মকবুল আলী
মকবুল আলী | |
---|---|
মৃত্যু | ১৯৯৯ |
জাতীয়তা | বাংলাদেশী |
নাগরিকত্ব | পাকিস্তান (১৯৭১ সালের পূর্বে) বাংলাদেশ |
পরিচিতির কারণ | বীর প্রতীক |
মকবুল আলী (জন্ম: অজানা - মৃত্যু: ১৯৯৯) বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। স্বাধীনতা যুদ্ধে তার সাহসিকতার জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে বীর প্রতীক খেতাব প্রদান করে।[১]
জন্ম ও শিক্ষাজীবন
[সম্পাদনা]মকবুল আলীর জন্ম সিলেট জেলার ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার নিজ ছত্তিশ গ্রামে। তার বাবার নাম মন্তাই আলী এবং মায়ের নাম জুবেদা খাতুন। তার স্ত্রীর নাম শরিফুন নেছা। তার দুই ছেলে, তিন মেয়ে। [২]
কর্মজীবন
[সম্পাদনা]ইপিআরে চাকরি করতেন মকবুল আলী। ১৯৭১ সালে তিনি কর্মরত ছিলেন দিনাজপুর ইপিআর সেক্টর হেডকোয়ার্টারের ১০ নম্বর উইংয়ে। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে তিনি যুদ্ধে দেন। রৌমারী এলাকার কোদালকাঠির যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন তিনি। এ যুদ্ধের বর্ণনায় তার নাম পাওয়া যায়। রৌমারীর বেশির ভাগ এলাকা গোটা মুক্তিযুদ্ধের সময় মুক্তাঞ্চল ছিল। কোদালকাঠি কিছু সময় পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর দখলে ছিল।
মুক্তিযুদ্ধে ভূমিকা
[সম্পাদনা]১৯৭১ সালের ১৩ আগস্ট পাকিস্তান সেনাবাহিনী তাদের কোদালকাঠি অবস্থান থেকে অনেকগুলো গানবোট, লঞ্চ ও বার্জ নিয়ে রৌমারী দখল করার জন্য রাজীবপুরের দিকে অগ্রসর হয়। এ সময় মুক্তিবাহিনীর কয়েকটি দল পাকিস্তানি সেনাদের প্রতিরোধে বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নিয়ে যুদ্ধ করে। মুক্তিবাহিনীর একটি দলের নেতৃত্বে ছিলেন মকবুল আলী। কয়েক দিন ধরে বিভিন্ন স্থানে যুদ্ধ চলে। এরপর পাকিস্তান সেনাবাহিনী পিছে হটে আবার কোদালকাঠিতে অবস্থান নেয়। ২১ সেপ্টেম্বর পাকিস্তান সেনাবাহিনী আবার গানবোট, স্টিমার, লঞ্চ নিয়ে রাজিবপুরে এবং আশপাশের বিভিন্ন এলাকায় আক্রমণ করে। একটানা তিন দিন ধরে যুদ্ধ চলে। তিন দিনে পাকিস্তান সেনাবাহিনী পাঁচবার ঝটিকা আক্রমণ চালায়। মুক্তিযোদ্ধারা সাহসিকতার সঙ্গে পাকিস্তানি আক্রমণ প্রতিহত করেন। এরপর মুক্তিবাহিনীই সেপ্টেম্বর মাসের শেষদিকে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর কোদালকাঠির অবস্থানে আক্রমণ করে। মূল আক্রমণে অংশগ্রহণকারী মুক্তিযোদ্ধাদের একটি দলের নেতৃত্বে ছিলেন মকবুল আলী। চূড়ান্ত আক্রমণের নির্ধারিত তারিখ ছিল ১ অক্টোবর রাতে। সেদিন রাত ১০টার মধ্যে মুক্তিযোদ্ধাদের সব দল কোদালকাঠির বিভিন্ন স্থানে প্রতিরক্ষা অবস্থান নেন। পরদিন ভোর থেকে শুরু হয় যুদ্ধ। পাকিস্তানিরা কয়েকবার মুক্তিযোদ্ধাদের ওপর ঝটিকা পাল্টা আক্রমণ চালায়। কিন্তু তারা মুক্তিযোদ্ধাদের হটিয়ে দিতে ব্যর্থ হয়। যুদ্ধে অনেক পাকিস্তানি সেনা মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে নিহত হয়। ৪ অক্টোবর পাকিস্তানি অবস্থান থেকে আর কোনো গোলাগুলি হচ্ছিল না। এ ঘটনা মুক্তিযোদ্ধাদের চিন্তিত করে। এ সময় দুঃসাহসী মুক্তিযোদ্ধা মকবুল আলী তার দলের মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে নদী অতিক্রম করে নিশ্চিত হন পাকিস্তানিরা কোদালকাঠি থেকে পালিয়ে গেছে। এরপর কোদালকাঠি মুক্ত হওয়ার খবর চারদিকে বিদ্যুৎগতিতে ছড়িয়ে পড়ে। [৩]
পুরস্কার ও সম্মাননা
[সম্পাদনা]তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ "দৈনিক প্রথম আলো, "তোমাদের এ ঋণ শোধ হবে না" | তারিখ: ২৭-০৯-২০১১"। ২০১৮-০৫-২৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-০৬-১৭।
- ↑ একাত্তরের বীরযোদ্ধাদের অবিস্মরণীয় জীবনগাঁথা, খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা সম্মাননা স্মারকগ্রহন্থ। জনতা ব্যাংক লিমিটেড। জুন ২০১২। পৃষ্ঠা ১৪০। আইএসবিএন 9789843351449।
- ↑ একাত্তরের বীরযোদ্ধা, খেতাব পাওয়া মুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্বগাথা (প্রথম খন্ড)। প্রথমা প্রকাশন। এপ্রিল ২০১২। পৃষ্ঠা ১৭১। আইএসবিএন 9789843338884।
পাদটীকা
[সম্পাদনা]- এই নিবন্ধে দৈনিক প্রথম আলোতে ১৩-০২-২০১২ তারিখে প্রকাশিত তোমাদের এ ঋণ শোধ হবে না প্রতিবেদন থেকে লেখা অনুলিপি করা হয়েছে। যা দৈনিক প্রথম আলো ক্রিয়েটিভ কমন্স অ্যাট্রিবিউশন-শেয়ার-এলাইক ৩.০ আন্তর্জাতিক লাইসেন্সে উইকিপিডিয়ায় অবমুক্ত করেছে (অনুমতিপত্র)। প্রতিবেদনগুলি দৈনিক প্রথম আলোর মুক্তিযুদ্ধ ট্রাস্টের পক্ষে গ্রন্থনা করেছেন রাশেদুর রহমান (যিনি তারা রহমান নামেও পরিচিত)।