শিন্ডলার্স লিস্ট
শিন্ডলার্স লিস্ট | |
---|---|
পরিচালক | স্টিভেন স্পিলবার্গ |
প্রযোজক |
|
চিত্রনাট্যকার | স্টিভেন জাল্লিয়ান |
উৎস | থমাস কেনিয়েলি কর্তৃক শিন্ডলার্স আর্ক |
শ্রেষ্ঠাংশে | |
সুরকার | জন উইলিয়ামস |
চিত্রগ্রাহক | জানুৎস কামিন্স্কি |
সম্পাদক | মাইকেল কান |
প্রযোজনা কোম্পানি | |
পরিবেশক | ইউনিভার্সাল পিকচার্স |
মুক্তি |
|
স্থিতিকাল | ১৯৫ মিনিট[১] |
দেশ | যুক্তরাষ্ট্র |
ভাষা | ইংরেজি |
নির্মাণব্যয় | $২২ মিলিয়ন [২] |
আয় | $৩২১.২ মিলিয়ন [৩] |
শিন্ডলার্স লিস্ট (ইংরেজি: Schindler's List, অনুবাদ 'শিন্ডলারের তালিকা') ১৯৯৩ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত একটি ঐতিহাসিক মার্কিন চলচ্চিত্র। চলচ্চিত্রটি সহ-প্রযোজনা ও পরিচালনা করেছেন স্টিভেন স্পিলবার্গ এবং চিত্রনাট্য লিখেছেন স্টিভেন জাল্লিয়ান। ১৯৮২ সালে বুকার পুরস্কার বিজয়ী অস্ট্রেলিয়ান লেখক থমাস কেনিয়েলি'র লেখা 'শিন্ডলার্স আর্ক' উপন্যাস অবলম্বনে চলচ্চিত্রটি নির্মাণ করা হয়েছে। জার্মান ব্যবসায়ী অস্কার শিন্ডলারের জীবনী অবলম্বনে চলচ্চিত্রটি তৈরি করা হয়েছে, তিনি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন সময় প্রচুর পোলিশ ইহুদিদের ইহুদী গণহত্যা থেকে রক্ষা করেন।
কাহিনী (সতর্কতা: এখানে কাহিনী বিষদ ভাবে বর্ণনা করা রয়েছে)
১৯৩৯ সালে জার্মান নাৎসি বাহিনী দুই সপ্তাহে পোলিশ বাহিনীকে পরাজিত করে পোল্যান্ড দখলের মধ্যদিয়ে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সূচনা হয়। সিনেমাটির গল্প শুরু হয়েছে জার্মানির পোল্যান্ড দখলের শুরুর দিনগুলোর ঘটনা নিয়ে।
গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্রে রয়েছেন অস্কার শিন্ডলার নামের এক জার্মান ব্যবসায়ী যিনি নাৎসি বাহিনীতে যোগ দিয়ে পোল্যান্ডে এসেছেন ‘যুদ্ধের সুবিধা’ কাজে লাগিয়ে ব্যবসায়িকভাবে লাভবান হওয়ার উদ্দেশ্য নিয়ে। নাৎসি এসএস বাহিনীর প্রধানদের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক তৈরি করে এবং তাদের প্রচুর টাকা ঘুষ দিয়ে পোল্যান্ডের দ্বিতীয় বৃহত্তর শহর ক্রাকাউয়ে তিনি ডিইএফ নামে একটি কারখানা তৈরি করেন।
শিন্ডলার তার কারখানায় কাজের জন্য শুধুমাত্র পোল্যান্ডের ইহুদিদের নেন। শিন্ডলার তার কারখানায় হিসাবরক্ষক হিসেবে ইৎজহাক স্টার্ন নামের এক ইহুদিকে নিয়োগ দেন, যিনি কালোবাজারী এবং ইহুদিদের ব্যবসায়িক গোষ্ঠির সাথে যোগাযোগ রেখে শিন্ডলারকে নানাভাবে সাহায্য করেন।
শিন্ডলার তার কারখানায় ইহুদিদের নিয়োগ দেন এই উদ্দেশ্যে যে, ইহুদিরা সস্তা শ্রম দেবে এবং এতে তার অনেক টাকা বেঁচে যাবে। একদিন কারখানায় নিয়োগ পাওয়া এক হাতওয়ালা এক বৃদ্ধ ইহুদি এসে শিন্ডলারের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে কারখানায় নিয়োগ দিয়ে জার্মান বাহিনীর অত্যাচার থেকে তাকে বাঁচানোর জন্য।
ইহুদিদের অসহায়ত্ব শিন্ডলারের মনে করুণার জন্ম দেয়। জার্মান বাহিনী ইহুদিদের ট্রেনে করে অনেক দূরে ইহুদি কলোনিতে পাঠাতে শুরু করে পরে যেখান থেকে তাদের পাঠানো হবে মৃত্যু শিবির কনসেনট্রেশন ক্যাম্পগুলোতে। ঘটনাচক্রে শিন্ডলারের হিসাবরক্ষক ইৎজহাক স্টার্নকেও একটি ট্রেনে উঠতে হয়। শিন্ডলার নাৎসি বাহিনীর প্রধানদের সাথে তার সুসম্পর্ক কাজে লাগিয়ে স্টার্নকে উদ্ধার করেন।
এক সময় ক্রাকাউয়ে আগমন ঘটে এসএস ক্যাপ্টেন নরপিশাচ আমোন গ্যোটের। তিনি ক্রাকাউয়ে “ক্রাকাউ-প্লাসজো কনসেনট্রেশন ক্যাম্প” নামে একটি কনসেনট্রেশন ক্যাম্প তৈরি করেন। ক্যাম্পের কাজ শেষ হলে ইহুদিদের ক্যাম্পে ধরে আনার জন্য আমোন তার বাহিনী নিয়ে সারা ক্রাকাউয়ে চষে বেড়াতে শুরু করেন এবং তার বাহিনী অসংখ্য ইহুদিকে নির্মমভাবে হত্যা করে। শিন্ডলার ও তার স্ত্রী এমিলি পাহাড়ের উপর থেকে নাৎসি বাহিনীর এসব নির্মমতা দেখে বিস্ময়ে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েন। শিন্ডলার আমোন গ্যোটের সাথে বন্ধুত্ব স্থাপন করেন এবং নানা উপায়ে কনসেনট্রেশন ক্যাম্প থেকে ইহুদি শ্রমিক সংগ্রহ করে তার কারখানায় নিয়োগ দিতে শুরু করেন। তিনি বুঝতে পারেন ক্যাম্প থেকে ইহুদিদের এনে তার কারখানায় নিয়োগ দিলে তারা প্রাণে বেঁচে যাবে। তার কাছে পর্যাপ্ত অর্থ না থাকার পরও ক্যাম্প কতৃপক্ষকে লাইটার, ঘড়ি প্রভৃতি ঘুষ হিসেবে দিয়ে ইহুদি শ্রমিকদের এনে তার কারখানায় নিয়োগ দেন। শিন্ডলার ইহুদিদের বাঁচানোর জন্য প্রাণান্তকর চেষ্টা চালিয়ে যান।
ক্রাকাউ-প্লাসজো কনসেনট্রেশন ক্যাম্পে ইহুদিদের উপর নাৎসি বাহিনীর অবর্ননীয় অত্যাচার এবং শিন্ডলারের ইহুদি শ্রমিক সংগ্রহের ঘটনা নিয়ে সিনেমার গল্প এগিয়ে যায়।
একসময় যুদ্ধের গতি বদলাতে শুরু করে। জার্মানরা ইউরোপের নানা জায়গায় মার্কিন, রুশ, ইংরেজ বাহিনীর কাছে দখলকৃত দেশ/অঞ্চলসমূহ হারাতে শুরু করে। পরাজয়ের আশঙ্কা বুঝতে পেরে বার্লিন থেকে অর্ডার আসে কনসেনট্রেশন ক্যাম্পের কাজ বন্ধ করে মৃত ইহুদিদের দেহাবশেষ পুড়িয়ে নিশ্চিহ্ন করে দিয়ে জীবিতদের আউশভিৎজ কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্পে পাঠিয়ে দিতে। শিন্ডলার জানেন কনসেনট্রেশন ক্যাম্পে যাওয়া মানে অবর্ননীয় অত্যাচার এবং তারপর মৃত্যু। শিন্ডলার তার কর্মীদের বাঁচানোর উদ্দেশ্যে আমোন গ্যোটকে বলেন, তিনি তার কর্মীদের ব্রিনলিতস-এ অবস্থিত পুরনো কারখানায় নিয়ে যেতে চান। আমোন প্রতিটি শ্রমিকের জন্য নির্ধারিত হারে অনেক টাকা দাবী করেন। শিন্ডলার ও তার সহকারী স্টার্ন ১১০০ জনের একটি তালিকা তৈরি করেন (যেটি “শিন্ডলার্স লিস্ট” বা শিন্ডলারের তালিকা নামে পরিচিত) যাদের আউশভিৎজ-এ না পাঠিয়ে তিনি তার কারখানায় নিয়ে যাবেন। প্রত্যেকের জন্য শিন্ডলার আমোনকে নির্ধারিত হারে টাকা দেন। অধিকাংশ শ্রমিক ট্রেনে নিরাপদে ব্রিনলিতস-এ পৌঁছে যায় কিন্তু ইহুদি নারী এবং শিশুদের বহনকারী ট্রেনটি পেপার ওয়ার্ক মিসটেকের দরুন ভুলক্রমে আউশভিৎজ কনসেনট্রেশন ক্যাম্পে চলে যায়। শিন্ডলার নিজে আউশভিৎজ-এ যান এবং ক্যাম্প কমান্ডার রুডলফ হুসকে এক পটলা হীরা ঘুষ দিয়ে তাদের উদ্ধার করেন।
কিন্তু ট্রেনে উঠার সময় এসএস অফিসাররা শিশুদের আটকে দেয়। শিন্ডলার তাদের যুক্তি দেখান এই শিশুদের ছোট আঙ্গুল ৪৫ মিলিমিটারের শেল মেটাল ক্যাসিংয়ের ভিতরের অংশটি পালিশ করতে কাজে লাগে। তার কথায় কাজ হয়, শিশুরা প্রাণে বেঁচে যায়। এদের সবাইকে শিন্ডলার ব্রিনলিতস-এর কারখানায় এনে নিরাপদে রাখেন। এসএস সৈন্যদের তিনি এই বলে সতর্ক করে দেন যে কোন সৈন্য যদি কারখানার কোন শ্রমিকের উপর অত্যাচার চালায় কিংবা তাদের গুলি করে তাহলে তিনি তাদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
একসময় বেতারে ইউরোপে জার্মানদের পরাজয় এবং সোভিয়েত রেড আর্মির জার্মানি আক্রমণের খবর প্রচারিত হয়। শিন্ডলার তার কারখানার ১১০০ শ্রমিকের উদ্দেশ্যে একটি ভাষণ দেন। তিনি নিজে জার্মান নাৎসি দলের সদস্য, তাই মার্কিন ও রুশ বাহিনীর কাছে গ্রেপ্তার এড়িয়ে গা ঢাকা দেয়ার জন্য কারখানার শ্রমিকদের কাছ থেকে বিদায় নেন।
বিদায় বেলা কারখানার সমস্ত শ্রমিকের উপস্থিতিতে -সমস্ত শ্রমিকের সাক্ষরসহ একটি চিঠি শিন্ডলারকে দেয়া হয়। ইৎজহাক স্টার্ন কারখানার একজন শ্রমিকের বাঁধানো দাঁত দিয়ে তৈরি একটি সোনার আংটি শিন্ডলারের হাতে তুলে দেন যাতে হিব্রু ভাষায় লেখা "যিনি একজনের জীবন বাঁচান তিনি সমস্ত পৃথিবীকে বাঁচান"।
শিন্ডলার বিদায় জানিয়ে স্টার্নের সাথে হাত মেলানোর সময় এই বলে অনুশোচনা করেন যে তিনি আরও কিছু টাকা খরচ করে আরও মানুষকে বাঁচাতে পারতেন কিন্তু বাঁচান নি। স্টার্ন তাকে সান্ত্বনা দেন, “এই ১১০০ শ্রমিকের দিকে তাকিয়ে দেখুন এরা আজ আপনার জন্যই জীবিত রয়েছে।”
কিন্তু কোন কথাতেই শিন্ডলার সান্ত্বনা পান না। তিনি যে গাড়িটি ব্যবহার করেন সেটির বিনিময়ে আরও ১০ জন মানুষকে বাঁচাতে পারতেন, তিনি যে সোনার পিনটি ব্যবহার করেন সেটির বিনিময়ে আরও ২ জন মানুষকে বাঁচাতে পারতেন এসব বলে অনুশোচনা করে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন।
অতপর সকাল হওয়ার আগেই শিন্ডলার কনসেনট্রেশন ক্যাম্পের বন্দিদের পোশাক পড়ে সবার কাছ থেকে শেষবারের মত বিদায় নিয়ে সস্ত্রীক সে স্থান ত্যাগ করেন। পরদিন সোভিয়েত রেড আর্মির এক সদস্য এসে কারখানার শ্রমিকদের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। আমোন গ্যোট সোভিয়েত রেড আর্মির হাতে ধরা পড়েন এবং মানবতা বিরোধী অপরাধের জন্য তার ফাঁসি কার্যকর করা হয়।
ইহুদি না হয়েও যারা ইহুদী গণহত্যার সময় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ইহুদিদের জীবন বাঁচিয়েছেন তাদের ইহুদি রাষ্ট্র ইসরায়েল "রাইচাস এমং দ্য নেশন" সন্মাননায় ভূষিত করে। অস্কার শিন্ডলারের মৃত্যুর পর ইসরায়েল সরকার তার মৃতদেহ জার্মানি থেকে এনে তাকে এই সন্মাননা দিয়ে জেরুজালেমে সমাহিত করে।
শেষদিকে শিন্ডলার যেসব ইহুদিদের বাঁচিয়েছেন তাদের পরবর্তী প্রজন্ম জেরুজালেমে শিন্ডলারের সমাধিতে এসে একে একে শ্রদ্ধা প্রদর্শন করে এবং এর মধ্য দিয়ে সিনেমাটির ইতি ঘটে।
অভিনয়শিল্পী
- লিয়াম নিসন - অস্কার শিন্ডলার
- বেন কিংসলি - ইৎজহাক স্টার্ন
- রেইফ ফাইঞ্জ - আমোন গ্যোট
- ক্যারোলিন গোডাল - এমিলি শিন্ডলার
- জোনাথন সিগাল - পলডেক পেফারবার্গ
- এমবেথ ডেভিডজ - হেলেন হির্সচ
- উইক্টোরিয়া ক্লোনোস্কা - ম্যালগোরজাটা গেবেল
- মার্ক ইভানির - মার্সেল গোল্ডবার্গ
- বিট্রিস ম্যাকোলা - ইনগ্রিড
- আন্দ্রেজ সেওয়ারিন - জুলিয়ান শেরনার
- ফ্রেডরিখ ফন থুন - রল্ফ জুর্দা
- জার্জি নওয়াক - বিনিয়োগকারী
- নরবার্ট ওয়েসার - আলবার্ট হুজার
- আনা মুচা - ডাঙ্কা ড্রেসনার
- আদি নিতজান - মিলা ফেফারবার্গ
- পিওটার পোল্ক - লিও রোজনার
- রামি হিউবার্গার - জোসেফ বাউ
- ইজরা দাগান রাব্বি - রাব্বি মেনাশা লেওয়ারটো
নির্মাণ
১৯৮৮ সালে সিনেমাটির অন্যতম প্রযোজক এবং পরিচালক স্টিভেন স্পিলবার্গ প্রথমে এই চলচ্চিত্রটি পরিচালনার প্রস্তাব নিয়ে যান সিডনি পোলাক ও মার্টিন স্কোরসেজির কাছে কিন্তু তারা দু’জনই এই চলচ্চিত্রটি পরিচালনার প্রস্তাব সবিনয়ে ফিরিয়ে দেন। মার্টিন স্কোরসেজি বলেন, “কোন ইহুদি পরিচালকই এই সিনেমাটি ভালো ভাবে বানাতে পারবেন”। পরে স্পিলবার্গ চলচ্চিত্রটি নিয়ে যান ইহুদি পরিচালক রোমান পোলান্স্কির কাছে যিনি নিজে একজন ইহুদী গণহত্যা থেকে বেঁচে যাওয়া ব্যক্তি এবং তার মা আউশভিৎজ কনসেনট্রেশন ক্যাম্পে মারা যান। কিন্তু পোলান্স্কিও এই চলচ্চিত্র ফিরিয়ে দেন কারণ তখন তিনি নিজে সেই সময় দ্য পিয়ানিস্ট নামের এক হলোকাস্ট চলচ্চিত্র তৈরিতে হাত দিয়েছেন। পরে স্পিলবার্গ নিজেই এই চলচ্চিত্রটি পরিচালনা করেন।
স্পেশাল ইফেক্ট তো অনেক দূর সিনেমাটিতে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের “ফ্লেভার” দেয়ার জন্য শুধুমাত্র শুরুর এবং শেষের দৃশ্য এবং লাল কোট পরিহিতা ছোট্ট শিশু ও মোমবাতি জ্বালানোর দৃশ্যটি বাদে পুরো সিনেমাটি স্পিলবার্গ সাদা-কালো ফরম্যাটে নির্মাণ করেন। এ সিনেমা তৈরির জন্য তিনি কোন স্টোরিবোর্ড তৈরি করেন নি। চলচ্চিত্রটি তিনি তথ্যচিত্রের মত করে তৈরি করেছেন। চলচ্চিত্রটি তৈরির সময় অনুপ্রেরণা পাওয়ার জন্য তিনি “টুইস্টেড ক্রস” (১৯৫৬) এবং “সোয়া” (১৯৮৫) নামের দুই হলোকাস্ট চলচ্চিত্র বারবার দেখতেন।
শিন্ডলার্স লিস্ট চলচ্চিত্রটির সংগীত পরিচালনা করেছেন জন উইলিয়াম। তাকে যখন সিনেমাটির সংগীত পরিচালনার কথা বলা হলো তিনি স্পিলবার্গকে বললেন, “এ সিনেমার জন্য আমার চেয়ে আরও ভালো সংগীত পরিচালক দরকার।” জবাবে স্পিলবার্গ তাকে বলেছিলেন, “আমি জানি কিন্তু তাঁরা সবাই মারা গেছেন”।
চলচ্চিত্রটি পরিচালনার জন্য স্পিলবার্গ কোন টাকা নেননি। টাকা দিতে চাইলে তিনি বলেন, “এ জন্য টাকা নিলে সে টাকা হবে রক্তাক্ত টাকা"।
বিষয়বস্তু
লাল কোট পরিহিতা শিশু : আমোন গ্যোটের নেতৃত্বে নাৎসি বাহিনী যখন ক্রাকাউয়ে ইহুদিদের উপর নির্বিচার গণহত্যা চালায় তখন দেখা যায় লাল কোট পরিহিতা ছোট্ট একটি মেয়ে শিশু একা অসহায় ভাবে কিংকর্তব্যবিমূড় হয়ে রাস্তায় ঘুরছে। সম্ভবত তার পরিবারের সমস্ত সদস্যকে হত্যা করা হয়েছে। পুরো সিনেমায় যে ক’বার অল্প পরিমান রঙের ব্যবহার করা হয়েছে তার মধ্যে এই লাল কোট পরিহিতা শিশুটি অন্যতম এবং খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। অনেক পরে নাৎসি বাহিনী যখন ক্র্যাকো-প্লাসজো কনসেনট্রেশন ক্যাম্পের মৃত বন্দীদের লাশ বার্লিন থেকে পাওয়া অর্ডার মোতাবেক পুড়িয়ে নিশ্চিহ্ন করে দিচ্ছিল তখন দেখা যায় ট্রলিতে করে একজন সেই লাল কোট পরিহিতা শিশুটিকে নিয়ে আসছে পুড়িয়ে নিশ্চিহ্ন করে দেয়ার জন্য। এই দৃশ্যটি বিবেককে অত্যন্ত কঠিনভাবে নাড়া দেয় এই ভেবে যে, অসহায় নিষ্পাপ ওই শিশুটিও নাৎসি বাহিনীর নির্মম হত্যাকান্ডের শিকার হয়।
পুরস্কার ও সন্মাননা
১৯৯৪ সালে শিন্ডলার্স লিস্ট শ্রেষ্ট সিনেমা, শ্রেষ্ট পরিচালক, শ্রেষ্ট সঙ্গীত পরিচালনা, শ্রেষ্ট চিত্রনাট্য, শ্রেষ্ট সিনেম্যাটোগ্রাফি, শ্রেষ্ট সম্পাদনা, শ্রেষ্ট প্রোডাকশন ডিজাইনসহ মোট ৭ টি বিভাগে একাডেমি (অস্কার পুরস্কার) পুরস্কার লাভ করে এবং ১২ টি বিভাগে মনোনয়ন লাভ করে । এ চলচ্চিত্রটিকে ২০০৭ সালে আমেরিকান ফিল্ম ইনস্টিটিউট সেরা ১০০ আমেরিকান সিনেমার মধ্যে ৯ম সেরা আমেরিকান সিনেমার স্বীকৃতি দিয়েছে।
তথ্যসূত্র
- ↑ British Film Board।
- ↑ McBride 1997, পৃ. 416।
- ↑ McBride 1997, পৃ. 435।
বহিঃসংযোগ
- অলমুভিতে শিন্ডলার্স লিস্ট (ইংরেজি)
- আমেরিকান ফিল্ম ইন্সটিটিউট ক্যাটালগে শিন্ডলার্স লিস্ট
- ইন্টারনেট মুভি ডেটাবেজে শিন্ডলার্স লিস্ট (ইংরেজি)
- বক্স অফিস মোজোতে শিন্ডলার্স লিস্ট (ইংরেজি)
- মেটাক্রিটিকে শিন্ডলার্স লিস্ট (ইংরেজি)
- রটেন টম্যাটোসে শিন্ডলার্স লিস্ট (ইংরেজি)
- ইংরেজি ভাষার চলচ্চিত্র
- ১৯৯৩-এর চলচ্চিত্র
- ১৯৯০-এর দশকের নাট্য চলচ্চিত্র
- ১৯৯০-এর দশকের যুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র
- ইউনিভার্সাল পিকচার্সের চলচ্চিত্র
- মার্কিন চলচ্চিত্র
- মার্কিন নাট্য চলচ্চিত্র
- মার্কিন মহাকাব্যিক চলচ্চিত্র
- মার্কিন যুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র
- মার্কিন সাদাকালো চলচ্চিত্র
- আংশিক রঙিন চলচ্চিত্র
- স্টিভেন স্পিলবার্গ পরিচালিত চলচ্চিত্র
- স্টিভেন স্পিলবার্গ প্রযোজিত চলচ্চিত্র
- মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় চলচ্চিত্রের তালিকাভুক্তি চলচ্চিত্র
- শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র বিভাগে একাডেমি পুরস্কার বিজয়ী
- গোল্ডেন গ্লোব পুরস্কার (সেরা নাট্য চলচ্চিত্র) বিজয়ী
- শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র বিভাগে বাফটা পুরস্কার বিজয়ী
- শ্রেষ্ঠ চিত্রগ্রহণ বিভাগে একাডেমি পুরস্কার বিজয়ী চলচ্চিত্র
- শ্রেষ্ঠ মৌলিক সুরের জন্য একাডেমি পুরস্কার বিজয়ী চলচ্চিত্র
- চলচ্চিত্রে অশ্লীলতা বিতর্ক
- ইহুদি গণহত্যার চলচ্চিত্র
- সত্য ঘটনা অবলম্বনে মহাকাব্যিক চলচ্চিত্র
- শ্রেষ্ঠ শিল্প নির্দেশনা বিভাগে একাডেমি পুরস্কার বিজয়ী চলচ্চিত্র
- শ্রেষ্ঠ পরিচালনা বিভাগে বাফটা পুরস্কার বিজয়ী চলচ্চিত্র
- শ্রেষ্ঠ পরিচালনা বিভাগে গোল্ডেন গ্লোব বিজয়ী চলচ্চিত্র
- সত্য ঘটনা অবলম্বনে নাট্য চলচ্চিত্র
- ইহুদি ও ইহুদিধর্ম সম্পর্কে চলচ্চিত্র
- জন উইলিয়ামস সুরারোপিত চলচ্চিত্র
- জার্মানির পটভূমিতে চলচ্চিত্র
- অস্ট্রেলীয় উপন্যাস অবলম্বনে চলচ্চিত্র