বিষয়বস্তুতে চলুন

বিমলাকান্ত রায়চৌধুরী

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
বিমলাকান্ত রায়চৌধুরী
জন্ম(১৯০৯-১২-২৬)২৬ ডিসেম্বর ১৯০৯
রংপুর, বেঙ্গল প্রেসিডেন্সি, ব্রিটিশ ভারত (বর্তমানে বাংলাদেশ)
মৃত্যু৫ জুলাই ১৯৮০(1980-07-05) (বয়স ৭০)
ধরনহিন্দুস্তানি শাস্ত্রীয় সংগীত
পেশাকণ্ঠশিল্পী, সংগীতজ্ঞ
বাদ্যযন্ত্রসুরবাহার, সেতার
কার্যকাল১৯৩১ –১৯৮০

বিমলাকান্ত রায়চৌধুরী (২৬ ডিসেম্বর ১৯০৯ - ৫ জুলাই, ১৯৮০) ছিলেন একজন বিশিষ্ট ভারতীয় বাঙালি সঙ্গীত, সেতারসুরবাহার বাদ্যশিল্পী। তার রচিত ভারতীয় সঙ্গীতকোষ গ্রন্থটি সঙ্গীত নাটক অকাদেমি থেকে পুরস্কৃত হয়। []

জন্ম ও সঙ্গীতশিক্ষা জীবন

[সম্পাদনা]

বিমলাকান্ত রায়চৌধুরীর জন্ম ১৯০৯ খ্রিস্টাব্দের ২৬ ডিসেম্বর অবিভক্ত বাংলার অধুনা বাংলাদেশের রংপুরে। পিতা ব্রজেন্দ্রকান্ত রায়চৌধুরী ছিলেন রংপুরের ভিতরবন্ধের জমিদার এবং মাতা হেমন্তবালা দেবী ছিলেন সঙ্গীতবিদ ব্রজেশকিশোর রায়চৌধুরীর কন্যা এবং সুলেখিকা। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সঙ্গে চিঠিপত্রের মাধ্যমে তার দীর্ঘদিন যোগাযোগ ছিল। বাড়ির সাংস্কৃতিক ও সাঙ্গীতিক পরিবেশে প্রথাগত শিক্ষার সঙ্গে বিমলাকান্ত সঙ্গীতের শিক্ষা নিয়েছিলেন। ১৯২৪ খ্রিস্টাব্দে তিনি শীতলচন্দ্র মুখোপাধ্যায়ের কাছে এসরাজ, শীতলকৃষ্ণ ঘোষের কাছে ধ্রপদ ও খেয়াল, আমীর খানের কাছে সরোদ শিখতে শুরু করেন। শেষে এনায়েত খানের শিষ্যত্ব গ্রহণ করেন। এছাড়াও, তিনি তার মামা বীরেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরীর কাছেও ধ্রুপদ ও খেয়াল শেখেন।[] ১৯৩১ খ্রিস্টাব্দে ইন্টার কলেজিয়েট সঙ্গীত প্রতিযোগিতায় সেতার বাদনে বিমলাকান্ত প্রথম হন।[]

কর্মজীবন

[সম্পাদনা]

১৯৩২ খ্রিস্টাব্দে বি.এ পাশের পর তিনি গৌরীপুরে মাতামহের কাছে যান এবং তার পরামর্শে পণ্ডিত কেদারনাথ সাংখ্যতীর্থ ও কালীপুরের জ্ঞানদাকান্ত লাহিড়ী চৌধুরীর সহায়তায় সংস্কৃতে রচিত শার্ঙ্গদেবের সঙ্গীতরত্নাকর গ্রন্থ বাংলায় অনুবাদ করেন। ১৯৩২ খ্রিস্টাব্দ থেকেই তিনি আকাশবাণীর সঙ্গে যুক্ত হন। ১৯৩৮ খ্রিস্টাব্দে গুরু পণ্ডিত এনায়েত খাঁর মৃত্যু হলে ছাত্রদের সেতার শেখাতে শুরু করেন এবং ১৯৪৮ খ্রিস্টাব্দে ইমদাদখানি স্কুল অফ সেতার প্রতিষ্ঠা করেন। [] ১৯৬৪ খ্রিস্টাব্দে তিনি জার্মানির কোলন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বক্তৃতা ও সঙ্গীত পরিবেশনের জন্য আমন্ত্রিত হন। পরে ইউরোপের নানা স্থানে সঙ্গীত পরিবেশন করেন। ১৯৬৭ খ্রিস্টাব্দ হতে তিনি কলকাতার বিড়লা আকাদেমি অফ আর্ট অ্যান্ড কালচার সেন্টারে সেতার ও সুরবাহারের অধ্যাপক ছিলেন। [] তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গীত অধ্যয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান ছিলেন। []

রচনা সমূহ-

হিন্দিতে রচিত সঙ্গীতের রাগ বিষয়ক গ্রন্থ রাগ ব্যাকরণ প্রথম 'ভারতীয় জ্ঞানপীঠ' প্রকাশ করে। []

তার রচিত দ্য ডিক্সনারি অফ হিন্দুস্থানী ক্লাসিক্যাল মিউজিক গ্রন্থটির বাংলা সংস্করণ ভারতীয় সঙ্গীতকোষ গ্রন্থটি সঙ্গীত নাটক অকাদেমি থেকে পুরস্কৃত হয়।[]

তাছাড়া, বিমলাকান্ত ছিলেন প্রথম শ্রেণীর কারুশিল্পী, অঙ্কনশিল্পী, জ্যোতির্বিদ এবং শৌখিন জাদুকর। তিনি বিমল দাশগুপ্তর কাছ থেকে ভেন্টিলোকুইজম তথা মায়াস্বর শিখেছিলেন। বিমলাকান্ত লন্ডন ম্যাজিক সার্কেলের আজীবন সদস্য এবং ইন্ডিয়ান ম্যাজিক সার্কেলের সম্পাদক ছিলেন। ম্যাজিকে তার জনপ্রিয় খেলাগুলি ছিল- 'দ্য কার্ড ইন ট্রাঙ্গল', 'এ লেসন ইন্ডিয়ান ম্যাজিক', 'দ্য ফরগটন গেস্ট', 'মঞ্চে দাঁড়িয়ে মুহূর্তে পোষাক পরিবর্তন' ইত্যাদি।[]

জীবনাবসান

[সম্পাদনা]

বিমলাকান্ত রায়চৌধুরী ১৯৮০ খ্রিস্টাব্দের ৫ জুলাই পরলোক গমন করেন।

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. সুবোধ সেনগুপ্ত ও অঞ্জলি বসু সম্পাদিত, সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান, প্রথম খণ্ড, সাহিত্য সংসদ, কলকাতা, নভেম্বর ২০১৩, পৃষ্ঠা ৪৮৬, আইএসবিএন ৯৭৮-৮১-৭৯৫৫-১৩৫-৬
  2. "The Dictionary of Hundustani Classical Music"। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৭-২০ 
  3. রায়চৌধুরী, বিমলাকান্ত (২০১৪)। রাগ ব্যাকরণ (হিন্দি ভাষায়)। বাণী প্রকাশন। আইএসবিএন 978-81-7055-542-1