বিষয়বস্তুতে চলুন

আব্দুল হাদী

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
আবুল হোসেন মোহাম্মদ আব্দুল হাদী
এ এইচ এম আব্দুল হাদী (২০১৬)
রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের ১ম মেয়র
কাজের মেয়াদ
১৩ আগস্ট ১৯৮৭ – ১৫ এপ্রিল ১৯৯০
উত্তরসূরীদুরুল হুদা
ব্যক্তিগত বিবরণ
জন্ম (1930-06-06) ৬ জুন ১৯৩০ (বয়স ৯৪)
রাজশাহী, বেঙ্গল প্রেসিডেন্সি
জাতীয়তাবাংলাদেশি
রাজনৈতিক দলবাংলাদেশ আওয়ামী লীগ
দাম্পত্য সঙ্গীকাজী মনুয়ার সুলতানা
মাতাফাতেমা খাতুন
পিতাআব্দুল গফুর
শিক্ষাবিএসসি, আইন
প্রাক্তন শিক্ষার্থীরাজশাহী কলেজ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
পেশারাজনীতি

আবুল হোসেন মোহাম্মদ আব্দুল হাদী বা এ এইচ এম আব্দুল হাদী (জন্ম ৬ জুন ১৯৩০) বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের একজন রাজনীতিবিদ ও রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের প্রথম মেয়র। তিনি ১৯৭০ সালে পাকিস্তান সাধারণ পরিষদ নির্বাচনে রাজশাহী থেকে নির্বাচিত হন।[]

প্রারম্ভিক জীবন

[সম্পাদনা]

আব্দুল হাদী ১৯৩০ সালের ৬ জুন রাজশাহীতে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম আব্দুল গফুর এবং মাতা ফাতেমা খাতুন। তার দাদার নাম বুধু মন্ডল। তিনি ১৯৪৮ সালে রাজশাহী লোকনাথ স্কুল থেকে মাধ্যমিক পাশ করেন। ১৯৫২ সালে তিনি রাজশাহী কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক এবং একই কলেজ থেকে ১৯৫৪ সালে বিএসসি ডিগ্রি সম্পন্ন করেন। ১৯৫৫ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথমবারের মতো আইন বিভাগ চালু হলে তিনি সেখানে ভর্তি হন।

রাজনৈতিক জীবন

[সম্পাদনা]

আব্দুল হাদী ১৯৫৬ সালে ছাত্রাবস্থায় রাজশাহী পৌর নির্বাচনে কমিশনার হিসেবে নির্বাচিত হন। মূলত এখান থেকেই তার রাজনৈতিক জীবন শুরু হয়। পৌর কমিশনারদের ভোটে তিনি রাজশাহী পৌর ভাইস চেয়ারম্যান এবং পরবর্তিতে ১৯৫৮ সালে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৬০ সালে দেশে সামরিক আইন জারি করা হলে সামরিক বাহিনীর অধীনে তাকে জেলা পরিষদের সদস্য মনোনীত করা হয়। ১৯৬১ সালে জেলা ক্রীড়া সমিতির সাধারণ সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।

১৯৬৭ সালে আবুল হাসনাত মোহাম্মদ কামারুজ্জামানের সহযোগিতায় আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সক্রিয় হন এবং একই বছর তিনি সদর মহাকুমা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হন। ১৯৭০ সালে শেখ মুজিবুর রহমান কর্তৃক প্রাদেশিক এসেম্বলির এমপিএ মনোনীত হন এবং ১৯৭০ এর পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচনে রাজশাহী থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।[]

বাংলাদেশের তৎকালীন রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ ১৯৮৭ সালে রাজশাহী পৌর কর্পোরেশনকে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন হিসেবে পুনর্গঠন করার সিদ্ধান্ত নিলে আব্দুল হাদীকে রাজশাহী পৌর কর্পোরেশনের প্রথম প্রশাসক নির্বাচিত করেন।[] পরবর্তিতে ১৯৮৮ সালে তিনি রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের প্রথম মেয়র নির্বাচিত হন।[]

বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে অবদান

[সম্পাদনা]

১৯৭১ সালে রাজশাহীতে আব্দুল হাদীকে প্রধান করে সর্বদলীয় সংগ্রাম পরিষদ গঠন করা হয়। এছাড়াও তিনি রাজশাহীর অধীনস্থ মহাকুমা সমূহের দেখাশোনার দায়িত্বও পালন করেন।[] ১৯৭১ সালের জুন মাসে রাজশাহীতে পানিপিয়া ট্রেইনিং ক্যাম্প স্থাপন করা হলে তিনি সেখানকার ক্যাম্প ইন চার্জ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন এবং মুক্তিযোদ্ধাদের সংগঠিত করতে কাজ করেন।[]

১৯৭২ সালে স্বাধীন বাংলাদেশে বৈদেশিক সহায়তার জন্য আনিত ত্রাণসমূহ বণ্টন এবং ব্যবস্থাপনার জন্য রেড ক্রিসেন্টের আঞ্চলিক কমিটি করা হলে তিনি সেখানে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন এবং ত্রাণ বিতরন এবং ব্যবস্থাপনায় কাজ করেন।[]

ব্যক্তিগত জীবন

[সম্পাদনা]

আব্দুল হাদী ১৯৭৩ সালে রাজশাহীর প্রথম জাতীয় দৈনিক রাজশাহী বার্তা’র সম্পাদক হিসেবে কাজ করেন। ১৯৯০ সালে রাজশাহীর পাবলিক প্রসিকিউটর হিসেবে দায়িত্ব পান। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি কাজী মনুয়ার সুলতানার সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। এই দম্পতির চার সন্তান রয়েছে।

তথ্য সূত্র

[সম্পাদনা]
  1. "পূর্বতন রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ও প্রশাসক"। ২০১৬-০৪-৩০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-০৪-১৬ 
  2. রাজশাহীর ইতিহাস, ১ম খন্ড, কাজী মোহাম্দ মিছের
  3. "রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন"রাজশাহী বিভাগ। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি ও বেসিস। ৫ জানুয়ারি ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩০ ডিসেম্বর ২০১৬ 
  4. "রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন ও পরিদর্শন"রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন। রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন। সংগ্রহের তারিখ ৩০ ডিসেম্বর ২০১৬ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  5. শাহাদাৎ হোসেন, মুন্না (১৮ ডিসেম্বর ২০১৫)। "রাজশাহী মুক্ত দিবস আজ"বেঙ্গলী টাইমস। সংগ্রহের তারিখ ৩০ ডিসেম্বর ২০১৬ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  6. মনসুর আহমদ, খান (ফেব্রুয়ারি ১৯৯৪)। মুক্তিযুদ্ধে রাজশাহী (১ম সংস্করণ)। ঢাকা, বাংলাদেশ: আগামী প্রকাশনী।