মাজহারুল ইসলাম
মাজহারুল ইসলাম | |
---|---|
জন্ম | সুন্দরপুর, মুর্শিদাবাদ, ব্রিটিশ ভারত | ২৫ ডিসেম্বর ১৯২৩
মৃত্যু | ১৫ জুলাই ২০১২ | (বয়স ৮৮)
জাতীয়তা | বাংলাদেশী |
মাতৃশিক্ষায়তন | অরিগন বিশ্ববিদ্যালয় ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয় এএ স্কুল অব আর্কিটেকচার |
পুরস্কার | স্বাধীনতা দিবস পুরস্কার গ্র্যান্ড মাস্টার পদক |
ভবনসমুহ | জাতীয় সংসদ ভবন আর্ট ইনস্টিটিউট জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টার প্লান ও নকশা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টার প্লান ও নকশা বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় গণগ্রন্থাগার বাংলাদেশ জাতীয় আর্কাইভ ভবন |
মাজহারুল ইসলাম (২৫ ডিসেম্বর ১৯২৩ - ১৪ জুলাই ২০১২) বাংলাদেশ তথা ভারতীয় উপমহাদেশের প্রথিতযশা স্থপতিদের মধ্যে অন্যতম। তিনি বাংলাদেশের স্থাপত্য পেশা চর্চার পথিকৃৎ। আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন এই স্থপতি বাংলাদেশ স্থপতি ইনস্টিটিউটের প্রথম সভাপতি ছিলেন।[১] মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণসহ নানা সময়ে বিভিন্ন প্রগতিশীল আন্দোলন ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে সক্রিয় থেকেছেন তিনি।
শিক্ষা জীবন
[সম্পাদনা]মুর্শিদাবাদ জেলার সুন্দরপুর গ্রামে নানার বাড়িতে ১৯২৩ খ্রীস্টাব্দের ২৫ ডিসেম্বর জন্মগ্রহণ করেন। সেই সময় তার বাবা ওমদাতুল ইসলাম ছিলেন কৃষ্ণনগর কলেজের অঙ্কের শিক্ষক। কৃষ্ণনগর কলেজ স্কুলে পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত পড়ার পর পিতার বদলির সুবাদে রাজশাহীতে যান। রাজশাহী কলেজিয়েট স্কুল ও রাজশাহী কলেজ থেকে যথাক্রমে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পাস করার পর ঐ কলেজ থেকেই পদার্থবিজ্ঞানে অনার্সসহ স্নাতক পাস করেন। এরপর শিবপুর ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ থেকে প্রকৌশল বিদ্যা পড়া শেষ করেন ১৯৪৬ সালে। দেশ ভাগের পর ১৯৪৭ সালে সহকারী প্রকৌশলী হিসেবে সরকারি চাকরিতে যোগ দেন।
১৯৫০ সালে যুক্তরাষ্ট্র যান এবং অরিগন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্থাপত্যের পাঠ নিয়ে আড়াই বছর পর দেশে ফেরেন। দেশে ফিরে একনাগারে ছয় মাসের পরিশ্রমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউট ও লাইব্রেরি ভবনের ডিজাইন করেন।
এরপর ১৯৫৬ তে বৃত্তি নিয়ে তিনি ট্রপিক্যাল আর্কিটেকচার পড়তে লন্ডনের এএ স্কুল অব আর্কিটেকচার-এ যান। ১৯৬০ এ যান ইয়েল ইউনিভার্সিটিতে পল রুডল্ফ-এর অধীনে মাস্টার্স করতে।
কর্ম জীবন
[সম্পাদনা]১৯৬১ এর শেষের দিকে তিনি দেশে ফিরে আসেন। কর্মজীবন শুরু করেছিলেন পূর্ব পাকিস্তানের কনস্ট্রাকশন, বিল্ডিং অ্যান্ড ইরিগেশনে। মতের মিল না হওয়ায় ১৯৬৪ সালে সরকারি চাকরি ছেড়ে প্রকৌশলী শেখ মুহাম্মদ শহীদুল্লাহর সঙ্গে ‘বাস্তুকলাবিদ’ নামে একটি স্থাপত্য পরামর্শক প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় এ স্থাপত্য অনুষদ চালু করার ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা রেখেছেন তিনি। এখানে খণ্ডকালীন শিক্ষকতাও করেছেন।[২]
অবদান
[সম্পাদনা]- ১৯৫৩-৫৪: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউট, ঢাকা।
- ১৯৫৩-৫৪: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরি ভবন।
- ১৯৬৩-৬৪: খিলগাঁও রেলওয়ে পুর্নবাসন প্রকল্প, ঢাকা।
- ১৯৬৩-৬৪: নতুন রাঙ্গামাটি শহর পরিকল্পনা, রাঙ্গামাটি।
- ১৯৬২: চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারীদের জন্য আবাসন প্রকল্প, আজিমপুর, ঢাকা।
- ১৯৬৩-৬৫: বিসিএসআইআর লাইব্রেরি ভবন, ঢাকা।
- নিপা ভবন, ঢাকা ( বর্তমানে ভবনটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজনেস স্ট্যাডিজ অনুষদের অফিস ও ই- লাইব্রেরি হিসাবে ব্যবহৃত হচ্ছে)
- ১৯৬৫-৭১: কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন মতিঝিল, ঢাকা।
- ১৯৬৫-৭১: জীবন বীমা ভবন, মতিঝিল, ঢাকা।
- ১৯৬৫-৭১: রাজশাহী, বগুড়া, পাবনা, সিলেট ও বরিশালের জন্য পাঁচটি পলিটেকনিক ইনিস্টিটিউট (বিদেশী স্থপতি স্ট্যানলি টাইগারম্যানকে সাথে নিয়ে)।
- ১৯৬৫-৭১: সড়ক গবেষণা পরীক্ষাগার, ঢাকা।
- ১৯৬৮-৭১: চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় মাস্টার প্লান ও বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ ভবন।
- ১৯৬৮-৭১: রূপপুরে আণবিক শক্তি কমিশনের আবাসন প্রকল্প।
- ১৯৬৮-৭১: জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয় মাস্টার প্লান ও বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ ভবন।
- ১৯৮০-৮৪: জয়পুরহাট কয়লা ও সিমেন্ট প্রকল্প ।
- ১৯৮০-৮৪: জাতীয় গ্রন্থাগার ও জাতীয় আর্কাইভ ভবন, শেরে বাংলা নগর, ঢাকা।
- ১৯৮৭: বিশ্ব ব্যাংক অফিস ভবন, ঢাকা ।
- ১৯৯৫: ২০ তলা “গার্ডেন সিটি” প্রকল্প, ঢাকা।
সম্মাননা
[সম্পাদনা]- স্বাধীনতা দিবস পুরস্কার (১৯৯৯)[৩]
- আমেরিকান ইনস্টিটিউট অব আর্কিটেক্ট এর জাতীয় সম্মেলনে সম্মানিত ফেলোশিপ অর্জন। (১৯৯৯)
- আগা খান পুরস্কারের সম্মানিত বিচারকের দায়িত্ব পালন। (১৯৮০)
- বাংলাদেশ স্থপতি ইনস্টিটিউট-এর প্রথম স্বর্ণ পদক অর্জন। (১৯৯৩)
- ভারতের জে কে সিমেন্ট আয়োজিত স্থাপত্যশিল্পে শ্রেষ্ঠ অবদানের জন্য ‘গ্র্যান্ডমাস্টার অ্যাওয়ার্ড’।
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ দৈনিক প্রথম আলো[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ "বাংলানিউজ ২৪ ডট কম"। ১১ আগস্ট ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ জুলাই ২০১২।
- ↑ দ্য ডেইলী স্টার.নেট