বিষয়বস্তুতে চলুন

সূরা আছর

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
আসর
শ্রেণীমাক্কী সূরা
পরিসংখ্যান
সূরার ক্রম১০৩
আয়াতের সংখ্যা
← পূর্ববর্তী সূরাসূরা তাকাসুর
পরবর্তী সূরা →সূরা হুমাযাহ
আরবি পাঠ্য · বাংলা অনুবাদ

সূরা আসর মুসলমানদের ধর্মীয় গ্রন্থ কুরআনের ১০৩ তম সূরা। এই সূরাটি মক্কায় অবতীর্ণ হয়েছে এবং এর আয়াত সংখ্যা ৩ টি।

সূরা আসর কুরআনের একটি সংক্ষিপ্ত সূরা, তবে এটি মুসলামানদের কাছে বেশ তাৎপর্যপূর্ণ একটি সূরা এবং অনেক মুসলিম মনে করেন যে, মানুষ এই সূরাটিকেই চিন্তা ভাবনা সহকারে পাঠ করলে তাদের ইহকাল ও পরকাল সংশোধনের জন্যে যথেষ্ট হয়ে যাবে। এ সূরার বক্তব্য অনুসারে, আল্লাহ যুগের কসম করে বলেন যে, মানবজাতি অত্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত এবং এই ক্ষতির কবল থেকে কেবল তারাই মুক্ত আছে, যারা চারটি বিষয় নিষ্ঠার সাথে পালন করে: ঈমান বা স্রষ্টার প্রতি বিশ্বাস, সৎকর্ম, অপরকে সত্য ও ধৈর্য্য রাখার উপদেশ দান।[]

নাযিল হওয়ার সময় ও স্থান

[সম্পাদনা]

মুজাহিদ , কাতাদাহ ও মুকাতিল একে মাদানী বলেছেন । কিন্তু মুফাসসিরগণের বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশ একে মক্কী সূরা হিসেবে গণ্য করেছেন। আর এই সূরার বিষয়বস্তু সাক্ষ্য দেয় , এটি মক্কী যুগেরও প্রাথমিক পর্যায়ে নাযিল হয়ে থাকবে। সে সময় ইসলামের শিক্ষাকে সংক্ষিপ্ত ও অত্যন্ত হৃদয়গ্রাহী বাক্যের সাহায্যে বর্ণনা করা হতো। এভাবে শ্রোতা একবার শুনার পর ভুলে যেতে চাইলেও তা আর ভুলতে পারতো না এবং আপনা আপনি লোকদের মুখে তা উচ্চারিত হতে থাকতো।

শানে নুযূল

[সম্পাদনা]

ওলীদ ইবনে মুগিরা, আস ইবনে ওয়াইল, আসওয়াদ ইবনে মুত্তালিব প্রমুখ বলতেন যে, মুহাম্মদ অবশ্যই ক্ষতির মধ্যে রয়েছে। এ পরিপ্রেক্ষিতে (তাদের কথার অসারতা প্রমাণ করে) আল্লাহ সূরাটি নাযিল করেন।


জাহিলিয়া যুগে আবু বকর সিদ্দিকের সাথে কালাদাহ ইবনে উসায়েদের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। কালাদাহ প্রায়ই তার নিকট যাতায়াত করতো।

আবু বকর ইসলাম গ্রহণের পর একদিন সে তার নিকট এসে বললো, “হে আবু বকর! তোমার কি মাথা খারাপ হয়ে গেছে ? ব্যবসা-বাণিজ্যে তো ভাটা লেগেছে। আয়-রোজগারের পথ তো প্রায় বন্ধ। তুমি কোন ধারণায় নিমজ্জিত হয়েছো ? নিজেদের ধর্মকর্মও হারিয়েছ এবং দুনিয়াও হারিয়েছ। তুমি এখন উভয় দিক দিয়ে পূর্ণরূপে লোকসানে নিপতিত।”

আবু বকর বললেন, “হে নির্বোধ! যে লোক আল্লাহ তাআলা ও তার রাসুলের গোলাম হয়ে যায়, সে কখনো লোকসানে নিপতিত হয় না। যারা পরকাল সম্পর্কে কোনই চিন্তাভাবনা করে না মূলত তারাই ক্ষতিগ্রস্ত, তারাই লোকসানে নিপতিত। যারা কেবল জাগতিক উন্নতি লাভের জন্যই সদা চিন্তামগ্ন ও ব্যস্ত থাকে, তারাই একূল-ওকূল উভয় কূলই হারায়।”

আবু বকরের কথার সত্যতা প্রমাণ এবং এ ঘটনাকে উপলক্ষ করে এ সূরা অবতীর্ণ হয়।

বিষয়বস্তুর বিবরণ

[সম্পাদনা]

তাফসীরে মাআরেফুল কুরআন থেকে সার-সংক্ষেপঃ

   কসম যুগের (যাতে দুঃখ ও ক্ষতি সাধিত হয়), মানুষ তার জীবনের দিনগুলো বিনষ্ট করার কারণে) খুবই ক্ষতিগ্রস্তু, কিন্তু তারা নয়, যারা ঈমান আনে ও সৎ কর্ম করে ( যা আত্মগুণ) এবং পরস্পরকে সত্যে প্রতিষ্ঠিত থাকার তাকীদ দেয় এবং তাকীদ দেয় সৎ কর্মে অটল থাকার। (এটা পরোপকার গুণ। মোটকথা, যারা এ আত্মগুণ অর্জন করে এবং অপরকেও গুণান্বিত করে, তারা অবশ্য ক্ষতিগ্রস্ত নয় বরং লাভবান)।

আনুষঙ্গিক জ্ঞাতব্য বিষযঃ

   সূরা আছরের বিশেষ ফযীলত : হযরত ওবায়দুল্লাহ্ ইবনে হিসন (রা) বলেনঃ রসূলুল্লাহ্ (সা)-র সাহাবীগণের মধ্যে দু’ব্যক্তি ছিল, তারা পরস্পর মিলে একজন অন্য জনকে সূরা আছর পাঠ করে না শুনানো পর্যন্ত বিচ্ছিন্ন হতেন না। (তিবরানী) ইমাম শাফেয়ী (র) বলেনঃ যদি মানুষ কেবল এ সূরাটি সম্পর্কেই চিন্তা করত, তবে এটাই তাঁদের জন্য যথেষ্ট ছিল। (ইবনে কাসীর)

সূরা আছর কোরআন পাকের একটি সংক্ষিপ্ত সূরা, কিন্তু এমন অর্থপূর্ণ সূরা যে, ইমাম শাফেয়ী (র)-র ভাষায় মানুষ এ সূরাটিকেই চিন্তা-ভাবনা সহকারে পাঠ করলরা তাদের ইকাল ও পরকালের সংশোধনের জন্য যথেষ্ট হয়ে যায়। এ সূরায় আল্লাহ্ তা’আলা যুগের কসম করে বলেছেন যে, মানবজাতি অত্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত এবং এই ক্ষতির কবল থেকে কেবল তারাই মুক্ত, যারা চারটি বিষয় নিষ্ঠার সাথে পালন করে—ঈমান, সৎ কর্ম, অপরকে সত্যের উপদেশ এবং সবরের উপদেশ। দীন ও দুনিয়ার ক্ষতি থেকে রক্ষা পাওয়ার এবং মহা উপকার লাভ করার চার বিষয় সম্বলিত এ ব্যবস্থাপত্রের প্রথম দু’টি বিষয় আত্মসংশোধন সম্পর্কিত এবং দ্বিতীয় দু’টি বিষয় মুসলমানদের হিদায়াত ও সংশোধন সম্পর্কিত।

   প্রথম প্রণিধানযোগ্য বিষয় এই যে, এ বিষয়বস্তুর সাথে যুগের কি সম্পর্ক, যার কসম করা হয়েছে? কসম ও কসমের জওয়াবের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক থাকা বাঞ্ছনীয়।, অধিকাংশ তফসীরবিদ বলেন: মানুষের সব কর্ম, গতিবিধি, উঠাবসা ইত্যাদি সব যুগের মধ্যেই সংঘটিত হয়। সূরায় যে সব কর্মের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, সেগুলোও এই যুগ কালেরই দিবারাত্রিতে সংঘটিত হবে। এরই প্রেক্ষিতে যুগের শপথ করা হয়েছে।

   মানবজাতির ক্ষতিগ্রস্ততায় যুগ ও কালের প্রভাব কি? চিন্তা করলে দেখা যায়, আয়ুষ্কালের সাল, মাস, সপ্তাহ, দিবারাত্র বরং ঘণ্টা ও মিনিটই মানুষের একমাত্র পুঁজি, যার সাহায্যে সে ইহকাল ও পরকালের বিরাট এবং বিস্ময়কর মুনাফাও অর্জন করতে পারে এবং ভ্রাপ্ত পথে চললে এটাই তার জন্য বিপজ্জনকও হয়ে যেতে পারে। জনৈক আলিম বলেনঃحيا تک أنفاس تعد فكلما + مضى نفس منها انتقصت به جزءا -

অর্থাৎ তোমার জীবন কতিপয় গুণাগুনতি স্বাস-প্রশ্বাসের নাম। যখন একটি স্বাস অতিবাহিত হয়ে যায়, তখন তোমার বয়সের একটি অংশ হ্রাস পায়।

   আল্লাহ্ তা’আলা প্রত্যেক মানুষকে তার আয়ুষ্কালের অমূল্য পুঁজি দিয়ে একটি ব্যবসায়ে নিয়োজিত করে দিয়েছেন, যাতে সে বিবেকবুদ্ধি খাটিয়ে এ পুঁজিকে খাটি লাভ দায়ক কাজে লাগাতে পারে। যদি সে লাভদায়ক কাজে এ পুঁজিকে বিনিয়োগ করে, তবে মুনাফার কোন অন্ত থাকে না। পক্ষান্তরে যদি সে এই পুঁজি কোন ক্ষতিকর কাজে ব্যবহার করে, তবে মুনাফা দূরের কথা, পুঁজিই বিনষ্ট হয়ে যায়। অতঃপর কেবল মুনাফা ও পুঁজি বিনষ্ট হয়েই ব্যাগরি শেষ হয়ে যায় না বরং তার উপর শত শত অপরাধের শান্তি আরোপিত হয়। কেউ যদি এ পুঁজিকে লাভজনক অথবা ক্ষতিকর কোন কাজেই ব্যবহার না করে, তার এ ক্ষতিতো অবশ্যভাবী যে, তার মুনাফা ও পুঁজি উভয়ই বিনষ্ট হল। এটা নিছক কবিসুলভ: কল্পনাই নয়, বরং এক হাদীসেও এর সমর্থন পাওয়া যায়। রসূলুল্লাহ্ (সা) বলেনঃيَغْدُو فَبَائِعٌ نَفْسَهُ فَمُعْتِقُهَا أَوْ مُوبِقُهَا অর্থাৎ প্রত্যেক ব্যক্তি প্রাতঃকালে উঠে তার প্রাণের পুঁজি ব্যবসায়ে নিয়োজিত করে। অতঃপর কেউ এ পুঁজিকে লোকসান থেকে মুক্ত করে নেয় এবং কেউ ধ্বংস করে দেয়।

     খোদ কোরআনও ঈমান এবং সৎ কর্মকে মানুষের ব্যবসারূপে ব্যক্ত করেছে। বলা হয়েছেঃ هَلْ أَدُلُّكُمْ عَلَى تِجَارَةٍ تُنْجِيكُمْ مِنْ عَذَابٍ أَلِيمٍ- আয়ুষ্কাল যখন পুঁজি আর মানুষ হল ব্যবসায়ী, তখন সাধারণ অবস্থায় এই ব্যবসায়ীদের ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া সুস্পষ্ট।কেননা, এই বেচারীর পুঁজি কোন আড়ষ্ট পুঁজি নয় যে কিছুদিন বেকারও রাখা যাবে। যাতে ভবিষ্যতে আবার কাজে লাগানো যায়। বরং এটা বহমান পুঁজি, যা প্রতিনিয়ত বয়ে চলেছে। এ পুঁজির ব্যবসায়ীকে অত্যন্ত চালাক ও সুচতুর হতে হবে। কারণ বহমান বস্তু থেকে মুনাফা অর্জন করা সহজ কথা নয়। এ কারণেই জনৈক বুযুর্গ বরফ বিক্রেতার দোকানে গিয়ে সূরা আছরের যথার্থ তফসীর বুঝতে সক্ষম হয়েছিলেন। তিনি দেখলেন,দোকানদার সামান্য উদাসীন হলেই তার পুঁজি পানি হয়ে বিনষ্ট হয়ে যাবে। এ কারণেই আয়াতে কালের শপথ করে মানুষের মনোযোগ আকৃষ্ট করা হয়েছে যে, সে যেন ক্ষতির কবল থেকে আত্মরক্ষার্থে বস্তু চতুষ্টয় সম্বলিত ব্যবস্থাপত্র ব্যবহারে সামান্যও গাফিল না হয়, বয়সের প্রতিটি মুহূর্তকে যেন সঠিকভাবে কাজে লাগায় এবং চার প্রকার কাজে নিজেকে সদানিয়োজিত রাখে।

   কালের শপথের আরো একটি সম্পর্ক এরূপ হতে পারে যে যার শপথ করা হয় সে একদিক দিয়ে সেই বিষয়ে সাক্ষী হয়ে থাকে। কাল এমন বিষয় যে কেউ যদি এর ইতিহাস এতে জাতিসমূহ উত্থান পতন সম্পর্কিত ঘটনাবলীর প্রতি দৃষ্টিপাত করে তবে সে অবশ্যই এ বিশ্বাসে উপনীত হবে যে, উপরোক্ত চারটি কাজের মধ্যেই মানুষের সাফল্য সীমিত। যে এগুলোকে বিসর্জন দেয় সে ক্ষতিগ্রস্ত। জগতের ইতিহাস এর সাক্ষী।

    অতঃপর এই চারটি বিষয়ের ব্যাখ্যা লক্ষ্য করুন। ঈমান ও সৎকর্ম আত্মা সংশোধন সম্পর্কিত এ দুটি বিষয়ের ব্যাখ্যা নিষ্প্রয়োজন।تواصى শব্দটি وصيت থেকে উদ্ভূত। কাউকে বলিষ্ঠ ভঙ্গিতে উপদেশ দেয়া ও সৎ কাজের জোর তাগিদ করার নাম ওসীয়্যত। এ কারণেই মুমূর্ষ ব্যক্তি পরবর্তীকালের জন্য যে নির্দেশ দেয় তাকেই বলা হয়।

    উপরোক্ত দু’রকম উপদেশ প্রকৃতপক্ষে এই ওসীয়্যতেরই দুটি  অধ্যায়। প্রথম অধ্যায় সত্যের উপদেশ এবং দ্বিতীয় অধ্যায়ঃ সবরের উপদেশ। এখন এ দুটি শব্দের কয়েক রকম অর্থ হতে পারে-এক সত্যের অর্থ বিশুদ্ধ বিশ্বাস ও সৎকর্মর সমষ্টি। আর সবরের অর্থ যাবতীয় গুনাহের কাজ থেকে বেঁচে থাকা। অতএব প্রথম শব্দের সারমর্ম হল ’’আমর বিল মারুফ’’তথা সৎ কাজের আদেশ করা। এবং দ্বিতীয় শব্দের সারমর্ম হল ’’নাহি আনিল মুনকার’’তথা মন্দকাজে নিষেধ করা। এখন সমষ্টির সারমর্ম এই দাঁড়ায় যে, নিজে যে ঈমান ও সৎকর্ম অবলম্বন করেছে অপর কেউ তা উপদেশ দেয়া। দুই সতের অর্থ বিশুদ্ধ বিশ্বাস এবং সবরের অর্থ সৎকাজ করা এবং মন্দ কাজ থেকে বেঁচে থাকা। কেননা সবরের আক্ষরিক অর্থ নিজেকে বাধা দেয়া ও অনুবর্তী করা। এই অনুবর্তী করার মধ্যে সৎকর্ম সম্পাদন এবং গুনাহ থেকে আত্মরক্ষা করা উভয় শামিল।

    হাফেজ ইবনে তাইমিয়া (র) বলেনঃ দুটি বিষয় মানুষকে ঈমান ও সৎকর্ম অবলম্বন করতে স্বভাবত বাধা দেয়। এক সন্দেহ-সংশয় অর্থাৎ ঈমান ও সৎ কর্মের ব্যাপারে মানুষের মনে কিছু সন্দেহ সৃষ্টি হয়ে যায়। যদ্দরুন বিশ্বাস বিক্রিত হয়ে যায়। বিশ্বাসে ত্রুটি ঢুকে পড়লে কর্ম ত্রুটিযুক্ত হওয়া স্বাভাবিক। দুই খেয়াল খুশি যা মানুষকে কোন সময় সৎ কাজের প্রতি বিমুখ করে দেয়। এবং কোন সময় মন্দ কাজে লিপ্ত করে দেয়। যদিও সে বিশ্বাস গত ভাবে সব কাজ করা এবং মন্দ কাজ করা থেকে বেঁচে থাকতে জরুরি মনে করে। অতএব আলোচ্য আয়াতে সত্যের উপদেশ বলে সন্দেহ দূর করা এবং সবরের উপদেশ বলে খেয়ালখুশির ত্যাগ করে সৎকর্ম অবলম্বন এর নির্দেশ দেওয়া বুঝানো হয়েছে। সংক্ষেপে সত্যের উপদেশ দেয়ার অর্থ মুসলমানদের শিক্ষাগত সংশোধন করা এবং সবরের উপদেশ দেয়ার অর্থ মুসলমানদের কর্মগত সংশোধন করা। যুক্তির জন্য নিজের কর্ম সংশোধিত হওয়াই যথেষ্ট নয়। জগতের চিন্তাও জরুরী।

   সূরায়ে মুসলমানদের প্রতি একটি বড় নির্দেশ এই যে নিজেদের ধর্মকে কোরআন ও সুন্নাহ অনুসারে করে নেওয়া যতটুকু গুরুত্বপূর্ণ ও জরুরি ততটুকুই জরুরী অন্য মুসলমানদেরকেও ঈমান ও সৎকর্মের প্রতি আহবান করার সাধ্যমত চেষ্টা করা। নতুবা কেবল নিজেদের আমল যুক্তির জন্য যথেষ্ট হবে না, বিশেষত আপন পরিবার-পরিজন বন্ধু-বান্ধব ও আত্মীয়-স্বজনের কুকর্ম থেকে দৃষ্টি ফিরিয়ে রাখা আপন মুক্তির পথ বন্ধ করার নামান্তর, যদিও নিজে পুরোপুরি সৎকর্মপরায়ন হয়। এ কারণেই কোরআন ও হাদিসে প্রত্যেক মুসলমানের প্রতি সাধ্যমত সৎকাজের আদেশ ও অসৎকাজের নিষেধ ফরজ করা হয়েছে। এ ব্যাপারে সাধারণ মুসলমান এমনকি অনেক বিশিষ্ট ব্যক্তি পর্যন্ত উদাসীনতায় লিপ্ত রয়েছে। তারা নিজেদের আম্লকি যথেষ্ট মনে করে বসে কাজে সন্তান-সন্ততি কি করছে সেদিকে ভ্রুক্ষেপ নেই। আল্লাহ তা’আলা আমাদের সবাইকে এই আয়াত এর নির্দেশ অনুযায়ী আমল করার তৌফিক দান করুন। আমিন।

আয়াত সমূহ

[সম্পাদনা]

وَالْعَصْرِ

১. শপথ অপরাহ্নের;

إِنَّ الْإِنسَانَ لَفِي خُسْرٍ
২. নিশ্চয় মানুষ ক্ষতিগ্রস্থদের অন্তর্ভুক্ত;

إِلَّا الَّذِينَ آمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ وَتَوَاصَوْا بِالْحَقِّ وَتَوَاصَوْا بِالصَّبْرِ
৩. কিন্তু তারা ব্যতীত, যারা বিশ্বাস স্থাপন করে ও সৎকর্ম করে এবং পরস্পরকে উপদেশ দেয় সত্যের এবং উপদেশ প্রদান করে ধৈর্য্যের৷

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. তফসীর মাআরেফুল ক্বোরআন (১১ খন্ডের সংহ্মিপ্ত ব্যাখ্যা)।

বহিঃসংযোগ

[সম্পাদনা]