টেস্ট ক্রিকেট অভিষেকে ৫ উইকেট লাভকারী ক্রিকেটারদের তালিকা
যখন একজন বোলার কোন একটি ইনিংসে পাঁচ বা ততোধিক ব্যাটসম্যানকে আউট করতে সক্ষম হন, তখন ক্রিকেটের পরিভাষায় তা ‘পাঁচ-উইকেট অর্জন’ নামে পরিচিতি পায়। পাঁচ-উইকেট অর্জনকে ‘ফাইভ-ফর’ বা ‘ফিফার’ নামেও ডাকা হয়ে থাকে।[১][২] টেস্ট ক্রিকেট খেলায় এটি একটি অন্যতম সম্পর্কযুক্ত বিষয় কিন্তু অসাধারণ অর্জন হিসেবে বিবেচনা করা হয়ে থাকে।[৩] ২২ মার্চ, ২০২০ তারিখ পর্যন্ত টেস্ট ক্রিকেট অভিষেকে বিশ্বের ১৫৬ জন ক্রিকেটার পাঁচ-উইকেট অর্জন করতে পেরেছেন। স্থায়ীভাবে টেস্ট মর্যাদাপ্রাপ্ত আয়ারল্যান্ড বাদে সবগুলো দেশের ক্রিকেটারই অভিষেকে এ অর্জনের সাথে জড়িত হয়ে রয়েছেন।[৪] তন্মধ্যে টেস্ট ক্রিকেট অভিষেকে ৫ উইকেট লাভকারী দেশের বোলারদের মধ্যে ইংল্যান্ডের সাতচল্লিশজন, অস্ট্রেলিয়ার তেত্রিশ, দক্ষিণ আফ্রিকার চব্বিশ, পাকিস্তানের এগারো, ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও নিউজিল্যান্ডের নয়, বাংলাদেশ ও ভারতের আট, শ্রীলঙ্কার তিনজন, জিম্বাবুয়ের দুইজন এবং আফগানিস্তানের একজন করে রয়েছেন।[৫]
অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটার বিলি মিডউইন্টার প্রথম বোলার হিসেবে টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে অভিষেকেই পাঁচ-উইকেট লাভের বিরল কৃতিত্ব প্রদর্শন করেন।[৪] মার্চ, ১৮৭৭ সালে মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে অনুষ্ঠিত উদ্বোধনী টেস্টের প্রথম ইনিংসে ৭৮ রানে ৫ উইকেট দখল করেন তিনি। একই টেস্টে অন্য দুই খেলোয়াড় ইংল্যান্ডের আলফ্রেড শ ৩৮/৫ এবং অস্ট্রেলীয় টম কেন্ডল ৭/৫৫ লাভ করেছিলেন। মিডউইন্টার ও কেন্ডলের অনবদ্য নৈপুণ্য অস্ট্রেলিয়া ৪৫ রানে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে জয় পায়।[৬] ১৮৯৪-৯৫ মৌসুমে সিরিজের তৃতীয় টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে আলবার্ট ট্রট ৮/৪৩ লাভ করেন। এরফলে অভিষেকে যে-কোন বোলারের বোলিং পরিসংখ্যানের তুলনায় টেস্ট অভিষেকে এটি সেরার মর্যাদা পায়।[৪][৭][৮] ছয়, তেরো এবং ছত্রিশজন বোলার অভিষেক টেস্ট ইনিংসে চার, পাঁচ ও নয়টি পৃথক দেশ থেকে যথাক্রমে আট, সাত ও ছয় উইকেট পান। টেস্টভূক্ত সকল দেশের সাতাশিজন খেলোয়াড় অভিষেকে পাঁচ উইকেট পেয়েছেন।[৭]
দক্ষিণ আফ্রিকার বিউরেন হেনড্রিক্স সর্বশেষ ক্রিকেটার হিসেবে অভিষেক টেস্টে এ কৃতিত্ব অর্জন করেন। জানুয়ারি, ২০২০ সালে জোহেন্সবার্গের ওয়ান্ডারার্স স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত টেস্টে সফরকারী ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৫/৬৪ লাভ করেছিলেন।[৯]
আফগানিস্তান
[সম্পাদনা]মার্চ, ২০২০ সাল পর্যন্ত একজন আফগান ক্রিকেটার টেস্ট ক্রিকেট অভিষেকে ৫ উইকেট লাভের কৃতিত্ব প্রদর্শন করেছেন।[১০] আফগানিস্তানে পক্ষে হামজা হোতাক প্রথম বোলার হিসেবে এ অর্জনের সাথে নিজেকে জড়িয়ে রেখেছেন। ভারতের লখনউয়ের একনা আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজের একমাত্র টেস্টের প্রথম ইনিংসে ৫/৭৪ বোলিং পরিসংখ্যান গড়েছিলেন।[১১]
নং | বোলার | তারিখ | স্থান | প্রতিপক্ষ | ইনিংস | ওভার | রান | উইকেট | ইকোনমি | ব্যাটসম্যান | ফলাফল |
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
১ | হামজা হোতাক | ২৭ নভেম্বর ২০১৯ | একনা আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম, লখনউ | ওয়েস্ট ইন্ডিজ | ২ | ২৮.৩ | ৭৪ | ৫ | ২.৫৯ | পরাজয়[১২] |
অস্ট্রেলিয়া
[সম্পাদনা]ডিসেম্বর, ২০১৬ সাল পর্যন্ত তেত্রিশজন অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটার টেস্ট ক্রিকেট অভিষেকে পাঁচ-উইকেট লাভ করেছেন।[১৩] তন্মধ্যে, টম কেন্ডল টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে সর্বপ্রথম বোলার হিসেবে পাঁচ-উইকেট পেয়েছেন।[৪] মার্চ, ১৮৭৭ সালে মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে অনুষ্ঠিত ইতিহাসের প্রথম টেস্ট খেলায় দ্বিতীয় ইনিংসে ৭/৫৫ পেয়েছিলেন। তার দলীয় সঙ্গী বিলি মিডউইন্টারও ৫/৭৮ পেয়েছিলেন যা ঐ সময়ে ঐ টেস্টে ইনিংসের সেরা বোলিং পরিসংখ্যান ছিল।[৬] ১৮৯৪-৯৫ মৌসুমে আলবার্ট ট্রট ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৮/৪৩ লাভের মাধ্যমে টেস্ট অভিষেকে সেরা বোলিং পরিসংখ্যান গড়েন।[৮][১৪] সর্বশেষ অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটার হিসেবে জোশ হজলউড এ কৃতিত্বের দাবীদার। ডিসেম্বর, ২০১৪ সালে ব্রিসবেনের গাব্বায় অনুষ্ঠিত টেস্টে সফরকারী ভারতের বিপক্ষে ৫/৬৮ লাভ করেন।[১৩][১৫]
বাংলাদেশ
[সম্পাদনা]নভেম্বর, ২০১৮ সাল পর্যন্ত সর্বমোট আটজন বাংলাদেশী ক্রিকেটার তাদের টেস্ট অভিষেকে পাঁচ-উইকেট লাভ করতে পেরেছেন। তন্মধ্যে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে পাঁচবার এবং ভারত, ইংল্যান্ড ও জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে একবার করে তারা এ কৃতিত্ব অর্জন করেছেন। নাইমুর রহমান প্রথম বাংলাদেশী হিসেবে উদ্বোধনী টেস্টেই পাঁচ-উইকেট লাভ করেন। নভেম্বর, ২০০০ সালে ঢাকার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে সফরকারী ভারতের বিপক্ষে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশের উদ্বোধনী টেস্টে তিনি ৬/১৩২ পরিসংখ্যান গড়েন।
সাম্প্রতিককালে নাঈম হাসান এ কৃতিত্বের অধিকারী হয়েছেন। চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে সফরকারী ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে নভেম্বর, ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত সিরিজের প্রথম টেস্টে তিনি ৬১ রান খরচায় পাঁচ-উইকেট পান। তবে, নভেম্বর, ২০১২ সালে ঢাকার শের-ই-বাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে সফরকারী ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে অভিষেকে সেরা বোলিং করেন সোহাগ গাজী। তিনি ৭৪ রানের বিনিময়ে ছয় উইকেট তুলে নেন। সর্বমোট পাঁচজন খেলোয়াড় অভিষেক টেস্টে ছয় উইকেট পেয়েছেন।[১৬]
ইংল্যান্ড
[সম্পাদনা]নভেম্বর, ২০১৮ সাল পর্যন্ত সাতচল্লিশজন ইংরেজ ক্রিকেটার তাদের টেস্ট ক্রিকেট অভিষেকে পাঁচ-উইকেট সংগ্রহ করতে পেরেছেন।[১৭] প্রথম ইংরেজ ক্রিকেটার হিসেবে রয়েছেন আলফ্রেড শ। মার্চ, ১৮৭৭ সালে মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে অনুষ্ঠিত খেলায় তিনি তার টেস্ট অভিষেক ঘটান। ইতিহাসের উদ্বোধনী টেস্টে তিনি ৫/৩৮ পেয়েছিলেন। তার এ সাফল্য ম্লান হয়ে যায় ইংল্যান্ডের পরাজয়ের মধ্য দিয়ে। ঐ একই টেস্টে আরও দুইজন অস্ট্রেলীয় বোলার ফিফার লাভ করেছিলেন।[৬] ডমিনিক কর্ক ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তার টেস্ট অভিষেকে ৭/৪৩ পেয়েছিলেন। ১৯৯৫ সালে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে তার এ বোলিং পরিসংখ্যান অভিষেকে সেরা বোলিং। [১৮][১৯] সাম্প্রতিককালে টবি রোল্যান্ড-জোন্স এ কৃতিত্বের অধিকারী। জুলাই, ২০১৭ সালে লন্ডনের ওভালে দক্ষিণ আফ্রিকাল বিপক্ষে ৫/৫৭ পেয়েছিলেন তিনি।[২০]
ভারত
[সম্পাদনা]ডিসেম্বর, ২০১৬ সাল পর্যন্ত সর্বমোট আটজন ভারতীয় টেস্ট ক্রিকেটার চারটি পৃথক দেশের বিপক্ষে তাদের অভিষেক টেস্টে পাঁচ-উইকেট লাভের গৌরব অর্জন করেন। তন্মধ্যে অস্ট্রেলিয়া ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তিনবার করে এবং ইংল্যান্ড ও পাকিস্তানের বিপক্ষে একবার করে এ কৃতিত্বের অধিকারী হন।[২১] প্রথম ভারতীয় খেলোয়াড় হিসেবে মোহাম্মদ নিসার তার টেস্ট অভিষেকে পাঁচ-উইকেট পেয়েছেন। জুন, ১৯৩২ সালে স্বাগতিক ইংল্যান্ডের বিপক্ষে লর্ডস ক্রিকেট গ্রাউন্ডে তার বোলিং পরিসংখ্যান ছিল ৫/৯৩।[২২] জানুয়ারি, ১৯৮৮ সালে নরেন্দ্র হিরওয়ানি সফরকারী ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে মাদ্রাজের এম. এ. চিদাম্বরম স্টেডিয়ামে ৬১ রানে ৮ উইকেট পান। তার এ বোলিং পরিসংখ্যান যে-কোন ভারতীয় বোলারের চেয়ে টেস্ট অভিষেকে সেরা কীর্তিগাঁথা। এছাড়াও একমাত্র ভারতীয় হিসেবে ইনিংসে তিনি অভিষেকে আট উইকেট পেয়েছেন। অন্য তিনজন তাদের টেস্ট অভিষেকে ছয় উইকেট তুলে নিয়েছেন। সর্বশেষ অর্জন হিসেবে মোহাম্মদ শমী একই দলের বিপক্ষে কলকাতার ইডেন গার্ডেন্সে এ কীর্তিগাঁথায় সম্পৃক্ত হন। তার বোলিং পরিসংখ্যান ছিল ৫/৪৭।[২৩]
নিউজিল্যান্ড
[সম্পাদনা]নভেম্বর, ২০১৮ সাল পর্যন্ত সর্বমোট নয়জন নিউজিল্যান্ডীয় ক্রিকেটার তাদের টেস্ট ক্রিকেট অভিষেকে পাঁচ-উইকেট লাভের গৌরবগাঁথা রচনা করেছেন।[২৪] ঐ পাঁচ-উইকেটগুলো ছয়টি পৃথক দেশের বিপক্ষে এসেছে। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তিনবার এবং ভারত, দক্ষিণ আফ্রিকা, শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তান ও জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে একবার হয়। প্রথম নিউজিল্যান্ডীয় বোলার হিসেবে ফেন ক্রেসওয়েল এ সম্মাননায় অভিষিক্ত হন। ১৯৪৯ সালে ওভালে স্বাগতিক ইংল্যান্ডের বিপক্ষে নিজের অভিষেক টেস্টে তার এই ফিফারটি এসেছে। এছাড়াও, ক্রেসওয়েল, অ্যালেক্স মইর ও কলিন ডি গ্র্যান্ডহোম - এ তিন নিউজিল্যান্ডীয় প্রত্যেকেই তাদের অভিষেক টেস্টে ছয় উইকেট পেয়েছিলেন। সর্বশেষ ক্রিকেটার হিসেবে এজাজ প্যাটেল নভেম্বর, ২০১৮ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে আবুধাবির জায়েদ স্পোর্টস সিটি স্টেডিয়ামে তিনি ৫/৫৯ পেয়েছিলেন।[২৫]
পাকিস্তান
[সম্পাদনা]নভেম্বর, ২০১৮ সাল পর্যন্ত সর্বমোট এগারোজন পাকিস্তানি টেস্ট ক্রিকেটার সাতটি ভিন্ন দেশের বিপক্ষে তাদের টেস্ট অভিষেকে পাঁচ-উইকেট পেয়েছেন। তন্মধ্যে, তিনবার নিউজিল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়া এবং একবার করে বাংলাদেশ, ইংল্যান্ড, ভারত, দক্ষিণ আফ্রিকা ও জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে করেছেন।[২৬]
প্রথম পাকিস্তানি খেলোয়াড় হিসেবে আরিফ বাট তার টেস্ট অভিষেকে এ কৃতিত্ব অর্জন করেন। ১৯৬৪ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে তিনি ৬/৮৯ পেয়েছেন।[২৭] ১৯৯৬ সালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে মোহাম্মদ জাহিদ করেছিলেন ৭/৬৬ যা টেস্ট অভিষেকে যে-কোন পাকিস্তানির সেরা বোলিং পরিসংখ্যান। দুইজন পাকিস্তানি বোলার সাত উইকেট পেয়েছেন। এছাড়াও তিনজন বোলার ছয় উইকেট সংগ্রহ করেছেন। সাম্প্রতিককালে বিলাল আসিফ এ কৃতিত্বের অধিকারী। ২০১৮ সালে দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে তার বোলিং পরিসংখ্যান ছিল ৬/৩৬।[২৬]
দক্ষিণ আফ্রিকা
[সম্পাদনা]নভেম্বর, ২০১৮ সাল পর্যন্ত তেইশজন দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেটার তাদের টেস্ট ক্রিকেট অভিষেকে পাঁচ-উইকেট লাভের কীর্তিগাথা রচনা করেন। তন্মধ্যে ১৭জন বোলারই বর্ণবৈষম্যবাদের কারণে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে নিষিদ্ধ হবার পূর্বে করেছিলেন। পাঁচ-উইকেট লাভ হয়েছে পৃথক ছয়টি প্রতিপক্ষের বিপক্ষে। ধারাবাহিকভাবে ১৪-বার ইংল্যান্ডের বিপক্ষে হবার পর তিনবার নিউজিল্যান্ড, দুইবার করে অস্ট্রেলিয়া ও ভারত এবং একবার করে পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে এসেছে।
প্রথম দক্ষিণ আফ্রিকান হিসেবে আলবার্ট রোজ-ইন্স পাঁচ-উইকেট পেয়েছেন। ১৮৮৯ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তিনি তার টেস্ট অভিষেকে ফিফার পেয়েছেন। ১৯৯১ সালে প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেটে প্রত্যাবর্তনের পর ল্যান্স ক্লুজনার প্রথম পাঁচ-উইকেট পান। ক্লুজনারের ভারতের বিপক্ষে ৮/৬৪ লাভ যে-কোন দক্ষিণ আফ্রিকানের সেরা অভিষেক বোলিং পরিসংখ্যান। দক্ষিণ আফ্রিকানদের মধ্যে তিনিই একমাত্র অভিষেক টেস্টে আট উইকেট পেয়েছেন। সাত ও ছয় উইকেট পেয়েছেন যথাক্রমে চার ও ছয়জন দক্ষিণ আফ্রিকান। লুঙ্গি এনগিডি সর্বশেষ ক্রিকেটার হিসেবে ফিফার পেয়েছেন। জানুয়ারি, ২০১৮ সালে ভারতের বিপক্ষে তার অভিষেক টেস্টে বোলিং পরিসংখ্যান ছিল ৬/৩৯।[২৮]
শ্রীলঙ্কা
[সম্পাদনা]জুন, ২০১৯ সাল পর্যন্ত সর্বমোট চারজন শ্রীলঙ্কান ক্রিকেটার তাদের টেস্ট অভিষেকে পাঁচ-উইকেট লাভ করেছেন। কৌসলা কুরুপ্পুয়ারাচ্চি ও উপুল চন্দনা - এ দু’জন পাকিস্তানের বিপক্ষে এবং আকিলা ধনঞ্জয় বাংলাদেশ ও লাসিথ এম্বুলদেনিয়া দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে তাদের টেস্ট অভিষেকে পাঁচ-উইকেট পেয়েছেন। তন্মধ্যে কুরুপ্পুয়ারাচ্চি ১৯৮৬ সালে কলম্বো ক্রিকেট ক্লাব মাঠ ও চন্দনা ১৯৯৮-৯৯ সালের এশিয়ান টেস্ট চ্যাম্পিয়নশীপের খেলায় ঢাকার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে লাভ করেন। তবে চন্দনা’র ৬/১৭৯ দলের ইনিংস পরাজয় রুখতে পারেনি। এমবালদেনিয়া খেলার তৃতীয় ইনিংসে ৫/৬৬ পান।[২৯]
নং | বোলার | তারিখ | মাঠ | প্রতিপক্ষ | ইনিংস | ওভার | রান | উইঃ | ইকোনোমি | ব্যাটসম্যান | ফলাফল |
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
১ | কৌসলা কুরুপ্পুয়ারাচ্চি | ১৪ মার্চ ১৯৮৬ | কলম্বো ক্রিকেট ক্লাব মাঠ | পাকিস্তান | ১ | ১৪.৫ | ৪৪ | ৫ | ২.৯৬ | জয়[৩০] | |
২ | উপুল চন্দনা | ১২ মার্চ ১৯৯৯ | বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়াম, ঢাকা | পাকিস্তান | ২ | ৪৭.৫ | ১৭৯ | ৬ | ৩.৭৪ | পরাজয়[৩১] | |
৩ | আকিলা ধনঞ্জয় | ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ | শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়াম, ঢাকা | বাংলাদেশ | ৪ | ৫ | ২৪ | ৫ | ৪.৮০ | জয়[৩২] | |
৪ | লাসিথ এম্বুলদেনিয়া | ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ | কিংসমিড ক্রিকেট গ্রাউন্ড, ডারবান | দক্ষিণ আফ্রিকা | ৩ | ২৬ | ৬৬ | ৫ | ২.৫৩ | জয়[৩৩] | |
৫ | প্রবীন জয়াবিক্রমা | ২৯ এপ্রিল ২০২১ | পাল্লেকেলে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম, ক্যান্ডি | বাংলাদেশ | ৩ | ৩২ | ৯২ | ৬ | ২.৮৬ | নির্ধারিত হয়নি [৩৪] |
ওয়েস্ট ইন্ডিজ
[সম্পাদনা]ডিসেম্বর, ২০১৬ সাল পর্যন্ত ওয়েস্ট ইন্ডিজের নয়জন ক্রিকেটার পাঁচটি ভিন্ন প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে তাদের টেস্ট অভিষেকে পাঁচ-উইকেট পেয়েছেন। তন্মধ্যে চারবার ইংল্যান্ড, দুইবার ভারত ও একবার করে অস্ট্রেলিয়া, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে করেছেন।[৩৫] প্রথম ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান হিসেবে হাইঞ্জ জনসন তার টেস্ট অভিষেকে পাঁচ-উইকেট পেয়েছেন। মার্চ, ১৯৪৮ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে এ কীর্তিগাঁথা রচনা করেন ৫/৪১ বোলিং পরিসংখ্যান করে।[৩৬] ১৯৫০ সালে আল্ফ ভ্যালেন্টাইন ওল্ড ট্রাফোর্ডে ৮/১০৪ করেন যা অভিষেকে যে-কোন ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান বোলারের সেরা বোলিং। ওয়েস্ট ইন্ডিজের পক্ষে একমাত্র তিনিই আট-উইকেট পেয়েছেন। ড্যারেন স্যামি ও ফ্রাঙ্কলিন রোজ তাদের টেস্ট অভিষেকে যথাক্রমে সাত ও ছয় উইকেট পান। সাম্প্রতিককালে ফিদেল এডওয়ার্ডস এ সম্মাননায় নিজেকে যুক্ত করেছেন। ২০০৩ সালে জ্যামাইকার সাবিনা পার্কে সফরকারী শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৬/১২০ লাভ করেন।[৩৫]
জিম্বাবুয়ে
[সম্পাদনা]২০১৪ সাল পর্যন্ত অ্যান্ডি ব্লিগনট ও জন নিয়ুম্বু - এ দুইজন জিম্বাবুইয়ান ক্রিকেটার তাদের টেস্ট অভিষেকে পাঁচ-উইকেট লাভের কীর্তিগাঁথা রচনা করেন। ব্লিগনটের পাঁচ-উইকেট আসে সফরকারী বাংলাদেশের বিপক্ষে। এপ্রিল, ২০০১ সালে বুলাওয়ের কুইন্স স্পোর্টস ক্লাবে অনুষ্ঠিত ঐ টেস্টে তার দল ইনিংস ও ৩২ রানে জয় পায়।[৩৭] আগস্ট, ২০১৪ সালে হারারে স্পোর্টস ক্লাবে সফরকারী দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে নিয়ম্বু নিজের পাঁচ-উইকেট তুলে নেন।
নং | বোলার | তারিখ | মাঠ | প্রতিপক্ষ | ইনিংস | ওভার | রান | উইঃ | ইকোনোমি | ব্যাটসম্যান | ফলাফল |
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
১ | অ্যান্ডি ব্লিগনট | ১৯ এপ্রিল ২০০১ | কুইন্স স্পোর্টস ক্লাব, বুলাওয়ে | বাংলাদেশ | ১ | ২৩.৩ | ৭৩ | ৫ | ৩.১০ | জয়[৩৮] | |
২ | জন নিয়ুম্বু | ৯ আগস্ট ২০১৪ | হারারে স্পোর্টস ক্লাব, হারারে | দক্ষিণ আফ্রিকা | ১ | ৪৯.৩ | ১৫৭ | ৫ | ৩.১৭ | পরাজয়[৩৯] |
অভিষেকে দুইবার পাঁচ-উইকেট প্রাপ্তি
[সম্পাদনা]মার্চ, ২০২০ সাল পর্যন্ত মাত্র নয়জন ক্রিকেটার তাদের টেস্ট অভিষেকে উভয় ইনিংসে পাঁচ-উইকেট পেয়েছিলেন। তন্মধ্যে, বিখ্যাত ইংরেজ ক্রিকেটার ফ্রেড মার্টিন প্রথমবারের মতো এ কীর্তিগাঁথায় সম্পৃক্ত হন।[৪০] ১৮৯০ সালের অ্যাশেজ সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে তার এ অর্জনটি জড়িত ছিল।[৪১] প্রথম ইনিংসে ৬/৫০ ও দ্বিতীয় ইনিংসে ৬/৫২ লাভ করেন তিনি। ভারতীয় খেলোয়াড় নরেন্দ্র হিরওয়ানি সর্বশেষবারের মতো তার টেস্ট অভিষেকের উভয় ইনিংসে এ সাফল্য পান।[৪০] ১৯৮৭-৮৮ মৌসুমে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে সিরিজের চতুর্থ টেস্টে ৮/৬১ ও ৯/৭২ পেয়েছিলেন। এছাড়াও তার এ বোলিং পরিসংখ্যানটি অভিষেকে যে-কোন বোলারের সেরা হিসেবে রয়েছে।[৪২]
সূত্র তালিকা
[সম্পাদনা]- ↑ Buckle, Greg (৩০ এপ্রিল ২০০৭)। "Pigeon's almost perfect sendoff"। Canberra Times। ১৫ আগস্ট ২০০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩০ অক্টোবর ২০০৯।
McGrath didn't get the five-for that he had hoped for...
- ↑ "Swinging it for the Auld Enemy – An interview with Ryan Sidebottom"। The Scotsman। ১৭ আগস্ট ২০০৮। সংগ্রহের তারিখ ৩০ অক্টোবর ২০০৯।
... I'd rather take fifers (five wickets) for England ...
- ↑ Pervez, M. A. (২০০১)। A Dictionary of Cricket। Orient Blackswan। পৃষ্ঠা 31। আইএসবিএন 978-81-7370-184-9।
- ↑ ক খ গ ঘ "Statistics/Statsguru/Test matches/Bowling records/Overall figures (by years)"। ESPNcricinfo। সংগ্রহের তারিখ ৭ সেপ্টেম্বর ২০১৪।
- ↑ "Bowling records: Test matches"। ESPNcricinfo। সংগ্রহের তারিখ ১১ আগস্ট ২০১৪।
- ↑ ক খ গ "1st Test: Australia v England at Melbourne, Mar 15–19, 1877"। ESPNcricinfo। সংগ্রহের তারিখ ১৩ ডিসেম্বর ২০১১।
- ↑ ক খ "Statistics/Statsguru/Test matches/Bowling records/Overall figures"। ESPNcricinfo। ৫ অক্টোবর ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ ডিসেম্বর ২০১১।
- ↑ ক খ "3rd Test: Australia v England at Adelaide, Jan 11–15, 1895"। ESPNcricinfo। সংগ্রহের তারিখ ১৩ ডিসেম্বর ২০১১।
- ↑ "Statistics/Statsguru/Test matches/Bowling records/Overall figures"। ESPNcricinfo। সংগ্রহের তারিখ ২৬ জানুয়ারি ২০২০।
- ↑ "Bowling records: Test matches (Afghanistan)"। ESPNcricinfo। সংগ্রহের তারিখ ২৮ নভেম্বর ২০১৯।
- ↑ "Brooks, Cornwall put West Indies in sight of big win"। International Cricket Council। সংগ্রহের তারিখ ২৮ নভেম্বর ২০১৯।
- ↑ "Only Test, West Indies tour of India at Lucknow, Nov 27 - Dec 1 2019"। ESPNcricinfo। সংগ্রহের তারিখ ২৮ নভেম্বর ২০১৯।
- ↑ ক খ "Bowling records: Test matches (Australia)"। ESPNcricinfo। সংগ্রহের তারিখ ১৯ ডিসেম্বর ২০১১।
- ↑ "Statistics/Statsguru/Test matches/Bowling records/By year of match start (Australia)"। ESPNcricinfo। সংগ্রহের তারিখ ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৩।
- ↑ "India tour of Australia and New Zealand, 2nd Test: Australia v India at Brisbane, Dec 17-21, 2014"। ESPNcricinfo। সংগ্রহের তারিখ ১৮ ডিসেম্বর ২০১৪।
- ↑ "Bowling records: Test matches (Bangladesh)"। ESPNcricinfo। সংগ্রহের তারিখ ১৯ ডিসেম্বর ২০১১।
- ↑ "Bowling records: Test matches (England)"। ESPNcricinfo। সংগ্রহের তারিখ ১৯ ডিসেম্বর ২০১১।
- ↑ "Statistics/Statsguru/Test matches/Bowling records/By year of match start (England)"। ESPNcricinfo। সংগ্রহের তারিখ ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৩।
- ↑ "The Wisden Trophy – 2nd Test: England v West Indies at London, Jun 22–26, 1972"। ESPNcricinfo। সংগ্রহের তারিখ ১৩ ডিসেম্বর ২০১১।
- ↑ "3rd Test, South Africa tour of England at London, Jul 27 – Jul 31"। ESPNcricinfo। সংগ্রহের তারিখ ৩১ জুলাই ২০১৭।
- ↑ "Bowling records: Test matches (India)"। ESPNcricinfo। সংগ্রহের তারিখ ১৯ ডিসেম্বর ২০১১।
- ↑ "Statistics / Statsguru / Test matches / Bowling records / By year of match start"। ESPNcricinfo। সংগ্রহের তারিখ ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৩।
- ↑ "Bowling records: Test matches (India)"। ESPNcricinfo। সংগ্রহের তারিখ ৮ নভেম্বর ২০১৩।
- ↑ "Bowling records: Test matches (New Zealand)"। ESPNcricinfo। সংগ্রহের তারিখ ১৮ নভেম্বর ২০১৬।
- ↑ "Bowling records: Test matches (New Zealand)"। ESPNcricinfo। সংগ্রহের তারিখ ১৯ ডিসেম্বর ২০১১।
- ↑ ক খ "Bowling records: Test matches (Pakistan)"। ESPNcricinfo। সংগ্রহের তারিখ ১৯ ডিসেম্বর ২০১১।
- ↑ "Statistics / Statsguru / Test matches / Bowling records / By year of match start"। ESPNcricinfo। সংগ্রহের তারিখ ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৩।
- ↑ "Bowling records: Test matches (South Africa)"। ESPNcricinfo। সংগ্রহের তারিখ ১৭ জানুয়ারি ২০১৮।
- ↑ "Bowling records: Test matches (Sri Lanka)"। ESPNcricinfo। সংগ্রহের তারিখ ১৫ জুন ২০১৯।
- ↑ "2nd Test: Sri Lanka v Pakistan at Colombo (CCC), Mar 14–18, 1986"। ESPNcricinfo। সংগ্রহের তারিখ ১৯ ডিসেম্বর ২০১১।
- ↑ "Final: Pakistan v Sri Lanka at Dhaka, Mar 12–15, 1999"। ESPNcricinfo। সংগ্রহের তারিখ ১৯ ডিসেম্বর ২০১১।
- ↑ "Bangladesh v Sri Lanka at Dhaka, Feb 8-12, 2018"। ESPNcricinfo। সংগ্রহের তারিখ ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৮।
- ↑ "1st Test, Sri Lanka tour of South Africa at Durban, Feb 13-17 2019"। ESPNcricinfo। সংগ্রহের তারিখ ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯।
- ↑ "2nd Test, Kandy, Apr 29 - May 3 2021, Bangladesh tour of Sri Lanka (Angelo Mathews 1*, Dimuth Karunaratne 13*, Mehidy Hasan Miraz 1/7) - Stumps, SL vs BDESH, 2nd Test, day 3, live score, 2021"। ESPNcricinfo (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ১ মে ২০২১।
- ↑ ক খ "Bowling records: Test matches (West Indies)"। ESPNcricinfo। সংগ্রহের তারিখ ১৯ ডিসেম্বর ২০১১।
- ↑ "Statistics / Statsguru / Test matches / Bowling records / By year of match start"। ESPNcricinfo। সংগ্রহের তারিখ ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৩।
- ↑ "Bowling records: Test matches (Zimbabwe)"। ESPNcricinfo। সংগ্রহের তারিখ ১৯ ডিসেম্বর ২০১১।
- ↑ "1st Test: Zimbabwe v Bangladesh at Bulawayo, Apr 19–22, 2001"। ESPNcricinfo। সংগ্রহের তারিখ ১৯ ডিসেম্বর ২০১১।
- ↑ "Only Test: Zimbabwe v South Africa at Harare, Aug 9-13, 2014"। ESPNcricinfo। সংগ্রহের তারিখ ১১ আগস্ট ২০১৪।
- ↑ ক খ "Statistics/Statsguru/Test matches/Bowling records/Overall figures (two fifers on debut)"। ESPNcricinfo। ১১ আগস্ট ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ ডিসেম্বর ২০১১।
- ↑ "Australia tour of England, 1890: The Ashes – 2nd Test"। ESPNcricinfo। সংগ্রহের তারিখ ১৯ ডিসেম্বর ২০১১।
- ↑ "Statistics/Statsguru/Test matches/Bowling records/Overall figures (best bowling performance in a match on Test debut)"। ESPNcricinfo। ২৭ অক্টোবর ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৯ ডিসেম্বর ২০১১।