বাভারিয়ার ইতিহাস
বাভারিয়ার ইতিহাস শুরু হয় ষষ্ঠ শতাব্দীতে পবিত্র রোমান সাম্রাজ্যের এই অঞ্চলে প্রারম্ভিক বসতি স্থাপন ও ডিউক শাসিত অঞ্চল হিসেবে গঠন এবং একে স্বাধীন রাজ্যের মর্যাদা দেওয়ার মধ্য দিয়ে। এরপর একে জার্মানির কেন্দ্রঘোষিত প্রজাতন্ত্রের বুন্ডেসলান্ড রাজ্য হিসেবে উত্তীর্ণ করা হয়। খ্রিষ্টপূর্ব ১ম শতাব্দীতে বোই-সহ কেল্টীয় জাতি এখানে বসতি স্থাপন করে এবং পরে রোমান সাম্রাজ্যের জয় ও অধিগ্রহণের পর এটি রায়েতিয়া ও নোরিকুম প্রদেশে পরিণত হয়েছিল।
প্রারম্ভিক বসতি স্থাপন ও রোমান রায়েতিয়া
[সম্পাদনা]বাভারিয়ায় পুরা প্রস্তর যুগীয় অসংখ্য আবিষ্কারের সন্ধান পাওয়া যায়।
লিখিত উৎস অনুসারে কেল্টীয়রা এই অঞ্চলের প্রাচীনতম বসবাসকারী। তারা লা তেন সংস্কৃতির বাহক ছিলেন। খ্রিষ্টযুগ শুরুর কিছু পূর্ব রোমানরা তাদের বশীভূত করে সেখানে উপনিবেশ স্থাপন করে এবং তাদের ভূমিকে রায়েতিয়া ও নোরিকুম প্রদেশে সংযুক্ত করে। এই অঞ্চলে রোমান প্রশাসনের কেন্দ্র ছিল কাস্ত্রা অঞ্চল (বর্তমান রেজেন্সবুর্গ)।
অভিবাসন ও প্রারম্ভিক মধ্যযুগ
[সম্পাদনা]পঞ্চম ও ষষ্ঠ শতাব্দীর প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন থেকে আলামান্নি, লম্বার্ড, টুরিঞ্জিয়ান, গথ, বোহিমিয়ান স্লাভ ও স্থানীয় রোমান জনগণসহ কয়েকটি অঞ্চল ও জাতির উপর এই অঞ্চলের সামাজিক ও সাংস্কৃতিক প্রভাবের প্রমাণ পাওয়া যায়।[১]
১৯৯০ সালে ভোল্ফ্রাম ও পোলের গবেষণা বাভারীয়দের নির্দিষ্ট ভৌগোলিক উৎপত্তির সন্ধান থেকে সরে দাঁড়ায়। বর্তমানে ধারণা করা হয় মানবজাতির বিবর্তনের প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়েই এই জাতিগোষ্ঠী গঠিত হয়েছিল, যার মধ্য দিয়ে রাজনৈতিক ও সামাজিক চাপের ফলে একটি জাতিগোষ্ঠীর পরিচয় সৃষ্টির প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়।
বাভারিয়ার ডিউক শাসিত এলাকা
[সম্পাদনা]বাভারীয়রা শীঘ্রই কোন প্রকার মারাত্মক দ্বন্দ্বে লিপ্ত না হয়েই ফ্রাঙ্ক শাসনের অধীনে চলে আসে। ফ্রাঙ্করা এই সীমান্তবর্তী এলাকাকে অ্যাভার ও স্লাভসহ পূর্বের জনগণের সাথে বাফার অঞ্চল ও সেনাবাহিনীর জনবলের উৎস হিসেবে গণ্য করত। ৫৫০ খ্রিষ্টাব্দের দিকে তারা এই অঞ্চলকে ডিউক শাসনের অধীনে দিয়ে দেয়। ডিউকরা ফ্রাঙ্কিশ রাজার আঞ্চলিক গভর্নর হিসেবে কাজ করে। প্রথম ডিউক ছিলেন ক্ষমতাধর আগিলোলফিং পরিবারের প্রথম গ্যারিবল্ড।[২] এই ধারাবাহিকতায় আগিলোলফিং ডিউকগণ ৭৮৮ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত এই অঞ্চলে শাসন করেন।
বাভারিয়া রাজ্য
[সম্পাদনা]১৮১৪ সালে প্যারিস শান্তি চুক্তির পরপরই অস্ট্রিয়ার উত্তরাঞ্চলীয় টাইরল ও ফোরার্লবার্গের নিকট বাভারিয়া ছেড়ে দেওয়া হয়। ভিয়েনা কংগ্রেসের পর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে জালৎস্বুর্গ, ইনভিয়ের্টেল ও হাউসরুকের এই বৃহৎ অংশে যুক্ত হবে। এর পরিবর্তে ভুর্ৎসবুর্গ ও আখাফেনবুর্গের পাশে, রাইন নদীর বাম তীরবর্তী অঞ্চলে, হেস-ডার্মস্টাটের নির্দিষ্ট কয়েকটি জেলায় ও প্রাক্তন ফুলডায় এই অঞ্চল গঠিত হবে। কিন্তু ফ্রান্সের পতনের পর অস্ট্রিয়ার বিরুদ্ধে পুরনো ভীতি ও প্রতিহিংষা পুনরুদ্দ্যমে পুনরুজ্জীবিত হয়। ১৮১৬ সালের ১৬ই এপ্রিল মিউনিখ চুক্তিতে রাইন নদীর ডান তীরবর্তী অঞ্চলেও বাভারিয়ার বিস্তারের স্বীকৃতি লাভ করার সিদ্ধান্ত হয়। এই সিদ্ধান্ত উন্মুক্ত রয়ে যায় এবং দুই শক্তিধর দেশের মধ্যে দ্বন্দ্বের আভাস বৃদ্ধি পেতে থাকে। গ্র্যান্ড অ্যালায়েন্স কর্তৃপক্ষের কারণের এই যুদ্ধ বাতিল হয়। ১৮১৮ সালে এইক্স কংগ্রেসে হখবার্গ সীমান্তের পক্ষে বাডেন হস্তান্তর করা হয়।
আধুনিক যুগ
[সম্পাদনা]১৯১৮ সালের নভেম্বর মাসে অভ্যুত্থানের সময় বাভারিয়ায় প্রজাতন্ত্রী সংগঠনগুলো অভিজাতদের স্থলাভিষিক্ত হয়। অস্থায়ী জাতীয় কাউন্সিল মন্ত্রী-সভাপতি কুর্ট আইসনার ১৯১৮ সালের ৭ই নভেম্বর বাভারিয়াকে মুক্ত রাজ্য হিসেবে ঘোষণা দেয়। ১৯১৯ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারি আইসনার গুপ্তহত্যার স্বীকার হলে কমিউনিস্ট বিপ্লব শুরু হয় এবং ১৯১৯ সালের ৬ই এপ্রিল বাভারিয়ান সোশ্যালিস্ট রিপাবলিক স্বল্পকাল শাসন করে। জার্মান সেনাবাহিনী ও ফ্রেইকর্পসের সহিংস দমন-পীড়নের পর ১৯১৯ সালের ৩রা মে বাভারিয়ান সোশ্যালিস্ট রিপাবলিকের পতন হয়। ১৯১৯ সালের ১৪ই আগস্ট বামবার্গ সংবিধান পাশ হলে ভাইমার প্রজাতন্ত্রে বাভারিয়া মুক্ত রাজ্যের সৃষ্টি হয়।
আরও দেখুন
[সম্পাদনা]তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ শুল্ট্জ, হারবার্ট (২০০০)। The Germanic Realms in Pre-Carolingian Central Europe, 400-750। নিউ ইয়র্ক: পিটার ল্যাং পাবলিশিং। পৃষ্ঠা ২৮৪, ২৮৭।
- ↑ শুলৎজ ২০০০, পৃ. ২৯২।
বহিঃসংযোগ
[সম্পাদনা]- Map of Bavaria 1789
- Bavarian Studies in History and Culture
- Haus der Bayerischen Geschichte ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১৩ আগস্ট ২০১৮ তারিখে, History of the Bavarian Parliament - (Geschichte des Bayerischen Parliaments 1819 - 2003, in German)