বিষয়বস্তুতে চলুন

ডার্ক ভিলজোয়েন

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
মুদ্রণযোগ্য সংস্করণটি আর সমর্থিত নয় এবং এতে রেন্ডারিং ত্রুটি থাকতে পারে। দয়া করে আপনার ব্রাউজারের বুকমার্কগুলি হালনাগাদ করুন এবং এর পরিবর্তে দয়া করে ব্রাউজারের মুদ্রণ করার ফাংশনটি ব্যবহার করুন।
ডার্ক ভিলজোয়েন
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নাম
ডার্ক পিটার ভিলজোয়েন
জন্ম (1977-03-11) ১১ মার্চ ১৯৭৭ (বয়স ৪৭)
এনকেলডুর্ন, জিম্বাবুয়ে
ব্যাটিংয়ের ধরনবামহাতি
বোলিংয়ের ধরনস্লো লেফট-আর্ম অর্থোডক্স
ভূমিকাব্যাটসম্যান
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ৩৯)
১৪ মার্চ ১৯৯৮ বনাম পাকিস্তান
শেষ টেস্ট২৫ নভেম্বর ২০০০ বনাম ভারত
ওডিআই অভিষেক
(ক্যাপ ৫০)
৩ এপ্রিল ১৯৯৭ বনাম শ্রীলঙ্কা
শেষ ওডিআই১৩ অক্টোবর ২০০১ বনাম ইংল্যান্ড
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট ওডিআই
ম্যাচ সংখ্যা ৫৩
রানের সংখ্যা ৫৭ ৫১২
ব্যাটিং গড় ১৪.২৫ ১৪.২২
১০০/৫০ ০/০ ০/২
সর্বোচ্চ রান ৩৮ ৬৩*
বল করেছে ১০৫ ২,০৭৫
উইকেট ৪৪
বোলিং গড় ৬৫.০০ ৩৭.২৫
ইনিংসে ৫ উইকেট
ম্যাচে ১০ উইকেট
সেরা বোলিং ১/১৪ ৩/২০
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ১/– ১৮/–
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ২৭ মার্চ ২০২০

ডার্ক পিটার ভিলজোয়েন (ইংরেজি: Dirk Viljoen; জন্ম: ১১ মার্চ, ১৯৭৭) এনকেলডুর্ন এলাকায় জন্মগ্রহণকারী সাবেক জিম্বাবুয়ীয় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার। জিম্বাবুয়ে ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯৯৭ থেকে ২০০১ সময়কালে সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্যে জিম্বাবুয়ের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছেন।[][][]

ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর জিম্বাবুয়ীয় ক্রিকেটে ম্যাশোনাল্যান্ড ও মাতাবেলেল্যান্ড দলের প্রতিনিধিত্ব করেন। দলে তিনি মূলতঃ বামহাতি ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলতেন। এছাড়াও, স্লো লেফট-আর্ম অর্থোডক্স বোলিংয়ে পারদর্শী ছিলেন ডার্ক ভিলজোয়েন

প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট

১৯৯৪-৯৫ মৌসুম থেকে ২০০২-০৩ মৌসুম পর্যন্ত ডার্ক ভিলজোয়েনের প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান ছিল। ১৯৯৬-৯৭ মৌসুমে জিম্বাবুয়ের বর্ষসেরা তরুণ ক্রিকেটারের পুরস্কার লাভ করেন। অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেট একাডেমির বৃত্তিধারী হয়েছিলেন।

বামহাতি মাঝারিসারির ব্যাটসম্যান ও ধীরগতিসম্পন্ন বামহাতি বোলারের ন্যায় প্রকৃত মানসম্পন্ন অল-রাউন্ডার হিসেবে নিজেকে গড়ে তুলেছিলেন। তবে, শীর্ষ পর্যায়ের ক্রিকেটে তার শুরুরদিকে প্রতিশ্রুতিশীলতা প্রদর্শনে বেশ বাঁধার মুখোমুখি হয়। তার পায়ের কারুকাজ ও ব্যাট হাতে ধরে রাখার অপূর্ব কৌশল বেশ দর্শনীয় ছিল। পাশাপাশি, বুদ্ধিমত্তা সহযোগে বোলিংয়ে ফ্লাইট ও পেস আনয়ণের বৈচিত্র্যতাও সবিশেষ লক্ষ্যণীয়। এরফলে তাকে জিম্বাবুয়ের প্রকৃত যোদ্ধা হিসেবে তুলে ধরতে সহায়তা করে।

১৯৯৮-৯৯ মৌসুমে ইংল্যান্ডে অবস্থান করেন। সেখানে তিনি বার্ন্ট গ্রীনের সদস্যরূপে খেলেন। জিম্বাবুয়েতে প্রত্যাবর্তন করে ব্যাট হাতে ছন্দ খুঁজে পান। প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে নিজস্ব প্রথম অর্ধ-শতরানের ইনিংস খেলেন। বুলাওয়েতে মাতাবেলেল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাশোনাল্যান্ডে এ-দলের সদস্যরূপে ৯২ রানের ইনিংস খেলেন। ঐ মৌসুমের শেষদিকে ইংল্যান্ড এ-দলের বিপক্ষে আরও দুইটি অর্ধ-শতরান করেন। ফলশ্রুতিতে জিম্বাবুয়ে বোর্ড একাদশের সদস্যরূপে অন্তর্ভুক্ত হন। নামিবিয়ার বিপক্ষে ১৫৫ ও বর্ডার বি-দলের বিপক্ষে ১০০ রান করেন। তবে, ঐ খেলাগুলো প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটের মর্যাদার অধিকারী ছিল না।

১৯৯৯-২০০০ মৌসুমে বুলাওয়েতে ম্যাশোনাল্যান্ডের সদস্যরূপে মাতাবেলেল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথমবারের মতো প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে সেঞ্চুরি করেন। অপরাজিত ১৭৩ রান করেন তিনি। ক্রেগ ইভান্সের সাথে ৩৩০ রানের জুটি গড়েন।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট

সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে দুইটিমাত্র টেস্ট ও তিপ্পান্নটি একদিনের আন্তর্জাতিকে অংশগ্রহণ করেছেন ডার্ক ভিলজোয়েন। ১৪ মার্চ, ১৯৯৮ তারিখে বুলাওয়েতে সফরকারী পাকিস্তান দলের বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। এরপর, ২৫ নভেম্বর, ২০০০ তারিখে নাগপুরে স্বাগতিক ভারত দলের বিপক্ষে সর্বশেষ টেস্টে অংশ নেন তিনি।

১৯৯৬-৯৭ মৌসুমে নিজস্ব ২০তম জন্মদিনের অল্প কিছুদিন পরই শারজায় শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে জিম্বাবুয়ের সদস্যরূপে ওডিআইয়ে অভিষেক ঘটে ডার্ক ভিলজোয়েনের। অনেকটা অপ্রত্যাশিতভাবেই তাকে দলে মনোনীত করা হয় কেননা লিস্ট-এ ক্রিকেটে এটিই তার প্রথম মৌসুম ছিল। এছাড়াও তিনি তখনো কোন অর্ধ-শতরানের ইনিংস খেলেননি। ডেভিড হটনের স্থলাভিষিক্ত হন। ১৭, ২২ ও ২৫ রানের ইনিংস খেলেছিলেন তিনি।

টেস্ট অভিষেক

১৯৯৭-৯৮ মৌসুমে দলের সাথে শ্রীলঙ্কা ও নিউজিল্যান্ড গমন করেন। নিউজিল্যান্ডের মাটিতে চারটি ওডিআইয়ে অংশ নেন। তন্মধ্যে সর্বোচ্চ করেন ৩৬ রান। ব্যাট হাতে খুব কমই সফলতা পান। প্রায়শই তাকে নিচেরসারিতে ব্যাটিংয়ে নামায় সীমিত পরিসরে খেলার সুযোগ পেতেন। উভয় দেশ সফর করলেও কেবলমাত্র একটি প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট খেলায় অংশ নিতে পেরেছেন। নিউজিল্যান্ডের মাটিতে প্রস্তুতিমূলক খেলায় অংশগ্রহণ করেছিলেন তিনি। একপর্যায়ে একদিনের খেলায় ব্যাটিংয়ে অভিজ্ঞ হিসেবে তাকে দেখা হতো।

এরপর মার্চ, ১৯৯৮ সালে জিম্বাবুয়ের টেস্ট দলে তাকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। বিস্ময়করভাবে বুলাওয়েতে তাকে খেলানো হয়। অল-রাউন্ডার গেভিন রেনি ছন্দহীনতায় ভুগছিলেন। পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টেস্টে তাকে বাদ দেয়া হয় ও ভিলজোয়েনকে তার স্থলাভিষিক্ত করা হয়। গ্রান্ট ফ্লাওয়ারের সাথে ব্যাটিং উদ্বোধনে নামেন। তবে, অভিষেক পর্বটি মোটেই সুখকর হয়নি তার। উভয় ইনিংসেই তিনি জোড়া শূন্য রানের রেকর্ড গড়েন। ওয়াকার ইউনুসশোয়েব আখতারের নতুন বলের আক্রমণে হিমশিম খান। তবে, ঐ টেস্টে শতরান করা থেকে ৩ রান দূরে থাকা মঈন খানের উইকেট নিয়ে প্রথম টেস্ট উইকেট লাভ করেন তিনি।

পরবর্তীতে দল নির্বাচকমণ্ডলী তাকে একদিনের আন্তর্জাতিকে ব্যাটিংয়ে পারদর্শী হিসেবে উপস্থাপন করে। তবে, বেশ কয়েকজন ব্যাটসম্যানের প্রাচুর্যতা থাকায় তাকে খুব কম সময়ই আট নম্বরের উপরে রাখা হয়নি। তাসত্ত্বেও, সীমিত ওভারের ক্রিকেটে চমৎকার দৌঁড়ানোর ভঙ্গী ও মিতব্যয়ী বোলিং এ পর্যায়ের ক্রিকেটে উপযোগী করে তুলে।

ফেব্রুয়ারি, ২০০০ সালে ইংল্যান্ড দল জিম্বাবুয়ে গমন করে। কয়েকটি ওডিআইয়ে অংশ নিলেও উল্লেখ করার মতো তেমন ক্রীড়াশৈলীর স্বাক্ষর রাখেননি। তবে, সিরিজের চূড়ান্ত খেলায় ৩ উইকেট লাভ করেছিলেন ডার্ক ভিলজোয়েন। শারজায় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের অভিষেক খেলাতে একই প্রতিপক্ষের বিপক্ষে ব্যাট হাতে সেরা ইনিংস উপহার দিয়েছিলেন তিনি। এরপর শ্রীলঙ্কার মাটিতেও একই প্রতিপক্ষের বিপক্ষে ভালো খেলেন তিনি। ছয় নম্বরে নেমে অপরাজিত ৬৩ রান করেন।

২০০০-০১ মৌসুমে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে উপর্যুপরী অর্ধ-শতরানের ইনিংস খেলেন। এ পর্যায়ে ষষ্ঠ উইকেটে অ্যান্ডি ফ্লাওয়ারের সাথে ৮২ রানের জুটি গড়ে প্রথমবারের মতো বিদেশের মাটিতে সিরিজ জয়ে ভূমিকা রাখেন। নিজে করেন ৩৯ রান। এরপর, জানুয়ারি, ২০০১ সালে ইডেন পার্কে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে তৃতীয় ওডিআইয়ে এক উইকেট জয়ে সবিশেষ ভূমিকা পালন করেন।

ক্রিকেট বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ

ব্যাট হাতে ফলপ্রসূ মৌসুম অতিবাহিত করার স্বীকৃতিস্বরূপ ১৯৯৯ সালে ইংল্যান্ডের মাটিতে অনুষ্ঠিত চতুর্থ বিশ্বকাপে অংশগ্রহণের জন্যে তাকে মনোনীত করা হয়। তবে, এ প্রতিযোগিতায় কেবলমাত্র একটি খেলায় অংশগ্রহণের সুযোগ হয় তার। লর্ডসে অস্ট্রেলিয়ার মুখোমুখি হন তিনি। সুপার সিক্স পর্বে উত্তরণের মাধ্যমে দলীয়ভাবে দলটি তাদের ইতিহাসের সর্বোচ্চ সফলতা পায়।

২০০১-০২ মৌসুমে ভারত গমন করেন। নাগপুরে নিজস্ব দ্বিতীয় ও চূড়ান্ত টেস্টে ভারতের মুখোমুখি হন। দুই মাস পূর্বেকার প্রথম অংশগ্রহণের তুলনায় কিছুটা সুখী হয়েছিলেন। নিজস্ব অপর টেস্টে অংশ নেন। সাত নম্বরে নেমে ১৯ রান তুলে টেস্টে শূন্য রানের বৃত্ত ভঙ্গ করেন। ফলো-অনের কবলে পড়ে দ্বিতীয় ইনিংসে ৩৮ রান তুলেন। তন্মধ্যে অ্যান্ডি ফ্লাওয়ারের সাথে ১১৩ রান তুলে দলকে পরাজয়বরণের হাত থেকে রক্ষা করেন। কিন্তু, তার ব্যাটিংয়ের মান ক্রমশঃ নিম্নমূখী হওয়ায় ও বোলিংয়ের মান তথৈবাচৈ হয়ে পড়ায় ২০০১-০২ মৌসুমে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ শেষে দল থেকে বাদ দেয়া হয়।

অবসর

২০০১-০২ মৌসুমের ঘরোয়া আসরে মিডল্যান্ডসের দিকে ধাবিত হন। ডগি মারিলিয়ার জিম্বাবুয়ের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করায় চলতি অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেন তিনি। এরপর ২০০২-০৩ মৌসুমে আনুষ্ঠানিকভাবে তাকে দলের অধিনায়ক হিসেবে মনোনীত করা হয়।

২০০২ সালে মুগাবে সরকারের ভূমি নীতির কবলে পড়ে তার পরিবার উৎখাতের শিকার হয়। রবার্ট মুগাবে সরকারের কোপানলে পড়ে তার পরিবারের খামার হাতছাড়া হয়ে যায়। ভবিষ্যৎ অনেকাংশে অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। তাসত্ত্বেও, তিনি জিম্বাবুয়েতে অবস্থান করতে থাকেন। ২০০৯-১০ মৌসুমে জিম্বাবুয়ে ক্রিকেটে কয়েকজন সাবেক খেলোয়াড়কে নিয়ে সচল করে তুলেন। পাশাপাশি ধারাভাষ্যকার ও ঘরোয়া পর্যায়ের ক্রিকেটে কোচিং কর্মের সাথে নিজেকে জড়িয়ে রাখেন।

তথ্যসূত্র

  1. "Players / Zimbabwe / ODI caps"Cricinfo। সংগ্রহের তারিখ ২৪ মার্চ ২০২০ 
  2. "Zimbabwe ODI Batting Averages"Cricinfo। সংগ্রহের তারিখ ২৪ মার্চ ২০২০ 
  3. "Zimbabwe ODI Bowling Averages"Cricinfo। সংগ্রহের তারিখ ২৪ মার্চ ২০২০ 

আরও দেখুন

বহিঃসংযোগ