প্রথম মুরাদ
প্রথম মুরাদ مراد اول | |
---|---|
উসমানীয় সুলতান খোদাওয়ান্দিগার | |
৩য় উসমানীয় সুলতান | |
রাজত্বকাল | ১৩৬২ – ১৪ জুন ১৩৮৯ (২৭ বছর) |
পূর্বসূরি | ওরহান |
উত্তরসূরি | প্রথম বায়েজীদ |
জন্ম | ২৯ জুন ১৩২৬ আমাসিয়া,[১] বর্তমান তুরস্ক |
মৃত্যু | ১৫ জুন ১৩৮৯ কসোভো রণাঙ্গন, বর্তমান প্রিশটিনা জেলা, কসোভো[ক] |
সমাধি | সুলতান মুরাদের মাজার, কসোভো যুদ্ধক্ষেত্র, বর্তমান প্রিশটিনা জেলা, কসোভো[ক] ৪২°৪২′০৭″ উত্তর ২১°০৬′১৫″ পূর্ব / ৪২.৭০১৯৪° উত্তর ২১.১০৪১৭° পূর্ব |
স্ত্রী | গুলচিচেক খাতুন তামারা খাতুন পাশা মেলেক খাতুন মারিয়া খাতুন |
রাজবংশ | উসমানীয় রাজবংশ (উসমানলি হানেদানি) |
পিতা | প্রথম ওরহান |
মাতা | নিলুফার খাতুন |
ধর্ম | ইসলাম |
তুগরা |
প্রথম মুরাদ (উসমানীয় তুর্কি: مراد اول) (তুর্কি: I. Murat Hüdavendigâr) (ডাকনাম ফার্সি خداوندگار খোদাওয়ান্দিগার,, অর্থ "খোদাভক্ত") (২৯ জুন ১৩২৬, আমাসিয়া – ১৫ জুন ১৩৮৯, কসোভো যুদ্ধক্ষেত্র) ছিলেন উসমানীয় সুলতান। তিনি ১৩৬২ থেকে ১৩৮৯ সাল পর্যন্ত শাসন করেছেন। তিনি পূর্ববর্তী শাসক প্রথম ওরহানের পুত্র।
প্রথম মুরাদ এড্রিনোপল জয় করেন। তিনি এর নাম রাখেন এদির্ন।[১] ১৩৬৩ সালে তিনি এই শহরে উসমানীয় সালতানাতের নতুন রাজধানী স্থাপন করেন।[২] এরপর বলকান অঞ্চলের অধিকাংশ জয় করে তিনি দক্ষিণপূর্ব ইউরোপে উসমানীয় সীমানা বৃদ্ধি করেন। তিনি উত্তর সার্বিয়া ও বুলগেরিয়ার রাজা এবং সেসাথে বাইজেন্টাইন সম্রাট পঞ্চম জন পেলাইওলোগোসকে কর দিতে বাধ্য করেন।[১] প্রশাসনিক কারণে মুরাদ সালতানাতকে দুইটি প্রদেশে ভাগ করেন। এদের একটি হল আনাতোলিয়া (এশিয়া মাইনর) এবং অন্যটি হল রুমেলিয়া (বলকান)। সার্বীয়দের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের সময় মুরাদের মৃত্যুর ফলে উসমানীয়রা সামরিকভাবে তাদের রাজ্যবিস্তার স্থগিত করে এবং দুর্বল বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্যের উপর মনোযোগ প্রদান করে।
যুদ্ধ
মুরাদ আনাতোলিয়ায় শক্তিশালী কারামানি বেয়লিক এবং ইউরোপে সার্ব, আলবেনীয়, বুলগেরীয় ও হাঙ্গেরীয়দের বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন। মুরাদের সেনাপতি ও রুমেলি প্রদেশের প্রথম গভর্নর লালা শাহিন পাশা ১৩৭১ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর এড্রিনোপল থেকে তুর্কিদের বিতাড়িত করার উদ্দেশ্যে পরিচালিত একটি সার্ব অভিযান রুখে দেন। ১৩৮৫ সালে সোফিয়া উসমানীয়দের হস্তগত হয়। ১৩৮৬ সালে সার্বীয় শাসক লাজার প্লোচনিকের যুদ্ধে উসমানীয়দের পরাজিত করেন। ফলে উসমানীয়রা নিস অধিকার করতে সক্ষম হয়নি।
কসোভোর যুদ্ধ
১৩৮৯ সালে কসোভোর যুদ্ধে মুরাদের বাহিনী লাজারের নেতৃত্বাধীন সার্বীয় ও তার মিত্রদেরকে পরাজিত করে। মুরাদ কখন ও কিভাবে নিহত হয়েছিলেন সে বিষয়ে ভিন্ন ভিন্ন সূত্রে ভিন্ন ভিন্ন বর্ণনা পাওয়া যায়। সমসাময়িক সূত্র অনুযায়ী যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর লাজার ও মুরাদ উভয়ে যুদ্ধে নিহত হন। একটি পশ্চিমা সূত্র অনুযায়ী যুদ্ধ শুরু হওয়ার প্রথম দিকে মুরাদ সার্বীয় নাইট মিলোস ওবিলিচের ছুরিকাঘাতে নিহত হন।[৩][৪] অধিকাংশ উসমানীয় বিবরণ লেখক লিখেছেন যে যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর তিনি নিহত হন। অন্যান্যদের মতে যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর নিজের তাবুতে তিনি খুন হন। যুদ্ধক্ষেত্রে সেনাদলের বাম পার্শ্বের নেতৃত্বে থাকা তার জ্যেষ্ঠ পুত্র প্রথম বায়েজীদ এরপর দায়িত্বগ্রহণ করেন।
১৩৮৯ সালের ২০ মার্চ তারিখে ফ্লোরেন্সের সেনেট থেকে বসনিয়ার রাজাকে লেখা একটি চিঠিতে মুরাদের হত্যার বর্ণনা রয়েছে। এই বিবরণ অনুযায়ী বারোজন সার্বীয় সুলতানের দিকে অগ্রসর হয় এবং তাদের একজন (মিলোস ওবিলিচ বলে ধারণা করা হয়) সুলতানের তাবুর দিকে পৌছাতে সক্ষম হন ও সুলতানকে হত্যা করেন।[৫]
সালতানাত প্রতিষ্ঠা
বিজিত এড্রিনোপল শহরে সরকার গঠন এবং ইউরোপে সীমানা বৃদ্ধি করে মুরাদ সালতানাত প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি বলকানের অধিকাংশ অঞ্চল উসমানীয়দের অধীনে আনেন এবং বাইজেন্টাইন সম্রাটকে কর প্রদানে বাধ্য করেন। মুরাদ সাবেক উসমানীয় গোত্রকে সালতানাতে রূপান্তর করেন। ১৩৮৩ সালে তিনি সুলতান উপাধি ধারণ করেন এবং ইয়ানিসারি নিয়োগের প্রথা চালু করেন। তিনি দিওয়ান গঠন করেন, তিমার ও সামরিক বিচারক হিসেবে কাজাসকির প্রথা চালু করেন। এছাড়াও তিনি আনাদোলু (আনাতোলিয়া) এবং রুমেলি (ইউরোপ) প্রদেশ স্থাপন করেছেন।
সাহিত্যে উল্লেখ
- থমাস গফ রচিত দ্য কারেজিয়াস টার্ক নাটকে সুলতান মুরাদকে "আমুরাথ দ্য ফার্স্ট" হিসেবে দেখানো হয়েছে। নাটকটি ১৬৩২ সালে প্রকাশিত হয়।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]
আরও পড়ুন
- Harris, Jonathan, The End of Byzantium. New Haven and London: Yale University Press, 2010. আইএসবিএন ৯৭৮-০-৩০০-১১৭৮৬-৮
- Imber, Colin, The Ottoman Empire. London: Palgrave/Macmillan, 2002. আইএসবিএন ০-৩৩৩-৬১৩৮৭-২
টীকা
- ↑ ক খ Kosovo is the subject of a territorial dispute between the Republic of Serbia and the Republic of Kosovo. The latter declared independence on 17 February 2008, but Serbia continues to claim it as part of its own sovereign territory. Kosovo's independence has been recognized by 111 out of ১৯৩ United Nations member states.
তথ্যসূত্র
- ↑ ক খ গ "Murad I". Encyclopædia Britannica Inc., 2014. Web. 19 Dec. 2014.
- ↑ "In 1363 the Ottoman capital moved from Bursa to Edirne, although Bursa retained its spiritual and economic importance." Ottoman Capital Bursa. Official website of Ministry of Culture and Tourism of the Republic of Turkey. Retrieved 19 December 2014.
- ↑ Helmolt, Ferdinand. The World's History, p.293. W. Heinemann, 1907.
- ↑ Fine, John. The Late Medieval Balkans, p. 410. University of Michigan Press, 1994. আইএসবিএন ০-৪৭২-০৮২৬০-৪.
- ↑ Wayne S. Vucinich, Thomas A. Emmert (১৯৯১)। Kosovo: Legacy of a Medieval Battle। University of Minnesota।
বহিঃসংযোগ
উইকিমিডিয়া কমন্সে প্রথম মুরাদ সম্পর্কিত মিডিয়া দেখুন।
প্রথম মুরাদ জন্ম: ১৩২৬ মৃত্যু: ১৩৮৯
| ||
শাসনতান্ত্রিক খেতাব | ||
---|---|---|
পূর্বসূরী প্রথম ওরহান |
উসমানীয় সুলতান ১৩৬২ – ১৫ জুন ১৩৮৯ |
উত্তরসূরী প্রথম বায়েজীদ |