বিষয়বস্তুতে চলুন

শিন্ডলার্স লিস্ট

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

এটি এই পাতার একটি পুরনো সংস্করণ, যা Prodeep Roy (আলোচনা | অবদান) কর্তৃক ১৭:২০, ২১ আগস্ট ২০১৮ তারিখে সম্পাদিত হয়েছিল। উপস্থিত ঠিকানাটি (ইউআরএল) এই সংস্করণের একটি স্থায়ী লিঙ্ক, যা বর্তমান সংস্করণ থেকে ব্যাপকভাবে ভিন্ন হতে পারে।

শিন্ডলার্স লিস্ট
প্রেক্ষাগৃহে মুক্তির পোস্টার
পরিচালকস্টিভেন স্পিলবার্গ
প্রযোজক
  • স্টিভেন স্পিলবার্গ
  • জেরাল্ড আর মোলেন
  • ব্রাঙ্কো লুস্টিগ
চিত্রনাট্যকারস্টিভেন জাল্লিয়ান
উৎসথমাস কেনিয়েলি কর্তৃক 
শিন্ডলার্স আর্ক
শ্রেষ্ঠাংশে
সুরকারজন উইলিয়ামস
চিত্রগ্রাহকজানুৎস কামিন্‌স্কি
সম্পাদকমাইকেল কান
প্রযোজনা
কোম্পানি
পরিবেশকইউনিভার্সাল পিকচার্স
মুক্তি
  • ৩০ নভেম্বর ১৯৯৩ (1993-11-30) (ওয়াশিংটন ডিসি)
  • ১৫ ডিসেম্বর ১৯৯৩ (1993-12-15) (যুক্তরাষ্ট্র)
স্থিতিকাল১৯৫ মিনিট[]
দেশযুক্তরাষ্ট্র
ভাষাইংরেজি
নির্মাণব্যয়$২২ মিলিয়ন []
আয়$৩২১.২ মিলিয়ন []

শিন্ডলার্স লিস্ট (ইংরেজি: Schindler's List) ১৯৯৩ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত একটি ঐতিহাসিক মার্কিন চলচ্চিত্র। চলচ্চিত্রটি সহ-প্রযোজনা ও পরিচালনা করেছেন স্টিভেন স্পিলবার্গ এবং চিত্রনাট্য লিখেছেন স্টিভেন জাল্লিয়ান। নোবেল বিজয়ী অস্ট্রেলিয়ান থমাস কেনিয়েলি'র লেখা 'শিন্ডলার্স আর্ক' বই অবলম্বনে চলচ্চিত্রটি তৈরি করা হয়েছে। জার্মান ব্যবসায়ী অস্কার শিন্ডলারের জীবনী অবলম্বনে চলচ্চিত্রটি তৈরি করা হয়েছে, তিনি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন সময় প্রচুর পোলিশ ইহুদিদের হলোকস্ট থেকে রক্ষা করেন।

কাহিনী সংক্ষেপ

১৯৩৯ সালে জার্মান নাৎসি বাহিনী দুই সপ্তাহে পোলিশ বাহিনীকে পরাজিত করে পোল্যান্ড দখলের মধ্যদিয়ে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সূচনা হয়। সিনেমাটির গল্প শুরু হয়েছে জার্মানির পোল্যান্ড দখলের শুরুর দিনগুলোর ঘটনা নিয়ে।

গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্রে রয়েছেন অস্কার শিন্ডলার নামের এক জার্মান ব্যবসায়ী যিনি নাৎসি বাহিনীতে যোগ দিয়ে পোল্যান্ডে এসেছেন ‘যুদ্ধের সুবিধা’ কাজে লাগিয়ে ব্যবসায়ীক ভাবে লাভবান হওয়ার উদ্দেশ্য নিয়ে। নাৎসি এসএস বাহিনীর প্রধানদের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক তৈরি করে এবং তাদের প্রচুর টাকা ঘুষ দিয়ে পোল্যান্ডের দ্বিতীয় বৃহত্তর শহর ক্র্যাকোতে তিনি ডিইএফ নামে একটি কারখানা তৈরি করেন।

শিন্ডলার তাঁর কারখানায় কাজের জন্য শুধুমাত্র পোল্যান্ডের ইহুদিদের নেন । শিন্ডলার তাঁর কারখানায় অ্যাকাউন্ট্যান্ট হিসেবে ইটজাক স্ট্যার্ন নামের এক ইহুদিকে নিয়োগ দেন যিনি কালোবাজারী এবং ইহুদিদের ব্যবসায়িক গোষ্ঠির সাথে যোগাযোগ রেখে শিন্ডলারকে নানাভাবে সাহায্য করেন।

শিন্ডলার তাঁর কারখানায় ইহুদিদের নিয়োগ দেন কারণ ইহুদিরা সস্তা শ্রম দেবে এবং এতে তাঁর অনেক টাকা বেঁচে যাবে এই উদ্দেশ্য।  একদিন কারখানায় নিয়োগ পাওয়া এক হাতওয়ালা এক বৃদ্ধ ইহুদি এসে সিন্ডলারের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে কারখানায় নিয়োগ দিয়ে জার্মান বাহিনীর অত্যাচার থেকে তাঁকে বাঁচানোর জন্য।

ইহুদিদের অসহায়ত্ব শিন্ডলারের মনে করুণার জন্ম দেয়। জার্মান বাহিনী ইহুদিদের ট্রেনে করে অনেক দূরে ইহুদি কলোনিতে পাঠাতে শুরু করে পরে যেখান থেকে তাদের পাঠানো হবে মৃত্যু শিবির কনসেনট্রেশন ক্যাম্পগুলোতে। ঘটনাচক্রে শিন্ডলারের অ্যাকাউন্ট্যান্ট ইটজাক স্ট্যার্নকেও একটি ট্রেনে উঠতে হয়। শিন্ডলার নাৎসি বাহিনীর প্রধানদের সাথে তাঁর সুসম্পর্ক কাজে লাগিয়ে স্ট্যার্নকে উদ্ধার করেন।

এক সময় ক্র্যাকোতে আগমন ঘটে এসএস ক্যাপ্টেন নরপিশাচ অ্যামন গুথ-এর। তিনি ক্র্যাকোতে “ক্র্যাকো-প্লাসজো কনসেনট্রেশন ক্যাম্প” নামে একটি কনসেনট্রেশন ক্যাম্প তৈরি করেন।  ক্যাম্পের কাজ শেষ হলে ইহুদিদের ক্যাম্পে ধরে আনার জন্য অ্যামন তাঁর বাহিনী নিয়ে সারা ক্র্যাকোতে চষে বেড়াতে শুরু করেন এবং তাঁর বাহিনী অসংখ্য ইহুদিকে নির্মমভাবে হত্যা করে। শিন্ডলার ও তাঁর স্ত্রী এমিলি পাহাড়ের উপর থেকে নাৎসি বাহিনীর এসব নির্মমতা দেখে বিস্ময়ে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েন।  শিন্ডলার অ্যামন গুথের সাথে বন্ধুত্ব তৈরি করেন এবং নানা উপায়ে কনসেনট্রেশন ক্যাম্প থেকে ইহুদি শ্রমিক সংগ্রহ করে তাঁর কারখানায় নিয়োগ দিতে শুরু করেন।  তিনি বুঝতে পারেন ক্যাম্প থেকে ইহুদিদের এনে তাঁর কারখানায় নিয়োগ দিলে তারা প্রাণে বেঁচে যাবে।  তার কাছে পর্যাপ্ত অর্থ না থাকার পরও ক্যাম্প কতৃপক্ষকে লাইটার, ঘড়ি প্রভৃতি ঘুষ হিসেবে দিয়ে ইহুদি শ্রমিকদের এনে তাঁর কারখানায় নিয়োগ দেন।  শিন্ডলার ইহুদিদের বাঁচানোর জন্য প্রাণান্তকর চেষ্টা চালিয়ে যান।

ক্র্যাকো-প্লাসজো কনসেনট্রেশন ক্যাম্পে ইহুদিদের উপর নাৎসি বাহিনীর অবর্ননীয় অত্যাচার এবং শিন্ডলারের ইহুদি শ্রমিক সংগ্রহের ঘটনা নিয়ে সিনেমার গল্প এগিয়ে যায়।

একসময় যদ্ধের গতি বদলাতে শুরু করে।  জার্মানরা ইউরোপের নানা জায়গায় আমেরিকান, রাশিয়ান, ইংলিশ বাহিনীর কাছে দখলকৃত দেশ/অঞ্চলসমূহ হারাতে শুরু করে।  পরাজয়ের আসংখ্যা বুঝতে পেরে বার্লিন থেকে অর্ডার আসে কনসেনট্রেশন ক্যাম্পের কাজ বন্ধ করে মৃত ইহুদিদের দেহাবশেষ পুড়িয়ে নিশ্চিহ্ন করে দিয়ে জীবিতদের আউশভিৎজ কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্পে পাঠিয়ে দিতে। শিন্ডলার জানেন কনসেনট্রেশন ক্যাম্পে যাওয়া মানে অবর্ননীয় অত্যাচার এবং তারপর মৃত্যু।  শিন্ডলার তাঁর কর্মীদের বাঁচানোর উদ্দেশ্যে অ্যামন গুথকে বলেন, তিনি তাঁর কর্মীদের ব্রিনলিতস-এ অবস্থিত পুরনো কারখানায় নিয়ে যেতে চান। অ্যামন প্রতিটি শ্রমিকের জন্য নির্ধারিত হারে অনেক টাকা দাবী করেন।  শিন্ডলার ও তাঁর সহকারী স্ট্যার্ন ১১০০ জনের একটি তালিকা তৈরি করেন (যেটি “শিন্ডলার্স লিস্ট” নামে পরিচিত) যাদের আউশভিৎজ-এ না পাঠিয়ে তিনি তাঁর কারখানায় নিয়ে যাবেন।  প্রত্যেকের জন্য শিন্ডলার অ্যামনকে নির্ধারিত হারে টাকা দেন।  অধিকাংশ শ্রমিক ট্রেনে নিরাপদে ব্রিনলিতস-এ পৌঁছে যায় কিন্তু ইহুদি নারী এবং শিশুদের বহনকারী ট্রেনটি ‘পেপার ওয়ার্ক মিসটেকের’ দরুন ভুলক্রমে আউশভিৎজ কনসেনট্রেশন ক্যাম্পে চলে যায়। শিন্ডলার নিজে আউশভিৎজ-এ যান এবং ক্যাম্প কমান্ডার রুডলফ হুসকে এক পটলা হীরা ঘুষ দিয়ে তাদের উদ্ধার করেন।

কিন্তু ট্রেনে উঠার সময় এসএস অফিসাররা শিশুদের আটকে দেয়। শিন্ডলার তাদের যুক্তি দেখান এই শিশুদের ছোট আঙ্গুল ৪৫ মিলিমিটারের শেল মেটাল ক্যাসিংয়ের ভিতরের অংশটি পালিশ করতে কাজে লাগে। তাঁর কথায় কাজ হয়, শিশুরা প্রাণে বেঁচে যায়। এদের সবাইকে শিন্ডলার ব্রিনলিতস-এর কারখানায় এনে নিরাপদে রাখেন। এসএস সৈন্যদের তিনি এই বলে সতর্ক করে দেন যে কোন সৈন্য যদি কারখানার কোন শ্রমিকের উপর অত্যাচার চালায় কিংবা তাদের গুলি করে তাহলে তিনি তাদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা গ্রহন করবেন।

একসময় রেডিওতে ইউরোপে জার্মানদের পরাজয় এবং সোভিয়েত রেড আর্মির জার্মানি আক্রমণের খবর প্রচারিত হয়। শিন্ডলার তাঁর কারখানার ১১০০ শ্রমিকের উদ্দেশ্যে একটি ভাষণ দেন। তিনি নিজে জার্মান নাৎসি দলের সদস্য তাই আমেরিকান ও রাশিয়ান বাহিনীর কাছে গ্রেপ্তার এড়িয়ে গা ঢাকা দেয়ার জন্য কারখানার শ্রমিকদের কাছ থেকে বিদায় নেন।

বিদায় বেলা কারখানার সমস্ত শ্রমিকের উপস্থিতিতে -সমস্ত শ্রমিকের সাক্ষরসহ একটি চিঠি শিন্ডলারকে দেয়া হয়। ইটজাক স্ট্যার্ন কারখানার একজন শ্রমিকের বাঁধানো দাঁত দিয়ে তৈরি একটি সোনার আংটি শিন্ডলারের হাতে তুলে দেন যাতে হিব্রু ভাষায় লেখা "যিনি একজনের জীবন বাঁচান তিনি সমস্ত পৃথিবীকে বাঁচান"।

শিন্ডলার বিদায় জানিয়ে স্ট্যার্নের সাথে হাত মেলানোর সময় এই বলে অনুশোচনা করেন যে তিনি আরও কিছু টাকা খরচ করে আরও মানুষকে বাঁচাতে পারতেন কিন্তু বাঁচান নি। স্ট্যার্ন তাঁকে সান্তনা দেন, “এই ১১০০ শ্রমিকের দিকে তাকিয়ে দেখুন এরা আজ আপনার জন্যই জীবিত রয়েছে।”

কিন্তু কোন কথাতেই শিন্ডলার সান্ত্বনা পান না। তিনি যে গাড়িটি ব্যবহার করেন সেটির বিনিময়ে আরও ১০ জন মানুষকে বাঁচাতে পারতেন, তিনি যে সোনার পিনটি ব্যবহার করেন সেটির বিনিময়ে আরও ২ জন মানুষকে বাঁচাতে পারতেন এসব বলে অনুশোচনা করে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন।

অতপর সকাল হওয়ার আগেই শিন্ডলার কনসেনট্রেশন ক্যাম্পের বন্দিদের পোশাক পড়ে সবার কাছ থেকে শেষবারের মত বিদায় নিয়ে সস্ত্রীক সে স্থান ত্যাগ করেন। পরদিন সোভিয়েত রেড আর্মির এক সদস্য এসে কারখানার শ্রমিকদের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। অ্যামন গুথ সোভিয়েত রেড আর্মির হাতে ধরা পড়েন এবং মানবতা বিরোধী অপরাধের জন্য তার ফাঁসি কার্যকর করা হয়।

ইহুদি না হয়েও যিনি হলোকাস্টের সময় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ইহুদিদের জীবন বাঁচিয়েছেন তাঁদের ইহুদি রাষ্ট্র ইসরাইল "রাইচাস এমং দ্যা ন্যাশন" সন্মাননায় ভূষিত করে। অস্কার শিন্ডলারের মৃত্যুর পর ইসরাইল সরকার তাঁর মৃতদেহ জার্মানি থেকে এনে তাঁকে এই সন্মাননা দিয়ে জেরুজালেমে সমাহিত করে।

শেষদিকে শিন্ডলার যেসব ইহুদিদের বাঁচিয়েছেন তাঁদের পরবর্তি প্রজন্ম জেরুজালেমে শিন্ডলারের সমাধিতে এসে একে একে শ্রদ্ধা প্রদর্শন করে এবং এর মধ্য দিয়ে সিনেমাটির ইতি ঘটে।

প্রোডাকশন

১৯৮৮ সালে সিনেমাটির অন্যতম প্রযোজক এবং পরিচালক স্টিফেন স্পিলবার্গ প্রথমে এই সিনেমাটি পরিচালনার প্রস্তাব নিয়ে যান সিডনী পোলাক ও মার্টিন স্ক্রুসেস-এর কাছে কিন্তু তাঁরা দু’জনই এই সিনেমাটি পরিচালনার প্রস্তাব সবিনয়ে ফিরিয়ে দেন। মার্টিন স্ক্রুসেস বলেন, “কোন ইহুদি পরিচালকই এই সিনেমাটি ভালো ভাবে বানাতে পারবেন”। পরে স্পিলবার্গ সিনেমাটি নিয়ে যান ইহুদি পরিচালক রোমান পোলাস্কি –এর কাছে যিনি নিজে একজন “হলোকাস্ট সারভাইবার” এবং তাঁর মা আউশভিৎজ কনসেনট্রেশন ক্যাম্পে মারা যান। কিন্তু পোলাস্কিও এই সিনেমা ফিরিয়ে দেন কারণ তখন তিনি নিজে সেই সময় “দ্যা পিয়ানিস্ট” নামের এক হলোকাস্ট সিনেমা তৈরিতে হাত দিয়েছেন। পরে স্পিলবার্গ নিজেই এই সিনেমাটি পরিচালনা করেন।

স্পেশাল ইফেক্ট তো অনেক দূর সিনেমাটিতে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের “ফ্লেভার” দেয়ার জন্য শুধুমাত্র শুরুর এবং শেষের দৃশ্য এবং লাল কোট পরিহিতা ছোট্ট শিশু ও মোমবাতি জ্বালানোর দৃশ্যটি বাদে পুরো সিনেমাটি স্পিলবার্গ সাদা-কালো ফরম্যাটে নির্মান করেন। এ সিনেমা তৈরির জন্য তিনি কোন স্টোরিবোর্ড তৈরি করেন নি। সিনেমাটি তিনি তথ্যচিত্রের মত করে তৈরি করেছেন। সিনেমাটি তৈরির সময় অনুপ্রেরণা পাওয়ার জন্য তিনি “টুইস্টেড ক্রস” (১৯৫৬) এবং “সোয়া” (১৯৮৫) নামের দুই হলোকাস্ট সিনেমা বারবার দেখতেন।

সিন্ডলার লিস্ট সিনেমাটির সংগীত পরিচালনা করেছেন জন উইলিয়াম। তাঁকে যখন সিনেমাটির সংগীত পরিচালনার কথা বলা হলো তিনি স্পিলবার্গকে বললেন, “এ সিনেমার জন্য আমার চেয়ে আরও ভালো সংগীত পরিচালক দরকার।” জবাবে স্পিলবার্গ তাঁকে বলেছিলেন, “আমি জানি কিন্তু তাঁরা সবাই মারা গেছেন”।

বিষয়বুস্তু

লাল কোট পরিহিতা শিশু : অ্যামন গুথের নেতৃত্ত্বে নাৎসি বাহিনী যখন ক্র্যাকোতে ইহুদিদের উপর নির্বিচার গণহত্যা চালায় তখন দেখা যায় লাল কোট পরিহিতা ছোট্ট একটি মেয়ে শিশু একা অসহায় ভাবে কিংকর্তব্যবিমূড় হয়ে রাস্তায় ঘুরছে। সম্ভবত তার পরিবারের সমস্ত সদস্যকে হত্যা করা হয়েছে। পুরো সিনেমায় যে ক’বার অল্প পরিমান রঙের ব্যবহার করা হয়েছে তার মধ্যে এই লাল কোট পরিহিতা শিশুটি অন্যতম এবং খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। অনেক পরে নাৎসি বাহিনী যখন ক্র্যাকো-প্লাসজো কনসেনট্রেশন ক্যাম্পের মৃত বন্দীদের লাশ বার্লিন থেকে পাওয়া অর্ডার মোতাবেক পুড়িয়ে নিশ্চিহ্ন করে দিচ্ছিল তখন দেখা যায় ট্রলিতে করে একজন সেই লাল কোট পরিহিতা শিশুটিকে নিয়ে আসছে পুড়িয়ে নিশ্চিহ্ন করে দেয়ার জন্য। এই দৃশ্যটি বিবেককে অত্যন্ত কঠিনভাবে নাড়া দেয় এই ভেবে যে, অসহায় নিষ্পাপ ওই শিশুটিও নাৎসি বাহিনীর নির্মম হত্যাকান্ডের শিকার হয়।

অভিনয়শিল্পী

শিন্ডলার্স লিস্ট সিনেমার মুখ্য অভিনেতা লিয়াম নিসন

তথ্যসূত্র

  1. British Film Board
  2. McBride 1997, পৃ. 416।
  3. McBride 1997, পৃ. 435।

বহিঃসংযোগ