বিষয়বস্তুতে চলুন

কার্বন ডাই অক্সাইড

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
(Carbon dioxide থেকে পুনর্নির্দেশিত)
কার্বন ডাই অক্সাইড
Structural formula of carbon dioxide with bond length
Ball-and-stick model of carbon dioxide
Ball-and-stick model of carbon dioxide
Space-filling model of carbon dioxide
Space-filling model of carbon dioxide
নামসমূহ
অন্যান্য নাম
Carbonic acid gas
Carbonic anhydride
Carbonic oxide
Carbon oxide
Carbon(IV) oxide
Dry ice (solid phase)
শনাক্তকারী
ত্রিমাত্রিক মডেল (জেমল)
থ্রিডিমেট
বেইলস্টেইন রেফারেন্স 1900390
সিএইচইবিআই
সিএইচইএমবিএল
কেমস্পাইডার
ইসিএইচএ ইনফোকার্ড ১০০.০০৪.২৭১
ইসি-নম্বর
  • 204-696-9
ই নম্বর E২৯০ (সংরক্ষকদ্রব্য)
মেলিন রেফারেন্স 989
কেইজিজি
এমইএসএইচ Carbon+dioxide
আরটিইসিএস নম্বর
  • FF6400000
ইউএনআইআই
ইউএন নম্বর 1013
  • InChI=1S/CO2/c2-1-3 YesY
    চাবি: CURLTUGMZLYLDI-UHFFFAOYSA-N YesY
  • InChI=1/CO2/c2-1-3
    চাবি: CURLTUGMZLYLDI-UHFFFAOYAO
বৈশিষ্ট্য
CO2
আণবিক ভর ৪৪.০১ g·mol−১
বর্ণ Colorless gas
গন্ধ Odorless
ঘনত্ব 1562 kg/m3 (solid at 1 atm and −78.5 °C)
770 kg/m3 (liquid at 56 atm and 20 °C)
1.977 kg/m3 (gas at 1 atm and 0 °C)
গলনাঙ্ক −৭৮.৫ °সে; −১০৯.২ °ফা; ১৯৪.৭ K
স্ফুটনাঙ্ক −৫৬.৬ °সে; −৬৯.৮ °ফা; ২১৬.৬ K
1.45 g/L at 25 °C, 100 kPa
বাষ্প চাপ 5.73 MPa (20 °C)
অম্লতা (pKa) 6.35, 10.33
প্রতিসরাঙ্ক (nD) 1.1120
সান্দ্রতা 0.07 cP at −78.5 °C
ডায়াপল মুহূর্ত 0 D
গঠন
স্ফটিক গঠন trigonal
আণবিক আকৃতি linear
তাপ রসায়নবিদ্যা
তাপ ধারকত্ব, C 37.135 J/K mol
স্ট্যন্ডার্ড মোলার
এন্ট্রোফি
এস২৯৮
214 J·mol−1·K−1
গঠনে প্রমান এনথ্যাল্পির পরিবর্তন ΔfHo২৯৮ −393.5 kJ·mol−1
ঝুঁকি প্রবণতা
এনএফপিএ ৭০৪
সম্পর্কিত যৌগ
Carbon disulfide
Carbon diselenide
Silicon dioxide
Germanium dioxide
Tin dioxide
Lead dioxide
সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করা ছাড়া, পদার্থসমূহের সকল তথ্য-উপাত্তসমূহ তাদের প্রমাণ অবস্থা (২৫ °সে (৭৭ °ফা), ১০০ kPa) অনুসারে দেওয়া হয়েছে।
☒না যাচাই করুন (এটি কি YesY☒না ?)
তথ্যছক তথ্যসূত্র

কার্বন ডাই অক্সাইড (রাসায়নিক সংকেত CO2) একটি প্রাকৃতিক রাসায়নিক যৌগ যা দুইটি অক্সিজেন পরমাণু ও একটি কার্বন পরমাণু দিয়ে গঠিত এবং প্রতিটি অক্সিজেন পরমাণু একটি কার্বন পরমাণুর সাথে দ্বি-বন্ধন দ্বারা যুক্ত থাকে। এটা আদর্শ তাপমাত্রা ও চাপে গ্যাসীয় অবস্থায় বিরাজ করে এবং এই অবস্থায় পৃথিবীর বায়ুমন্ডলে বিদ্যমান যেখানে ট্রেস গ্যাস হিসাবে এর ঘনত্ব ০.০৩৯%।

কার্বন ডাই অক্সাইড কে আমরা মূলত দুটি বিশেষ ধর্মের ভাগ করতে পারি যথা-

১. কার্বন ডাই অক্সাইড এর ভৌত ধর্ম

২. কার্বন ডাই অক্সাইড এর রাসায়নিক ধর্ম

১.কার্বন ডাই অক্সাইডের ভৌত ধর্ম:

ক) কার্বন-ডাই-অক্সাইড বর্ণহীন, গন্ধহীন, সামান্য অম্ল স্বাদযুক্ত গ্যাস।

খ) এই গ্যাস বাতাসের চেয়ে প্রায় দেড় গুণ ভারী।

গ) CO2 জলে দ্রাব্য– তাপ প্রয়োগে দ্রাব্যতা বাড়ে।

২. কার্বন ডাই অক্সাইডের রাসায়নিক ধর্ম:

ক) দহন শীলতা:

কার্বন-ডাই-অক্সাইড নিজের দাহ্য নয় এবং দহনে সাহায্যও করে না।

খ) অ্যাসিড ধর্ম:

কার্বন ডাই অক্সাইড একটি আম্লিক অক্সাইড। তাই কার্বন-ডাই-অক্সাইড জলে দ্রবীভূত হয়ে এসিড উৎপন্ন করে। এবং ক্ষার বা ক্ষারকের সঙ্গে বিক্রিয়া করে লবণ এবং জল উৎপন্ন করে।

• জলের সঙ্গে বিক্রিয়া: জলীয় দ্রবণে কার্বন-ডাই-অক্সাইড কার্বনিক এসিড উৎপন্ন করে। সেই জন্য CO2 এর জলীয় দ্রবণ নীল লিটমাসকে লাল করে। CO2+H2O=H2CO3

• ক্ষারক বা ক্ষারের সঙ্গে:

CO2 একটি আম্লিক অক্সাইড, সেই জন্য ক্ষার বা ক্ষারকের সঙ্গে বিক্রিয়া করে কার্বনেট লবণ উৎপন্ন করে। সোডিয়াম হাইড্রোক্সাইড দ্রবণের মধ্যে দিয়ে অতিক্রম করালে সোডিয়াম কার্বনেট লবণ উৎপন্ন হয়। 2NaOH+CO2=Na2CO3+H2O

• চুন জলের মধ্যে দিয়ে অতিক্রম করালে প্রথমে অদ্রাব্য ক্যালসিয়াম কার্বনেট উৎপন্ন হয় ফলে স্বচ্ছ চুনজল ঘোলা হয়ে যায়। Ca(OH)2+CO2=Na2CO3+H2O

অতিরিক্ত কার্বন ডাই-অক্সাইড অতিক্রম করালে, অদ্রাব্য ক্যালসিয়াম কার্বনেট, দ্রাব্য ক্যালসিয়াম বাই কার্বনেটে পরিণত হয়। সেই জন্য ঘোলা চুনজল আবার স্বচ্ছ হয়ে যায়। CaCO2+H2O+CO2=Ca(HCO3)2

ঘ) জারণ ক্ষমতা:

•লোহিত তপ্ত কার্বন,আয়রন বা জিংক এর উপর দিয়ে কার্বন-ডাই-অক্সাইড চালনা করলে,ওই গুলি জারিত হয় এবং CO2 নিজে বিজারিত হয় কার্বন-মনোক্সাইডে পরিণত হয়। C+CO2=2CO , Zn+CO2=ZnO+CO

• জ্বলন্ত ম্যাগনেসিয়ামকে কার্বন-ডাই-অক্সাইড পূর্ণ গ্যাসজারের মধ্যে প্রবেশ করালে CO2 বিজারিত হয়ে কার্বন উৎপন্ন করে। এই বিক্রিয়া প্রমাণ করে যে, কার্বন-ডাই-অক্সাইডে কার্বন আছে। 2Mg+CO2=2MgO+C

•কার্বন-ডাই-অক্সাইড অপরকে জারিত করে নিজে বিজারিত হয় বলে এর বিজারণ ক্ষমতা নেই।

ঙ) শুষ্ক বরফ:

31°C উষ্ণতার নিচে প্রায় 60 বায়ুমণ্ডলীয় চাপে CO2 গ্যাসকে তরলে পরিণত করে ইস্পাতের সিলিন্ডারে ভরা হয় এখন সিলিন্ডারের মুখে সূক্ষ ছিদ্র দিয়ে এই তরল CO2 কে বাষ্পীভূত হতে দিলে তরল CO2 এর উষ্ণতা ক্রমশঃ কমতে থাকে। -78•5°C উষ্ণতায় তরল CO2 কঠিন এ পরিণত হয় একেই শুষ্ক বরফ বলে।

        শুষ্ক বরফকে সরাসরি গ্যাসীয় CO2 তে পরিণত হয় বলে এতে কোনো ভেজা ভাব থাকে না।

চ) গাছের পাতার ক্লোরোফিল,জল এবং CO2 সূর্যের কিরণে পরস্পর বিক্রিয়া করে গাছের খাবার কার্বোহাইড্রেট উৎপন্ন করে। এই প্রক্রিয়াকে সালোকসংশ্লেষণ বলে।

শনাক্তকরণ

[সম্পাদনা]

স্বচ্ছ চুন জলের উপর দিয়ে কার্বন-ডাই-অক্সাইড গ্যাস চালনা করলে প্রথমে ঘোলা হয়ে যায়। পরে অতিরিক্ত কার্বন ডাই অক্সাইড চালনা করলে আবার স্বচ্ছ হয়ে যায়। কিন্তু আম্লিক KMnO4 দ্রবণের মধ্যে দিয়ে চালনা করলে বেগুনি বর্ণ বর্ণহীন হয় না।

ব্যবহার

[সম্পাদনা]

কার্বন ডাই অক্সাইড উষ্ণায়নের সাথে সাথে বিভিন্ন ক্ষেত্রে উপকারেও ব্যবহৃত হয়। যেমন-

ক) উদ্ভিদজগতের বৃদ্ধি ও স্থিতি কার্বন ডাই অক্সাইডের উপর নির্ভর করে

খ) মাছ, মাংস, সবজি প্রভৃতি অনেকদিন ধরে সতেজ রাখার জন্য হিমায়ক রূপে ব্যবহার করা হয়।

গ) বাতান্বিত জল প্রস্তুতিতে এবং আগুন নেভানোর কাজে এই গ্যাসের প্রয়োজন হয়।

ঘ) খাবার সোডা, কাপড় কাচার সোডা, ইউরিয়া প্রভৃতি প্রস্তুতিতে প্রচুর কার্বন ডাই অক্সাইড ব্যবহৃত হয়।

এগুলোই গুরুত্বপূর্ণ ভাবে কার্বন ডাই অক্সাইড এর ব্যবহার হিসেবে বলা যায়।

পরীক্ষাগারে কার্বন ডাই অক্সাইডএর প্রস্তুতি:

প্রয়োজনীয় রাসায়নিক দ্রব্য:

১ মার্বেল বা ক্যালসিয়াম কার্বনেট

২. লঘু হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিড

পরীক্ষাগারে কার্বন-ডাই-অক্সাইড গ্যাস তৈরির নীতি:

সাধারণ তাপমাত্রায় মার্বেল অর্থাৎ ক্যালসিয়াম কার্বনেট এর সঙ্গে লঘু সালফিউরিক এসিডে মিশিয়ে পরীক্ষাগারে কার্বন ডাই অক্সাইড গ্যাস উৎপন্ন করা হয়। CaCO3+2HCl=CaCl2+H2O+CO2

পরীক্ষাগারে CO2 তৈরির পদ্ধতি

[সম্পাদনা]

ক) দীর্ঘ নল ফানেল এবং নির্গম নল যুক্ত একটি উলফ বোতলের মধ্যে কিছু মার্বেলের টুকরো নিয়ে জল ঢেলে ডুবিয়ে রাখা হলো।

খ) দীর্ঘ নাল ফানেলের শেষপ্রান্তটি যেন জলের মধ্যে ডুবে থাকে।

গ) নির্গম নল এর শেষ প্রান্তটি একটি খাড়াভাবে রাখা শুষ্ক গ্যাস জারের মধ্যে প্রবেশ করানো থাকে।

ঘ) এইবার দীর্ঘ নল ফানেলের মধ্যে দিয়ে 1:1 লঘু সালফিউরিক অ্যাসিড ঢালা হলো। অ্যাসিড মার্বেলের সংস্পর্শে এলে বুদবুদ আকারে কার্বন-ডাই-অক্সাইড গ্যাস নির্গত হতে শুরু করে। এই গ্যাস নির্গমন অল দিয়ে বেরিয়ে আসে।

CO2 সংগ্রহ

[সম্পাদনা]

কার্বন-ডাই-অক্সাইড গ্যাস বাতাসের চেয়ে দেড় গুণ ভারী, তাই বাতাস এর উর্দ্ধ অপসারণ দ্বারা গ্যাস জারের মধ্যে জমা হয়।

CO2 এর বিশুদ্ধকরণ

[সম্পাদনা]

এইভাবে উৎপন্ন কার্বন ডাই অক্সাইড গ্যাসের মধ্যে হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিড বাষ্প এবং জলীয় বাষ্প মেশানো থাকে।

ক) সোডিয়াম বাই কার্বনেট দ্রবণের মধ্যে দিয়ে চালনা করে গ্যাসটিকে হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিড মুক্ত করা হয়।

খ) গাঢ় সালফিউরিক এসিডের মধ্যে দিয়ে চালনা করে জলীয়বাষ্প মুক্ত করে শুষ্ক পারদ এর ওপর সংগ্রহ করা হয়।

কার্বন চক্রে গাছপালা,জলজ উদ্ভিজ্জ এবং সায়ানোব্যাকটেরিয়া সৌরশক্তি দ্বারা সালোকসংশ্লেষণের মাধ্যমে কার্বন ডাই অক্সাইড ও পানি থেকে কার্বোহাইড্রেড উৎপন্ন করে যার সাথে সাথে বর্জ্য পদার্থ হিসাবে অক্সিজেনও উৎপন্ন করে।[] কিন্তু,সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়া অন্ধকারে সংঘঠিত হয় না এবং রাতে কিছু পরিমাণে কার্বন ডাই অক্সাইড উৎপন্ন হয় উদ্ভিদের শ্বসন ক্রিয়ার জন্য।[] কার্বন ডাইঅক্সাইড কয়লা বা হাইড্রোকার্বন এর দহন দ্বারা উৎপাদিত হয়।এছাড়াও চিনি থেকে গাঁজন প্রক্রিয়ায় বিয়ার এবং ওয়াইন প্রস্তুতিতে এবং সব জীবন্ত প্রাণীর শ্বসন দ্বারা কার্বন ডাইঅক্সাইড উৎপন্ন হয়। এটা মানুষ এবং অন্যান্য জীবজন্তু শ্বাস নেওয়ার সময় ত্যাগ করে।এটা আগ্নেয়গিরি,উষ্ণপ্রসবণ এবং ঐসব জায়গা যেখানে ভূপৃষ্ট পাতলা কার্বোনেট শিলা ক্ষয়ের ফলে।কার্বন ডাই অক্সাইড এছাড়াও সমুদ্র তলদেশে,হ্রদে এবং তেল এবং গ্যাসের সাথে মিশ্রিত অবস্থায় থাকে।[]

প্রভাব

[সম্পাদনা]

কার্বন ডাই অক্সাইডের পরিবেশগত প্রভাব উল্লেখযোগ্য বিষয়। কার্বন ডাই অক্সাইড একটি গুরুত্বপূর্ণ গ্রিনহাউজ গ্যাস যা ভূপৃষ্ঠের বিকৃর্ণ তাপ শোষণ করে।বায়ুমন্ডলীয় কার্বন ডাই অক্সাইড পৃথিবীতে জীবনের একটি প্রাথমিক উৎস এবং এর ঘনত্ব পৃথিবী সৃষ্টির পর থেকে সালোকসংশ্লেষণ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়।শিল্প বিপ্লবের পর থেকে কার্বন ভিত্তিক জ্বালানি দহনের ফলে বায়ুমন্ডলে কার্বন ডাই অক্সাইডের ঘনত্ব দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির সাথে সাথে জীব জগতের জলবায়ুর পরিবর্তন ঘটছে।এটি সমুদ্রকে অম্লীয়করণের প্রধান উৎস যেহেতু এটি পানিতে কার্বনিক অ্যাসিড রুপে দ্রবীভূত হয় [] যা একটি দুর্বল এসিড এবং এটা পানিতে সম্পূর্ণরুপে আয়নিত হয় না।

CO
2
+ H
2
O
is in equilibrium with H
2
CO
3

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. Donald G. Kaufman; Cecilia M. Franz (১৯৯৬)। জীবমণ্ডল 2000: আমাদের বিশ্ব পরিবেশ রক্ষা। Kendall/Hunt Pub. Co.। আইএসবিএন 978-0-7872-0460-0। সংগ্রহের তারিখ ১১ অক্টোবর ২০১১ 
  2. Food Factories. www.legacyproject.org. Retrieved on 2011-10-10.
  3. "সাধারণ বৈশিষ্ট্য এবং কার্বন ডাই অক্সাইড এর ব্যবহার, ডাঙার দিকে কার্বন ক্যাপচার ইনস্টলেশন ও ডাঙার দিকে পাইপলাইন জন্য গুড প্ল্যান্ট ডিজাইন ও অপারেশন"। Energy Institute। ২০১২-০৬-২৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১২-০৩-১৪ 
  4. ন্যাশনাল রিসার্চ কাউন্সিল।"সারসংক্ষেপ।" মহাসমুদ্রের অম্লতা বৃদ্ধি: মহাসাগরের পরিবর্তন পূরণের চ্যালেঞ্জ একটি জাতীয় কৌশল. ওয়াশিংটন,ডিসি: The National Academies Press, 2010. 1. Print.