মুঘল–মারাঠা যুদ্ধ
মুঘল-মারাঠা যু্দ্ধসমূহ মারাঠা সাম্রাজ্য ও মুঘল সাম্রাজ্য এর মধ্যে ১৬৮০ থেকে ১৭০৭ খ্রিষ্টাব্দে সংঘটিত হয়। শিবাজীর প্রতিষ্ঠিত মারাঠা অধিকৃত বীজাপুর অঞ্চলে মুঘল সম্রাট আওরঙ্গজেব এর আক্রমণে ১৬৮০ সালে দাক্ষিণাত্য মালভূমি যুদ্ধ শুরু হয়েছিল।
সম্ভাজীর অধীনে মারাঠাগণ (১৬৮১-১৬৮৯)
[সম্পাদনা]১৬৮১ সালের প্রথমার্ধে গুজরাত, মহারাষ্ট্র, কর্ণাটক ও মধ্যপ্রদেশ এর মারাঠা দুর্গ দখলের উদ্দেশ্যে প্রচুর মুঘল সৈন্য প্রেরণ করা হয়। সম্ভাজী মুঘল সম্রাটের বিদ্রোহী পুত্র সুলতান মুহম্মদ আকবরকে আশ্রয় দিলে ঔরঙ্গজেব এতে ক্রুদ্ধ হন। ১৬৮১ এর সেপ্টেম্বরে ঔরঙ্গজেব মেবার এর রাজপ্রাসাদ সংক্রান্ত দ্বন্দ্ব মিটিয়ে অপেক্ষাকৃত নতুর মারাঠা সাম্রাজ্য বিজয় করতে দক্ষিণে যাত্রা শুরু করেন। তিনি দাক্ষিণাত্য মালভূমিতে মুঘল কার্যালয় ঔরঙ্গাবাদ, মহারাষ্ট্র এসে পৌঁছান এবং এখানে রাজধানী স্থাপন করেন। মুঘল বাহিনীতে প্রায় পাঁচ লক্ষ সৈন্য ছিল। এটি ছিল সবদিক দিয়ে একটি অসম যুদ্ধ। ১৬৮১ সালের শেষে মুঘলরা রামসেজ দুর্গ অবরোধ করে নেয়। তবে মারাঠারা এই আক্রমণে প্রতিরোধ গড়ে তোলে। মারাঠা প্রতিরোধের কারণে মুঘলদের দুর্গটি দখল করতে সাত বছর সময় লাগে। ১৬৮১ এর ডিসেম্বরে সম্ভাজী মুরুদ জাঞ্জিরা আক্রমণ করেন, তবে প্রথম প্রয়াস ব্যর্থ হয়। একই সময় ঔরঙ্গজেবের এক সৈন্যাধ্যক্ষ হুসেন আলী খান উত্তর কঙ্কণ আক্রমণ করেন। সম্ভাজী তখন জাঞ্জিরা ছেড়ে হুসেন আলী খানকে আক্রমণ করেন এবং ধাওয়া দিয়ে আহমেদনগর পাঠিয়ে দেন। ঔরঙ্গজেব পর্তুগিজদের সঙ্গে গোয়াতে বণিক নৌকা রাখার একটি চুক্তি স্বাক্ষরের চেষ্টা করেন। তাহলে সমুদ্রপথে দাক্ষিণাত্যে রসদ সরবরাহের আরেকটি পথ সৃষ্টি হতো। সম্ভাজী এ সংবাদ পেয়ে যান এবং পর্তুগিজদের আক্রমণ করে গোয়া উপকূলে তাড়িয়ে দেন। আলভরের প্রতিনিধি পর্তুগিজদের প্রধান দপ্তরটি প্রতিরক্ষা করতে সফল হয়। এসময় বিশাল মুঘল সৈন্যবাহিনী দাক্ষিণাত্যের সীমানায় জড়ো হয়। দক্ষিণ ভারতে আসন্ন সংঘর্ষ তখন স্পষ্টরূপে প্রতীয়মান হয়েছিল।