আমেরিকান হিস্ট্রি এক্স
আমেরিকান হিস্ট্রি এক্স | |
---|---|
পরিচালক | টনি কায়ে |
প্রযোজক | জন মোরিসে |
রচয়িতা | ডেভিড ম্যাকেনা |
শ্রেষ্ঠাংশে | |
সুরকার | অ্যান ডাডলে |
চিত্রগ্রাহক | টনি কায়ে |
সম্পাদক | |
পরিবেশক | নিউ লাইন সিনেমা |
মুক্তি |
|
স্থিতিকাল | ১১৯ মিনিট |
দেশ | যুক্তরাষ্ট্র |
ভাষা | ইংরেজি |
নির্মাণব্যয় | $২০ মিলিয়ন[১] |
আয় | $২৩.৯ মিলিয়ন[১] |
আমেরিকান হিস্ট্রি এক্স ১৯৯৮ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত একটি অপরাধ নাট্য চলচ্চিত্র। টনি কায়ে ছবিটির পরিচালক ও ডেভিড ম্যাকেনা চিত্রনাট্যকার। ছবির শ্রেষ্ঠাংশে রয়েছেন এডওয়ার্ড নর্টন ও এডওয়ার্ড ফার্লং। তারা লস অ্যাঞ্জেলেস হতে আগত দুই ভাই,যারা শ্বেতাঙ্গ শ্রেষ্ঠত্ববাদী ও নব্য নাজি আদর্শে দীক্ষিত। স্বেচ্ছায় নরহত্যার জন্য বড় ভাই (নর্টন) তিন বছর কারাদণ্ডে দণ্ডিত হয়। এসময় তার পুনর্বাসন হয় এবং পুনর্বাসিত বড় ভাই ছোট ভাইকেও সুপথে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করে। সহযোগী চরিত্রে রয়েছেন ফাইরুজা বাল্ক,স্ট্যাসি কিচ,এলিয়ট গোল্ড,অ্যাভেরি ব্রুকস,ইথান সুপলে ও বেভারলি ডি অ্যাঞ্জেলো।
ম্যাকেনা সান ডিয়েগো শহরে তার নিজের বেড়ে ওঠার উপর ভিত্তি করে ছবিটির চিত্রনাট্য রচনা করেন। তারপর তিনি নিউ লাইন সিনেমার কাছে চিত্রনাট্য বিক্রি করে দেন। আমেরিকান হিস্ট্রি এক্স কায়ে পরিচালিত প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য ছবি। ১৯৯৭ সালে ছবিটির চিত্রায়ণ হয় এবং এটি নির্মাণে ২০ মিলিয়ন ডলার ব্যয়িত হয়। ছবিটির চূড়ান্ত সংস্করণের দৈর্ঘ্য কায়ের ইচ্ছার বিরুদ্ধে বাড়ানো হয়েছিল,যার ফলে তিনি জনসমক্ষে ছবিটির নিন্দা করেন। কায়ের কর্মজীবনকে এই নিন্দা নেতিবাচকভাবে প্রভাবিত করে।
যুক্তরাষ্ট্রে ১৯৯৮ সালের ৩০ অক্টোবর ছবিটি মুক্তি পায়। নিউ লাইন সিনেমা এর পরিবেশক হিসেবেও ভূমিকা রাখে। বিশ্বজুড়ে মাত্র ২৪ মিলিয়ন ডলার আয় করলেও সমালোচকরা ছবিটির প্রশংসা করেন। বিশেষ করে নর্টন তার বাস্তবসম্মত অভিনয়ের জন্য নন্দিত হয়েছিলেন। যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য দেশে শিক্ষামূলক উদ্দেশ্যে ছবিটি দেখানো হয়ে থাকে। এটি অবলম্বনে জিমোঁ উন্সু অভিনীত ও কায়ে পরিচালিত ছবি আফ্রিকান হিস্টরি ওয়াই এর কাজ চলছে। [২]
কাহিনী
[সম্পাদনা]উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র ড্যানি ভাইনইয়ার্ডের সঙ্গে তার ইহুদি ধর্মাবলম্বী শিক্ষক মাররের বিরোধ উপস্থিত হয়,কেননা ড্যানি মাইন কাম্ফের উপর নাগরিক অধিকারবিষয়ক প্রবন্ধ রচনা করার সিদ্ধান্ত নেয়। আফ্রিকান-আমেরিকান অধ্যক্ষ ড.বব সুইনি ড্যানিকে বর্তমান ঘটনাপ্রবাহের আলোকে ইতিহাস অধ্যয়নের নির্দেশনা দেন, নাহলে সে বহিষ্কৃত হয়ে যেতে পারে। ড্যানি তার বড় ভাই, সুইনির প্রাক্তন ছাত্র ও নব্য-নাজি ডেরেকের উপর গবেষণাপত্র রচনার সিদ্ধান্ত নেয়। বিদ্যালয়ের শৌচালয়ে ড্যানি লক্ষ্য করে, তিনজন আফ্রিকান-আমেরিকান ছাত্র একজন শ্বেতাঙ্গ ছাত্রকে উত্ত্যক্ত করছে। সে তাদের নেতার মুখে সিগারেটের ধোঁয়া ছেড়ে দেয়। এদিকে ডেরেকের মুক্তির বিষয়ে সুইনি পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করেন।
কয়েক বছর পূর্বে,ড্যানি ও ডেরেকের অগ্নিনির্বাপক বাবা আফ্রিকান-আমেরিকান মাদক বিক্রেতাদের বাড়িতে আগুন নেভাতে গিয়ে তাদের গুলিতে নিহত হন। তার মৃত্যুর পর টেলিভিশনে ডেরেক বর্ণবিদ্বেষী বক্তৃতা দেয়। কুখ্যাত বর্ণবাদী ক্যামেরন আলেকজান্ডার ডেরেকের গুরু হন। ভেনিস বিচ-এ তারা ডিসাইপলস অব ক্রাইস্ট (ডি.ও.সি) নামক একটি বর্ণবাদী সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেন। সুনিপুণ বাস্কেটবল খেলোয়াড় ডেরেক আফ্রো-আমেরিকান গ্যাং ক্রিপসের সদস্যদের পরাজিত করে স্থানীয় বাস্কেটবল কোর্টগুলোর নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয়। এছাড়াও সে অবৈধ মেক্সিকান অভিবাসীদের নিয়োগ দেওয়া একটি সুপারমার্কেটেও হামলা চালায়।
ডেরেকের মা ডোরিস তার বন্ধু মারেকেও আমন্ত্রণ জানায়। রডনি কিং ও ১৯৯২ সালের লস অ্যাঞ্জেলেস দাঙ্গা নিয়ে পরিবেশ অতি দ্রুত উত্তপ্ত হয়ে পড়ে। ঐ রাতে ডেরেক যে আফ্রিকান-আমেরিকানদের বাস্কেটবল খেলায় হারিয়েছিল, তারা তার ট্রাক চুরির চেষ্টা করে। ডেরেক একজনকে গুলি করে মারে আর অপর একজনকে ফুটপাতের কিনারায় পা দিয়ে চেপে ধরে। ক্যালিফোর্নিয়া পুরুষ সংশোধনাগারে সে তিন বছরের কারাদণ্ড ভোগ করে।
জেলে ডেরেক আরিয়ান ব্রাদারহুডে যোগ দেয়। একসময় সে বুঝতে পারে,শ্বেতাঙ্গ শ্রেষ্ঠত্ববাদীরা নিজেদের স্বার্থে আদর্শকে ব্যবহার করছে। তাই সে তাদের এড়িয়ে চলে। তারা স্নানের সময় ডেরেককে ধর্ষণ করে। হাসপাতালে সুইনি ডেরেকের সাথে দেখা করেন,এবং তাকে বলেন-ড্যানি ডি.ও.সি.তে যোগদান করেছে।
ড্যানির শরীরে নাজি ট্যাটু দেখে ডেরেক তাকে সুপথে আনার চেষ্টা করে। এদিকে ডেরেকেরই সবচেয়ে প্রিয় বন্ধু সেথ ড্যানিকে বর্ণবাদী নেতা হিসেবে গড়ে তুলছে। নব্য-নাজি পার্টিতে ডেরেক ক্যামেরনের সমালোচনা করলে সেথ, ডেরেকের সাবেক বান্ধবী স্টেসিসহ বাকিরা তার উপর হামলে পড়ে। কিন্তু ডেরেক সফলভাবে পালিয়ে যায়।
ডেরেক ড্যানিকে কারাগারে তার দুঃসহ অভিজ্ঞতার কথা বর্ণনা করলে ড্যানির হৃদয়ে পরিবর্তন আসে এবং সে নাজি মতবাদ পরিত্যাগ করে।
পরদিন ডেরেক ড্যানিকে স্কুলে পৌঁছে দিয়ে আসে। আফ্রিকান-আমেরিকান নেতা,যার মুখে ড্যানি আগের দিন সিগারেটের ধোঁয়া ছেড়েছিল,ড্যানিকে গুলি করে হত্যা করে। খবর পেয়ে ডেরেক ছুটে আসে। কান্নায় তার বুক ফেটে যায়। তার অতীত কার্যকলাপই ড্যানিকে একসময় শ্বেতাঙ্গ মতবাদে উদ্বুদ্ধ করে এবং যার দরুন সে নিহত হয়েছে- এ কথা ডেরেক মর্মে মর্মে উপলব্ধি করে।
চরিত্রায়ণে
[সম্পাদনা]- এডওয়ার্ড নর্টন (ডেরেক ভাইনইয়ার্ড)
- এডওয়ার্ড ফার্লং(ড্যানি ভাইনইয়ার্ড
- বেভারলি ডি অ্যাঞ্জেলো(ডোরিস ভাইনইয়ার্ড)
- জেনিফার লিয়েন(ড্যাভিনা ভাইনইয়ার্ড)
- ইথান সুপলি(সেথ রায়ান)
- ফাইরুজা বাল্ক(স্টেসি)
- অ্যাভেরি ব্রুকস(ড.বব সুইনি)
- এলিয়ট গোল্ড (মারে)
- স্টেসি কিচ(ক্যামেরন আলেকজান্ডার)
- উইলিয়াম রাস(ডেনিস ভাইনইয়ার্ড)
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ ক খ "American History X (1998)"। Box Office Mojo। অক্টোবর ২১, ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ আগস্ট ৭, ২০১৩।
- ↑ https://deadline.com/2020/09/djimon-hounsou-african-history-y-movie-tony-kaye-1234583658/
বহিঃসংযোগ
[সম্পাদনা]- ইন্টারনেট মুভি ডেটাবেজে আমেরিকান হিস্ট্রি এক্স (ইংরেজি)
- অলমুভিতে আমেরিকান হিস্ট্রি এক্স (ইংরেজি)
- বক্স অফিস মোজোতে আমেরিকান হিস্ট্রি এক্স (ইংরেজি)
- ইংরেজি ভাষার চলচ্চিত্র
- ১৯৯৮-এর চলচ্চিত্র
- ১৯৯৮-এর সৃষ্টিকর্ম
- অপরাধ নাট্য চলচ্চিত্র
- ১৯৯০-এর দশকের কারাগার চলচ্চিত্র
- ফ্যাসিবাদী বিরোধী চলচ্চিত্র
- হত্যাকারী সম্পর্কে চলচ্চিত্র
- বর্ণবাদ সম্পর্কে চলচ্চিত্র
- মার্কিন অপরাধ নাট্য চলচ্চিত্র
- লস অ্যাঞ্জেলেসের পটভূমিতে চলচ্চিত্র
- কল্পকাহিনীতে গণধর্ষণ
- চলচ্চিত্রে যৌন সম্পর্কিত বিতর্ক
- মার্কিন স্বাধীন চলচ্চিত্র
- ১৯৯০-এর দশকের ইংরেজি ভাষার চলচ্চিত্র
- কর্মহীন পরিবার সম্পর্কে চলচ্চিত্র
- হত্যা সম্পর্কে চলচ্চিত্র
- ১৯৯০-এর দশকের পটভূমিতে চলচ্চিত্র
- ১৯৯৫-এর পটভূমিতে চলচ্চিত্র
- ১৯৯৮-এর পটভূমিতে চলচ্চিত্র
- লস অ্যাঞ্জেলেসে ধারণকৃত চলচ্চিত্র
- হুড চলচ্চিত্র
- মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে চলচ্চিত্র বিতর্ক
- ১৯৯০-এর দশকের মার্কিন চলচ্চিত্র