পদ্মা নদী
পদ্মা বাংলাদেশের প্রধান নদী। এটি হিমালয়ে উৎপন্ন গঙ্গানদীর প্রধান শাখা এবং বাংলাদেশের দীর্ঘতম নদী। বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ শহর রাজশাহী এই পদ্মার উত্তর তীরে অবস্থিত। বাংলাদেশে নদীটির দৈর্ঘ্য ৩৪১ কিলোমিটার (নদী রক্ষা কমিশন রিপোর্ট ২০২৩) [২] গড় প্রস্থ ১০ কিলোমিটার এবং নদীটির প্রকৃতি সর্পিলাকার।
পদ্মা নদী কীর্তিনাশা | |
---|---|
অবস্থান | |
দেশ | ভারত ও বাংলাদেশ |
জেলা | মুর্শিদাবাদ, রাজবাড়ী,ঢাকা, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ,শরীয়তপুর, মাদারীপুর,ফরিদপুর,মানিকগঞ্জ, রাজশাহী, নাটোর, পাবনা, কুষ্টিয়া, চাঁদপুর |
প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য | |
উৎস | |
• অবস্থান | হিমালয়ের গঙ্গোত্রী হিমবাহ থেকে উৎপন্ন গঙ্গা নদী |
মোহনা | |
• অবস্থান | মেঘনা নদী |
দৈর্ঘ্য | ৩৫৬ কিলোমিটার (২২১ মাইল)[১] |
নিষ্কাশন | |
• গড় | বার্ষিক গড়:
বর্ষ মৌসুমে:
শুকনা মৌসুমে:
|
অববাহিকার বৈশিষ্ট্য | |
সেতু | পদ্মা সেতু লালন শাহ সেতু হার্ডিঞ্জ ব্রিজ |
বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড বা "পাউবো" কর্তৃক পদ্মা নদীর প্রদত্ত পরিচিতি নম্বর উত্তর-কেন্দ্রীয় অঞ্চলের নদী নং ৩২।[৩] রাজা রাজবল্লভের কীর্তি পদ্মার ভাঙ্গনের মুখে পড়ে ধ্বংস হয় বলে পদ্মার আরেক নাম কীর্তিনাশা।[৪]
গতিপ্রকৃতি
সম্পাদনাহিমালয়ের গঙ্গোত্রী হিমবাহ থেকে উৎপন্ন গঙ্গা নদী রাজশাহী জেলা দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে, এখান থেকে নদীটি পদ্মা নাম ধারণ করেছে। গঙ্গার অন্য শাখাটি ভাগীরথী নামে ভারতে হুগলীর দিকে প্রবাহিত হয়। উৎপত্তিস্থল হতে ২২০০ কিলোমিটার দূরে গোয়ালন্দে যমুনা নদীর সাথে মিলিত হয়ে মিলিত প্রবাহ পদ্মা নামে আরও পূর্ব দিকে চাঁদপুর জেলায় মেঘনা নদীর সাথে মিলিত হয়েছে। সবশেষে পদ্মা-মেঘনার মিলিত প্রবাহ মেঘনা নাম ধারণ করে দক্ষিণে বঙ্গোপসাগরের সাথে মিলিত হয়।[৫]
দৈর্ঘ্য
সম্পাদনাপদ্মা বাংলাদেশের প্রথম দীর্ঘতম নদী, এর দৈর্ঘ্য ৩৪১ কিলোমিটার।[৪][নদী কমিশন রিপোর্ট ২০২৩]
উপনদী এবং শাখানদী
সম্পাদনাপদ্মার প্রধান উপনদী মহানন্দা এবং পুনর্ভবা। মহানন্দা উপনদীটি চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা এবং পুনর্ভবা বাংলাদেশ ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গের উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পদ্মার বিভিন্ন শাখানদীর মধ্যে গড়াই, বড়াল, আড়িয়াল খাঁ, কুমার, মাথাভাঙ্গা, কপোতাক্ষ ইত্যাদি অন্যতম। আবার পদ্মার বিভিন্ন প্রশাখা নদীসমূহ হলো- মধুমতী, পশুর, ভৈরব ইত্যাদি। এই নদীগুলো কুষ্টিয়া, রাজবাড়ী, যশোর, সাতক্ষীরা, ঝিনাইদহ, নড়াইল, মাগুরা, বাগেরহাট, গোপালগঞ্জ, ফরিদপুর, মাদারীপুর, শরীয়তপুর, বরিশাল, পটুয়াখালী ইত্যাদি জেলার উপর দিয়ে বিস্তৃতি লাভ করেছে।[৫]
সাহিত্যে পদ্মা নদী
সম্পাদনামানিক বন্দ্যোপাধ্যায় এর বিখ্যাত উপন্যাস পদ্মা নদীর মাঝি এই নদীর তীরের মানুষের জীবনকে কেন্দ্র করেই লেখা। পদ্মার নৈসর্গিক ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্য নানাভাবে প্রভাবিত করেছে কবি কাজী নজরুল ইসলামকে। তার বিখ্যাত কিছু গানে পদ্মার হারানো ঐতিহ্য ও সৌন্দর্য্য ফুটে উঠেছে।[৬] প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক আবু ইসহাক রচিত "পদ্মার পলিদ্বীপ" উপন্যাসটির উপজীব্য পদ্মার পাড়ের সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা। [৭]
চিত্রসংগ্রহ
সম্পাদনা-
পদ্মা নদীর নৈসর্গিক দৃশ্য
-
পদ্মা নদীতে খেয়া পারাপারের দৃশ্য
-
পদ্মা নদীর রাজবাড়ী অংশে সূর্যাস্ত
আরও দেখুন
সম্পাদনাতথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ অ্যালিসন, মিড এ. (গ্রীষ্মকাল ১৯৯৮)। "Geologic Framework and Environmental Status of the Ganges-Brahmaputra Delta"। জার্নাল অফ কোস্টাল রিসার্চ (ইংরেজি ভাষায়)। কোস্টাল এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ ফাউন্ডেশন, ইনক.। ১৩ (৩): ৮২৬–৮৩৬। জেস্টোর 4298836।
- ↑ মাসুদ হাসান চৌধুরী (২০১২)। "পদ্মা নদী"। ইসলাম, সিরাজুল; মিয়া, সাজাহান; খানম, মাহফুজা; আহমেদ, সাব্বীর। বাংলাপিডিয়া: বাংলাদেশের জাতীয় বিশ্বকোষ (২য় সংস্করণ)। ঢাকা, বাংলাদেশ: বাংলাপিডিয়া ট্রাস্ট, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। আইএসবিএন 9843205901। ওএল 30677644M। ওসিএলসি 883871743।
- ↑ মানিক মোহাম্মদ রাজ্জাক (ফেব্রুয়ারি ২০১৫)। "উত্তর-কেন্দ্রীয় অঞ্চলের নদী"। বাংলাদেশের নদনদী: বর্তমান গতিপ্রকৃতি (প্রথম সংস্করণ)। ঢাকা: কথাপ্রকাশ। পৃষ্ঠা ২৫৭-২৫৮। আইএসবিএন 984-70120-0436-4।
- ↑ ক খ হোসেন এমএল, মাহমুদ জে, ইসলাম জে, খোকন জেডএইচ এবং ইসলাম এস (সম্পাদক) (২০০৫) পদ্মা, তথ্যকোষ খণ্ড ১ ও ২, ঢাকা, বাংলাদেশ, পৃ. ১৮২
- ↑ ক খ "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ৮ আগস্ট ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩ জুলাই ২০১৫।
- ↑ বাংলাদেশের নদীঃ মোকাররম হোসেন; পৃষ্ঠা ৭১ ও ৭২; কথাপ্রকাশ; দ্বিতীয় সংস্করণঃ আগস্ট ২০১৪
- ↑ বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা: ড. সৌমিত্র শেখর;পৃষ্ঠা ২৬১ ও ২৬২; অগ্নি পাবলিকেশন্স; প্রথম সংস্করণঃ ২০০৪
বহিঃসংযোগ
সম্পাদনা- উইকিমিডিয়া কমন্সে পদ্মা নদী সম্পর্কিত মিডিয়া দেখুন।