২০০৬ আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিএকদিনের আন্তর্জাতিকক্রিকেটপ্রতিযোগিতা হিসেবে ৭ অক্টোবর থেকে ৫ নভেম্বর, ২০০৬ তারিখ পর্যন্ত ভারতে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি প্রতিযোগিতার ৫ম আসর এটি। পূর্বেকার প্রতিযোগিতাগুলো আইসিসি নক-আউট প্রতিযোগিতা নামে পরিচিত ছিল। ২০০৫ সালের মাঝামাঝি সময়কাল পর্যন্ত প্রতিযোগিতার স্থান নির্ধারণ করা সম্ভব হয়নি। পরবর্তীতে ভারত সরকার প্রতিযোগিতায় কর অবকাশের সুযোগ দেয়ায় সম্মতি প্রকাশ করে। ২০০২ সালের প্রতিযোগিতাটি ভারতে হবার কথা থাকলেও কর বিষয়ে ঐকমত্যে না পৌঁছানোয় শ্রীলঙ্কায় অনুষ্ঠিত হয়েছিল।[১]অস্ট্রেলিয়া দল প্রতিযোগিতার শিরোপা জয় করে ও প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি লাভের সুযোগ পায়। সমগ্র প্রতিযোগিতায় দলটি একটিমাত্র খেলায় পরাজিত হয়েছিল; অন্যান্য দলগুলো কমপক্ষে দু'টি খেলায় পরাভূত হয়। ফাইনালে উত্তীর্ণ ওয়েস্ট ইন্ডিজ দল গ্রুপ-পর্বে অস্ট্রেলিয়াকে পরাজিত করলেও ডাকওয়ার্থ-লুইস পদ্ধতিতে ৮ উইকেটে পরাজিত হয়ে রানার-আপ হয়। দলের উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান ক্রিস গেইলপ্লেয়ার অব দ্য টুর্নামেন্ট মনোনীত হন।
প্রতিযোগিতায় দশটি দল প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অবতীর্ণ হয়। ১ এপ্রিল, ২০০৬ তারিখের আইসিসি ওডিআই চ্যাম্পিয়নশীপ অনুযায়ী দলগুলোর অবস্থান নির্ধারিত হয়েছিল। ২৩ মার্চ, ২০০৬ তারিখে কেনিয়ার অবস্থানকে পাশ কাটিয়ে বাংলাদেশ ১০ম স্থানে উপনীত হয়ে খেলার সুযোগ পায়। অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, পাকিস্তান, নিউজিল্যান্ড, ভারত ও ইংল্যান্ড - এ শীর্ষ ছয় দল স্বয়ংক্রিয়ভাবে যোগ্যতা লাভ করে। বাদ-বাকী চার দল - শ্রীলঙ্কা, পূর্বতন চ্যাম্পিয়ন ওয়েস্ট ইন্ডিজ, জিম্বাবুয়ে ও বাংলাদেশ দলকে যোগ্যতাসূচক পর্বে খেলার জন্য ৭-১৪ অক্টোবর, ২০০৬ তারিখে অনুষ্ঠিত প্রতিযোগিতা-পূর্ব রাউন্ড-রবিন খেলায় অংশ নিতে হয়েছিল।[২] এ পর্বের শীর্ষ দুই দল স্বয়ংক্রিয়ভাবে যোগ্যতা লাভকারী ছয় দলের সাথে যোগ দেয়।
Cricket grounds hosting the 2006 ICC Champions Trophy
বাছাই পর্বের দুই দল ও অন্য ছয় দল (সর্বমোট আট দল) দুই গ্রুপে বিভক্ত হয়ে ৪ দলের অংশগ্রহণে রাউন্ড-রবিন প্রতিযোগিতায় অগ্রসর হয়। খেলাগুলো ১৫ থেকে ২৯ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হয়। প্রাথমিক রাউন্ড এবং গ্রুপ রাউন্ডের খেলাগুলো মোহালির পাঞ্জাব ক্রিকেট সংস্থা স্টেডিয়াম, আহমেদাবাদের সরদার প্যাটেল স্টেডিয়াম, জয়পুরের সয়াই মানসিং স্টেডিয়াম এবং মুম্বইয়ের ব্রাবোর্ন স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হয়। তন্মধ্যে, গত ১১ বছরের মধ্যে মুম্বইয়ে প্রথমবারের মতো ওডিআই অনুষ্ঠিত হয়েছে।
প্রত্যেক গ্রুপের শীর্ষ দুই দল সেমি-ফাইনাল খেলার জন্য ১ নভেম্বর মোহালি ও ২ নভেম্বর জয়পুরে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে। চূড়ান্ত খেলাটি ৫ নভেম্বর মুম্বইয়ে অনুষ্ঠিত হয়।
তিনজন ম্যাচ রেফারি ও আটজন আম্পায়ারকে প্রতিযোগিতায় রাখা হয়। আইসিসি এলিট প্যানেলের দশজন আম্পায়ারের মধ্যে ডারেল হেয়ারকে নিরাপত্তাজনিত কারণে ও বিলি ডকট্রোভকে প্রতিযোগিতার বাইরে রাখতে হয়। ঐ দুই আম্পায়ার আগস্ট, ২০০৬ সালে বল টেম্পারিংয়ের জন্য আগস্টে পাকিস্তানের বিপক্ষে সিদ্ধান্ত দিতে বাধ্য হয়েছিলেন। এ বিষয়ে আইসিসি মুখপত্র বলেন, তার মানে এই নয় যে, বিলি ডকট্রোভ বাজে আম্পায়ার এবং এ সিদ্ধান্তে কোনরূপ বাজে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি।[৩]
একটি খেলা বাকী থাকতেই ওয়েস্ট ইন্ডিজ এবং শ্রীলঙ্কা দল পরবর্তী পর্বে নিজেদের উত্তরণ ঘটায়। দল দু'টোর মধ্যকার খেলাটি গ্রুপে তাদের অবস্থান নির্ধারণের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করে।