫-০২। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০১-২৪।
- ↑ "One in three Christians face persecution in Asia, report finds"। the Guardian (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৯-০১-১৬। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০১-২৪।
- ↑ Zoll, Rachel (১৯ ডিসেম্বর ২০১১)। "Study: Christian population shifts from Europe"। Associated Press। ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১২।
- ↑ "The Global Religious Landscape"। Pew Research Center। ডিসেম্বর ২০১২। ১৭ জানুয়ারি ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৫ নভেম্বর ২০১৮।
- ↑ 33.39% of ~7.2 billion world population (under the section 'People') "World"। The World Factbook। CIA। ৫ জানুয়ারি ২০১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৭ জুলাই ২০১৪।
- ↑ Tacitus tells about this in his Annales: Perseus-Project: Annales 15,44 ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২৭ জানুয়ারি ২০০৮ তারিখে In the passage, Tacitus talks about the burning of Rome, which Nero attributed to the Christians: Christus, from whom the name had its origin, suffered the extreme penalty during the reign of Tiberius at the hands of one of our procurators, Pontius Pilatus, and a most mischievous superstition, thus checked for the moment, again broke out not only in Judaea, the first source of the evil, but even in Rome, where all things hideous and shameful from every part of the world find their centre and become popular.
- ↑ "BBC - Religion & Ethics - 566, Christianity"। BBC। ২০১৭-০৮-০২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-১০-০১।
- ↑ McGrath, Christianity: An Introduction, p. 4-6.
- ↑ Robinson, Essential Judaism: A Complete Guide to Beliefs, Customs and Rituals, p. 229.
- ↑ Esler. The Early Christian World. p. 157f.
- ↑ McManners, Oxford Illustrated History of Christianity, p. 301-303.
- ↑ উদ্ধৃতি ত্রুটি:
<ref>
ট্যাগ বৈধ নয়;pew
নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি