মিশরীয় প্রিমিয়ার লিগ
সংগঠক | মিশরীয় ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন |
---|---|
স্থাপিত | ২২ অক্টোবর ১৯৪৮ |
দেশ | মিশর |
কনফেডারেশন | ক্যাফ |
দলের সংখ্যা | ১৮ |
লিগের স্তর | ১ |
অবনমিত | মিশরীয় দ্বিতীয় বিভাগ |
ঘরোয়া কাপ | মিশর কাপ ইএফএ লিগ কাপ মিশরীয় সুপার কাপ |
আন্তর্জাতিক কাপ | |
বর্তমান চ্যাম্পিয়ন | জামালেক (১২তম) (২০২১–২২) |
সর্বাধিক শিরোপা | আল আহলি (৪২) |
সর্বাধিক ম্যাচ | মুহাম্মদ আব্দুল মুনসিফ (৪৫৮) |
শীর্ষ গোলদাতা | হাসান আল শাযলি (১৭৬) |
সম্প্রচারক | সম্প্রচারকের তালিকা |
ওয়েবসাইট | দাপ্তরিক ওয়েবসাইট |
২০২২–২৩ মিশরীয় প্রিমিয়ার লিগ |
মিশরীয় প্রিমিয়ার লিগ (আরবি: الدوري المصري الممتاز, ইংরেজি: Egyptian Premier League; পৃষ্ঠপোষকজনিত কারণে ডব্লিউই মিশরীয় প্রিমিয়ার লিগ নামের পাশাপাশি সংক্ষেপে ইপিএল নামে পরিচিত) হচ্ছে মিশরীয় ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন কর্তৃক মিশরের পেশাদার ফুটবল ক্লাবগুলোর মধ্যকার আয়োজিত মিশরীয় ফুটবল লিগ পদ্ধতির শীর্ষ স্তরের পেশাদার ফুটবল লিগ। এই লিগে মিশরের সর্বমোট ১৮টি পেশাদার ফুটবল ক্লাব মিশরীয় ক্লাব পর্যায়ের শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে।
১৯৪৮ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে মিশরীয় প্রিমিয়ার লিগে এপর্যন্ত সর্বমোট ৭০টি দল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছে, যার মধ্য হতে মাত্র ৭টি ক্লাব এই লিগের শিরোপা জয়লাভ করেছে এবং তিনটি ক্লাব একাধিকবার জয়লাভ করেছে। আল আহলি এই লিগের ইতিহাসের সবচেয়ে সফল ক্লাব, যারা সর্বমোট ৪২টি শিরোপা জয়লাভ করার পাশাপাশি বারো বার রানার-আপ হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে জামালেক, যারা এপর্যন্ত চৌদ্দ বার এবং তৃতীয় স্থানে রয়েছে ক্লাব ইসমাইলি, যারা এপর্যন্ত তিন বার শিরোপা জয়লাভ করেছে। বর্তমান চ্যাম্পিয়ন জামালেক ২০২১–২২ মৌসুমে ৭৭ পয়েন্ট অর্জন করে ক্লাবের ইতিহাসে ১২তম বারের মতো মিশরীয় প্রিমিয়ার লিগের শিরোপা ঘরে তুলতে সক্ষম হয়েছিল; উক্ত মৌসুমে চ্যাম্পিয়ন জামালেক হতে ৬ পয়েন্ট কম অর্জন করে পিরামিডস রানার-আপ হয়েছিল।[১]
ইতিহাস
[সম্পাদনা]১৯৪৮ সালে মিশরীয় প্রিমিয়ার লিগ নামে এই লিগটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, অতঃপর ১৯৪৮–৪৯ মিশরীয় প্রিমিয়ার লিগ মৌসুমের মাধ্যমে এই লিগটি যাত্রা শুরু করেছে। মিশরীয় প্রিমিয়ার লিগের উক্ত মৌসুমে সর্বমোট এগারোটি ক্লাব দ্বৈত রাউন্ড-রবিন পদ্ধতিতে অংশগ্রহণ করেছিল। ১৯৪৮ সালের ২২শে অক্টোবর তারিখে শুরু হওয়া উক্ত মৌসুমে প্রতিটি ক্লাব সর্বমোট ২০টি ম্যাচে অংশগ্রহণ করেছিল; যার মধ্যে ক্লাবগুলো একে অপরের বিরুদ্ধে দুইটি ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিল। ২০তম ম্যাচদিন শেষে ২৯ পয়েন্ট অর্জন করে পয়েন্ট তালিকার শীর্ষ স্থান অধিকারী ক্লাব হিসেবে আল আহলি প্রথম ক্লাব হিসেবে মিশরীয় প্রিমিয়ার লিগের শিরোপা জয়লাভ করেছিল।[২] ১৯৪৮–৪৯ মৌসুমে আল ইত্তিহাদ আলেক্সান্দ্রিয়ার মিশরীয় আক্রমণভাগের খেলোয়াড় আদ-দিবা এবং আল মাসরির মিশরীয় আক্রমণভাগের খেলোয়াড় আল সাইদ আল জিজুই, উভয়ে ১৫টি করে গোল করে যৌথভাবে প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে মিশরীয় প্রিমিয়ার লিগের শীর্ষ গোলদাতার পুরস্কার জয়লাভ করেছিলেন।
বিন্যাস
[সম্পাদনা]মিশরীয় প্রিমিয়ার লিগের প্রতিটি মৌসুমে সর্বমোট ১৮টি ক্লাব দ্বৈত রাউন্ড-রবিন পদ্ধতিতে অংশগ্রহণ করে। অংশগ্রহণকারী ক্লাবগুলো একে অপরের বিরুদ্ধে দুইটি ম্যাচে মুখোমুখি হয়; যার মধ্যে একটি নিজেদের মাঠে এবং অপরটি প্রতিপক্ষ দলের মাঠে অনুষ্ঠিত হয়; ক্লাবগুলো এক মৌসুমে সর্বমোট ৩৪টি ম্যাচে অংশগ্রহণ করে। মিশরীয় প্রিমিয়ার লিগের প্রতিটি মৌসুম বছরের অক্টোবর মাস হতে পরবর্তী বছরের জুন মাস পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হয়। ক্লাবগুলো প্রতিটি জয়ের জন্য তিন পয়েন্ট এবং ড্রয়ের জন্য এক পয়েন্ট করে অর্জন করে থাকে, হারের জন্য কোন পয়েন্ট অর্জন করে না। পয়েন্ট তালিকায় ক্লাবগুলোর অর্জিত পয়েন্টের ভিত্তিতে তাদের অবস্থান নির্ধারণ করা হয়। প্রতিটি মৌসুম শেষে পয়েন্ট তালিকায় সর্বাধিক পয়েন্ট অর্জনকারী ক্লাবটি চ্যাম্পিয়ন হিসেবে শিরোপা জয়লাভ করে। যদি দুই বা ততোধিক ক্লাব সমান পয়েন্ট অর্জন করে থাকে, তবে হেড-টু-হেড পয়েন্টের মাধ্যমে পয়েন্ট তালিকায় তাদের অবস্থান নির্ধারণ করা হয়। সমতা ভঙ্গের সকল নিয়ম প্রয়োগ করার পরও যদি দুই বা ততোধিক ক্লাব পয়েন্ট তালিকায় সমতায় থাকে, তবে উক্ত ক্লাবগুলো পয়েন্ট তালিকার একই অবস্থানে আছে বলে মনে করা হয়। তবে, চ্যাম্পিয়ন ক্লাব, অবনমিত ক্লাব অথবা অন্যান্য প্রতিযোগিতায় উত্তীর্ণ ক্লাব নির্ধারণের ক্ষেত্রে যদি সমতায় থাকে, তবে একটি নিরপেক্ষ মাঠে একটি প্লে-অফ ম্যাচের মাধ্যমে ক্লাবগুলোর অবস্থান নির্ধারণ করা হয়।
মিশরীয় প্রিমিয়ার লিগের প্রতিটি মৌসুমের বিজয়ী ক্লাব পরবর্তী মৌসুমের ক্যাফ চ্যাম্পিয়নস লিগের জন্য স্বয়ংক্রিয়ভাবে উত্তীর্ণ হয়; এছাড়াও পয়েন্ট তালিকায় নিজেদের অবস্থানের ভিত্তিতে এক বা একাধিক ক্লাব ক্যাফ চ্যাম্পিয়নস লিগ, ক্যাফ কনফেডারেশন কাপ এবং আফ্রিকা সুপার লিগের জন্য উত্তীর্ণ হয়। মিশরীয় প্রিমিয়ার লিগে অংশগ্রহণ করার পাশাপাশি ক্লাবগুলো মিশরীয় ঘরোয়া ফুটবল কাপ মিশর কাপেও অংশগ্রহণ করে।
ফুটবল লিগ পদ্ধতির মাধ্যমে মিশরীয় ফুটবল লিগ পদ্ধতির শীর্ষ স্তরের লিগ মিশরীয় প্রিমিয়ার লিগ এবং দ্বিতীয় স্তরের লিগ মিশরীয় দ্বিতীয় বিভাগ উন্নয়ন ও অবনমনের মাধ্যমে একে অপরের সাথে সম্পর্কিত। প্রতিটি মৌসুম শেষে, মিশরীয় প্রিমিয়ার লিগের পয়েন্ট তালিকায় সর্বনিম্ন পয়েন্ট অর্জনকারী তিনটি ক্লাব স্বয়ংক্রিয়ভাবে মিশরীয় দ্বিতীয় বিভাগে অবনমিত হয়; পক্ষান্তরে, উক্ত মৌসুমে মিশরীয় দ্বিতীয় বিভাগের চ্যাম্পিয়ন, রানার-আপ এবং তৃতীয় স্থান অধিকারী ক্লাব স্বয়ংক্রিয়ভাবে মিশরীয় প্রিমিয়ার লিগে উন্নীত হয়।
পরিসংখ্যান
[সম্পাদনা]চ্যাম্পিয়ন
[সম্পাদনা]প্রতিষ্ঠার পর থেকে এপর্যন্ত সর্বমোট ৭টি ক্লাব মিশরীয় প্রিমিয়ার লিগে শিরোপা জয়লাভ করেছে; যার মধ্যে ৩টি ক্লাব একাধিকবার জয়লাভ করেছে। মিশরীয় প্রিমিয়ার লিগের ইতিহাসের সবচেয়ে সফল ক্লাব হচ্ছে আল আহলি, যারা এপর্যন্ত ৪২টি শিরোপা জয়লাভ করেছে। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে জামালেক, যারা এপর্যন্ত ১৪ বার এবং তৃতীয় স্থানে রয়েছে ক্লাব ইসমাইলি, যারা এপর্যন্ত ৩ বার শিরোপা জয়লাভ করেছে।
ক্লাব অনুযায়ী
[সম্পাদনা]ক্লাব | চ্যাম্পিয়ন | চ্যাম্পিয়নের মৌসুম |
---|---|---|
আল আহলি | ৪২ | ১৯৪৮–৪৯, ১৯৪৯–৫০, ১৯৫০–৫১, ১৯৫২–৫৩, ১৯৫৩–৫৪, ১৯৫৫–৫৬, ১৯৫৬–৫৭, ১৯৫৭–৫৮, ১৯৫৮–৫৯, ১৯৬০–৬১, ১৯৬১–৬২, ১৯৭৪–৭৫, ১৯৭৫–৭৬, ১৯৭৬–৭৭, ১৯৭৮–৭৯, ১৯৭৯–৮০, ১৯৮০–৮১, ১৯৮১–৮২, ১৯৮৪–৮৫, ১৯৮৫–৮৬, ১৯৮৬–৮৭, ১৯৮৮–৮৯, ১৯৯৩–৯৪, ১৯৯৪–৯৫, ১৯৯৫–৯৬, ১৯৯৬–৯৭, ১৯৯৭–৯৮, ১৯৯৮–৯৯, ১৯৯৯–০০, ২০০৪–০৫, ২০০৫–০৬, ২০০৬–০৭, ২০০৭–০৮, ২০০৮–০৯, ২০০৯–১০, ২০১০–১১, ২০১৩–১৪, ২০১৫–১৬, ২০১৬–১৭, ২০১৭–১৮, ২০১৮–১৯, ২০১৯–২০ |
জামালেক | ১৪ | ১৯৫৯–৬০, ১৯৬৩–৬৪, ১৯৬৪–৬৫, ১৯৭৭–৭৮, ১৯৮৩–৮৪, ১৯৮৭–৮৮, ১৯৯১–৯২, ১৯৯২–৯৩, ২০০০–০১, ২০০২–০৩, ২০০৩–০৪,২০১৪–১৫, ২০২০–২১, ২০২১–২২ |
ইসমাইলি | ৩ | ১৯৬৬–৬৭, ১৯৯০–৯১, ২০০১–০২ |
তিরসানা | ১ | ১৯৬২–৬৩ |
গাজল আল মাহাল্লা | ১ | ১৯৭২–৭৩ |
মিশর অলিম্পিক | ১ | ১৯৬৫–৬৬ |
আল মুকাউলুন | ১ | ১৯৮২–৮৩ |
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ "Summary - Premier League - Egypt - Results, fixtures, tables and news - Soccerway"। int.soccerway.com।
- ↑ "Egypt 1948/49"। www.rsssf.org।